হা‌তির‌ঝি‌লে উল্টোপথে চলাচ‌লে বাড়‌ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি



রা‌কিবুল ইসলাম, স্টাফ ক‌রেসপ‌ন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
হাতিরঝিলে উল্টোপথেই গাড়ি চলাচল করছে, ছবি: বার্তা২৪

হাতিরঝিলে উল্টোপথেই গাড়ি চলাচল করছে, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর পূর্ব ও প‌শ্চিমের যোগা‌যোগ মাধ্যম দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিলের চারপা‌শে নিত্য‌দিন বে‌ড়ে চল‌ছে উল্টোপ‌থে চালকদের চলাচ‌লের প্রবণতা। ফ‌লে প্রায়সই ছোটখাটো দুর্ঘটনার ঘটনা ঘ‌টে হা‌তিরঝি‌লে। উল্টোপথে চলাচ‌লের প্রভা‌বে হা‌তিরঝিলের স‌ঠিক প‌থে চলাচলকারী চালক‌দের আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। সে সঙ্গে উল্টোপথের চালকদের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হন সঠিক পথের চালকেরা।

সপ্তাহ ধ‌রে স‌রেজ‌মি‌নে দেখা যায়, হা‌তিরঝি‌লের বাড্ডা সং‌যোগস্থল, তেজগাঁও মহাখালী সং‌যোগস্থল, মধুবাগ সং‌যোগস্থল, মহানগর প্র‌জেক্ট সং‌যোগস্থল থে‌কে প্র‌তি‌দিনই উল্টোপ‌থে অসংখ্য গা‌ড়ি চলাচল করে।

মোটরসাইকেল, সিএন‌জি, মাইক্রোবাস থেকে শুরু করে সবধরনের গাড়িই প্রায় সময় উল্টোপ‌থে হাতিরঝিলে চলাচল করে। কখনও কখনও হঠাৎ দেখ‌লে ম‌নে হ‌বে, যেন দুই লে‌নের রাস্তায় চলাচল কর‌ছে গা‌ড়িগু‌লো। সাধারণ জনগণ এমন‌কি আইন- শৃংখলাবাহিনীর সদস্যরাও ছু‌টে চ‌লে উল্টোপথে। ত‌বে অবাক হবার বিষয় ছিল পুলি‌শের ট্রাফিক সার্জেন্ট‌দেরও উল্টোপ‌থে চল‌ার প্রবণতা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/25/1561473846837.jpg

হা‌তির‌ঝিল ঘুরে দেখা যায়, যেখা‌নে সারা ঢাকায় পু‌লিশ তৎপর মোটরসাইকে‌লের যাত্রী‌দের হেল‌মেট নি‌শ্চিত কর‌তে সেখা‌নে হা‌তির‌ঝি‌লে হেল‌মেটবি‌হীন বাইকা‌রের সংখ্যা অগণিত।

হা‌তির‌ঝি‌লের মহানগর প্র‌জেক্ট সংলগ্ন এক‌টি ডিপার্ট‌মেন্টাল স্টো‌রের মা‌লিক নাম প্রকাশ না করার শ‌র্তে বার্তা২৪.কম‌কে ব‌লেন, ‘স্থানীয় পোলাপান এমন যেন উল্টো আর স‌ঠিক সব পথই তা‌দের কা‌ছে স‌ঠিক। শুধু তারা নয় উবার, পাঠাও বা অন্য যেসব বাইক সা‌র্ভিস আছে তারাও চ‌লে উল্টোপ‌থে। ত‌বে মা‌ঝে মা‌ঝে সার্জে‌ন্টের কা‌ছে ধ‌রা প‌ড়ে অনেককে মামলা খে‌তেও দে‌খে‌ছি। কিন্তু পু‌লিশতো সবসময় থাকে না।'

‌তেজগাঁও সং‌যোগস্থ‌লের খুচরা দোকানী নাম প্রকাশ না করার শ‌র্তে বার্তা২৪.কম‌কে ব‌লেন, ‘সন্ধ্যার দিকে বাইক, সিএন‌জি, মাইক্রোবাসের উল্টোপ‌থে চলাচল শুরু হয়। যারা উল্টোপ‌থে চ‌লেন তারা খুব সতর্ক থা‌কলেও প্রায়ই এখা‌নে দুর্ঘটনা ঘ‌টে। য‌দিও এখন পর্যন্ত মারা যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা চ‌োখে প‌ড়ে‌নি। ত‌বে যেমনটা দে‌খি তা‌তে ক‌বে না জা‌নি কোন দুর্ঘটনায় কতজন মারা যায় আল্লাহ জা‌নে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/25/1561473864624.jpg

হা‌তির‌ঝি‌লের নিরাপত্তার দ্বা‌য়িত্বরত আনসার সদস্য সাইফুল হো‌সেন বার্তা২৪.কম‌কে ব‌লেন, ‘এখা‌নে যারা উল্টোপ‌থে চ‌লে তারা সবাই সাধারণ পাব‌লিক তা নয়। আবার সবাই যে পু‌লিশ বা ক্ষমতাধর তাও নয়। কিন্তু সবাই এ প‌থে উল্টো চলার সাহস ক‌রে কারণ সন্ধ্যার দিকে এখা‌নে বাধা দেওয়ার কেউ থা‌কে না। ত‌বে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা যা‌তে না ঘ‌টে সেজন্য এখনই সময় সবার সতর্ক হওয়া। প্র‌য়োজ‌নে পু‌লি‌শের নিয়মিত পাহারা রাখ‌তে হ‌বে।’

স্থানীয় ও হা‌তির‌ঝি‌লের নিয়মিত যারা ঘোরাফেরা করেন তা‌দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হা‌তির‌ঝি‌লে ভোরবেলা আর সন্ধ্যার প‌র (অফিস ছুটির সময়টা) থেকে রা‌ত পর্যন্ত উল্টোপ‌থে চলাচ‌লের প্রবণতা বেশি দেখা দেয়। তবে দিনভরই কম বেশি উল্টোপথে চালকেরা গাড়ি চালায় হাতিরঝিলে।

সন্ধ্যার প‌রে হাঁট‌তে আসা এক‌টি বেসরকা‌রি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক না‌সির উদ্দীন বার্তা২৪.কম‌কে ব‌লেন, ‘কা‌কে কী বল‌ার আছে? এখা‌নে যখন উল্টোপ‌থে পু‌লিশ নি‌জেই চলাচল করে, তখন লজ্জা লাগে। এভা‌বে চল‌তে পা‌রে না। হা‌তিরঝিল ঢাকার গর্ব, এখা‌নে এমন অনিয়ম মে‌নে নেওয়া যায় না।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/25/1561473981073.jpg

তিনি আরও বলেন, ‘বাচ্চারা কিছু‌দিন নিরাপদ সড়ক নি‌য়ে আন্দোলন করার পর আমরা সবাই খুব স‌চেতন হ‌য়ে গেলাম, ব্যাপক তোড়জোড়। এরপর কী হ‌লো? সড়‌কে উল্টোপ‌থে চলা, এলো‌মে‌লো পা‌র্কিং, স্ট‌পেজবিহীন যাত্রী ওঠানামা সবতো ঠিকই চল‌ছে। পু‌লিশ শুধু হেল‌মেট খুঁজেন! আমা‌দের নি‌জের নিরাপত্তা যখন আমরা নি‌জেই বু‌ঝিনা তখন যতকথাই ব‌লি লাভ হ‌বে না।’

হা‌তির‌ঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর র‌শিদ বার্তা২৪.কম‌কে ব‌লেন, ‘আমা‌দের সাম‌নে যখন প‌রে আমরা আইনের আওতায় নি‌য়ে আসি তাদের। কিন্তু বিষয়টা মূলত ট্রা‌ফিক বিভা‌গের। আমা‌দের দ্বা‌য়িত্ব আইনশৃঙ্খলা দেখা, এসব দেখার জন্য ট্রা‌ফিক আছে। এখা‌নে দু’একজন ট্রা‌ফিক সা‌র্জেন্ট দি‌লে সবঠিক হ‌য়ে যা‌বে।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ট্রা‌ফিক প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ ক‌মিশনার ম‌ফিজ উদ্দীন বার্তা২৪.কম‌কে ব‌লেন, ‘আমার জানা ছিল না। ত‌বে উল্টোপ‌থে চলাচ‌লের ঘটনা ঘট‌লে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

   

ফরেনসিক টেস্ট বুধবার, ডিএনএর জন্য ডাকা হবে আনারের মেয়েকে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনস আবাসনের যে ভবনে বাংলাদেশের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার খুন হয়েছেন, সেই সঞ্জীবা আবাসনের বিইউ ৫৬ ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে কিছু মাংসের টুকরো।

সেই উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরো ফরেনসিক স্টেটের জন্য বুধবারই (২৯ মে) ল্যাবে পাঠানো হবে। এই মাংস ‘মানুষ’র বলে প্রমাণ হলে ডিএনএ টেস্টের জন্য ডাকা হবে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনারের মেয়ে ডরিনকে। তারপরেই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে সেটি এমপি আনারের মরদেহের খণ্ডিত অংশ কি না।

মঙ্গলবার (২৮ মে) রাতে এমনটাই বলেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে মূল অপরাধীর কাছ থেকে যে যে তথ্য আমরা পেয়েছি; সেসব তথ্য নিয়েই কলকাতায় এসেছিলাম। আর সে কারণে বাংলাদেশ থেকে এসেই আমাদের প্রথম কাজ ছিল সঞ্জীবা গার্ডেনসের বিইউ ৫৬ নম্বর ফ্ল্যাট পরিদর্শন করা। পরিদর্শনের পরেই আমাদের তদন্তের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি এবং কলকাতা পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম, এই ফ্ল্যাটের কারা প্লাম্বিং এবং বিল্ডিংয়ের কাজটা করেছে তা জানতে। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি এবং পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের প্রতিটা দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছে।

তারপরই তাদের সহযোগিতায় এদিন সেপটিক ট্যাংক থেকে বেশ কিছু মাংসের টুকরো উদ্ধার হয়েছে। এটা ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হবে। তারপর ডিএনএ টেস্ট করা হবে। এরপরই আমরা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারব সেটি এমপি আনারের দেহ কি না।

হারুন আরও বলেছেন, এ বিষয়ে সংসদ সদস্যের মেয়ে ডরিন আমার কাছে ফোনকল করেছিলেন। আমি তাকে বলেছি তৈরি হওয়ার জন্য। আসার জন্য প্রস্তুত হতে বলেছি। হয়তো অল্প ক'দিনের মধ্যেই তিনি চলে আসবে।

ডিবিপ্রধান বলেন, কলকাতায় খুব দ্রুত ফরেনসিক রিপোর্ট বের হয়ে যায়। এরপরই মৃত এমপি আনারের মেয়ে এবং ভাইকেও ডাকা হতে পারে। তারপরই আমরা এ বিষয়ে আপনাদের জানাবো।

সিআইডির তথ্যমতে, এদিন সেপটিক ট্যাংক থেকে মাংসের সাথে কিছু চুলও উদ্ধার হয়েছে। এ বিষয়ে ডিবি প্রধান বলেন, আমরা পুরো বিষয়টা জানি। তবে ফরেনসিক বা ডিএনএর জন্য এক টুকরো মাংস হলেই যথেষ্ট।

তিনি আরও বলেছেন, আমরা এখনই তল্লাশির কাজ শেষ করছি না। যেমন খাল বা বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশির কাজ চলছে, সেটা চলতে থাকবে।

সিদ্ধেশ্বর মন্ডল বলেন, আমার ভগ্নীপতি ভূষণ শিকারী ট্যাংক পরিষ্কার করার দায়িত্বে ছিল। উদ্ধার হওয়া মাংস ওজনে তিন-চার কেজির মতো হবে।

বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, ডিবি ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাহেদুর রহমান।

;

ফেনী-১ আসনের সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড উদ্বোধন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে নতুন এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম। এবার থেকে নিজ নির্বাচনী এলাকার সব উন্নয়ন কর্মসূচি সংসদ সদস্যর উপস্থিতিতে উদ্বোধন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

ইতোমধ্যে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন শুরু করেছেন তিনি।মঙ্গলবার (২৮ মে) পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের জংগলঘোনা এলাকায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন চিত্র দেখা গেছে। সংসদ সদস্যর উপস্থিতিতে প্রধান অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম।

জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান অতিথি করে ফেনী-১ আসনের সব উন্নয়ন কর্মসূচি উদ্বোধনের উদ্যোগ নেন সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম।তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম দিনে পরশুরাম উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের জংগলঘোনা এলাকায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্বোধন করা হয়েছে।

এছাড়াও আগামী দুইদিন খন্ডল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অতিরিক্ত শ্রেণি কক্ষ উদ্বোধন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের ভুঞা, পরশুরাম কবি শামসুন নাহার মাহমুদ পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হাইজিন কর্ণারের উদ্বোধন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন শাহরিয়ার।

এ বিষয়ে ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন নাসিম বলেন, যারা এ দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন তাদের এখনই সম্মানিত করার সময়।আগামী ২০ বছর পরে হয়তো আমরা তাদের পাবো না। এজন্যই আমার নির্বাচনী এলাকার সব উন্নয়ন কর্মসূচি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাধ্যমে উদ্বোধন করার উদ্যোগ নিয়েছি।আগামীতে তাদের নিয়ে একটি মিলনমেলা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্যসের এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগে খুশি বীর মুক্তিযোদ্ধারা। বৃদ্ধ বয়সে নিজেদের সম্মানিত করায় সংসদ সদস্যদের প্রশংসা করছেন তারা।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আগে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে অতিথি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার কথা শুনেছি। তবে আজকে আমাকে অতিথি করে ব্যতিক্রমী নজির স্থাপন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। এ অনুভূতি অনেক আনন্দের।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল বশর মজুমদার তপনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।

;

উপকূলবাসীর নির্ঘুম রাত ফুরাচ্ছে, বাঁশখালীতে হচ্ছে বেড়িবাঁধ



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদ সদস্য হয়েই মুজিবুর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন আগামী তিন বছর বাঁশখালীবাসীর জন্য কাজ করে যেতে চান। এই সময়ে জনসমাবেশে অতিথি হয়ে না যাওয়ার কথাও বলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, যদি মনে হয় কাজ করেছেন তখন তিনি নিজ থেকেই জনসম্মুখে আসবেন, কথা বলবেন। শুধু মুখে নয়, উপজেলায় চষে বেড়িয়ে নানা কাজ করে যাচ্ছিলেন।

তবে সোমবার (২৮ মে) মুজিবুর রহমানের 'কাজ করার' অন্যতম বড় পদক্ষেপের সাক্ষী হলো চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার মানুষ। বাঁশখালীবাসীর উপকূলের মানুষের প্রাণের দাবী ছিল-টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ। অবশেষে তাঁর প্রচেষ্টায় মিলল বাঁশখালীর বেড়িবাঁধ প্রকল্পের জন্য ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প। একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এই প্রকল্প।

মুজিবুর রহমান তাঁর ফেসবুক পেজে বিষয়টি তুলে ধরতেই বাঁশখালীর মানুষেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন।

ফেসবুক পোস্টে মুজিবুর রহমান উল্লেখ করেন, 'আমি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বেশ কয়েকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রকল্পটি সরকারের উচ্চপর্যায়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করি। বাঁশখালীর পাশ্ববর্তী উপজেলা আনোয়ারার সন্তান অর্থ-প্রতিমন্ত্রী প্রকল্পটি অনুমোদনে শুরু থেকেই সক্রিয় হন। তিনি প্রকল্পটি যাতে দ্রুত অনুমোদন পায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনেন। এই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হলে আনোয়ারা-বাঁশখালী উপকূল হবে নতুন অর্থনৈতিক হাব, ইনশাআল্লাহ।'

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, আনোয়ারা ও বাঁশখালী অংশের জন্য প্রায় ৮৭৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে যার ৬০০ কোটি টাকা বাঁশখালী অংশের জন্য।

এই ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর বলেন, বাঁশখালী-আনোয়ারা টেকসই পানি ব্যবস্থাপনায় নেওয়া ৮৭৪ কোটি টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছে। এ প্রকল্পে প্রায় পৌনে ৬০০ কোটি টাকার কাজ হবে বাঁশখালীতে। বাকি কাজ হবে আনোয়ারা উপকূলে। প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য অর্থ প্রতিমন্ত্রী ও বাঁশখালীর সংসদ সদস্য অত্যন্ত আন্তরিক ছিলেন। প্রকল্পটি উপকূলের বেড়িবাঁধ রক্ষায় কার্যকর হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে লবন, মৎস্য ও কৃষি চাষে আমূল পরিবর্তন ঘটবে।

পশ্চিম বাঁশখালীর বঙ্গোপসাগর লাগোয়া মানুষের প্রাণের দাবী ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। কেননা বেড়িবাঁধের কারনেই ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারান। ঘূর্ণিঝড় আয়লা, সিডর, কোমেন, রোয়ানুর কবলে পড়ে প্লাবিত হয়ে শত শত একর ফসলী জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে। চলতি বছর সমুদ্রের পাশের ব্যাপক এলাকা চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে।

বহুদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও তাঁদের বেড়িবাঁধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছিল না কোনোভাবেই। ২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটি সাগরের বুকে হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।

স্থানীয়দের অভিযোগ ছিল তখন বেড়িবাঁধ নির্মাণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে ব্লক তৈরি, লুটপাট ও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল। ফলে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয় ঢিলেঢালাভাবে। অপরিকল্পিত নকশা প্রনয়ণ ও যেনতেনভাবে বেড়িবাঁধ নির্মানের কারনে সেটি একবছরের মাথায় হারিয়ে যাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বাঁশখালী উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে সাড়ে ৭ বছর আগে ২৫১ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছিল বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ২০১৫ সালের ১৯ মে প্রকল্পটি একনেকে পাস হওয়ার পর বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদীর পাড়ে ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই বাঁধ নির্মাণে কয়েক দফা সময় ও ব্যয় বেড়ে হয়েছিল ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় এতে ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ, ভাঙন রোধ ও পুনরাকৃতিকরণ, ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ এবং ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণ করার কথা রয়েছে। ২০২২ সালে প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়। কিন্তু খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া এলাকার মধ্যবর্তী দুটি স্থানে বেড়িবাঁধ ধসে গিয়ে বেড়িবাঁধের বেশিরভাগ অংশ সাগরে মিলিয়ে যায়। সিসি ব্লক বেষ্টিত বাঁধের যেটুকু ঠিকে আছে তাতে বিশালাকার ফাটল সৃষ্টি হয়ে নিচের দিকে ক্রমশ দেবে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের আগে পরে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে উপকূলবাসীর। এরই মধ্যে এল টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প পাসের খবর। এখন উপকূলের লাখো মানুৃষের একটাই দাবি-টেকসইভাবে দ্রুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়ন করা হোক।

;

পটুয়াখালীতে তিন জনের মৃত্যু, দুর্ভোগে সাড়ে তিন লাখ মানুষ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রেমাল'র তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়েছে পটুয়াখালী সহ উপকূলীয় এলাকা। উপকূলের জনপদের গ্রাম গুলোতে শুধুই ধ্বংসের ছাপ। আতংক যেন পিছু ছাড়ছেনা উপকূলবাসীর। রেমাল'র আঘাতে ৩ জনের প্রাণহানি সহ দুর্গত সাড়ে তিনলাখ মানুষ। প্রাথমিক তথ্যমতে জেলায় প্রায় শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জ্বলোচ্ছাসের তাণ্ডবে বেড়িবাঁধ ভেঙে খন্ড-বিখন্ড। নদীপাড়ের দুর্গত এসব পরিবারের যেন কান্নার শেষ নেই। দূর্যোগের পর থেকে অনেকের রান্নার চুলাও জ্বলেনি। উপকূলের ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষের জীবন যাত্রা সচলে কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থা।


ঘূর্ণিঝড়ে জেলায় মোট তিনজনের প্রাণহানিসহ উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জনজীবনের দুর্ভোগের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ, মৎস্য, কৃষি, শিক্ষা, সড়ক, বিদ্যুত খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) সন্ধ্যায় জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তথ্য উপাত্ত প্রকাশ করেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ জানান ঘূর্ণিঝড়ে তিন উপজেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তিন লাখ ৩৮ হাজার মানুষ। এছাড়া জেলায় ৬ হাজার ৮২টি ঘর পুরোপুরি বিধ্বস্ত ও ৩১ হাজার ৬৯৪টি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।


জেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যমতে ৭ হাজার ৫৪০ হেক্টর কৃষি জমির ক্ষতি হিয়েছে৷ মৎস্য খাতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকার। বেরিবাধ বিশ কোটি, বনাঞ্চল ৭ কোটি ২৩ লাখ, ৩ কোটি ৬ লাখ টাকার গভীর নলকূপ ও ৮ কোটি টাকার স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণে অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সফরে আসার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

;