বগুড়ায় হাট-বাজারে নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে। ধানের ফলন এবং দাম ভালো পেয়ে কৃষকও খুশি। ধান চাষের খরচ মেটাতে জমি থেকে কাটা মাড়াই পরপরই ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন তারা।
হাটবাজারে নতুন ধান কাঁচা অবস্থায় বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা। জেলার বিভিন্ন ধানের হাট ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
জেলার শাজাহানপুর ও নন্দীগ্রাম উপজেলার ধানের হাট ঘুরে দেখা গেছে কৃষক মাঠ থেকে ধান কাটা মাড়াই করে কাঁচা ধান হাটে নিয়ে আসছে বিক্রির জন্য।
শাজাহানপুর উপজেলার খাদাস গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, সার, বীজ, কীটনাশক এবং পানি সেচের টাকা পরিশোধ করার জন্য ধান শুকানোর আগেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলার রিধইল গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, তিনি কাটারি জাতের ধান কাটা মাড়াই করে পরের দিনই হাটে বিক্রি করেছেন ১২০০ টাকা মণ দরে।
তিনি বলেন, ১১৫০ টাকা থেকে ১২৫০ টাকার মধ্যে ধান বিক্রি হচ্ছে। তবে ধান শুকাতে পারলে দাম আরও বেশি পাওয়া যাবে।
বগুড়া সদরের ঘোলাগাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, প্রতি বছরই সার, বীজ, কীটনাশক ও পানির দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে ধান চাষে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। একারণে কৃষক দিন দিন ধান চাষ কমিয়ে দিচ্ছে। তবে এবার ফলনের পাশাপাশি ধানের দাম ভালো।
তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে এবার ধান চাষ এবং কাটা মাড়াই করতে খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। ২০ মণ ধান পাওয়া গেলে বিক্রি হবে ২৩ হাজার টাকায়। যাদের নিজের জমি তারা লাভবান হলেও বর্গা চাষিদের ধান চাষ করে তেমন লাভ নেই।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলায় এক লাখ ৮৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল এক লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে। তার আগের বছর এক লাখ ৮৮ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী গত তিন বছরে বগুড়া জেলায় এক হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ কমেছে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতলুবুর রহমান বলেন, বোরো চাষে খরচ বাড়ার কারণে কৃষক ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছে। যার কারণে প্রতি বছরই বোরো চাষে জমির পরিমাণ কমছে। খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি বিভাগ বোরো চাষে কৃষকদের উৎসাহ যোগাতে বিভিন্ন সময় প্রণোদনা দিয়ে থাকে। কিন্তু তাতেও বোরো চাষ বাড়ানো যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, কম খরচে অধিক লাভের আশায় ভুট্টা চাষ বেড়ে যাওয়ার কারণেই বোরো চাষের জমি কমছে। তবে এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হওয়ায় কৃষক লাভবান হচ্ছেন।