চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা বৃহস্পতিবার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম, বার্তা২৪.কম
বলীখেলার মঞ্চ / ছবি: বার্তা২৪

বলীখেলার মঞ্চ / ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঐতিহ্য আর লোকজ সংস্কৃতির শেকড়ের টানে বছর ঘুরে চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে শত বছরের লোকক্রীড়ার আসর জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা। তিন দিনব্যাপী এ মেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে। তবে বুধবার (২৪এপ্রিল) সকাল থেকে হরেক রকম পণ্যের পসরায় বিক্রেতা আর সংস্কৃতিপ্রাণ দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে।

ঐতিহ্যবাহী এ খেলায় প্রতিবছর সারা দেশ থেকে নামকরা বলীরা অংশ নেন। নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন পুরস্কার দেওয়া হয় বিজয়ীদের। আর এ বলী খেলা দেখতে লাখো মানুষের ভিড় জমে লালদিঘী ময়দানে।

১৯০৯ সালে বিট্রিশবিরোধী আন্দোলনকে তরান্বিত করতে চট্টগ্রামের যুব সমাজকে রণপ্রস্তুতির লক্ষ্যে বলীখেলার প্রচলন করেছিলেন প্রয়াত আব্দুল জব্বার। তাঁর মৃত্যুর পরেও এমন দৃপ্ত শপথ আর বাঙালির সংস্কৃতির টানে প্রতিবছর এ আয়োজন হয়ে আসছে। বাংলা বছরের ১২ বৈশাখে এই মেলারও রেওয়াজ হয়ে আসছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099189565.jpg

নগরীর আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ থেকে শুরু করে লালদিঘী হয়ে এক বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্রেতারা। সার্বজনীনভাবে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্য বজায় রেখে মেলায় গৃহস্থালি পণ্য, মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম, আসবাবপত্র, নকশিকাঁথার কাপড়, হরেক রকমের নাড়ু, জিলাপি, মিষ্টান্ন, বিভিন্ন স্বাদের আচার, প্লাস্টিকের জিনিসপত্র নার্সারির গাছের চারা, তবলা, একতারা, বাঁশি থেকে শুরু করে কাপড়ের সুই সুতো হরদম কেনা-বেচা হয়।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, আন্দারকিল্লা সড়কের দু’পাশ থেকে শুরু হওয়া মেলায় দর্শনার্থীরা ভিড় জমিয়েছেন। আবার অনেক দোকানি গোছানোর কাজ সারছেন। কেউবা মাটির তৈজসপত্র আরও আর্কষণীয় করে তোলার জন্য ধুয়ে মুছে রাখছেন।

মেলার মূল আর্কষণ লালদিঘী মাঠে বলীখেলার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারছেন আয়োজকরা। সেখানে প্রস্তুতির কাজ দেখতে ভিড় করছেন দর্শকরা। এরপাশে নাগরদোলায় চড়ছে কিশোর-কিশোরী আর স্কুল শিক্ষার্থীরা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099281000.jpg

ঘর গোছানোর জন্য মাটির তৈজসপত্র কিনতে বান্ধবীসহ মেলায় আসেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারিয়া মিম। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রতিবছর বলীখেলা আর এমন একটি মেলার জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকি। দেশের আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকা সংস্কৃতির গন্ধ পাই। তাই প্রথমদিনই মাটির হাড়ি পাতিল কেনার জন্য এসেছি।’

একই ভিড় দেখা যায় বিভিন্ন নাড়ু, মিষ্টান্নে আর নকশিকাঁথার স্টল এবং মহিলাদের স্টলে।

বংশ পরপম্পরায় ৪০ বছর ধরে চট্টগ্রামের বলীখেলার মেলায় বসছেন ঢাকার শ্যামপুর এলাকার বাসিন্দা মো. মুসলিম ব্যাপারী। প্রথমদিকে কেবল মাটির তৈজসপত্র নিয়ে মেলায় আসলেও সময়ের পরিক্রমায় দশ বছর ধরে নার্সারির ব্যবসায় সংযুক্ত রয়েছেন। তিনি বার্তা২৪.কমকে সময়ের কথা বলতে গিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান। কিছুক্ষণ পর সাল হিসেব করে জানালেন ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে মেলায় আসছেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099231752.jpg

তিনি জানান, মেলা বৈশাখে হলেও ফাল্গুন মাস থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়। ঢাকার শ্যামপুর এলাকায় তৈরি হয় এসব তৈজসপত্র সামগ্রী। বড় আর ছোট ছেলেও এই ব্যবসা তাকে সহায়তা করেন।

তিনি বলেন, ‘আজ তেমন বেচা বিক্রি না হলেও মেলার সময় বাড়া সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি বাড়বে।’

বাদল সরকার নামে আরেক ব্যবসায়ী ২০ বছর ধরে বিভিন্ন নাড়ু, মোয়া, জিলাপিসহ বিভিন্ন মিষ্টান্ন খাবার নিয়ে মেলায় বসেন।

আয়োকজ সূত্রে জানা গেছে, এবারের ১১০তম আসরে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘মাদককে না বলুন’। এর অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বলির খেলোয়াড়রা অংশ নেন। এবারের ১৫০ জন খেলোয়াড় তালিকাভুক্ত করা হলেও এর মধ্যে ৫০ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবেন মেলা কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বলিখেলার উদ্বোধন করবেন সিএমপি কমিশনার মাহবুবর রহমান। এছাড়া বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্তার বিতরণ করেবেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/24/1556099315096.jpg

এ বিষয়ে বলিখেলা ও বৈশাখী মেলার সভাপতি কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে মেলার ৭০ শতাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মেলার সার্বিক ব্যবস্থা নিরাপত্তা মনিটরিংয়ের জন্য বেশ কিছু জায়গায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বলিখেলায় অংশ নেওয়াদের পুরস্কার ও সম্মানিও এবার বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি মেলা সার্বজনীন উৎসবে রূপ নেবে।’

দীর্ঘদিন ধরে চলা আসা এমন আয়োজনকে বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান দেওয়ার চেষ্টা করছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। গত বছর এমন একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এ বিষয়ে প্রয়াত আব্দুল জব্বারের নাতি ও মেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শওকত আনোয়ার বাদল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এটি যদিও আমার নানার নামে হয় কিন্তু এটি সবার প্রাণের উৎসব। বিট্রিশবিরোধী আন্দোলনের সময় এমন একটি আয়োজন তরুণদের মাঝে সাহসের উদ্দীপনা নিয়ে এসেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের জন্য গতবছর সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলাম। এরপর আমরা কোনো অগ্রগতি দেখিনি। আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় ও সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।’

   

আরসার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে: র‌্যাব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। কোন প্রকার তথ্য পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটা আতঙ্কের নাম আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই আরসা গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে হত্যাকানণ্ড অপহরণসহ নানান অপরাধের সাথে জড়িত। এর আগে আমরা নানা ধরনের অভিযান পরিচালনা করে এখন পর্যন্ত ১১০ জন আরসা সদস্যকে গ্রেফতার করেছি এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র সরঞ্জামাদী উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাবের অব্যাহত নজরদারি, গোয়েন্দা তাৎপরতা অভিযানের প্রেক্ষিতে আরসা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায়। পাশের দেশ থেকে অস্ত্র আসছে এমন গোয়েন্দা তথ্য থেকে আমরা গতকাল অভিযান চালিয়ে দুইজন কে গ্রেফতার করেছি।

আরাফাত বলেন, আরসার এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষ্ক্রিয় রাখতে আমরা স্থানীয় থানা এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। আমরা তাদের ট্র্যাকিং করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা যখনই কোন তথ্য পাচ্ছি আমরা অভিযান চালাচ্ছি।

গত বুধবার ভোর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার গহিন পাহাড়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এ অভিযানের সময় আরসা কমান্ডার মাস্টার সলিমুল্লাহ (৩৮) এবং তার সহযোগী মো. রিয়াজকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

;

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাস কম থাকবে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্যাস পাইপলাইনে নির্মাণের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কম থাকবে।

শুক্রবার (১৭ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

এতে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান ও এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করবে। গ্রাহকবৃন্দের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

;

চিংড়ি ঘেরে মিলল ২ মরদেহ, শর্ট সার্কিট দিয়ে হত্যার অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে চিংড়ি ঘের থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর জানায় স্থানীয়রা।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১ টায় খুরুশকুল মনুপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এ মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখেছে স্থানীয় লোকজন।

নিহতরা হলেন, খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকার বাসিন্দা জামালের ছেলে আবদুল খালেক (২৫) এবং আবু তাহেরের ছেলে মো. ইয়াছিন। উভয়ের বাড়ি খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকায়। তারা দুইজনে পেশায় মৎস্যজীবী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

খুরুশকুলের চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন। মরদেহ দুটি প্রত্যক্ষ করে দেখেছেন তাদের শরীরে একাধিক বৈদ্যুতিক শর্টের চিহ্ন রয়েছে। তারা দুইজন মনুপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানান তিনি।

নিহত ইয়াছিন আরাফাতের মা জানিয়েছেন, তার ছেলে গতকাল রাত ১০টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়। আজকে সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তবে কে বা কারা তাদের হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে ছেলে হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাদের গায়ে মারধরের এবং বৈদ্যুতিক শর্টের আঘাত রয়েছে। কে বা কারা তাদের মেরে ফেলে রেখেছে সেই বিষয়ে এখনো কেউ কিছু বলছে না।

তবে চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী এবং সেখানকার ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীনের দাবি সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল হুদার মাছের ঘেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) শাকিল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজনের পায়ে এবং আরেকজনের বাঁ হাতের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের পর হত্যার মূল কারণ জানা যাবে।

;

দীর্ঘ শত্রুতা ও প্রতিশোধের জেরে হত্যাকাণ্ড, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হল- প্রধান আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে বলে জানান র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। 

তিনি বলেন, গত ১০ মে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা করে ও এলোপাথারি গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একজন সাবেক ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র‌্যাব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে)  রাতে র‌্যাব-৬, র‌্যাব-৭ এবং র‌্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানে  ওই  হত্যার ঘটনায় জড়িত শুটারসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের বরাত দিয়ে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল এবং আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামাল এর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই সুযোগ বুঝে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করে; যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি তার বুকে ও পিঠে লাগে।

র‍্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর ১ম বর্ষের ছাত্র। সে আকবর হোসেন লিপন এর অন্যতম প্রধান সহযোগী। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি, চুরি ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ মারামারি, ছিনতাই, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত সাজেদুল এর সহযোগী হিসেবে তাকে উক্ত হত্যাকান্ড সংঘটিত করার জন্য ১ লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল এবং হত্যাকাণ্ডের সময় সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুল সাথে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে এবং উক্ত মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত পাভেল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এইচএচসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত মামুন মোল্যা পেশায় একজন গাড়ি চালক। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। তার কাছে থাকা ছুরি চাকুসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে মোস্তফা কামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

;