‘ঘর পেয়ে মেয়েকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি পেয়েছি’



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে ঘর পেয়েছি, বিদ্যুৎ পেয়েছি, পানি পেয়েছি। এতে মেয়েদের নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস ও শক্তি পেয়েছি। আমরা আপনার কাছে ঋণী।

কথাগুলো বলছিলেন কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার দরগাহ আশ্রয়ণ কেন্দ্রের সুবিধাভোগী হোসনে আরা বেগম। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। স্বামী পরিত্যক্তা এই নারী ২ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন আশ্রয়ণ প্রকল্পে। পেয়েছেন প্রতিবন্ধী কার্ডও। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পেরে সে কৃতজ্ঞতা যেনো প্রকাশ করলেন নত মস্তকে।

মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে আশ্রয়ণ-২ পরিকল্পনার আওতায় সারাদেশে ১৮ হাজার ৫৬৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিন সকাল ১১টায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন। পরে সুবিধাভোগীদের সাথে কথা বলেন তিনি।

হোসনে আরা বলেন, আমি শারীরিক প্রতিবন্ধী ও স্বামী পরিত্যক্তা নারী। অনেক সময় না খেয়ে সময় পার করে দিয়েছি। মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করেছি। প্রতিবন্ধী বলে স্বামী ছেড়ে চলে গেছে। কেউ সাহায্য করেনি। মানুষের কাছে অনেক কটু কথা, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছি। আপনার কাছ থেকে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড পেয়েছি। আমার খুব কষ্ট হয়েছিলো। মনে হয়েছিলো যেনো মরে যাই কিন্তু মেয়েদের দিকে তাকিয়ে মরতে পারিনি।

দুইটা মেয়ে, চার ছেলের জনক রবিউল আলম। তিনিও ঘর পেয়েছেন একই প্রকল্পে। মৎস্যজীবী হিসেবে সাগরে নৌকা নিয়ে মাছ ধরেন। তিনি বলেন, নৌকা নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেলে কখনো মাছ পাই, কখনো পাই না। আমার ছেলে মেয়ের না খেয়ে থাকতে হতো। যখন ঝড়বৃষ্টি হয় আমার ছেলেমেয়ের জন্য অনেক কষ্ট হতো, কান্না করতাম।

এখন ঘর পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে জানিয়ে এই জেলে বলেন, আমার কোন ঘর ছিলো না। আমি স্বপ্ন দেখতাম আমার বাড়ি হবে, ঘর হবে। এখন আমার বাড়ি হয়েছে আপনার জন্য। জায়গা পেয়েছি, ঘর পেয়েছি, বিদ্যুৎ পেয়েছি। এখন আমার ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করতে পারে। আমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারি। আমার জেলে কার্ড আছে সেই কার্ডের মাধ্যমে চাল পাই, খাবার পাই।

ভোলার চরফ্যাশন আশ্রয় কেন্দ্র থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন বিধবা বিবি আয়েশা। তিনি বলেন, নদী আমার বাড়ি ঘর ভাইঙ্গা ফেলেছে। ২৪ বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে লিভার ক্যান্সারে। আমার একটা ভাঙো ঘর ছিলো, আমার কোন সামর্থ্য ছিলো না একটা টিন ঘরে লাগানোর। আপনি ঘর দিয়েছেন, বিদ্যুৎ দিছেন, স্কুল দিছেন, ঘাটলা দিয়েছেন। আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমি কখনো ভাবি নাই, আমি একটা ঘর পাবো। আমি নামাজ পড়ে দোয়া করি যেনো আপনি ভাল থাকেন।

ঝালমুড়ি বিক্রি করেন বাবু মিয়া। নিজের বাড়ি ঘর বলতে কিছু ছিলো না। এখন সে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ মহিষামুড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি জমিসহ ঘরের মালিক। প্রধানমন্ত্রীর সামনে তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী, আপনি ঘর দিয়েছেন আমরা অনেক সুখে আছি। আমার যখন ঘর ছিলো না তখন অনেক কষ্টে থেকেছি। হোটেলে কাজ কাম করতাম। বাড়িতে থাকার জায়গা ছিলো না। মানুষের বাড়িতে থেকেছি। আমার মা বৃদ্ধ ছিল। আমরা মা ছেলে মিলে হোটেলে কাজ করতাম। কিন্তু থাকার জায়গা ছিলো না। সারাদিন কাজ করে, সারা রাত জেগে আবারও সকালে হোটেলে চলে যেতাম। ছেলে মেয়ে নিয়ে মানুষের বাড়িতে থাকতাম।

ঝর-বৃষ্টিতে মাথা গোঁজার জায়গা ছিলো না উল্লেখ করে বাবু মিয়া আরও বলেন, আমার মেয়ে বলতো, বাবা আমাদের কি কখনো বাড়ি হবে না? আমি বলতাম, ধৈর্য ধরো মা, আমাদেরও হবে একদিন। কিন্তু আমি অসুস্থ মানুষ, কিভাবে হবে কিছুই বুঝতাম না। প্রধানমন্ত্রী আপনার চেষ্টায় আজকে ঘর পেয়েছি। আজকে আমি খুব ভাল আছি।

সবার উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে ঘর পাচ্ছেন এটা আপনাদের নিজের সম্পত্তি, এটার যত্ন নেওয়া আপনাদের দায়িত্ব।

এসময় বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুঁটাতে চেয়েছিলেন। সেটিই আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। এজন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। বঙ্গবন্ধুর মতো আজীবন দেশের মানুষে কল্যাণে ও তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান তিনি।

বিজিবির পাহারায় সারাদেশে চলছে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিজিবির পাহারায় সারাদেশে চলছে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন

বিজিবির পাহারায় সারাদেশে চলছে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কঠোর পাহারায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে বিজিবির চট্টগ্রাম রিজিয়ন ও চট্টগ্রাম ব্যাটালিয়নের (৮ বিজিবি) নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন হতে তেলবাহী ট্রেন ঢাকা ও সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে তেল পৌঁছে দিচ্ছে।

বিজিবি সদরদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় ২৪টি তেলবাহী বগিসহ একটি ট্রেন ঢাকার উদ্দেশ্যে, সকাল সাড়ে ৬টায় ১৬টি তেলবাহী বগিসহ আরও একটি ট্রেন সিলেটের উদ্দেশ্যে, সকাল ১০টায় ১২টি তেলবাহী বগিসহ একটি ট্রেন দোহাজারীর উদ্দেশ্যে এবং বেলা ১১টায় ১২টি তেলবাহী বগিসহ আরেকটি ট্রেন হাটহাজারীর উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ছেড়ে যায়।

এছাড়া বিজিবির নিরাপত্তায় খুলনা ও ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে এবং শ্রীমঙ্গল থেকে সিলেটে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল করে।

সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন পৌঁছে দিতেও বিজিবি সদস্যরা নিরাপত্তা সহায়তা দেবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

;

আজ কোন এলাকায় কত সময় কারফিউ শিথিল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়ে এখনও দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান রয়েছে। এর মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, শনিবার (২৭ জুলাই) কারফিউ তুলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্দান্ত আসতে পারে। 

তবে আজও (২৬ জুলাই) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকা কারফিউয়ের আওতায় থাকবে।

ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এরপর বিকেল ৫টা থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরসহ চার জেলায় ফের শুরু হবে কারফিউ।

সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে রংপুর ও বরিশালে। রংপুরে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা সেখানে কারফিউ শিথিল থাকবে। বরিশালেও একই সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে। 

এছাড়া চট্টগ্রামে সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা, রাজশাহীতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা এবং সিলেটে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা থেকে রোববার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

;

জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ক ডিবিতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ তিনজনকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন- আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে ডিবির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিবি বলছে, নিরাপত্তা এবং জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

;

কারফিউ তুলে নেয়ার ব্যাপারে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কারফিউ নিয়ে সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা, তা আমরা দেখছি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার (২৭ জুলাই) আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনকারীদের আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এসময় সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়।

পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও এখনো পুরোপুরি এখন তুলে নেয়া হয়নি।

;