রোহিঙ্গা ভোটার: নেপথ্যের চক্র ধরতে বিশেষ অভিযান



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা | ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা | ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা যাতে কোনভাবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ভোটার করার কাজের সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে নিয়মিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে ইসি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ইতোমধ্যে এ কাজে জড়িত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি চট্টগ্রামে লাকী নামে একজন রোহিঙ্গা নারী স্মার্টকার্ড আনতে গেলে সার্ভার থেকে জানা যায় তার এনআইডি সঠিক নয়। এরপর সন্দেহ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় তিনি রোহিঙ্গা। এরপর তাকে পুলিশে দেওয়া হয়। এর কয়েক দিন পর সার্ভারে আরও ৪৬ জনের অসম্পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কারও ফিঙ্গার প্রিন্ট ঠিক নেই, কারও ফরম সঠিকভাবে আপলোড করা হয়নি। তাই সেগুলো চিহ্নিত করে ব্লক করে রাখা হয়েছে। পরে এ ঘটনা তদন্তের জন্য ইসি সচিবালয় থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

একই সঙ্গে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) একটি বিশেষ টিম গঠন করে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে সেই টিম কাজ শুরু করে এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজনকে শনাক্ত করে। পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় দুই জনকে আটক করা হয়। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ইসির চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা কার্যালয়ের অফিস সহকারী জয়নাল আবেদীনকে আটক করা হয়। আটকদের তথ্যের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান চলছে, সেখানে নেপথ্যে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধানও মিলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে আটকের সংখ্যা ও তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না।

সূত্র জানায়, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি প্রভাবশালী চক্র রোহিঙ্গাদের ভোটার করার জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করছে। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে এই চক্রকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সার্বিক সহযোগিতা করছেন ইসির কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা।

এনআইডি উইং সূত্র জানায়, তথ্য সংগ্রহকারী দ্বারা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও কাগজপত্র সুপারভাইজার দ্বারা যাচাই করা হয়। সেসব তথ্য শনাক্তকারী দ্বারা শনাক্ত এবং যাচাইয়ের পর প্রুফ রিডিং, অ্যাডজুডিকেট, বায়োমেট্রিকসের দ্বৈততা পরীক্ষা করে খসড়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। আর বায়োমেট্রিকস প্রদানের সময় ছবি ও চার আঙুলের পরিবর্তে চোখের আইরিশ ও দশ আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়।

তবে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ৩২টি বিশেষ এলাকার নাগরিকদের তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য প্রতিটি এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এছাড়াও বিশেষ এলাকার নাগরিকদের নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত নিবন্ধন ফরমের অতিরিক্ত বিশেষ ফরম রয়েছে। সেখানে পিতা-মাতার পাশাপাশি চাচা-চাচি, মামা-মামি, ফুফা-ফুফুসহ আত্মীয়স্বজনের নাম দিতে হয়।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক নিবন্ধন কার্যক্রমের পর ভোটার নিবন্ধনের আগে ইসির কাছে রক্ষিত ১১ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গার ডাটাবেজের সঙ্গে বায়োমেট্রিকসের দ্বৈততা পরীক্ষা সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গা ডাটাবেজ পরীক্ষার পর কমিশনের নিজস্ব ডাটাবেজ পরীক্ষা করা হয়, এরপর সব ঠিক থাকলে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চূড়ান্ত হয়। ফলে এসব ধাপ পেরিয়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির সুযোগ থাকে না। তবে প্রভাবশালীদের সহায়তায় অনেক অসাধু চক্র এটি করার চেষ্টা করে, কিন্তু যখন রোহিঙ্গা ডাটাবেজে এটি পরীক্ষা করা হয় তখন সেটি অবশ্যই ধরা পড়বে। সেক্ষেত্রে ধরা পড়লে সেই ভোটার তথ্যটি সঙ্গে সঙ্গে ব্লক করে দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানেও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রকে ধরতে অভিযান চলছে।

এদিকে নতুন করে যাতে কোন রোহিঙ্গার নাম ভোটার তালিকায় ঢুকতে পারে না পারে সেজন্য ৩ সেপ্টেম্বর থেকে সাতদিন সার্ভারে নতুন ভোটারদের তথ্য আপলোড করার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়। এছাড়া নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তিতে সতর্কতা জারি করে সব আঞ্চলিক, জেলা ও থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের চিঠি দেবে কমিশন।

এ বিষয়ে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় ঢোকানোর সুযোগ নেই। তবে যারা এটি করার চেষ্টা করেছে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। আমাদের কাছে ওই তিনজনের বাইরে কে বা কারা আটক আছে, তার পরিচয় ও সংখ্যা তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করতে চাই না। আমরা পুরো চক্রকে ধরতে বদ্ধপরিকর। যেহেতু কমিশনের একজন অফিস সহকারীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তার পরিচয় আমরা সবাইকে জানিয়েছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সহায়তা করছে, পুরো চক্রটিকে ধরতে প্রতিদিনই বিশেষ অভিযান চলছে।

ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান বলেন, কক্সবাজারের আশপাশের ৩২টি উপজেলাকে বিশেষ এলাকা ঘোষণা করেছি। সেখানে গঠিত বিশেষ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে বার বার সতর্ক করেছি, যাতে বিদেশি বা রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকায় আসতে না পারে। অভিযুক্ত যাদের আটক করা হয়েছে তারা রোহিঙ্গাদের ভোটার করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কাউকে ভোটার করতে পারেননি এবং আইডি কার্ডও দিতে পারেননি। শুধু তারা উদ্যোগ নিয়েছে, সেজন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আরও কেউ এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত আছে কি না, সেটাও আমরা দেখছি।

বিদ্যমান আইন অনুসারে বর্তমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ২০১৯ এর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি। ৩১ জানুয়ারি প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা, যার ভিত্তিতে বাংলাদেশি নাগরিক ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হবেন।

   

ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রতিবন্ধী স্কুল বাস্তবসম্মত নয়: দীপু মনি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ইউনিয়ন ভিত্তিক প্রতিবন্ধী স্কুল করা বাস্তবসম্মত নয়। প্রতিবন্ধীদের জন্য আমাদের চেষ্টা হলো মূলধারার বিদ্যালয় গুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করা। যারা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বা অটিজম বা যাদের এই ধরনের সমস্যা আছে তাদের মধ্যে যাদের সাধারণ স্কুলে যাওয়ার নুন্যতম সক্ষমতা আছে, তাদেরকে সেখানেই দিয়ে দেওয়া। সেই স্কুলের শিক্ষকদেরকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেন তারা একসাথে পড়াতে পারেন। এতে সাধারণ শিশুরাও সহমর্মী মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। আর যাদের পক্ষে কোনভাবেই সাধারণ স্কুলে যাওয়া সম্ভব না, প্রতিবন্ধী বা বিশেষ স্কুল শুধুমাত্র তাদের জন্য। সেজন্য শিক্ষক তৈরি করা বা কেয়ারগিভার তৈরি করা কিন্তু খুব সহজ কাজ নয়। কাজেই প্রতি ইউনিয়নে এরকম একটি করে স্কুল তৈরি করা খুব দুঃসাধ্য একটি ব্যাপার হবে।

শনিবার(১৮ মে) বিকেলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দীপু মনি কুড়িগ্রাম সদরের উত্তরবঙ্গ জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

দীপু মনি এব্যাপারে আরও বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের কিছু বিশেষ স্কুল আছে। আমরা হুজুকে জাতি। একটা কিছু করা শুরু হলে আমরা সবাই মিলে সেটা করা শুরু করি। সারাদেশে এমন অনেক স্কুল গজিয়ে যাচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে যে সবগুলোই খুব ভালো বা শিশুদের জন্য বিশেষ স্কুল তা নয়। আমরা সেটারও একটা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। যেগুলো প্রকৃত অর্থেই বিশেষ স্কুল সেগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা আমরা নিশ্চয়ই দেব। কিন্তু আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে সাধারণ বিদ্যালয়ে যতদূর সম্ভব বিশেষ শিশুদেরকে আমরা যেন নিয়ে যেতে পারি।

সামনের অর্থবছরের জন্য আসন্ন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় থাকা নাগরিকদের ভাতার অর্থ বৃদ্ধি করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব হবে না। ভাতার পরিমাণটা আসলে কোনও ভাতাভোগীর জন্য একমাত্র অবলম্বন নয়। অনেকগুলো কারণে ভাতা দেওয়া হয়। তার মধ্যে অন্যতম একটি হলো তিনি (সুবিধাভোগী) যেন নিজেকে অসহায় মনে না করেন। যেন ভাবেন, সরকার তার পাশে আছে।’ অবশ্যই দেশ ও সরকারের সক্ষমতা বাড়ার সাপেক্ষে ভবিষ্যতে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের তথ্য নিয়ে লুকোচুরি ও বিভিন্ন অনিয়মের ব্যাপারে সাংবাদিকদের অভিযোগের বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘অবশ্যই এ ধরনের অভিযোগ গুরুতর। বিষয়টি নিয়ে আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো।’ তবে ভাতাভোগীদের তালিকা প্রকাশ কিংবা তথ্যের সহজলভ্যতার বিষয়ে অধস্তন কার্যালয়কে তাৎক্ষণিক স্পষ্ট কোনও নির্দেশনা দেননি মন্ত্রী।

উত্তরবঙ্গ জাদুঘর পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী জাদুঘরে রক্ষিত ১৯৭৩ সালে কুড়িগ্রামে দেওয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের লিখিত প্রতিলিপি দর্শনার্থীদের জন্য আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করেন। এরপর তিনি শেখ রাসেল পৌর অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত কুড়িগ্রামের কৃতিসন্তান অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকনকে দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। পরে রাত ৯ টার দিকে মন্ত্রী কুড়িগ্রাম সরকারি শিশু পরিবার পরিদর্শন করেন।

;

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতির মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চিকিৎসাধীন অবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের এক হাজতি মারা গেছেন। মারা যাওয়া হাজতি নীলফামারীর ডোমার থানার মটুকপুর গ্রামের রুমেল হোসেনের মেয়ে আমিনা বেগম (৪০)। কারাগারে তার হাজতি নং- ৩৯৪/২৪।

শনিবার (১৮ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

কারাগার সূত্রে জানা গেছে, মহিলা কারাগারে বন্দি আমিনা বেগমের হঠাৎ বুকে ব্যথা হয়। পরে তাৎক্ষণিক কারাগার থেকে তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার শাহজাহান মিয়া বলেন, বুকে ব্যথা উঠলে আমিনাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। কারাবিধি মেনে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

;

শিশু জায়েদ হাসানের দায়িত্ব নিচ্ছেন না মামা, দেওয়া হচ্ছে দত্তক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ভালুকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত মা ও বেঁচে যাওয়া দেড় বছরের শিশু জায়েদ হাসান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা এখন পুরাপুরি সুস্থ। উচ্চ আদালত শিশুটিকে তার মামার জিম্মায় দেওয়ার নির্দেশ দিলেও জায়েদের সুন্দর ভবিষ্যত ও নিজের পরিবারের অবস্থার কথা চিন্তা করে দায়িত্ব নিচ্ছেনা মামা রবিন মিয়া। এ কারণেই দেওয়া হবে দত্তক।

আগামীকাল রবিবার(১৯ মে) শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভার আগ পর্যন্ত দত্তক দেওয়ার জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে ও সব আবেদন বোর্ড সভায় পেশ করা হবে এবং আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে একটি পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে।

শিশু জায়েদের মামা রবিন মিয়া বলেন আমি পেশায় একজন পিকআপ চালক। মা, বাবা পরিবার ও তিন সন্তান নিয়ে অনেক কষ্ট করে দিন চলে। তাই আমি চাই না আমার কাছে এসে ভাগিনার সুন্দর জীবনটা নষ্ট না হয়। আমি চাই সে একজন ভালো মানুষের ঘরে গিয়ে মানুষের মত মানুষ হোক আমি শান্তি পাবো। সেজন্যই শিশু কল্যাণ বোর্ডের কাছে একটি অনাপত্তি পত্র দিয়েছি।

ময়মনসিংহ জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক ও শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব আব্দুল মজিদ বলেন জায়েদের মামা চান ভাগ্নের সুন্দর ভবিষ্যত। এজন্য শিশু কল্যাণ বোর্ডের প্রতি আস্থা রেখে একটি অনাপত্তিপত্র দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি পরিবার জায়েদকে পেতে আবেদন করছে। তাদের মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে আগামীকালের বোর্ড সভা সিদ্ধান্ত হবে জায়েদকে কোন পরিবারে দেওয়া হবে ।

উল্লেখ্য, গত ১০ মে রাত তিনটার দিকে ভালুকা উপজেলার স্বয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় শিশু জায়েদ ও তার মা জায়েদা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ভোররাতেই সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। শিশুটিকে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ও শিশুর মা'কে হাসপাতালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। পরদিন সকালে শিশুটির মা মারা যায়। তবে,আহত শিশুটি হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডেই চিকিৎসাধীন থাকে।

;

যশোরে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করায় যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক ও যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা আনোয়ারকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

জানাযায়, গত বৃহস্পতিবার ১৬ মে প্রেসক্লাব যশোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জামাতাও বিএনপি করেন। তার এমন একটি বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে বক্তব্য দেওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলো যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে দলীয় পদ থেকে বাতিল ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শুক্রবার রাতে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদারের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদারের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যশোর সদর উপজেলা যুব মহিলা লীগের আহবায়ক ও আসন্ন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফাতেমা আনোয়ার বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এই সাংবাদিক সম্মেলনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

তার বক্তব্যের বিষয়টি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন এবং সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তাকে যুব মহিলা লীগের আহবায়ক পদ ও প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলসহ কেন্দ্রের কাছে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর সুপারিশও করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ফাতেমা আনোয়ারের স্বামী আনিসুর রহমান লিটন ওরফে ফিঙ্গে লিটন পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেডভুক্ত আসামি। তিনি খুন-গুম, মাদক, সোনা, অস্ত্র চোরাচালানসহ একাধিক অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে দেশের বাইরে পলাতক অবস্থায় আছেন। দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় তার নাম রয়েছে। তিনি ইন্টারপোলেরও ওয়ান্টেড আসামি।

এই বিষয়ে ফাতেমা আনোয়ার সাংবাদিকদের বলেন, একজন রাষ্ট্রনায়ককে নিয়ে কেউ কথা বা মন্তব্য করবে এটা রাষ্ট্রের নাগরিকের অধিকার। আমার বিরুদ্ধে জেলা আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা আমাকে অবিচার করছে বলে মনে করছি।

;