ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের সরদার পাড়া গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার ৪ কাঠা জমির বেগুন গাছ রাতের আঁধারে উপড়ে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গফরগাঁও থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই কৃষক।
প্রতিবেশী রোস্তম আলীর কাছ থেকে ৪ কাঠা (৪০ শতাংশ) জমি লিজ নিয়ে বেগুনের আবাদ করেন সুরুজ মিয়া। এতে তার খরচ হয়েছে দুই লাখ টাকা। সোমবার (১০ জুন) গভীর রাতে পুরো জমির ১৮শ’ বেগুন গাছ উপড়ে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
অভিযোগে সুরুজ মিয়া জানান, কিছুদিন আগে একই এলাকার প্রতিবেশী তাইজ উদ্দিনের একটি ছাগল মারা যায়। তাইজ উদ্দিন দোষারোপ করেন তার বেগুন ক্ষেতে বিষ দেওয়ার কারণে ক্ষেতের ঘাস খেয়ে ছাগলটি মারা গেছে। এ নিয়ে সুরুজ মিয়া ও তাইজ উদ্দিনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জের ধরেই গভীর রাতে তাইজ উদ্দিন ও তার লোকজন সুরুজ মিয়ার বেগুন গাছ উপড়ে ফেলেছে।
বিকেলে গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে আমিসহ থানা পুলিশের সদস্যরা এসেছি। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করুন: বৌদ্ধ নেতাদের রাষ্ট্রপতি
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাতীয়
দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
তিনি বলেন, মানুষকে আলোর পথ দেখাবেন। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করুন। শুধু নিজে বা পরিবারকে নিয়ে ভাল থাকার চিন্তা না করে সকলকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা করবেন।
বুধবার (২২ মে) বিকেলে বঙ্গভবনে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে রাষ্ট্রপ্রধান এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছে হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বিশ্বের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরকে মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মহামতি বুদ্ধ স্থান-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর সকল জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেছেন। বৌদ্ধ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়তে আপনারা বুদ্ধের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিবেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষকে শান্তি ও সৌহার্দের শিক্ষা দেয়। প্রতিটি ধর্ম থেকে যা উৎকৃষ্ট তা গ্রহণ করতে হবে এবং নিকৃষ্ট পরিত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণের জনাই ধর্ম, অকল্যাণের জন্য নয়। মনে রাখতে হবে ধর্ম উপলব্ধির বিষয়, তর্কের নয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ বিশ্বের বহুস্থানে মানবাধিকার ভূলুষ্ঠিত হচ্ছে এবং লোভ-লালসা, ঈর্ষা, প্রতিহিংসার ন্যায় কু-প্রবৃত্তি সমাজের শোষণ-বঞ্চনা বাড়াচ্ছে। দেশে দেশে যুদ্ধবিগ্রহ ও বিশ্ব অর্থনীতিকে ভারসাম্যহীন করে তুলেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থ-সামাজিক খাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
কঠিন এ সময়ে, রাষ্ট্রপতি সকলকে একে অপরের পাশে দাঁড়াবার ও আহ্বান জানান।
বঙ্গভবনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপনে রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী ডা. রেবেকা সুলতানা বৌদ্ধ নেতাদের শুভেচ্ছা জানান। বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারাও বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতিকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।
কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের খুনের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করবেন মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।
বুধবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন বলেন, নিহত সংসদ সদস্যের মেয়ে আমাদের কাছে এসেছেন। তার বাবা বাসা থেকে বের হয়ে গেলেন। এরপর আর পাওয়া যায়নি। সেখানে কি ঘটেছে এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করার জন্য এসেছেন। মামলা কিভাবে কোথায় করবেন তা আমরা বলেছি। তার বাবা সংসদ ভবন এলাকায় থাকতেন। সেখান থেকে তিনি ভারতে গেছেন। আমরা তাকে বলেছি শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করতে। মামলা করতে আমাদের কর্মকর্তারা তাকে সহযোগিতা করছে। মামলাটি আজকের মধ্যেই হবে।
তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্যের হত্যাকাণ্ড কখনো মেনে নেয়া যায় না। আমরা কলকাতা পুলিশের সঙ্গে মিলে হত্যাকারীদের ধরতে কাজ করছি। এরইমধ্যে আমাদের হাতে কয়েকজন আছে। তাদের থেকেও আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছি। সে বিষয়ে নিয়ে আমরা কাজ করছি।
এর আগে, ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস বলেন, আমার বাবা নেই, আজ আমরা এতিম হয়ে গেছি। আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই। এভাবেই কান্না জড়িত কণ্ঠে বাবা আনোয়ারুল আজিমের হত্যাকারীদের বিচার চাইলেন মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে উত্তরের বরানগরে বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন আনার। ১৩ মে তিনি কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি।
রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার খুন হয়েছেন বলা হলেও এখনো তার মরদেহ উদ্ধার করা যায়নি।
কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আনোয়ারুলের সঙ্গে কয়েকজন একটি ফ্ল্যাটে ঢুকছেন। পরে তারা সেই ফ্ল্যাট থেকে চলে গেলেও আনোয়ারুল যাননি। কিন্তু না বেরোনোর ঘটনা থেকে পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ, তাকে খুন করা হতে পারে। তবে, রহস্য তৈরি হয়েছে নীল গাড়ি নিয়ে। যে গাড়ি করে বের হয়েছিলেন এমপির সঙ্গীরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে। কারণ আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে তারা রক্তের দাগ পেয়েছেন। পুলিশের সন্দেহ, সেটা আনোয়ারুলের হতে পারে। তবে পরীক্ষার পরই তারা এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন।
দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের তরফ থেকেও এমপি আনোয়ারুল আজিমের বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। কমিশনের সূত্র জানিয়েছেন, তারা গণমাধ্যম থেকে বিষয়টি জেনেছেন। সরকারের তরফ থেকে তাদের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে । এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ধানমণ্ডিতে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনজনকে বাংলাদেশ পুলিশ আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা যারা এ খুনের সাথে জড়িত সবার বিষয়ে জানতে পারবো। ভারতের পুলিশও সহযোগিতা করছে। আমাদের পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ। তদন্ত শেষ হলে এ খুনের মোটিভ কী, সবকিছু বিস্তারিত দিতে পারবো আমরা।
গত ১২ মে আনোয়ারুল আজিম চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান। ১৮ মে কলকাতায় তার পরিচিত গোপাল বিশ্বাস পুলিশে একটি ডায়েরি করেন। সেখানে বলা হয়, আনোয়ারুল ১৩ মে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর আর ফেরেননি। তিনি ফোন করে জানিয়েছিলেন, বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছেন। ১৫ মে তিনি মেসেজ করে জানান, দিল্লিতে আছেন। ১৭ তারিখ থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার গোপাল বিশ্বাসকে উদ্ধৃত করে কিছু গণমাধ্যম জানায় যে, পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে, কলকাতার একটি ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ আনোয়ারুল আজিমের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি দেশীয় এলজি, ২টি ছোরা, ১টি গ্রিল কাটার, ১টি হাতুড়ি ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি সিএনজি উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার একাধিকস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের কালামিয়া ছৈয়াল বাড়ির মো. সুমন (৩৮), একই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজচরা গ্রামের মো. সৈয়দ আলম (২৯), লক্ষীপুরের চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের নোমানাবাদ কলোনীর মো. বেলাল হোসেন (৪০) ও চট্রগ্রামের কর্ণফুলী থানার চরলক্ষ্যা গ্রামের মোহাম্মদ নুর গোষ্ঠী নতুন বাড়ির সাইফুল ইসলাম (৩০)।
পুলিশ জানায়, গত ১৬ মে ভোর রাতের দিকে বেগমগঞ্জের লাকুড়িয়া কান্দি গ্রামের সিরাজ মিয়ার বাড়ির রুহুল আমিন মিয়ার টিনশেড বিল্ডিং ঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত ঘরের লোকজনদের মারধরসহ অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ঘরে থাকা ১৮ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ টাকার মালামাল লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। এ দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারের ভিত্তিতে বেগমগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ অভিযানে নামে।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে পুলিশ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের ফেনী-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে সরুগো পুল নামক স্থানে রাস্তার উপর চেকপোস্ট স্থাপন করে। ওই সময় চৌমুহনীর দিকে ২টি সিএনজি দ্রুত গতিতে আসতে দেখলে পুলিশ সিএনজি দুটি থামার জন্য সংকেত দেয়। থামানোর সংকেত দেওয়ার পরেও সিএনজিটি ঘটনাস্থল থেকে চৌমুহনীর দিকে চলে যায়। পিছনের সিএনজির ড্রাইভারও সংকেত না মেনে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ সিএনজির পিছনে ধাওয়া করে। এ সময় সিএনজিতে থাকা ৪ জন আসামি কৌশলে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক পুলিশ ধাওয়া করে সিএনজিতে ড্রাইভার হিসেবে থাকা ১নং আসামি সুমনকে সিএনজিসহ আটক করে। পরে গ্রেফতার আসামির তথ্যমতে চৌমুহনী রেল স্টেশন ও চৌমুহনী ফলপট্রি থেকে অপর আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত ডাকাতেরা ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করে। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপরাপর আসামি গ্রেফতারসহ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান পরিচালনা অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা পেশাদার ডাকাত। তারা বিভিন্ন সময় নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন থানাসহ এর আশপাশের জেলা ও থানা সমূহে ডাকাতি করে বেড়ায়।