তাজমহল পার্কের আধুনিকায়নে বাধা সাবেক এমপির মাদরাসার রান্নাঘর!



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মোহাম্মদপুরের তাজমহল পার্ক ও খেলার মাঠের আধুনিকায়নে বাধা হয়েছে দাঁড়িয়েছে সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের মাদরাসার রান্নাঘর/ ছবি: বার্তা২৪.কম

মোহাম্মদপুরের তাজমহল পার্ক ও খেলার মাঠের আধুনিকায়নে বাধা হয়েছে দাঁড়িয়েছে সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের মাদরাসার রান্নাঘর/ ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকার রাজধানীর ভেতরের সকল খেলার মাঠ-পার্ক দখলমুক্ত করে নগরবাসীর কাছে ফেরত দিতে চাইছে। এই লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে কাজও শুরু করেছে।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের পার্ক ও খেলার মাঠ আধুনিকায়ন করতে গিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মকবুল হোসেনের বাধার মুখে পড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তাজমহল পার্কের এক কোণ দখল করে গড়ে তোলা মকবুল হোসেনের মাদরাসার রান্নাঘরের কারণে উন্নয়ন কাজ শেষ করতে পারছে না সিটি করপোরেশেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক মোহাম্মদপুর এলাকায় বিদ্যমান পার্ক নিয়ে মহাপরিকল্পনা করেছিলেন। সেই পরিকল্পনার আওতায় তাজমহল রোডের পার্ক ও খেলার মাঠে ওয়াকওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি পৃথক সাইকেল লেন, বাচ্চাদের জন্য পৃথক জোন, ফুড কর্নার, সবুজ চত্বরসহ আধুনিক সুবিধাদি দিয়ে পার্কটি সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/23/1553347771344.jpg

আনিসুল হকের অকাল প্রয়াণে ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পার্কটির আধুনিকীকরণ কাজের উদ্বোধন করেন ভারপ্রাপ্ত মেয়র ওসমান গণি। পাঁচ কোটি ১০ লাখ ৬২ হাজার টাকা ব্যয়ে পার্ক ও খেলার মাঠ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। পুরো মাঠের চারদিকে ওয়াকওয়ে ও পৃথক সাইকেল লেনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। মূল গেটের নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ।

কথা ছিল, গত সেপ্টেম্বরের মধ্যে খেলার মাঠের নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। এছাড়া গত নভেম্বরই পার্কের কাজ শেষ করে নগরবাসীর জন্য খুলে দেওয়ার কথা। কাজ চলছিলও সেভাবেই। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন।

পার্কটির দক্ষিণ পাশে মকবুল হোসেনের তিনটি বাড়ি। পার্কটির ভেতরে দক্ষিণ পশ্চিম পাশে মাদরাসার জন্য রান্নাঘর নির্মাণ করে দখলে রেখেছেন তিনি। স্থানীয় লোকজন ও সিটি করপোরেশন রান্নার জন্য পৃথক ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিলেও মানতে নারাজ মকবুল।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৯৬ সালে যখন পার্কটি আধুনিকায়নের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, তখন এমপি হিসেবে তিনিই সহযোগিতা করেছিলেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর মো. নূরুল ইসলাম রতন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘কাজ যথা সময়েই শেষ করতে পারতাম, কিন্তু সাবেক এমপি সাহেব তার লোকজন নিয়ে আমাদের কাজে বাধা দিয়েছেন। তিনি শুক্রবারে মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন এবং লোকজন নিয়ে নির্মাণ শ্রমিকদের বের করে দেন। তখন শাসিয়ে যান, যে বাধা দিতে আসবে, তার হাত ভেঙে দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘জনগণের সুবিধার জন্য যেটা করা দরকার, সেটা করব। আমি বিষয়টি সম্পর্কে খুব বেশি অবগত না। খোঁজ নিয়ে দেখব, যদি কেউ বেআইনিভাবে বাধা দেন, সেটা মেনে নেব না।’

পার্কের জায়গা দখলের বিষয়ে জানতে মকবুল হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। একবার তার পিএস পরিচয় দিয়ে ফোন রিসিভ করে একজন বলেন, ‘মিটিং আছে, পরে ফোন দিয়েন।’ তারপরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/23/1553347807992.jpg

এক কোটি ৪৩ লাখ ২৯ হাজার টাকা ব্যয়ে তাজমহল রোডে খেলার মাঠটি আধুনিকায়ন করা কথা রয়েছে। এছাড়া তিন কোটি ৬৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ব্যয়ে তাজমহল পার্ক আধুনিকায়ন করার কথা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, খেলার মাঠসহ পার্কের ভেতরের চারদিকের ওয়াকওয়ে নির্মাণ প্রায় শেষ। শুধু দক্ষিণ-পশ্চিম কোণায় মাদরাসার রান্নাঘরের কারণে কাজটি সম্পন্ন হচ্ছে না।

পার্কের ভেতরে এভাবে ঘর থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দা রওনক হাসান। তিনি বলেন, ‘এখানে পার্কটি হলে এলাকার মানুষ সকালে হাঁটতে পারবে, বাচ্চারা খেলাধুলা করতে পারবে। তার (এমপি) এতো ক্ষমতা! তাকে বলার পরেও তিনি মানছেন না।’

আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এই এমপির ছেলে আহসানুল ইসলাম (টিটু) বর্তমানে টাঙ্গাইল-৬ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য।

   

‘কিরগিজস্তানে হামলার স্বীকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে গুরুতর আহত নেই’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কিরগিস্তানে শিক্ষার্থীদের উপর যে হামলা হয়েছে সে ঘটনায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থী কেউ গুরুতর আহত হয়েছে এমন খবর নেই। আমাদের কিরগিস্তানে আমাদের দূতাবাস নেই। উজিবেগিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে সেখানে যেতে বলেছি।

রোববার (১৯ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সংগঠন ওভারসিস করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওকাব) ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ‘রোহিঙ্গা সংকট: ভবিষ্যৎ পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলন, ইতিমধ্যে কিরগিস্তান প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। বাংলাদেশি কোনো শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর নেই। যে কোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উজবেকিস্তানের দূতাবাসে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে৷‌

জানা গেছে, গত ১৩ মে একদল মিশরীয় শিক্ষার্থীর সঙ্গে কিরগিজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে কী নিয়ে তাদের মধ্যে এই বিরোধ বেঁধেছিল তা নিশ্চিত নয়। তবে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার রাতে কিরগিজ রাজধানীতে বেশকিছু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেল ও বেসরকারি আবাসনে হামলা চালায় স্থানীয়রা। এসব হোস্টেল ও ভবনে মূলত বিদেশি শিক্ষার্থীরা বসবাস করেন।

;

এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বনানী সেলস অফিস উদ্বোধন করলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বনানী সেলস অফিস উদ্বোধন করলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ

এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বনানী সেলস অফিস উদ্বোধন করলেন সাদিয়া ইসলাম মৌ

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের নবীনতম বেসরকারি এয়ারলাইন্স এয়ার এ্যাস্ট্রা আজ ১৯ মে বনানীতে এয়ারলাইন্সটির নতুন সেলস অফিস এর যাত্রা শুরু করলো। সেলস অফিসটির উদ্বোধন করেন নন্দিত নৃত্যশিল্পী, মডেল ও অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ। তার সাথে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এয়ার এ্যাস্ট্রার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার ইমরান আসিফ, চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সোহেল মজিদসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মকর্তারা। উদ্বোধনের পর মিলাদ এর আয়োজন করা হয়, যেখানে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি’র প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাদিয়া ইসলাম মৌ বলেন, এয়ার এ্যাস্ট্রা’র এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত বোধ করছি। এরই মধ্যে এয়ারলাইনটি তাঁদের ভাইব্রেন্ট লুক ও প্রিমিয়াম সার্ভিস দিয়ে যাত্রীদের মন জয় করেছে। আমি আশা করি তারা তাদের সার্ভিস ও নিরাপদ ফ্লাইট পরিচালনার মধ্য দিয়ে যাত্রীদের সেবা দেওয়া চলমান রাখবে।

এটি এয়ার এ্যাস্ট্রা’র চতুর্থ সেলস অফিস। সেলস অফিসটির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এখন থেকে যাত্রীরা বনানী সেলস অফিস থেকে সরাসরি টিকিট ও হলিডে প্যাকেজ ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও যাত্রীদের টিকিট রিফান্ড, ফ্লাইটের সময় পরিবর্তনসহ অন্যান্য যাবতীয় সুবিধা এই সেলস অফিস থেকে প্রদান করা হবে।

এয়ার এ্যাস্ট্রা বর্তমানে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা, ঢাকা-চট্রগ্রাম-ঢাকা, ঢাকা-সিলেট-ঢাকা এবং ঢাকা-সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এয়ার এ্যাস্ট্রা’র বহরে বর্তমানে তিনটি এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে, যা ফ্রান্সে নির্মিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টার্বোপ্রপ এয়ারক্রাফট এবং ৭০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম। খুব শিঘ্রই আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট শুরু করবে এয়ার এ্যাস্ট্রা।

;

বগুড়ায় হঠাৎ একই বিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
বগুড়ায় হঠাৎ ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ

বগুড়ায় হঠাৎ ২২ শিক্ষার্থী অসুস্থ

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ায় একটি বিদ্যালয়ে হঠাৎ করেই একে একে ২২ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে ছুটি ঘোষণা করা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। অসুস্থদের অধিকাংশই ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

রোববার (১৯ মে) দুপুর ২টার দিকে কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে এই ঘটনা ঘটে।

বগুড়া কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আল মামুন সরদার জানান, দুপুরে টিফিন চলাকালে ৬ষ্ঠ শ্রেণির রুজাইফা নামের এক শিক্ষার্থী মাঠে খেলতে গিয়ে অসুস্থ বোধ করে। এরপর সে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যায়। কিন্তু সেসময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ফলে সে আরও অসুস্থ বোধ করলে তাকে অফিস কক্ষে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এবিষয়টি অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে একে একে তারাও অসুস্থবোধ করতে শুরু করে। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই জানায় তাদের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তখন পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে তাদের মাধ্যমে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের বাড়ি পাঠানো হয়, সেইসাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করা হয়।

খবর পেয়ে ওই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যান বগুড়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সামির হোসেন মিশু।

তিনি বলেন, গরমের কারণে হয়তো একজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছিল। তার দেখাদেখি অন্যরাও অসুস্থ হতে থাকে। এটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ‘মাস সাইকোজেনিক ইলনেস’ বলে। মানসিক চাপ ও ভয় থেকে এটি হয়ে থাকে। এনিয়ে শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তারা বিশ্রাম নিলেই সুস্থ হয়ে উঠবে বলেও উল্লেখ করেন ডা. মিশু।

;

‘৪৬ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের দরিদ্র ২০ শতাংশ পরিবার মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবায় সরকারি সুবিধার ২০ শতাংশও ভোগ করতে পারে না। ৪৬ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা খরচ মেটাতে কোনো না কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। দরিদ্র জনসংখ্যার চাহিদা পূরণের জন্য সরকারের বরাদ্দও অপর্যাপ্ত উল্লেখ করে দেশের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে এসডিজি অ্যাকশন এলায়েন্স বাংলাদেশ।

রোববার (১৯ মে) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি হলে আয়োজিত ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার অধিকার প্রতিষ্ঠায় নাগরিক সমাজের অবস্থানপত্র শীর্ষক’ এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এসডিজি অ্যাকশন এলায়েন্স বাংলাদেশ, গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন এগেইনস্ট পোভার্টি ও নোয়াখালী রুরাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এনআরডিএস)।

এসডিজি অ্যাকশন অ্যালায়েন্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক ও এনআরডিএস'র প্রধান নির্বাহী আবদুল আউয়াল বলেন, কোভিডের আগের ধারাবাহিকতায় বাজটে স্বাস্থ্য খাত অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। মহামারির সময়ই স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দুরবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছিল। কিন্তু এরপরও বাজেটে এই খাত প্রত্যাশিত মনোযোগ পাচ্ছে না। টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লেও বাজেট ও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় বরাদ্দ খুব একটা বাড়ছে না। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ ব্যয় করে, যা বৈশ্বিক গড় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে অনেক কম। সবার জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকারের সক্ষমতা তৈরির ক্ষেত্রে এটি একটি বড় বাধা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে আব্দুল আউয়াল বলেন, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে একজন বাংলাদেশির বছরে ৮৮ ডলার খরচ করা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে মাথাপিছু খরচ হয় ৫৮ ডলার, যার বড় অংশই নাগরিকরা নিজেরা সংস্থান করেন। বাংলাদেশের জনগণ তাদের স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ নিজেরাই সংস্থান করতে বাধ্য হয়।

তিনি আরও বলেন, এটি অনেক পরিবারের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক সংকট এবং এটি মানুষের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবাকে বিলম্বিত করে। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ বাধ্য হয়ে চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশের নাগরিকরা তাদের স্বাস্থ্য ব্যয়ের প্রায় ৭০ ভাগ নিজেকে ব্যয় করতে হয়।

এসডিজি অ্যাকশন অ্যালায়েন্স ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় অভিগম্যতা, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহণের হার এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে নোয়াখালী, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশালের ৬০০ নাগরিকের ওপর মতামত জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা গেছে ৭৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ কমপক্ষে একটি ডোজ পেয়েছেন, ২১ দশমিক ৩ শতাংশ কোনো টিকা নেননি।

প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার জন্য সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে প্রান্তিক মানুষের অভিগম্যতার হার ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু অনেক প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিল । সমীক্ষায় দেখা যায়, ৪৬ শতাংশ মানুষ চিকিৎসা খরচ মেটাতে কোনো না কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্পর্কে প্রান্তিক মানুষের সচেতনতার হার ভালো ৮৩ শতাংশ থাকা সত্বেও দুর্নীতি, স্বজনতোষন, হয়রানির কারণে বিপদাপন্ন মানুষের তালিকায় নাম লেখাতে পারেননি।

লিখিত বক্তব্যে বেসরকারি সংস্থা বন্ধনের নির্বাহী পরিচালক আমিনুজ্জামান মিলন ৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্য সেবায় অভিগম্যতা সম্প্রসারণে সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো অপরিহার্য। স্বাস্থ্য বিমা কর্মসূচির আওতা প্রসারিত করে এবং স্বাস্থ্যসেবা খরচের জন্য ভর্তুকি প্রদান করে স্বাস্থ্যের জন্য ব্যক্তি পর্যায়ে ব্যয় কমানো যায়। সরকার আরও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা তৈরি করে, আরও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবং প্রয়োজনীয় ঔষধ ও পরিষেবাগুলোকে আরও সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারে। সরকার সব নাগরিকের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য শিক্ষা, কৃষি, এবং পানি ও স্যানিটেশনের মতো অন্যান্য সেক্টরের সাথে কাজ করে স্বাস্থ্যের সামাজিক নির্ধারকগুলোর সমাধান করতে পারে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত নারী অধিকার জোটের সদস্য সচিব মনোয়ার আক্তার মিনু।

;