দখল আর দূষণের কবলে নরসিংদীর নদ-নদী



শরীফ ইকবাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, নরসিংদী
দখল হয়ে যাচ্ছে অন্যতম বৃহৎ এসব নদ-নদী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

দখল হয়ে যাচ্ছে অন্যতম বৃহৎ এসব নদ-নদী, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদী জেলার চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে শীতলক্ষ্যা ও মেঘনা নদী। এর শাখা নদীগুলোর মধ্যে- ব্রহ্মপুত্র, আড়িয়াল খাঁ, হাড়ি-দোয়া নদী, পাহাড়িয়া, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র অন্যতম। এসব নদ-নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠছে নরসিংদীর শিল্পাঞ্চল। কিন্তু দখল আর দূষণে বর্তমানে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে এসব নদ-নদী।

জানা গেছে, নদীপথে যাতায়াতের সহজলভ্যতার কথা চিন্তা করে পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ছোট বড় কারখানা। ফলে এই কারখানার বর্জ্য ও কেমিক্যাল মিশ্রিত পানি নদীতে মিশে ভরাট হচ্ছে। আর বর্ষা মৌসুমে নদীগুলো পানিতে থৈ থৈ করলেও অন্য সময়ে পানি অনেক কম থাকে।

কারখানার বর্জ্য মিশে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে

 

জানা গেছে, এসব নদী দিয়ে এক সময় বড় বড় জাহাজ আর পাল তোলা নৌকা চলতো। ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য করতে নরসিংদীতে ছুটে আসতেন নদীপথেই। সেই থেকে নরসিংদীর এসব নদীর তীরে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে থাকায় নদী সংকুচিত হতে থাকে। ফলে এখন বছরের বেশির ভাগ সময়ই নদীতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় নৌকাও চলে না। তাছাড়া কারখানার বর্জ্য মিশে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমেও পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের (ডিও) মাত্রা কম থাকে। এ কারণে এই নদীতে মাছ বাঁচে না।

 

সরেজমিনে দেখা গেছ, শিবপুর উপজেলার বড়ই তলা এলাকায় কয়েকটি কারখানার বর্জ্য গজারিয়া ব্রিজের নিচ দিয়ে যাওয়া আন্ডারলাইন দিয়ে হাড়িধোঁয়া নদে পরে। এছাড়া নরসিংদীর সর্ববৃহৎ শিল্পনগরী বিসিক (আমতলা) এলাকার একটি গার্মেন্টসসহ শতাধিক শিল্পের বর্জ্য দড়িচর ব্রিজের পাশ দিয়ে নদীতে পড়ে। আর ভেলানগর ব্রিজের নীচ দিয়ে হাড়িধোঁয়ায় পরে বেশ কয়েকটি কারখানার বর্জ্য। ঘোড়াদিয়া ব্রিজ, হাজিপুর ব্রিজের নিচ দিয়ে বেশ কয়েকটি কারখানার বর্জ্য এ নদে এসে মিলিত হয়। এছাড়া শীতলক্ষ্যার পানিতে সার কারখানার ক্যামিকেল ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গরম পানি পড়ায় মাছ বাঁচতে পারে না।

নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, নরসিংদী শহরের উত্তর পাশ দিয়ে প্রবাহিত ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ নদের ডিওর মান কমেছে। ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠানের অপরিকল্পিত বর্জ্য ও কেমিকেল মিশ্রিত পানি নিয়ন্ত্রণ করে ডিওর মান উন্নয়ন করা সম্ভব। গত মে ও জুনে ডিওর মাত্রা ছিল শূন্য দশমিক ৮/৯ মিলিগ্রাম/লিটার, জুলাইয়ে ২ দশমিক ১/২ এবং আগস্টে ২ দশমিক ৪ মিলিগ্রাম/লিটার।

নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর গোলাম মোস্তাফা মিয়া জানান, জনসংখ্যার আধিক্য, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অপরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ বিষয়ে অসচেতনতা, অপর্যাপ্ত পানিপ্রবাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ঐতিহ্যবাহী নদ-নদীগুলোতে দূষণের মাত্রা বাড়ছে।

একই কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মান্নান জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, মৎস্য ও জলজ প্রাণীর জীবনধারণের জন্য পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন প্রতি লিটারে ৫ মিলিগ্রাম বা এর বেশি থাকা প্রয়োজন। এরনিচে হলে প্রাণি বা কোনও উদ্ভিদ বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম।

তিনি আরও জানান, পানিতে ডিওর মাত্রা প্রতি লিটারে ৫ মিলিগ্রামের নিচে নেমে গেলে পানিতে শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদ জন্মায় না। আর ৮০ ভাগ মাছ শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল। তাই ডিওর মান কম হলে ছোট ছোট মাছ মারা যায়। ফলে প্রাণীবৈচিত্র্য নষ্ট হয়ে যায়। হাড়িধোয়া নদে বছরের বেশির ভাগ সময়ই দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কম থাকে। বর্ষায় কিছুটা বাড়লেও তাতে কিছু শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া ও কই, টাকি প্রজাতির মাছ ছাড়া অন্য কোনও মাছ ও জলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই।

নরসিংদী পরিবেশ আন্দোলন (আপন) এর সভাপতি মইনুল ইসলাম মীরু জানান, নদ-নদীর দূষণ আর দখল নিয়ে একাধিকবার মানববন্ধন, সভা, সেমিনার ও প্রচারণা চালানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন দৃশ্যমান কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো অনেকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।

নরসিংদীর ১০০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. একরামুল ইসলাম শামীম জানান, নদীর দূষিত পানিতে নামলে শরীরে খাঁজলী, পাচড়া, চর্মসহ বিভিন্ন রকমের রোগ দেখা দিতে পারে।

নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে পাওয়া তথ্য মতে, মেঘনা নদীটির ৪৫ কিলোমিটার নরসিংদীর ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। এরমধ্যে ভৈরব ও নরসিংদী অংশে নদীটির প্রস্থ হচ্ছে ১৫শ’ মিটার ও গভীরতা ২৫ মিটার। বর্ষাকালে এই নদী দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ১৬ হাজার ৫৬৮ ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়। শুষ্ক মৌসুমে প্রবাহিত হয় ১০৫ ঘনমিটার।

আর মেঘনার নরসিংদী অঞ্চলের একটি বিরাট অংশ দখল করে আছে প্রভাবশালীরা। এদের কেউ কেউ রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় আবার কেউবা সরাসরি রাজনীতি করার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাননা। প্রভাবশালীরা মেঘনার একটি অংশ দখল করে গাছের ডালপালা ও বাঁশের কঞ্চি ফেলে মাছের ঘের তৈরি করে। ফলে নদীপথে নৌকা, লঞ্চ, স্পিডবোটসহ অন্যান্য নৌযান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। তাছাড়া নদীর দুই তীরের জেলে পরিবারে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র চক্রবর্তী জানান, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নরসিংদীর ৬টি নদী খনন কাজ চলছে।

   

রাজধানীতে ইজিবাইক চোর চক্রের ৮ সদস্য গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চোরাইকৃত ১৭টি ইজিবাইক উদ্ধারসহ চোর চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)। একই সঙ্গে চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়। 

সোমবার (৬ মে) র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সহকারী পুলিশ সুপার এম. জে. সোহেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এম. জে. সোহেল জানান, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইজিবাইক চুরির ঘটনা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন চোরচক্র সংগঠিতভাবে গরিব, অসহায় ও সাধারণ মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস ইজিবাইক চুরি করে তাদের ক্ষতি সাধন করে আসছে। র‌্যাব এই চোরচক্রদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে ইজিবাইক চুরি রোধকল্পে অভিযান অব্যহত রেখেছে। যার ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গত ২৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার ও বন্দর এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করে চোরাইকৃত ১৪টি ইজিবাইক উদ্ধার ও চোরচক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করে।


তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর আভিযানিক দল ইজিবাইক চোর চক্রটির সাথে সম্পৃক্ত পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে অভিযান অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল (৫ মে) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার হাসনাবাদ এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আন্তঃজেলা ইজিবাইক চোর চক্রের অন্যতম মূলহোতা মো. কবির (৫০), সহ আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, মো. দুলাল শিকদার (৫১) ও মো. সেলিম (৪১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে চোরাইকৃত আরও ৩টি ইজিবাইক ও ১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মো. কবির ইজিবাইক চোর চক্রটির মূলহোতা এবং দুলাল শিকদার কবিরের প্রধান সহযোগী। দুলাল শিকদার ঢাকার কেরাণীগঞ্জ, শ্যামপুর ও যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে টার্গেট খুঁজে ও ইজিবাইক চুরির জন্য সুবিধাজনক স্থান নির্ধারণ করে কবিরকে জানায়। পরে কবির দুলালকে নিয়ে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী যাত্রাবাড়ী, ধোলাইপাড়, জুরাইন, হাসনাবাদ, কদমতলীসহ বিভিন্ন ইজিবাইক স্ট্যান্ডে গিয়ে তাদের পূর্বপরিকল্পিত ও সুবিধাজনক স্থানে যাওয়ার কথা বলে ইজিবাইক ভাড়া করে। কোন ইজিবাইক চালক সেখানে যেতে অস্বীকৃতি জানালে দুলাল ও শিকদার তাদেরকে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অধিক ভাড়া দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে রাজি করিয়ে নিয়ে যেত। পরে তাদের সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছামাত্র দুলাল ভাড়া দেওয়ার জন্য বিভিন্ন তালবাহানা করে বিলম্ব করতে থাকে এবং অপরদিকে কবির বিভিন্ন চেতনানাশক ঔষধ ব্যবহার করে ঐ ইজিবাইক চালককে অজ্ঞান করে ফেলে রেখে তার ইজিবাইক নিয়ে দ্রত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যেত।

পরবর্তীতে কবির ও দুলাল চোরাইকৃত ইজিবাইক তাদের অপর সহযোগী মো. সেলিমের নিকট হস্তান্তর করত। সেলিম চোরাইকৃত বিভিন্ন ইজিবাইক তার হেফাজতে রেখে সেগুলোর রং, আকৃতি ও কাঠামো পরিবর্তন করে পার্শবর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করত।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, কবিরের নেতৃত্বে চক্রটি প্রায় ১ বছর যাবৎ ঢাকার বিভিন্ন এলাকা হতে ইজিবাইক চুরি করে সেগুলোর বিক্রি করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় ১টি চুরির মামলা এবং গ্রেফতারকৃত সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, মাদক ও হত্যাসহ মোট ৪টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

;

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় সহযোগিতার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারের দাবিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলায় আইনি ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ওআইসি সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

সম্মেলনের শেষ দিনের অধিবেশনে পশ্চিম আফ্রিকার স্থানীয় সময় রোববার (৫ মে) বিকেলে ওআইসি মহাসচিব হিসেইন ব্রাহিম তাহা'র উপস্থিতিতে গাম্বিয়ার বিচার বিষয়ক মন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেল দাওদা এ জালও ওআইসি নেতৃবৃন্দের সামনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার অগ্রগতি তুলে ধরেন।

অধিবেশনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে রোহিঙ্গাদের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করায় গাম্বিয়াকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, আইন ও আর্থিক বিষয়ে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর সহযোগিতা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে।

সভায় সৌদি আরব, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, প্যালেস্টাইনসহ উপস্থিত সদস্য রাষ্ট্রসমূহের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

এ সময় গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মামাদৌ তাঙ্গারা মিয়ানমার হতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

;

কুষ্টিয়ায় অরক্ষিত রেলক্রসিং, বাড়ছে দুর্ঘটনা



এস এম জামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অরক্ষিত রেলক্রসিং এর কারণে প্রতিনিয়তই বাড়ছে দুর্ঘটনা। এসব রেলক্রসিংয়ে কোনো গেটম্যান নেই, তেমনি রাখা হয়নি কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। ফলে উন্মুক্ত রেলগেট দিয়ে যানবাহন এবং পথচারীরা চলাচল করতে গিয়ে প্রায়শই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। যার ফলে ঘটছে প্রাণহানি।

১৮৬৭ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ সরকার দর্শনা হতে জগতি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে সংস্কার করা হয় এই রেললাইন। পোড়াদহ থেকে রেলযোগে রাজশাহী, ঢাকা, রাজবাড়ী, খুলনা ইত্যাদি স্থানে যাওয়া আসা শুরু হয়। ১৮৯৭ সালে দর্শনা-পোড়াদহ সেকশনটি সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়। পর্যায়ক্রমে ১৯০৯ সালে পোড়াদহ-ভেড়ামারা, ১৯১৫ সালে ভেড়ামারা-ঈশ্বরদী এবং ১৯৩২ সালে ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর সেকশনগুলোকে ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়।

প্রতিদিন ৪০টির বেশি ট্রেন যাতায়াত করে পোড়াদহ জংশন দিয়ে। কিন্তু মান্ধাতার আমলের রেললাইনের কারণে মাঝে মধ্যেই দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।

গেলো ৩ মে কুষ্টিয়ার মিরপুরে রেললাইনের অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় একটি মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় নিহত সহিদুর রহমান (৪৫) নামে পুলিশের এক কর্মকর্তা নিহত হন। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের কাটদহচর রেল ক্রসিং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এসময় একটি মালবাহী ট্রেন মোটরসাইকেলসহ তাকে দেড় কিলোমিটার টেনে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই এ পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্য হয়।

নিহত সহিদুর রহমান মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই)। তিনি স্থানীয় মাজিহাট পুলিশ ক্যাম্পে ইনচার্জের দায়িত্বে ছিলেন। তার বাড়ি নড়াইল জেলায়।
ঠিক একই রেলক্রসিং এ ২০১৯ সালে খুলনা থেকে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস কাটদহচর রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় বালুবোঝাই একটি শ্যালো ইঞ্জিন চালিত ট্রলি রেলক্রসিংয়ে উঠে পড়ে। এ সময় ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই ট্রলির চালক ও হেলপার মারা যান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ মিরপুর উপজেলার কাটদহচর এলাকার মাঝখান দিয়ে রেললাইন গেছে। রেলগেটের ওপর দিয়ে আঞ্চলিক সড়ক থাকায় প্রতিনিয়ত স্থানীয়রা যাতায়াত করে থাকে। কিন্তু কোন রেলগেট এবং গেটম্যান না থাকায় এমন দুর্ঘটনায় পড়তে হয় মাঝে মধ্যেই। গতবছরও ট্রেন দুর্ঘটনায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। শিগগিরই রেলগেট দেওয়ার দাবি জানান তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা মীর আব্দুর রাজ্জাকা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এসব রেলগেটে গেটম্যানের ব্যবস্থা না থাকায় তাদের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পারাপার হতে হচ্ছে। এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়।

পোড়াদহ রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার শাহাদত হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কুষ্টিয়ায় প্রায় ৪২ কিলোমিটার রেলপথ আছে। এসবের মধ্যে অন্তত ১০টি অরক্ষিত রেলগেট রয়েছে। লোকবলের অভাবে সেসব স্থানে কোন রেলগেট এবং গেটম্যান নেই। তাছাড়া রেলের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন স্থানে পাকা সড়ক নির্মাণ করে। এসব স্থানে সড়ক নির্মাণের আগে রেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগোযাগ করলে হয়তো রেলগেট এবং গেটম্যান দেওয়া হতো।

তিনি আরও বলেন,কাটদহচর এলাকায় দুর্ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর রেল সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি জানতে পেরেছি সেখানে শিগগিরই রেলগেট নির্মাণ করা হবে। এজন্য গুমটি ঘর (গেটম্যান বাসস্থান) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

;

মিল্টনের আশ্রমের ব্যক্তিদের দায়িত্ব নিয়েছে শামসুল হক ফাউন্ডেশন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমে থাকা অনাথ শিশু, বৃদ্ধ ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসা সেবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনকে।

সোমবার (৬ মে) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মিল্টনের আশ্রমে যারা আছেন তাদের আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন থেকে সব ধরনের সেবা প্রদান করা হবে। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক সেখানে একজন চিকিৎসক থাকবেন। তিনি চিকিৎসা সেবা প্রদান করবেন। এর খরচও শামসুল হক ফাউন্ডেশন থেকে বহন করা হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মিল্টন তথাকথিত মানবতার ফেরিওয়ালা নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে অনাথ শিশু, বৃদ্ধ ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষকে পুঁজি করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে আসছিল। সেসব টাকা অসহায়দের সেবা না দিয়ে ব্যাংকে তার নিজের অ্যাকাউন্টে জমাতেন।

এসময় সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মিল্টনের আশ্রমে যে কয়েকজন অনাথ শিশু, বৃদ্ধ ও মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ আছে তাদের সহায়তা করতে একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে বলেছি। তিনি হলেন আলহাজ্ব সামছুল হক ফাউন্ডেশনের কর্নধার। গতকাল তিনি আমাদের কাছে এসেছিলেন। আমরা তাকে অনুরোধ করেছি তার ফাউন্ডেশন যেন চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার আশ্রমে যারা আছে তাদের থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার ব্যয়ভার আপাতত দেখভাল করেন।

;