রাজশাহীর তানোর উপজেলায় দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা সমমূল্যের হেরোইনসহ কাইয়ুম আলী (৫১) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১৬ জুন) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তানোর উপজেলার বুরুজঘাট কাচারিপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। কাইয়ুমের বাবার নাম রোস্তম আলী। র্যাব-৫ এর রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল এই অভিযান চালায়।
র্যাব-৫ এর কোম্পানি কমান্ডার এটিএম মাইনুল ইসলাম জানান, অভিযানের সময় কাইয়ুমের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দুই কেজি ৩০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে তানোর থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে লালনের অসাম্প্রদায়িকতার সাধনা আমাদের ধারণ করা উচিত
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয়
সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, লালন মহৎ দর্শনের জাগ্রত প্রতীক। লালন মানবতাবাদ, সুফিবাদ, অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছেন। তিনি যে মানবতাবাদী সমাজ চেয়েছিলেন, সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি।
শুক্রবার (১৭ মে) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে "মানুষের করণ সেকি সাধারণ জানে কেবল রসিক যারা" প্রতিপাদ্যে জাতীয় পর্যায়ে ফকির লালন শাহ এর ২৫০তম আবির্ভাববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের তিন জেলায় নয় দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী বলেন, লালন মানবতাবাদকে সবার উপরে স্থান দিয়েছেন। গান ও সৃষ্টির মধ্য দিয়ে স্রষ্টাকে খুঁজেছেন তিনি। আমরা বাঙালিরও মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতার পথে হেঁটে বড় অর্জন করেছি। লালন আমাদের অনুপ্রেরণার অসীম উৎস।
মন্ত্রী ফিলিস্তিনে শহিদের কথা স্মরণ করে বলেন, বর্তমান অরাজকতা, অস্থিরতা, যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে লালনের মানবতার, অসাম্প্রদায়িকতার সাধনা আমাদের সকলের মধ্যে ধারণ করা উচিত।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটস শিক্ষক ও লালন গবেষক অধ্যাপক ডা. আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ফরিদা পারভিন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, ভারতীয় হাই কমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক মৃন্ময় চক্রবর্তী সহ অনেকে।
গাজীপুরে একত্রে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন গৃহবধূ আফসানা আক্তার। তিন সন্তানসহ ওই গৃহবধূ পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ মে) সন্ধ্যার গাজীপুরের এলিট কেয়ার হাসপাতালের বেডে গিয়ে দেখা যায় এ ঘটনা। সিজারের পর মা ও শিশুদের পাশাপাশি বেডে রাখা হয়েছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেলে ওই গৃহবধূ আফসানার প্রসববেদনা উঠলে স্বজনরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে জরুরি অপারেশনের মাধ্যমে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে তিনজন সন্তান প্রসব করেন তিনি।
এলিট কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজুল ইসলাম সজীব জানান, হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নাফিসা আনোয়ার মারিয়ানা আগে থেকেই আফসানাকে দেখভাল করছিলেন। বিষয়টি অনেকটাই ক্রিটিক্যাল ছিল। হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির ব্যবস্থা থাকার পরও ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ওই গৃহবধূকে সিজার করা হয়। এতে সন্তান ও মা সুস্থ রয়েছেন।
এদিকে এমন বিড়ল ঘটনায় মা সন্তানেরা সুস্থ থাকায় আনন্দে আত্মহারা পরিবারের স্বজনরা। গৃহবধূ আফসানার স্বামী প্রকৌশলী মো. রিপন মিয়া বলেন, তিন সন্তান এবং আমার স্ত্রী সুস্থ রয়েছেন এটিই আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি খুশির বিষয়।
রংপুরে তীব্র তাপদাহে হিটস্ট্রোকে ফজু মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তি মৃত্যু হয়েছে। ফজু মিয়া বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর বালাচওড়া এলাকার বাসিন্দা।
শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে স্থানীয় চাপড়ার দোলায় (বিল) নিজের জমিতে ধান কাটতে গিয়ে প্রচণ্ড গরমে সেখানেই মৃত্যুর হয় তার।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফজু মিয়ার ছেলে রোকছানুল হক।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, গত দু’দিন ধরে রংপুর অঞ্চলে ফের মৃদু তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। শুক্রবার রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন আবহাওয়া আরও কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে বলেও আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে।
তাপদাহের এই সময়ে রোদের প্রখরতায় জ্বালা করছে শরীর, কিন্তু সেদিকে যেন কারো কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। সবার নজর রাস্তার দুই ধারে খাঁচায় সারিবদ্ধ করে রাখা রঙ-বেরঙের নানা প্রজাতির কবুতরের দিকে। এ যেন কবুতরপ্রেমীদের এক মিলনমেলা। বলছি, গুলিস্তান হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে রাস্তায় গড়ে ওঠা কবুতরের হাটের কথা।
হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে কাপ্তান বাজার এলাকায় রাস্তার দুই ধারে প্রতি শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় কবুতরের এই হাট। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে কবুতরপ্রেমীরা বিক্রির জন্য তাদের পোষা নানান প্রজাতির কবুতর নিয়ে আসেন এই হাটে। সকাল থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকা এই হাট, চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ক্রেতা, বিক্রেতা ও স্থানীয়দের মতে শহরের সবচেয়ে পুরনো এবং সর্ববৃহৎ কবুতরের হাট এটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাপ্তান বাজার এলাকার রাস্তার দুই ধারে কবুতর ভর্তি খাঁচা সাজিয়ে বসে আছেন অনেকেই। আবার কেউ সাইকেল, মোটরসাইকেল ও ভ্যানে করেও কবুতর নিয়ে দাড়িয়ে আছেন। দূর দূরান্ত থেকে ক্রেতারা এসেছেন পছন্দ অনুযায়ী কবুতর সংগ্রহ করতে।
গুলিস্তান কবুতর হাটে এত উপস্থিতির কারণ জানতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দামে কম, মানসম্পন্ন উন্নত জাতের সব ধরনের কবুতর এই হাটে পাওয়া যায়। জোড়াপ্রতি সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে জোড়াপ্রতি ২০ হাজার টাকার কবুতর মেলে এই হাটে। যে কারণে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে থাকে গুলিস্তানের কবুতরের এই হাট।
কবুতরপ্রেমীদের ভাষায়, এই বাজারে বিভিন্ন জাতের কবুতর যেমন, মিলি রেসার, সিরাজী, বোম্বাই, সবুজ গোল, লক্ষা, গ্রিজেল, বোগদাদি, সবজি রেসার, আর্মি, গিরিবাজ, পোটার জাতের কবুতর (সাদা, কালো ও হলুদ), জগা পিনসহ দেশি বিভিন্ন জাতের কবুতর পাওয়া যায়।
এই বাজারে মিলি রেসার কবুতর বিক্রি করা হচ্ছে ১২০০/১৫০০ টাকা, লাহোরি সিরাজী ২৫০০/৩০০০ টাকা, বোম্বাই ৫০০/৭০০ টাকা, লক্ষা ১০০০/১৫০০ টাকা, গ্রিজেল রেসার ১৫০০ টাকা, বোগদাদি হোমা ৮০০/১৫০০ টাকা, সবজি রেসার ১৮০০/২০০০ টাকা জোড়াপ্রতি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, জাত, আকার আকৃতি, রঙ অনুযায়ী একজোড়া সবুজ গোল কবুতরের দাম ৫০০/৫০০০ টাকা ও আর্মি রেসার জোড়া প্রতি ৪০০০/২০,০০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয় বলেও জানান গুলিস্তান কবুতর হাটের বিক্রেতারা।
বর্তমানে কবুতরের দাম একবারেই কমে গেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, যে কবুতরে দাম ছিল আকাশচুম্বী, তার আজকের বাজারে দাম নাই বললেই চলে।
৩৬ বছর যাবত কবুতর পোষেন যাত্রাবাড়ীর গোপাল ঘোষ বার্তা২৪.কমকে বলেন, শখের বসে কবুতর পালন শুরু করেছিলাম। নেশা হইয়া গেল, আর ছাড়তে পারলাম না। তবে কবুতরের আর সম্মান নাই। গত দুই এক বছর আগেও যে কালা বিউটি একজোড়া কবুতর বিক্রি করেছি ৫০,০০০০ থেকে ৬৫,০০০ টাকায় আজকের বাজারে সে কবুতরের দাম ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা।
দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কবুতরের খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আমাদের অজান্তেই কবুতরের দাম হুট করে নেমে গেছে; সম্ভবত ইউক্রেনের যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে।
সানারপাড়ের বাসিন্দা মো. মনির হোসেন। মোটরসাইকেলে করে তিনিও খাঁচায় বেশকিছু কবুতর নিয়ে হাটে এসেছেন। ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি কবুতর পালন করেন। পেশায় তিনি চাকরিজীবী। শখের বসেই তার কবুতর পালন। এই কবুতর পালন করেই সানারপাড় এলাকায় বাড়ি করেছেন বলে জানান তিনি।
মনির হোসেন বলেন, শখের বসে কবুতর পালতে এসে একসময় নেশা হয়ে যায়। তারপর থেকে বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা বাদ দিয়ে অবসরে কবুতর পালনে সময় দিই। কষ্ট আছে, কিন্তু শ্রম দিতে পারলে লাভও আছে। এই কবুতর পালনের টাকা দিয়াই সানারপাড় বাড়ি করছি, ৩টা মোটরসাইকেল কিনছি। যে মোটরসাইকেলের উপর কবুতর রাখা দেখতাসেন, এটাও এই কবুতর বিক্রির টাকায় কেনা।
রাজস্থানের খিলগাঁও থেকে কবুতর কিনতে এসেছেন শিক্ষার্থী আবির রহমান। আলাপচারিতায় আবির জানান, তার সংগ্রহে বর্তমানে ১৫০ জোড়া কবুতর রয়েছে। যার বাজার মূল্য ২,৫০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০ টাকা।
আবির বলেন, আমার সংগ্রহে যে কবুতরগুলো রয়েছে তা খুব দামি না। আমার ইচ্ছা এখন থেকে দামি কবুতর সংগ্রহে নেওয়া। আজকে এই হাটে আসার কারণও তাই। আমার হাতে যে কবুতরটা দেখছেন এটা আর্মি রেসার। এই জোড়াটা কিনেছি ৫,৫০০ টাকায়। কবুতর পালা এখন নেশার মতো কাজ করে। এখন আর আড্ডা ভালো লাগে না। কবুতর নিয়াই থাকি সারাদিন।
গুলিস্তান কবুতর হাটের ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও তাদের ভেতরে হাট ব্যবস্থা নিয়ে চাপা কষ্ট রয়েছে বলে জানান কিছু ব্যবসায়ী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী বার্তা২৪.কমকে জানান, কবুতর বিক্রি হোক বা না হোক, এই হাটে বসতে হলে ব্যবসায়ীদের খাঁচা প্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, আবার কখনও তার বেশি ইজারাদারকে দিতে হয়। যা ব্যবসায়ীদের উপর অনেকটা জুলুম হয়ে দাঁড়ায়। শুধু তাই নয়, যারা এই হাট থেকে কবুতর কিনবে তাদেরও কবুতরের দাম অনুযায়ী শতকরা ১০% হারে ইজারাদারকে হাসিল দিতে হয় বলেও জানান ব্যবসায়ীরা।
এই অব্যবস্থাপনার কারণে দিন দিন রাজধানীর পুরনো এবং সর্ববৃহৎ কবুতর হাটে ক্রেতা বিক্রেতাদের উপস্থিতি কমে যাচ্ছে বলেও বার্তা২৪.কমকে জানান হাটে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে ইজারাদারের সাথে কথা বলতে চাইলে তাদের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি এবং ইজারাদারের পক্ষে হাট থেকে টাকা আদায়কারীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনিও কথা বলতে রাজি হননি।