ফুল চাষি সাঈদ, নিঃস্ব থেকে লাখপতি



ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, রংপুর, বার্তা২৪.কম
ফুল চাষি আবু সাইদ, ছবি: বার্তা২৪

ফুল চাষি আবু সাইদ, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রম আর ইচ্ছা শক্তি থাকলে মানুষ যে সফল হতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আবু সাইদ। পঁয়ত্রিশ বছর বয়সী এ যুবক পরীক্ষার খাতায় ফেল করলেও জীবন যুদ্ধে জয়ী। তার মাসিক আয় এখন প্রায় ৪০ হাজার টাকা। অভাব এখন আর তার দুয়ারে হানা দিতে পারে না। ফুল চাষ করেই তিনি এখন লাখপতি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/13/1550037287611.jpg

তামাক চাষে অন্য সবাই যখন ব্যস্ত, তখন মাত্র ২৫ শতক জমি নিয়ে গোলাপের চাষ শুরু করেন সাঈদ। এক বছরের মাথায় লাভের অংশ বৃদ্ধি হতে থাকে। সঙ্গে তার চাষাবাদে যুক্ত হতে থাকেন গ্রামের স্থানীয় মানুষরা।

এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করা সাঈদের ফুল চাষ দেখে গ্রামের অনেকেই তামাক চাষ ছেড়েছেন। বিষাক্ত তামাকের জমিতে এখন গোলাপের মিষ্টি হাসি। আর সাঈদের সেই স্বল্প পরিসরের ফুল চাষ এখন বেড়ে পৌঁছেছে ছয় একর জমিতে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/13/1550037350634.jpg

সাঈদ স্বাবলম্বী হওয়ায় যেমন হাসি ফুটেছে তার পরিবারের অন্যদের মুখে। তেমনি গ্রামের প্রায় ৩০টি পরিবারের তিন শতাধিক নারী ও পুরুষের কাজের ব্যবস্থা হয়েছে সাঈদের নার্সারিতে। পনের বছরেরও বেশি সময় ধরে ফুলের চাষ আর ব্যবসা থেকে সাঈদ কিনেছেন কয়েক বিঘা জমি। তৈরি করেছেন ঘর-বাড়ি।

সাঈদের নার্সারিতে বছর জুড়েই থাকে ফুলের চাহিদা। তবে শীত মৌসুম এলে চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেয়ে হয় তার কর্মীবাহিনীকে। গোলাপের পাশাপাশি ছয় ধরণের ফুল চাষ করছেন তারা। রংপুরের ফুল ব্যবসায়ীদের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা ও সিলেটেও যাচ্ছে এসব ফুল।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Feb/13/1550037393455.jpg

রংপুর মহানগরীর উত্তম হাজিরহাট মুচির মোড় এলাকার বাসিন্দা আবু সাঈদ। সাঈদ এখন বেশির ভাগ সময় ঢাকায় থাকেন। সেখানে ফুলের দোকান গড়েছেন। সিলেটের বিয়ানী বাজারেও তার ফুলের দোকান রয়েছে। দু’ একদিন পর পর রংপুর থেকে সেখানে ফুল পাঠানো হয়।

রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের কোল ঘেঁষে উত্তর হাজিরহাট মুচির মোড়। এই এলাকার থেকে গ্রামের একটু ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে নানা ধরনের গোলাপের সমারোহ। বিশাল মাঠে গোলাপের পাশাপাশি বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হচ্ছে। দেখলে মনের প্রশান্তির পাশাপাশি চোখ জুড়িয়ে যাবে।

বাগানের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটান সাঈদের বড় ভাই আবদুস সালাম। ঘরের সাথেই বাগান হওয়ায় সারাদিন ফুলের সাথেই পড়ে থাকেন তিনি। পড়ালেখা না জানা থাকলেও সালাম জানেন ফুলকে ভালোবেসেই আজকের তাদের উন্নতি হয়েছে। 

তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আগে তাঁদের পরিবারের লোকেরা তামাক চাষ করতেন। সাঈদ ফুল চাষ করে সংসারে আয় বেড়ে যাওয়ায় এখন সবাই ফুলের চাষাবাদ নিয়েই ব্যস্ত। তামাকের জমিতেই এখন ফুলের চাষ হচ্ছে। অভাব অনটন নেই। সবাই পরিবার পরিজন নিয়ে বেশ ভালোই দিন কাটাচ্ছেন। তাদের সাথে গ্রামের ১৮ জন নিয়মিত কর্মচারীর পাশাপাশি ফুলের মালা তৈরির জন্য আড়াই’শ নারী শ্রমিক চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন।

ভাতিজা সাজু আহমেদ জানান, প্রথম স্বল্প পরিসরে ২৫ শতক জমিতে গোলাপের চাষ শুরু করেন তার ছোট চাচা আবু সাঈদ। ফুলের চাষাবাদে লাভ বেশি হওয়াতে ধীরে ধীরে জমির পরিধি বাড়তে থাকে। এখন প্রায় ৬ একর জমিতে গোলাপ, গাধা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, কাঠবেলি, দেশি বেলিসহ সময় উপযোগী নানা জাতের ফুল চাষ করা হয়। ঢাকা ও সিলেটের পাশাপাশি রংপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে তাদের ফুল যাচ্ছে।

বাড়িতে বসে বসে কাঠ বেলি, দেশি বেশি, গাধা, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ফুলের মালা ও চেইন তৈরিতে ব্যস্ত থাকেন প্রায় দুই শতাধিকের বেশি নারী। তাঁদের মধ্যে কোহিনুর আর ইসমত আরার সাথে কথা হয়। তাঁরা জানান, প্রতিদিন তারা চুক্তিভিত্তিক ২০০-৪০০ টাকা করে আয় করছেন। এতে তাদের সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার খরচ চালাতে সুবিধা হচ্ছে।

অন্যদিকে সাঈদের নার্সারির তত্ত্বাবধায়ক রহমত উল্লাহ্ বলেন, আমি নিজেই এক সময় খুব অভাবে ছিলাম। সংসার আর বাড়ি-ঘরের অবস্থা ভালো ছিল না। সাঈদের ফুল বাগানে চাকরি নেয়ার পর থেকে ভালো আছি। এখন প্রতি মাসে ১৫ হাজার বেতন পাচ্ছি। সংসারে আয়-উন্নতি বেড়েছে।

ঢাকায় থাকা আবু সাঈদের সাথে মুঠোফোন কথা হয়। তিনি জানান, বর্তমানে তিনি প্রায় ছয় একর জমিতে গোলাপ ও গাধাসহ নানা জাতের ফুলের চাষ করছেন। খরচ ও কর্মচারীর বেতন বাদে ফুল বিক্রি করে তাঁর মাসিক আয় গড়ে ৩০-৪০ হাজার টাকা। এই আয়ের কারণে সংসারের উন্নতির সাথে সাথে ব্যবসা ও চাষাবাদ বেড়েছে।

সাঈদ বলেন, এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করার পর খুব হতাশায় ছিলাম। রাগ করে ঢাকায় চলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে এসে গোলাপ চাষ শুরু করি। সেই থেকেই ফুলের চাষ করে যাচ্ছি। দীর্ঘ বছরের এ চাষাবাদে তিনি কৃষি বিভাগ থেকে কোন সহায়তা বা পরামর্শ পাননি বলেও জানান এ যুবক।

এব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম জানান, আমাদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাইলে অবশ্যই তা পেত। তবে এখন থেকে তার বিষয়টি আমরা খোঁজখবর রাখব। সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা যায়, আমরা চেষ্টা করব। 

   

শান্তিরক্ষী দিবস

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা অনন্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস বুধবার। বুধবার (২৯ মে) বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হবে। বুধবার ভোরে পিসকিপার্স রানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৪’র আনুষ্ঠানিকতা।

মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মিডিয়া পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষায় অংশগ্রহণকারী সব সদস্যের সম্মানে উদযাপিত এ দিবসে বিশ্ব শান্তিরক্ষায় শাহাদত বরণকারী ও আহত সদস্যগণের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে। এ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে শাহাদত বরণকারী ও আহত শান্তিরক্ষী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে সম্মাননা প্রদান করবেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনী প্রধান এবং পুলিশ প্রধানসহ আরও অনেকে উপস্থিত থাকবেন।

দিবসটির মর্যাদা ও গুরুত্ব তুলে ধরে জাতীয় পত্রিকাসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বাংলাদেশ বেতারে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের অধিকার আদায়ে ছিলেন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। বিশ্বশান্তি রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অঙ্গীকার বাংলাদেশের মহান সংবিধানেও প্রতিফলিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর মানবতার কল্যাণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারকে ধারণ করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের পদযাত্রা সূচিত হয় ১৯৮৯ সালে; নামিবিয়া মিশনের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশ পুলিশের ২১ হাজার ৪৫৩ জন শান্তিরক্ষী বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে মিশন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে নারী শান্তিরক্ষী রয়েছেন এক হাজার ৮১০ জন।

বর্তমানে ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, মালি, সাইপ্রাস, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, সাউথ সুদান ও লিবিয়ায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের ১২০ জন নারী সদস্যসহ ৩৬৪ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০০০ সাল হতে বাংলাদেশ পুলিশের নারী পুলিশ কর্মকর্তাগণ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন।

বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষীরা নানা প্রতিকূলতার মাঝেও প্রচন্ড মানসিক শক্তিতে মিশন এলাকার জনগণকে আপন করে নিয়েছেন, তাদের পাশে থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ পুলিশ হাইতির ভূমিকম্প বিধ্বস্ত অসহায় মানুষের পাশে থেকে মানবিক সহায়তা দিয়েছে, আবার আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে পুলিশি সেবা প্রদান, পুলিশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পুনর্বিন্যাস ও পুনর্গঠন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অনন্য সাধারণ ভূমিকা রেখেছে, যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশের শান্তিরক্ষীরা দুর্গম ভৌগলিক পরিবেশ ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে মানবিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বশান্তি রক্ষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে চলেছেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারাবদ্ধ।

;

‘রিমাল’ এখন সিলেট থেকে উত্তর-পূর্বে ধাবমান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ স্থলভাগে এসে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে রবি ও সোমবার দেশব্যাপী তাণ্ডব চালায়। এতে বেশকিছু প্রাণহানিসহ অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন পড়ে। এছাড়া অনেক এলাকায় মোবাইল ফোন সংযোগে বিঘ্ন ঘটছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর থেকে ‘রিমাল’ সিলেট ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। এটি আরো দুর্বল হয়ে ক্রমশ উত্তর-পূর্বদিকে সরে যাচ্ছে। তবে এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের আধিক্যে তারতম্য বিরাজ করছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে স্থানীয় ৩ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উপকূলে চলাচলকারী জাহাজ ও নৌকাগুলোক উপকূলের কাছাকাছি ও সাবধানে চলাচলের নির্দেশনা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

;

সৈয়দপুরে বিমান চলাচল স্বাভাবিক, বিকল উড়োজাহাজ পার্কিংয়ে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সাড়ে ৫ ঘণ্টা পর উড়োজাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ মে) দুপুর ২টার দিকে ত্রুটিপূর্ণ বিমান রানওয়ে থেকে সরানোর পর বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট অবতরণের পর নোস হুইলে (সামনের চাকায়) ত্রুটি দেখা দেয়। রানওয়েতে থাকা বিমানের ত্রুটি সারানোর চেষ্টা করেও বিফল হয়ে অচল বিমানটিকে সেনাবাহিনীর একটি দলের সহযোগিতায় পার্কিংয়ে সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানটি রানওয়ের দক্ষিণ দিক থেকে উত্তরে যাওয়ার সময় নোসহুইলে (সামনের চাকা) ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় বিমানটি থেমে গেলে অল্পের জন্য বিমানের যাত্রীরা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষ বলেন, বিমানের ত্রুটি সারাতে প্রথমে টেকনিশিয়ান ও পরে সেনাবাহিনীর একটি দল কাজ করে। কিন্তু ত্রুটি সারাতে সময় লাগতে পারে, এ কারণে ত্রুটিপূর্ণ বিমানটিকে পার্কিংয়ে রেখে অন্যান্য ফ্লাইটগুলোর চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

;

রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশি ঋণে বড় দুই প্রকল্পের অনুমোদন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য অনুদানের পর এবার প্রথমবারের মত বিদেশি ঋণে বড় দুইটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি হোস্ট কমিউনিটির জন্য সড়ক, পানি, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য অবকাঠামোসহ বিভিন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করতে এই দুই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪৮২.৯৭ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার (২৮ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই দুই প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন। এ সময় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার, পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা ও হোস্ট কমিউনিটির জন্য নেওয়া দুই প্রকল্পে ৮৪৮২.৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৭৫৭.৭৯ কোটি টাকা ও বাস্তবায়নকারী সংস্থার তহবিল থেকে ৫.৫৩ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। এর বাইরে দুই প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদেশি উৎস থেকে ঋণ হিসেবে ৪৪৭৫.২৭ কোটি টাকা ও অনুদান হিসেবে ৩২৪৪.৩৮ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে।

এই দুই প্রকল্পে ঋণ ও অনুদান মিলে ৭৭১৯.৬৫ কোটি টাকা বিদেশি সহায়তার পুরোটাই দিচ্ছে বহুজাতিক উন্নয়ন সংস্থা বিশ্বব্যাংক।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, প্রায় ১৪ হাজার ৩৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরে সভায় মোট ১১টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬ হাজার ৫৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা ও বিদেশি উৎস থেকে ৭ হাজার ৮৭৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হবে।

মন্ত্রী জানান, Host and Forcibly Displaced Myanmar Nationals (FDMN) Enhancement of Lives through a Multi-Sectoral Approach Project (HELP): Infrastructure Related Project বাস্তবায়নে ৪০৮১.৮৪ কোটি টাকা প্রাক্বলিত ব্যয়ের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ঋণ ও অনুদান হিসেবে দিচ্ছে ৩৮১৪.৮৯ কোটি টাকা। অবশিষ্ট অর্থ সরকার ও বাস্তবায়নকারী সংস্থার তহবিল থেকে ব্যয় হবে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ইআরডি এই পাঁচ বাস্তবায়নকার সংস্থার মধ্যে সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবে।

ইআরডির সমন্বয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের Inclusive Services and Opportunities (ISO) for Host communities and FDMN Populations Project বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪০১.১৩ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে ৩৯০৪.৭৬ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

সভায় অনুমোদন পাওয়া পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলাধীন কর্ণফুলী নদী এবং সংযুক্ত খালসমূহের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন রোধকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্পে ১৩৪.০৯ কোটি টাকা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা (১ম পর্যায়) প্রকল্পে ৮৭৪.৫৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় ৪৮০০০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চালের আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬৭.৫২ কোটি টাকা।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের রাজশাহী, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ২১০০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের Technical Assistance for Repurposing of Agricultural Public Support Towards a Sustainable Food System Transformation in Bangladesh (TARAPS) প্রকল্পে ব্যয় হবে ১৮০.৫০ কোটি টাকা।

কুমিল্লা-লালমাই-চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর-বেগমগঞ্জ (আর-১৪০) (লক্ষ্মীপুর আন্তঃজেলা বাসস্ট্যান্ড হতে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তা) এবং বেগমগঞ্জ-সোনাইমুড়ী-রামগঞ্জ (আর-১৪২) (সোনাইমুড়ী হতে রামগঞ্জ) আঞ্চলিক মহাসড়ক ৪- লেনে উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬৭৯.৩২ কোটি টাকা।

আটটি নতুন প্রকল্প অনুমোদনের পাশাপাশি সভায় চলমান তিনটি প্রকল্পের সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিআইডব্লিউটিসি'র জন্য ৩৫টি বাণিজ্যিক ও ৮টি সহায়ক জলযান সংগ্রহ এবং ২টি নতুন স্লিপওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮৩৭.১৬ কোটি টাকা।

প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনীতে ১৩১৮.২০ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। এ হিসাবে এই প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৫১৮.৯৬ কোটি টাকা। ১৮৮৫.৯৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এই প্রকল্পের সর্বশেষ প্রাক্বলিত ব্যয় থেকে সংশোধনীতে ব্যয় কমেছে ১২৯.৬৯ কোটি টাকা।

এর বাইরে ১২৯.১৪ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর এ পানি শোধনাগার ও গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

;