কোন পথে হাঁটবেন বিমানের এমডি মোকাব্বির?



ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোকাব্বির হোসেন/ছবি: সুমন শেখ

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোকাব্বির হোসেন/ছবি: সুমন শেখ

  • Font increase
  • Font Decrease

গত রোববার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও হিসেবে যোগ দিয়েছেন মোকাব্বির হোসেন। তিনি সরকারের অতিরিক্ত সচিব।

বর্তমান দায়িত্ব নেওয়ার আগে মোকাব্বির হোসেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

২০০৭ সালে বিমান করপোরেশন থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে (পিএলসি) রূপান্তরের আগে দেশের আমলারাই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সাধারণত সরকারের একজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাই এ পদে নিয়োগ পেতেন- এটাই ছিল দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। ২০০৭ সালে সর্বশেষ এমডি হিসেবে যুগ্ম সচিব ড. এমএ মোমেন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি প্রশাসক নিয়োগের ক্ষেত্রে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠানটি চালিয়েছিলেন। কিন্তু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা করতে পারেননি। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ালাইন্স বিমানের যাত্রা শুরু হয়। তখন থেকে সরকারের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারাই এয়ারলাইন্স প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিমান একটি লোকসানি সংস্থার খাতায় নাম লিখিয়েছে। বিমানের লোকসান নিয়ে দেশের গণমাধ্যমে অজস্র সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। একপর্যায়ে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে প্রতিষ্ঠানটিকে লোকসানের চক্র থেকে বের করতে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তর করা হয়। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করাও ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। যদিও এর শতভাগ মালিকানা সরকারের হাতেই রাখা হয়। একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালনা করাই ছিল এর উদ্দেশ্য। আর এজন্যই এ খাতে কাজ করা অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দেওয়া। পরিকল্পনা অনুযায়ী যাত্রাও শুরু করে বিমান। ২০১৩ সালে এজন্য ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও ইতিহাদ এয়ারওয়েজসহ স্বনামধন্য বিভিন্ন এয়ারলাইন্সে কাজ করা ২০ বছরের বেশি অভিজ্ঞ কেভিন স্টিলকে নিয়োগ দেওয়া হয় বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে। তিনিই ছিলেন প্রথম বিদেশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নিয়োগ পেয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছিলেন সময় মতো ফ্লাইট ছাড়ার ওপর এবং অন টাইম ফ্লাইট ডিপার্চার প্রায় ৭০ শতাংশে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু বিমানের মতো প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ আমলাতান্ত্রিক চেহারা মাত্র দুই বছরের মধ্যে বদলে ফেলা সম্ভব নয়। তাছাড়া তিনি যেসব জায়গায় হাত দিতে চেয়েছিলেন, তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় স্বার্থান্বেষী মহল। তাদের থেকে আসে নানা বাধা। আর তাই দুই বছরের মেয়াদে নিয়োগ হলেও মাত্র এক বছরের মধ্যেই তাকে বিদায় নিতে হয়। এরপর ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ও এয়ার এরাবিয়া এয়ারলাইন্সের মতো খ্যাতনামা এয়ারলাইন্সে কাজ করা কাইল হেউডকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনিও এক বছরের মধ্যে বিমান থেকে বিদায় নেন। এরপর আবার দেশীয় লোককে নিয়োগ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সর্বশেষ সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মোসাদ্দেক আহমেদের বিরুদ্ধে পাইলট নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিমানের পরিচালনা পর্ষদ তাকে সরিয়ে দেয়।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এখন মূলধন সংকটে রয়েছে। শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটির মূলধনের চেয়ে ঋণ কয়েক গুণ বেশি হওয়ায় তার ঋণ নেওয়ার যোগ্যতাও হারিয়েছে। মূলত মূলধনের চেয়ে ঋণ বেশি হওয়ার কারণেই এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এক হিসেব থেকে দেখা গেছে, বিগত ১০ বছরে বিমান ছয় বছরই লোকসান দিয়েছে। এ সময়কালে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের লোকসানের পরিমাণ প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। বারবার লোকসানের ফলে প্রতিষ্ঠানটি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না। টাকার অঙ্কে তা এক হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। আর তিন বছরে লাভের পরিমাণ ৫৫৯ কোটি টাকা। লাভ থেকে লোকসান বিয়োগ করলে এ সময়কালে লোকসানের পরিমাণ ৯০০ কোটি টাকা।

লোকসানের বাইরেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ) বিমানের দেনার পরিমাণ ২৫০০ কোটি টাকার ওপরে। লোকসান ও দেনার কারণে প্রতিষ্ঠানটি মূলধন সংকটে আবর্তিত। অবশ্য সর্বশেষ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে পাওনা হিসেবে ৫৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

২০১৭-১৮ অর্থ বছরেই বিমান লোকসান দিয়েছে ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ওই অর্থ বছরে বিমানের আয় ছিল ৪ হাজার ৯৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা আর ব্যয় ছিল ৫ হাজার ১৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৪৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ২৩৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও ২০১৪-১৫ সালে ২৭৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা লাভ করে বিমান।

২০১০-১১ অর্থ বছরে ২২৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা, ২০১১-১২ অর্থ বছরে ৯৪ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ১৯১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে বিমান।

সামনে লোকসানের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে আসাই এখন বিমানের বড় চ্যালেঞ্জ। বিমানের বর্তমান এমডি মোকাব্বির হোসেন কি লোকসানের চক্র থেকে বের হতে পারবেন? আমলারা ব্যর্থ হওয়াতেই ২০০৭ সালে বিমানকে পিএলসি করা হয় এবং বাণিজ্যক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরই এ পদে নিয়োগ দেওয়া শুরু হয়। ৩৫ বছর ধরে আমলারা যে প্রতিষ্ঠানটিকে চালাতে পারেননি, এটি নতুন করে বলার কিছু নেই। তারা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন বলেই মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ থেকে বের করে এটিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি করা হয়।

এখন প্রশ্ন, আবার কি বিমান সেই পুরনো পথেই হাঁটবে? প্রতিষ্ঠানের সিইও হিসেবে যোগদানের চার দিনের মাথায় গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের সভা কক্ষে তিনি প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন। ওই সংবাদ সম্মেলনের সংবাদ সংগ্রহের সুযোগ হয়েছিল। সেখানে তাকে দেখে টিপিক্যাল একজন আমলাই মনে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিমানের চতুর্থ বোয়িং উড়োজাহাজ উদ্বোধনের সময় বলেছিলেন, আরো দু’টি বোয়িং কেনার সুযোগ এসেছে আমাদের সামনে। এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কথার বাইরে একটি কথাও বলেননি। বিমানের বর্তমান ডিজিএম পিআর তাহেরা খন্দকারের বিরুদ্ধে সহযোগিতামূলক আচরণ না করার যে অভিযোগ, সে বিষয়ে সাংবাদিকরা একাধিক প্রশ্ন করলেও এমডি বারবার পেছনের তিক্ততা ফেলে সামনের দিকে তাকানোর কথা বলেন।

সত্যি বলতে একজন আমলা হিসেবে একজন যতটা দক্ষতার পরিচয়ই দেন না কেন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চালাতে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ লোকের কোনো বিকল্প নেই। যদি আমলা দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে তা লাভজনক সংস্থায় পরিণত করা যেত, তাহলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক, বাংলাদেশ টেলিকমিউনেকশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল), টেলিফোন শিল্প সংস্থাসহ (টেশিস) আরো যেসব বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তা যুগ যুগ ধরে লোকসানি না হয়ে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতো। এখন দেখার বিষয় বর্তমান এমডি একজন আমলা হয়ে তার পুরনো সহকর্মীদের দেখানো পথে হাঁটবেন নাকি টিপিক্যাল আমলাতন্ত্রের খোলস থেকে বের হয়ে বিমানকে তিনি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার পথে হাঁটতে পারবেন।

   

কষ্টিপাথর কিনে প্রতারিত হয়ে প্রতারকের ভায়রাকে অপহরণ, গ্রেফতার ৭



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝালকাঠির বাসিন্দা মোস্তফা হাওলাদার। পেশায় অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিভিন্ন ধাতব মুদ্রা সংগ্রহ করে বিক্রি করা। অপর দিকে ঢাকার বাসিন্দা খোকন হাজী। তিনিও ঠিকাদার পরিচয়ের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিভিন্ন ধাতব মুদ্রা কিনে পার্শ্ববর্তীদেশ ভারতে পাচার করে আসছিলেন। সম্প্রতি মোস্তফার কাছ থেকে প্রায় ৯৫ লাখ টাকায় মূর্তি ও ধাতব মুদ্রা কিনে প্রতারিত হন খোকন।

অপর দিকে নকল মূর্তি ও মুদ্রা বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যান মোস্তফা। ফলে খোকন প্রতারতি হয়ে মোস্তফাকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তার কোনো হদিস না পেয়ে এক সহযোগীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে টাকা আদায় করতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে আনোয়ারের হোসেন খান (৪৪)কে অপহরণ করে খোকন হাজী ও তার চক্রের সদস্যরা। টাকা নিয়ে আত্মগোপনে যাওয়া মোস্তফার ভায়রা ভাই অপহৃত আনোয়ার।

অভিযোগ পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা খোকন হাজীসহ সাত জনকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৩)। এ সময় অপহৃত আনোয়ারকে উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারকৃতরা হলো- মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূলহোতা হাজী ওয়াজী উল্লাহ্ খোকন (৬৫), মো. আরিফ হোসেন (৫৫), সাইফ উদ্দিন আহমেদ মিলন (৬২), সিরাতুল মোস্তাকিম (৫৮), মো. রুহুল আমিন (৬০), মো. জাকির হোসেন (৩০), ও মো. স্বাধীন (৫২)।

এসময় তাদের কাছ থেকে রিভলবার, ৮ রাউন্ড গুলি ও শটগান উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর এসব তথ্য জানান।


লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর বলেন, গত ১ মে রাত ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে খোকন হাজীর নেতৃত্বে ৮ থেকে ৯ জনের একটি অপহরণকারী চক্র দোকান কর্মচারী আনোয়ারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া এলাকায় খোকন হাজীর মালিকানাধীন ‘চুনকুটিয়া রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ অফিসের আটকে রাখে। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা আনোয়ারের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে পরিবারের কাছে ৯৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আনোয়ারের জীবন বাঁচাতে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করে অপহরণকারী চক্রের দেওয়া একটি ব্যাংক হিসাব নম্বরে পাঠায়। সাড়ে ১৭ লাখ টাকা পাওয়ার পরেও আরও টাকার দাবিতে নির্যাতন চালাতে থাকে। এমনকি অপহরণকারীরা টাকা না দিলে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এই অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৩ এর গোয়েন্দা দল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অপহরণকারী চক্র ও অপহৃতের অবস্থান শনাক্ত করে। খোকনের অফিসে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৭ জনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানান, আসামি খোকন হাজী ২০১৫ সাল থেকে দেশের মূল্যবান কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রা ভারতে পাচার করে আসছিল। তার এ অপকর্মের সহযোগী ছিল ভারতীয় এক নাগরিক যার নাম মিলন চক্রবর্তী। যিনি নিজেকে একটি বিখ্যাত ভারতীয় কোম্পানীর এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন। কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রার মূল ক্রেতা ছিল মিলন চক্রবর্তী। খোকন হাজী ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতব মুদ্রার ৭টি চালান ভারতে পাচার করেন। খোকন হাজীর কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতবমুদ্রা সংগ্রহের কাজে নাঈম (৩৫), মোস্তফা হাওলাদার(৫০) ও রবি নামের কয়েকজন সহযোগী বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করতো। বিনিময়ে তাদের মাসে ৩০ হাজার টাকা করে বেতন দিত খোকন।

তিনি আরও জানান, গত ১ মে মোস্তফা হাওলাদার ও নাঈমের একজন সহযোগী মোবাইল ফোনে খোকন হাজীকে বলেন, মোস্তফা হাওলাদারের ভায়রা-ভাই ভিকটিম আনোয়ার ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকায় একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করে। তাকে ধরতে পারলে মোস্তফা হাওলাদারের সন্ধান পাওয়া যাবে। এই তথ্য পেয়ে খোকন হাজী তার সহযোগীদের নিয়ে আনোয়ারকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খোকন হাজীর নেতৃত্বে একটি সাদা মাইক্রো বাসে করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আনোয়ারকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় নিয়ে এসে মুক্তিপণ দাবি করে।

র‍্যাব-৩ এর সিও আরও জানান, খোকন হাজী একজন ঠিকাদার। মতিঝিল এলাকায় তার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। খোকন হাজী ১৯৭৫ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে। তার ২ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। ঠিকাদারী ব্যবসার আড়ালে খোকন হাজী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য ধাতব মুদ্রার কারবার করে আসছিল। এই অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার সহযোগীরাও অবৈধ কষ্টিপাথর ও ধাতব মুদ্রার কারবারের জড়িত। ভিকটিমকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর।

;

গাজীপুরে রেল দুর্ঘটনা: ৩ ঘণ্টা পর এক লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের কাজীবাড়ি এলাকায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর পাশের এক লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা কবলিত এলাকা ত্যাগ করে জয়দেবপুর জংশনে যাত্রাবিরতি দিয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই আন্ত:নগর আরও একটি ট্রেন ছেড়ে গেছে।

শুক্রআর (৩ মে) জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাজীবাড়ি এলাকায় একটি তেলবাহী ট্রেনের সাথে টাঙ্গাইল কমিউটারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে জয়দেবপুর থেকে ঢাকামুখী আউটার সিংগন্যাল বন্ধ হয়। তবে দুর্ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর দুটি ট্রেন পাশের এক লাইন দিয়ে পারাপার হয়েছে। রেল লাইনে থাকা যাত্রীবাহী ট্রেনের বগি এবং তেলবাহী ট্রেনের বগি সরানোর জন্য ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আসছে।

এর আগে সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে জেলার জয়দেবপুর জংশনের পাশেই কাজীপাড়া এলাকায় থেমে থাকা তেলবাহী ট্রেনের সাথে টাঙ্গাইল কমিউটারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার পর গাজীপুর জেলা প্রশাসক পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, কেন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, এসব বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

;

গাজীপুরে ট্রেন সংঘর্ষ, ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনের কাজীপাড়া এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উদ্ধার সহায়তায় ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি সদর দপ্তর।

শুক্রবার (৩ মে) বেলা পৌনে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের কারণ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম।

স্থানীয়রা জানান, ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি জয়দেবপুর রেল স্টেশন পার হলে কাজীপাড়ায় আউটার সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয়। 

এতে ট্রেনের কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া যাত্রঅবাহী ট্রেনটির ৫টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ, গাজীপুর ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ শুরু করছে। আহতদের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সংঘর্ষের এই ঘটনায় উদ্ধার সহায়তা নিশ্চিত করতে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

;

বৃষ্টির পরও ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা তীব্র দাবদাহের পর রাজধানীতে বৃষ্টির পরও বাতাসের মান 'অস্বাস্থ্যকর' হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ৯টা ৩৩ মিনিটে ১৫৮ এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ষষ্ঠ।

১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে বাতাসের মান 'সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর', ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে 'খুব অস্বাস্থ্যকর' বলা হয়, ৩০১+ একিউআই স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

ভারতের দিল্লি, নেপালের কাঠমান্ডু ও পাকিস্তানের লাহোর যথাক্রমে ৩১৮, ১৯৭ ও ১৯৩ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম তিনটি স্থান দখল করেছে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের ৫টি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো- ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএইচও) অনুসারে, বায়ু দূষণের ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষ মারা যায়।

;