মিয়ানমার থেকে আসছে শত শত মেট্রিক টন পেঁয়াজ  



উপজেলা করেসপেন্ডেন্ট, বার্তা টোয়ান্টিফোর.কম, টেকনাফ
মিয়ানমার থেকে আগত পেঁয়াজ

মিয়ানমার থেকে আগত পেঁয়াজ

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে প্রতিনিয়ত শত শত মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসছে। তবে সেপ্টেম্বর মাসে দেশটি থেকে ৩ হাজার ৫৭৩ দশমিক ১৪১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আরও কয়েক হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ কয়েক দিনের মধ্যে বন্দরে এসে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এদিকে গত রবিবার পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে মূল্যবৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে বেশ কিছুদিন ধরেই সেদেশে পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। সেদেশে নতুন নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে বলে জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ৩৫২ দশমিক ১৪১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ টেকনাফ স্থল বন্দরে এসে পৌঁছায়। এ সব পেঁয়াজ ছয়জন ব্যবসায়ী আমদানি করেন। প্রতি বস্তা ৫০ কেজির পেঁয়াজ শ্রমিকেরা ট্রলার থেকে খালাস করে সরাসরি ট্রাক বোঝাই করেন। পরে স্থলবন্দর থেকে পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাকগুলো ছাড়পত্র নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেড়ে যায়।

উপজেলা করেসপেন্ডেন্ট, বার্তা টোয়ান্টিফোর.কম, টেকনাফ

তবে মিয়ানমারের থেকে আমদানিকৃত প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ৪৩ থেকে ৪৫ টাকা। এছাড়া পরিবহন, শ্রমিকসহ আরো ৫ থেকে ৬ টাকার মতো খরচ হয়। এর মধ্যে যাতায়াতে কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে পড়ছে বলে আমদানিকারকরা জানিয়েছেন।   

টেকনাফ শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা যায়, সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে ৩ হাজার ৫৭৩ দশমিক ১৪১ মেঃ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। এ সব পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ১৫ কোটি ৫৫ লাখ ২৪ হাজার ৩৫৭ টাকা। এর আগে আগস্টে এসেছে ৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।

আমদানিকারক এমএ হাশেম, মোহাম্মদ সেলিম ও নুরুল কায়েস সাদ্দাম বলেন, ‘দেশে পেঁয়াজের সংকট দূর করতে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। কয়েক হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ বোঝায় ট্রলার সাগর পথে রয়েছে। সেগুলো শীঘ্রই বন্দরে এসে পৌঁছাবে। তবে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের খবর মিয়ানমারে পৌঁছুলে সেদেশের ব্যবসায়ীরাও পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’ 

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আবছার উদ্দিন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি দিন দিন বাড়ছে। এ শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত খালাস শেষ করে ছাড়পত্র দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে পেঁয়াজের সংকট মোকাবেলায় ব্যবসায়ীদের আরো পেঁয়াজ আমদানি বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।’

   

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে স্মার্টফোন ও বাইক নিয়ে প্রবেশ নিষেধ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে স্মার্টফোন ও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।

বৃহস্পতিবার (২ মে) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

নোটিশে উল্লেখ কর হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস), স্নাতকোত্তর (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সার্বিক কল্যাণ ও কলেজের শৃঙ্খলার স্বার্থে জানানো যাচ্ছে যে, কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরবাইক এবং শ্রেণিকক্ষে স্মার্টফোন ফোন নিয়ে কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না। কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরবাইক নিয়ে প্রবেশ করা এবং স্মার্টফোন ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষেধ। সেজন্য কোনো শিক্ষার্থী কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরবাইক নিয়ে প্রবেশ করলে এবং শ্রেণিকক্ষে কারো কাছে মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নোটিশে শিক্ষার্থীদেরকে নির্ধারিত ইউনিফর্ম পরিধান করে কলেজে আসতে বলা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রেণিকক্ষে সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার অধিক মাত্রায় বেড়ে যায়। এতে তারা অমনযোগী থাকে। কখনো কখনো অতিমাত্রায় ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে একাধিকবার মৌখিক নির্দেশনা দেয় কর্তৃপক্ষ। এমনকি অভিযান চালিয়ে মোবাইল ফোনও জব্দ করে। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হচ্ছিলো না। এছাড়া কলেজে অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ করে পরিবেশ নষ্ট করে বিধায় এতেও মৌখিক নিষেধাজ্ঞা ছিলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু জাফর মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, মোবাইল ফোনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে শিক্ষার্থীদেরকে রক্ষা করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাস একেবারেই ছোট হওয়ায় মোটরসাইকেলের চলাচল শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটে।

;

বৃষ্টি এলো, বহু প্রতীক্ষিত স্বস্তির বৃষ্টি...



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বৃষ্টি

বৃষ্টি

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ (২ মে) বৃষ্টি হবে; আবহাওয়া অফিস বলেছে। সকাল থেকে শুরু সেই প্রতীক্ষার। দাবদাহে গরমে বিপযর্স্ত দিনগুলো ঘণ্টাগুলো যায় আর মনে করিয়ে দেয় ২ মে বৃষ্টি হবে; বহু কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি।

যে বৃষ্টি ধুয়ে মুছে নিবে তাপপ্রবাহের ক্লান্তি, অবসাদ। সূর্যের উন্মাদনা কমিয়ে দিয়ে গ্রীষ্মের প্রকৃতিতে আনবে প্রশান্তির বার্তা। সকালের চট্টগ্রামের মুষলধারে বৃষ্টি সেই প্রতীক্ষাকে আরো তীব্র করে। রাস্তা-ঘাটে, অফিস-আদালতে, নেট দুনিয়ায়; একটা প্রশ্ন- সবখানে বৃষ্টি কখন?

তারপর এলো স্বস্তি খবর; সন্ধ্যায় রাজধানীর কিছু এলাকায় নাকি মিলেছে বৃষ্টি দেখা! এরপর প্রশ্ন বৃষ্টি কোথায়? অবশেষে এলো বৃষ্টি, বহু প্রতীক্ষীত স্বস্তির বৃষ্টি...। এলো বিদ্যুতের ঝলকানি ও বজ্রপাতকে সঙ্গে করে। দমকা হওয়ায় মুষলধারে ঝরিয়ে ভেজালো রাজধানীকে। দমফাটা রোদ ও গরমের মধ্যে বৃষ্টির ফোঁটা জনমনে এসেছে স্বস্তি।

বৃস্পতিবার (০২ মে) রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি, এরপরও নগর জীবন তপ্ত দাবদাহ থেকে কিছুটা হলেও সাময়িক পরিত্রাণ পেয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথমের দিকে বৃষ্টিপাত তীব্রতা বেশি থাকলেও ধীরে ধীরে তা কমে এসেছে। এখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। টানা তাপদহের পর প্রশান্তির বৃষ্টি হওয়ায় গরমের নাভিশ্বাস থেকে একটু হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস এসেছে জনজীবনে।

তাপদাহের মধ্যে বৃষ্টির দেখা পেয়ে ভিজতে রাস্তায় নেমে আসেন এই যুবক

বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর পরই অনেকেই স্বস্তির কথা জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বৃষ্টির খবর জানিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করে ফারিয়া নামের এক তরুণী লিখেছেন, আল্লাহ অবশেষে.. বৃষ্টি, আলহামদুলিল্লাহ কী সুন্দর প্রশান্তির বাতাস!

রবিন নামে এক যুবক বলেন, বৃষ্টির জন্য দীর্ঘ যে প্রতীক্ষা, সেটির অবসান হলো। খুব ভালো লাগছে। তবে আর কিছুক্ষণ বৃষ্টি হলে আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে যেত।

খিলক্ষেতের বাসিন্দা আফসানা আজাদ তমা অনেক দিন পর বৃষ্টির দেখা পেয়ে আত্মীয়স্বজন নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন।

এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে দেখা গেছে, রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় প্রশান্তির বৃষ্টিতে বল হাতে বেরিয়েই আল্লাহর সিজদায় লুটিয়ে পড়েছে ছোট্ট একটি শিশু!

শুক্রবারও ঢাকা বিভাগের কয়েক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়ার অধিদফতরের আবহাওয়াবিদন মনোয়ার হোসেন। তবে রাজধানীতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে তিনি জানান।

এর আগে, আবহাওয়া অধিদফতর বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছিল। সেই পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রামসহ দেশের কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টিপাত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত এক মাস ধরে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। সূর্যের প্রখরতায় দিনে-রাতে প্রায় একই তাপমাত্রা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ফলে সূর্য অস্ত গেলেও মানুষের ভোগান্তি কমছে না। রাতের বেলায়ও প্রচণ্ড গরমে সবাইকে হাঁসফাঁস করতে দেখা যাচ্ছে।

;

বালিয়াকান্দিতে স্কাউটিংয়ে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা



পারমিস সুলতানা
পারমিস সুলতানা

পারমিস সুলতানা

  • Font increase
  • Font Decrease

স্কাউটিং শব্দটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। মানবসেবার ব্রত নিয়ে ১৯০৭ সালে ইংল্যান্ডের ব্রাউন সি দ্বীপে রবার্ট স্টিফেনসন স্মিথ লর্ড ব্যাডেন পাওয়েল অব গিলওয়েলের হাত ধরে যাত্রা শুরু স্কাউট। স্কাউটের শুরুর পথচলায় ২০ জন কিশোর সে সময় থাকলেও সময়ের আবর্তনে এখন সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সারা বিশ্বে ৪০ মিলিয়নে। যা বিশ্ব স্বীকৃতিতে ১৬৯টি দেশের আনাচে কানাচে নিরলসভাবে আর্তমানবতার সেবায় স্বেচ্ছাসেবকেরা নিজেদেরকে নিয়োজিত রেখেছেন।

স্কাউটিংয়ের এই কার্যক্রমের ধারায় নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। বালিয়াকান্দির প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই রয়েছে স্কাউটিং টিম। এ সকল স্কাউটিংয়ের সদস্যরা তারা নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় নিরলসভাবে নিজেদের নিষ্ঠার সাথে নিয়োজিত রেখেছে।

সম্প্রতি প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে সারা দেশে। তাপপ্রবাহের সাথে রয়েছে তীব্র গরম। বালিয়াকান্দিতে বেশ কয়েকদিন ধরে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রবাহিত হয়েছে। অসহ্য গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে কৃষি ও প্রাণিকূলের ওপরও। সবচেয়ে বেশি কষ্ট আছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষগুলো।

কিন্তু জীবনজীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হতে হয় সাধারণ মানুষের। গরমে পথচারী ও শ্রমিকদের একটু স্বস্তির আশায় শতবর্ষী বালিয়াকান্দি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫ জনের স্কাউটের একটি দল দুপুরের তপ্ত রোদে দাঁড়িয়ে বালিয়াকান্দি চৌরাস্তায় প্রায় সহস্রাধিক পথচারীদেরকে লেবু, বরফ, চিনি ও ট্যাং মিশ্রিত শরবত খাওয়াচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

এ সকল স্কাউটিংয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কখনো তাদের নিজেদের টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে কখনো প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। ওদের সামাজিক কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবান, সমাজসেবী অথবা মানবিক মানুষগুলোর এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছি।

ওদের পাশে যদি আমরা দাঁড়াতে পারি তাহলে স্কাউটিং শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে আত্মমানবতার সেবায় নিয়োজিত রেখে তাদের পরিবার, সমাজ, দেশ তথা বিশ্বের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে । স্কাউটিংয়ের শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে আসুন আমরা জাগ্রত করি আমাদের বিবেক, আরেকবার প্রমাণ হোক ‘মানুষ মানুষের জন্য’।

লেখক: পারমিস সুলতানা, পিএইচডি গবেষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী

;

উড়ছে রঙিন ঘুড়ি



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদনী রাতে চারপাশ থেকে ভেসে আসে বাঁশির শব্দ। বৈশাখী রাতের বাতাস আর এ-শব্দ মিলেমিশে মুগ্ধ করে মনকে। সকাল থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যাবেলা। আকাশে দেখা মিলছে ঘুড়ির। বিশেষ করে বিকালের নীল আকাশে যেন ঘুড়ির রাজত্ব। রাতে মনে হয় আকাশে যেন বিমান খেলা করছে। নিভু-নিভু আলো জ্বলে আকাশে। কখনো মনে হবে বড় সাপ, চিল, ঈগল, ঘর উড়ছে ওখানে। কখনো মনে হবে দৈত্য-দানব আকাশে উড়ছে! আসলে এগুলো বিভিন্ন ডিজাইনের ঘুড়ি।

আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এই ঘুড়ির দেখা মেলে এখনো কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায়। প্রতিদিন আকাশে দিনেরাতে দেখা যায় হরেক রকমের ঘুড়ি৷। উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এমনি দৃশ্য দেখা যায়৷

বাংলার সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যেতে চলা ঘুড়ি উৎসবে সববয়সী মানুষ মেতেছেন। বিভিন্ন পাড়া, মহল্লার আকাশে এখন রঙবেরঙের ঘুড়ি। শিশু-তরুণ-যুবক এমনকি মাঝ বয়সীরাও স্বাদ নিচ্ছে ঘুড়ি উড়ানোর। শুধু দিনেই নয়, রাতের আকাশেও দেখা মিলছে ঝলমলে ঘুড়ির।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে উপজেলায় ঘুড়ি বানানোর ধুম পড়েছে। আকাশে চোখ মেললেই ঘুড়ির লড়াইয়ের দৃশ্য, চলছে কাটাকাটির খেলা। ঘুড়ির মধ্যে লাইটিং করা হচ্ছে। রাতের আকাশে অনেক রকমের আলো ঝলমল করছে। কটিয়াদী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দিন-রাত ছোট-বড় নানাবয়সী ঘুড়িপ্রেমী মেতেছেন এই ঘুড়ি উৎসবে। বর্তমানে চাহিদা বাড়ায় প্রকারভেদে দুইশ থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব ঘুড়ি। প্রতিদিন আকাশে দিন-রাত্রি উড়তে দেখা যাচ্ছে- চিল, কয়রা, ঢোল, পতিঙ্গা, পাখি, পরি, বাচ, ফুল, প্রজাপতি, মানুষ ঘুড়ি, সাপাসহ রংবেরঙের ঘুড়ি।

মসুয়া ইউনিয়নের বৈরাগিচর এলাকার ঘুড়িপ্রেমী ইদ্রিস বলেন, গ্রামে ঘুড়ি তৈরিতে যুবকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। সাধারণত যেকোনো ডিজাইনের একটি ঘুড়ির দাম একশ থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত। বাঁশ, বেত এবং বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিক-কাগজের মোড়কে ঘুড়ি বানানো হয়। আবার কেউ ঘুড়িতে বাতি লাগিয়ে নিয়ে রাতের আকাশে উড়াচ্ছেন।

জনশ্রুতি আছে, ব্রিটিশ আমলে অভিজাত লোকদের বিনোদনের জন্য ঘুড়ি উড়ানোর আয়োজন করা হতো। ১৭৪০-এর দশকে নায়েব-এ-নাজিম নওয়াজেশ মোহাম্মদ খানের আমলে ঢাকায় ঘুড়ি উড়ানো উৎসব একটা ঐতিহ্যে পরিণত হয়। তখন থেকেই কিশোরগঞ্জের খোলা আকাশে অনেক ঘুড়ি উড়তে দেখা যায়।

;