ঐতিহাসিক ডাকবাংলোটি এখন মাদকসেবীদের আড্ডাখানা



হাসান আদিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, রাজশাহী, বার্তা২৪.কম
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়ায় অবস্থিত ডাকবাংলো, ছবি: বার্তা২৪

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়ায় অবস্থিত ডাকবাংলো, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রায় দুই যুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে রাজশাহী জেলা পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন পুঠিয়া উপজেলার ঝলমলিয়ায় অবস্থিত ডাকবাংলোটি স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও বখাটেদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে।

বখাটেরা এখানে প্রতিদিন নিয়ম করে অসামাজিক কার্যকলাপ ও জুয়ার আসর বসাচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ী ও বখাটেদের উৎপাতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী এ বিষয়ে জেলা পরিষদ ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে অভিযোগ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুঠিয়া উপজেলার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে ও এক সময়ের খরস্রোতা নদী মূসাখাঁ তীরে প্রায় দেড় একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় ডাকবাংলোটি। পুঠিয়ার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা দেখতে আসা পর্যটকরা এখানে নিয়ম মেনে অবস্থান করতেন।

তবে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় স্বাধীনতার কয়েক বছর পর থেকে এখানে অতিথিরা অবস্থান করা বন্ধ করে দেন। পরে নামে মাত্র দুই বার সংস্কার করা হলেও গত ২৫ বছর ধরে ঐতিহাসিক ডাকবাংলোটির দিকে কারও নজর নেই।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বাংলোর চারপাশে ঝোপঝাড়। চার চালা টিনের একটি অতিথিশালার দরজা-জানালা তালাবদ্ধ। পাশে দু’টি আবাসিক ভবনে উপরের চালা, দরজা জানালা নষ্ট হয়ে পড়েছে। ডাকবাংলো বলতে শুধু এখন ভবনের চারপাশের দেয়াল!

তবে কোনো কোনো দেয়ালের বেশির ভাগ ইট কে বা কারা যেন খুলে নিয়ে গেছে। ভবনের চারপাশে বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের বোতল ও মাদক গ্রহণের সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। যা থেকে প্রকট গন্ধ ছড়াচ্ছে। সেখানে গিয়ে দরজা-জানালা নষ্ট হওয়া একটি ঘরে দেখা গেল ৬/৭ জনের জুয়ার আড্ডা।

জানতে চাইলে স্থানীয় ছবির উদ্দীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্বাধীনতার পর কয়েক বছর বাংলোটিতে ব্যাপক লোকজনের সমাগম ছিল। এরপর প্রায় ২৫/২৬ বছর থেকে নজরদারির অভাবে ডাকবাংলোটি এখন ভুতুড়ে এলাকায় পরিণত হয়েছে। এলাকার কিছু বখাটে লোকজন মাদক ব্যবসা, জুয়ার আসর ও বিভিন্ন অসামাজিক কাজে এটি ব্যবহার করছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/23/1550925563839.jpg

তিনি বলেন, বাংলোটির সঙ্গেই ঝলমলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রতিনিয়ত বখাটেদের উৎপাতের শিকার হয় স্কুলের শিশু-কিশোররাও। রাস্তার পথচারীরাও হয়রানির শিকার হয় বখাটেদের। এটা সহ্যের বাইরে। আমরা পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে কোনো সুফল এখনও দেখিনি।

জেলা পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আবুল ফজল বলেন, পুঠিয়া রাজপরগনা এলাকায় বেড়াতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের রাত্রী যাপনের মত কোনো বাসস্থান এখানে নেই। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর পরিষদের প্রথম অধিবেশনে বাংলোটি সংস্কার বিষয়ে জানিয়েছি। এ ছাড়া বিষয়টি বিভিন্ন দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারাকেও কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে, তবে তিনিও কোনো কর্ণপাত করেননি। তবে বর্তমান সাংসদ কিছু দিনের মধ্যে জরাজীর্ণ ভবনগুলো ভেঙ্গে আধুনিক মানের একটি ডাকবাংলো তৈরি করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন বলে মৌখিকভাবে আমাদের জানিয়েছেন। আশা করছি- এবার ঐতিহাসিক এ ডাকবাংলোটি সংস্কার করা সম্ভব হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওলিউজ্জামান বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। একটি ডাকবাংলো জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে বলে জেনেছি। এখনও পরিদর্শন করতে পারিনি। তবে দ্রুত জেলা পরিষদের মাধ্যমে বাংলোটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার কাজ করা হবে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের মোবাইলে কয়েক দফা কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে এসএমএস করেও কোনো প্রতিউত্তর মেলেনি।

   

বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ

বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ মানে হাসি। ঈদ মানে খুশি। সেই হাসি-খুশি নেই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে। সোমবার (১৭জুন) পালিত হবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমা নিয়ে ঈদ উদযাপন করবে সারাদেশের মানুষ। কিন্তু ইতোমধ্যেই সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। তাই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে নেই ঈদের আনন্দ।

জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির পানিতে সিলেটের সীমান্ত উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রদান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কিছু কিছু স্থানে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে।

সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। পুরো জেলায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৮ জন মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা। এই উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ জন। জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ৫৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে জেলা প্রশাসন। আশ্রয় নিয়েছেন ৫৩ জন। এরমধ্যে ওসমানী নগরে ৪৩ জন ও বালাগঞ্জে ১০জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, রোববার (১৬জুন) বিকাল ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৯২ সেন্টিমিটার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেটে ১৬ জুন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের সতর্কবাণী দিয়েছেন।

এদিকে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের উপর দিয়ে একাধিক স্থানে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তাছাড়া কানাইঘাট উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বাজার হাটে হাঁটু সমান পানিও দেখা যায়।

নতুন করে কানাইঘাট উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে হাওর ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ওই এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণ এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।

সিলেট জেলা প্রশাসন ও সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি আছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় উদ্ধারকাজের জন্য নৌকাও প্রস্তুত আছে। ঈদের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ খাবারের আয়োজনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণসহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

;

ফাঁকা রাজধানীতে শুধু হাসপাতালের সামনে ভিড়



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ উৎসব পালন করতে মেগাসিটি ঢাকার বেশিরভাগ বাসিন্দারা গ্রামে ফিরে গেছেন। এ কারণে নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গলির সড়কগুলোও প্রায় খাঁ খাঁ করছে। মুহূর্তেই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোনো সিগন্যালে দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়ছে না। অন্য সময়ে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহন গিজগিজ করলেও ঈদের আগের দিনে মাঝে মধ্যে দু’চারটি বাসের দেখা মিলছে।

রোববার (১৬ জুন) হাসপাতালগুলোর সামনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ধানমন্ডিতে পপুলার মেডিকেল কলেজ, গ্রিন রোডে অবস্থিত ল্যাবএইড হাসপাতাল, গ্রিন লাইফ হাসপাতালের সামনে রাস্তার ওপর অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘ সারির পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। যা নগরীর আর কোনো সড়কে দেখা যায়নি।

 অনেকেই রাজধানী ছেড়েছেন। যে কারণে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ ও রেল স্টেশন কমলাপুর ও বিমানবন্দরে কিছুটা যাত্রীর চাপ দেখা গেছে।

রাজধানীতে মধ্যম আয়ের লোকদের শপিংয়ের অন্যতম গন্তব্য নিউ মার্কেটও ক্রেতা শূন্য। অনেকেই দোকান খুলে বসে থাকলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। ফাঁকা সড়কের মধ্যে, মাঝে মধ্যে দু’চারজন ক্রেতা হাজির হচ্ছেন। যে কারণে দুপুরের পর কিছু দোকানি বন্ধ করে দিয়েছেন।


কাপড়ের দোকানে ক্রেতার সমাগম না থাকলেও জুতার দোকানে কিছুটা ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে। রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও বাটা সিগন্যাল এলাকায় কিছুটা সরব দেখা গেছে। অনেকেই ঘুরে দেখছেন নতুন কোনো ডিজাইন এসেছে কিনা। তবে ক্রেতার তালিকায় তরুণদের আধিক্য লক্ষণীয়। অনেকে বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন জুতা কিনতে।

মিরপুর রোড, রোকেয়া সরণি, বিজয় সরণি, প্রগতী সরণি ঘুরে তেমন লোক সমাগম দেখা যায় নি। 

গলি ও মহল্লার প্রশস্ত সড়কগুলোকে শোভা পাচ্ছে অস্থায়ী বিশাল বিশাল সেড। যেখানে কোরবানির পশু এনে রাখা হয়েছে। কিছু লোকজন কোরবানির পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত, আর ছোট শিশুরা মেতে উঠেছেন ভিডিও এবং সেলফি তোলায়।

অন্যদিকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পাড়ায় মহল্লায় ঘুরছে গরু ছাড়লের খাবার নিয়ে। তাদের কারো ভ্যানে কাঁঠাল পাতা, কোনো ভ্যানে খড় ও ঘাস শোভা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে পুরো উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে রাজধানীজুড়ে। আকাশ মেঘলা থাকায় রাজধানীর তাপমাত্রা কয়েকদিন তুলনায় অনেকটা কম। তাই ফাঁকা রাস্তায় ব্যাটবল হাতে নেমেছেন শিশুরা।

;

ঈদ বাজারেও গাইবান্ধায় জুয়েলারি ব্যবসায় মন্দা



মাসুম বিল্লাহ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই কোরবানির ঈদ। এই ঈদের বাজারেও ভালো নেই গাইবান্ধার জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সারা বছর ব্যবসা যেমনই যাক না কেন মুসলমানদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুই ঈদ এবং হিন্দুদের পূজা-পার্বণে তাদের ব্যবসা বেশ ভালো হতো।

কিন্তু গেল বছর থেকেই দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি লাখ টাকার ওপরে। সোনার দাম তো কমছেই না, বরং বাড়ছেই। সময়ে সময়ে এই ধাতুর দাম এক টাকা কমলে তো বাড়ে দুই টাকা! ফলে সোনার চলমান এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে কোনো ভাবেই সুবিধা করতে পারছেন না গাইবান্ধার ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ সময় ধরে এই মন্দার বাজারে টিকতে না পেরে গেল দেড় বছরে জেলায় ব্যবসা ছেড়েছেন অন্তত ৪০ জন জুয়েলার্স ব্যবসায়ী। এছাড়া পেশাও বদল করেছেন অনেক কারিগর। যারা টিকে আছেন তারাও রয়েছেন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।

বাংলাদেশ জুয়েলার্স আ্যসোসিয়েশনের (বাজুস) সর্বশেষ (১১ জুন-২০২৪) নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী দেশের বাজারে এখন ভালো মানের ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের মূল্য ১ লাখ ১১ হাজার ৬৩৬ টাকা। আর নিম্নমানের ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের বর্তমান বাজার মূল্য ৯৫ হাজার ৬৯১ টাকা।

জুয়েলার্স ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকট, স্বর্ণের বাজারের ঊর্ধ্বগতি আর বড় বড় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে আজ দেশের জুয়েলারি ব্যবসার করুণ অবস্থা। যার ফল স্বরূপ এক দিকে ধনাট্য ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে লাভবান হচ্ছেন। অন্যদিকে, এর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এই পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া যারা মাঝামাঝিতে রয়েছেন তারা পড়ছেন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।


এছাড়া একাধিক জুয়েলার্স ব্যবসায়ী বলছেন, মফস্বল এলাকায় স্বর্ণ ক্রয়ের সব চেয়ে বড় অংশই হচ্ছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। কিন্তু গত বছরের শেষের দিকে অস্বাভাবিকভাবে স্বর্ণের দাম বাড়তে শুরু করলে স্বর্ণ ক্রয় তাদের সামর্থ্যের বাইরে চলে যায়। ফলে স্বর্ণের বাজার উর্ধ্বকালের শুরু থেকেই বিশেষ করে মফস্বলে জুয়েলারি ব্যবসায় মন্দা কাটছেইনা। তবে, তারা জানান দেশের অভিজাত এলাকার জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরা মোটামুটি ব্যবসা করলেও অন্যদের অবস্থা খুবই খারাপ।

রোববার (১৬ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গাইবান্ধার পুরাতন বাজার সংলগ্ন সব চেয়ে বড় স্বর্ণের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুই-একটি দোকানে কারিগররা কাজ করলেও বেশিরভাগ দোকানের কারিগররা কাজ করছেন সাধারণ দিনের মতই। কেউ কেউ অলস সময় পার করছেন। আবার কাউকে মোবাইল চেপে সময় পার করতেও দেখা গেছে।

এ সময় শ্যামা জুয়েলার্সে আসা শারমিন জাহান নামের এক স্বর্ণ ক্রেতা বলেন, ‘আমার ভাতিজিকে আমি একটি স্বর্ণের চেইন গিফট করতাম। কিন্তু স্বর্ণের দাম অনেক বেড়ে গেছে, যা এখন আমার সাধ্যের বাইরে। আমি এখন তাকে কানের রিং দেবো। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দাম বৃদ্ধির কারণে দিতে পারছি না।

শ্যামা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী মানিক কুমার মল্লিক বলেন, ‘দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট এবং স্বর্ণের ঊর্ধ্বগতির কারণে চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আমাদের জুয়েলারি ব্যবসা। গাইবান্ধায় আমাদের কাস্টমার (ক্রেতা) বলতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। কিন্তু বর্তমান সময়ে স্বর্ণের দামের উর্ধ্বগতির কারণে ক্রয় ক্ষমতা তাদের বাইরে চলে গেছে। এর প্রধান কারণ দেশের অর্থনৈতিক সংকট।

তিনি আরও বলেন, অল্প কিছুদিন আগেও মানুষ বিয়ে শাদি কিংবা জন্মদিনের উপহার হিসেবে সোনার আংটি, কানের দুল কিংবা চেইন দিতেন। কিন্তু এখন সোনার উপহারের বদলে নগদ অর্থ দেন। কারণ স্বর্ণের দাম তাদের নাগালের বাইরেই বলা যায়। বিশেষ প্রয়োজন এবং বাধ্য হওয়া ছাড়া বিলাসিতা বা শখ পূরণের জন্য তারা আর স্বর্ণ ক্রয় করছেন না।

এ সময় ওই বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়েলার্স ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমান দেশের ধনাঢ্য শ্রেণির স্বর্ণ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে আমাদের মতো মধ্য শ্রেণির জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরা চরম সংকটের মধ্যে আছি। এই সিন্ডিকেটের কারণেই অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজ ব্যবসা ছেড়েছেন। অনেক কারিগর পেশা বদল করে অটোরিকশা চালাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম সঞ্জু মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সারা দেশেই স্বর্ণের ব্যবসার একই অবস্থা। এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। গাইবান্ধা জেলায় ৩০০ জুয়েলার্স ব্যবসায়ী রয়েছে। সংকটের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা ছেড়েছেন। পেশাও বদল করেছেন অনেক কারিগর।

;

লঞ্চের ডেক থেকে কেবিন সবখানে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে সদর ঘাট লঞ্চ টার্মিনালের প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। দক্ষিণ অঞ্চলের প্রতিটি লঞ্চের ডেক থেকে কেবিন সব জায়গায় যাত্রীতে পরিপূর্ণ।

রোববার (১৬ জুন) বিকেলে ঢাকা সদরঘাট টার্মিনাল ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়। প্রতিটি লঞ্চ ছাড়ার আগেই যাত্রীতে উপচেপড়া ভিড়।

বরগুনার উদ্দেশ্য বিকাল ৫টায় ছেড়ে যাবে সুন্দরবন-৭। বিকাল ৪টায় লঞ্চ ঘুরে দেখা যায় এই লঞ্চের সব কেবিন ও শোভন চেয়ার বিক্রি হয়ে গেছে। লঞ্চের ডেকগুলো যাত্রী ভরে গিয়েছে। ডেকের যাত্রীরা যেভাবে পারছে ওই বিছানা চাদর কেউ মাদুর দিয়ে দখল করে নিয়েছে।

লঞ্চটির টিকেট মাষ্টার শরীফ উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, দুপুর থেকে লঞ্চটি ডেক ও শোভন চেয়ার যাত্রীতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। কেবিন গুলো সাত দিন আগে বিক্রি হয়ে গেছে।

পুরান ঢাকার জুতার ব্যবসায়ী হারুন মিয়া পরিবারসহ মাদুর দিয়ে ডেকে বসে আছেন। বার্তা২৪. কমকে তিনি বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটাতে তীব্র গরমের মধ্য গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। ডেকে সিট পাবো কিনা এই জন্য দুপুরে পরিবার নিয়ে লঞ্চে অপেক্ষা করছি।

একই লঞ্চে ডেকে বিছানা চাদর দিয়ে সাত সদস্যর পরিবার নিয়ে বসে আছেন বেসরকারি স্কুল শিক্ষক আবু কালাম। বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, গত একবছর পদ্দা সেতু হয়ে বাড়ি গিয়েছি। বাসে বাচ্চাদের কষ্ট হওয়ায় একটু স্বাচ্ছন্দে যাওয়ার জন্যই যাচ্ছি। ভাবছি লঞ্চে ভিড় কম হবে, এখন দেখছি মানুষের অভাব নেই।

সুন্দরবন-৭ এর মত ঘাটে বরিশালের প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছে। তবে এবারের ঈদ যাত্রায় কোন যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে অভিযোগ করেনি। যাত্রীদের নিরাপত্তায় ঘাট এলাকায় বিআইডব্লিটিএ স্বেচ্ছাসেবী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার রয়েছে।

;