‘গণমানুষের সম্পৃক্ততা ছাড়া বাজেটের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈশ্বিক টালমাটাল অবস্থায় বর্তমানে দেশের সার্বিক অর্থনীতি চাপে আছে বলে মন্তব্য করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত বলেছেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং গণমানুষের সম্পৃক্ততা ছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না। বরাদ্দ যতই বাড়ুক না কেন, দরিদ্র-প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ নারীর অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং শোভন রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করা ছাড়া এর বাস্তবায়ন অসম্ভব।

মঙ্গলবার (১১ জুন) রাজধানীর সিরড্যাপে ‘বাজেট প্রক্রিয়া ও উন্নয়নে প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণ এবং বাজেটে তাদের ন্যায্য বরাদ্দ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. আবুল বারকাত বলেন, আমাদের হিসেবে-নিকেশ চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) ওপর নির্ভর করে করা। এটি আমাদের সচেতন সিদ্ধান্ত। কেননা সদ্য ঘোষিত বাজেট প্রস্তাব যেহেতু চূড়ান্ত হয়নি, চূড়ান্তকরণে আলোচনা চলছে। তাই ঘোষিত বাজেট প্রস্তাব আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছি, কিন্তু হিসাবে কাজে লাগাইনি। একই সাথে, আমরা চলতি অর্থবছরের বাজেটের প্রকল্প অনুযায়ী ঘোষিত বরাদ্দ ধরে হিসাব করেছি, সংশোধিত বরাদ্দ খুঁজতে যাইনি-কারণ, ঘোষিত বরাদ্দ সরকারের চিন্তা ভাবনার এক ধরণের প্রতিফলনও বটে, যা রাজনৈতিক-অর্থনীতির বিশ্লেষণে সরকারের মন গড়া'র জন্য দরকারি।

গবেষণার হিসেবে-পদ্ধতি নিয়ে কারো ভিন্নমত থাকতেই পারে জানিয়ে তিনি বলেন, একটি বিষয় নিয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই যে চার বর্গ নিয়ে বিশ্লেষণ করা হলো (পারিবারিক কৃষি, গ্রামীণ নারী, আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কার উদ্দিষ্ট মানুষ-তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় বাজেট বরাদ্দ অতি মাত্রায় অপ্রতুল এবং তার আশু বৃদ্ধি অতি জরুরি বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, বরাদ্দতেই শেষ নয়, হতে হবে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন। এজন্য, বাজেটের লাইন আইটেম নির্ধারণ, বরাদ্দ প্রদান, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণে সক্রিয় জন-সম্পৃক্ততা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সংস্কার এবং তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বাজেট বরাদ্দ দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে 'বাজেট প্রক্রিয়া ও উন্নয়নে প্রান্তিক মানুষের অংশগ্রহণ এবং বাজেটে তাদের ন্যায্য বরাদ্দ' বিষয়ে গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে ড. আবুল বারকাত জানান, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে জাতীয় বাজেট কার্যকর একটি হাতিয়ার। তবে, দারিদ্র্য বিমোচনে (জনগোষ্ঠী-এলাকা-নৃপরিচয়-লৈঙ্গিক পরিচয়-শ্রেণী কাঠামোর ভিত্তিতে) বাজেটের পূর্ণ সম্ভাবনা ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা-সে বিষয়ে রয়েছে যথেষ্ট মাত্রার সংশয়।

বর্তমান নয়া উদারবাদী রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কাঠামোতে এটাই স্বাভাবিক যে জাতীয় বাজেটে দরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য 'পর্যাপ্ত' ও 'ন্যায়সঙ্গত' বরাদ্দ থাকে না।

পারিবারিক কৃষি-সংশ্লিষ্ট মানুষ: কারা? কেমন আছেন? তুলে ধরে বলা হয়, জাতিসংঘ ২০১৯ থেকে ২০২৮-এই সময়কালকে পারিবারিক কৃষি দশক হিসেবে ঘোষণা করেছে। অথচ, পারিবারিক কৃষি প্রপঞ্চটিই আমাদের দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয়। বাংলাদেশে ঐতিহাসিকভাবেই পারিবারিক কৃষি খানাতে কৃষি খাতের সমস্যাগুলো অনেক বেশি প্রকট-এ যেন আধপেটা খেয়ে, কোনোভাবে টিকে থাকার লক্ষ্যে পরিচালিত এক কৃষিব্যবস্থা।

আমাদের হিসেবে, বর্তমানে মোট কৃষিখানার ৯২% পারিবারিক কৃষি খানা-যার সংখ্যা ১ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার ৫৯১ জন। রক্ষণশীল হিসেবে যদি ৯২% এর বদলে ৮০% ও ধরে নেই, তাহলে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৫ লাখ ৮৩ হাজার ১১২-পারিবারিক কৃষি খানার মোট সদস্য সংখ্যা ৬ কোটি ২৭ লাখ ৯ হাজার ৯৯৪।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে পারিবারিক কৃষির জন্য বাজেটে বরাদ্দের হিসেব তুলে ধরে বলেন, জাতীয় বাজেটে পারিবারিক কৃষির জন্য মোট বরাদ্দ কত তার কোনো 'দাফতরিক' হিসেবে নেই। আর থাকবার কথাও নয়- কারণ 'পারিবারিক কৃষি' প্রপঞ্চটিই আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত নয়। আমাদের বিশ্লেষণে, পারিবারিক কৃষির বাজেট বরাদ্দের উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজেটে। এছাড়াও, আরও ১৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদফতরের অধীনে কিছু প্রকল্প বা কর্মসূচি রয়েছে যেগুলো নানান মাত্রায় পারিবারিক কৃষির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে। তেমনি 'সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ' খাতের ভূমিকা রয়েছে পারিবারিক কৃষি খানার ও কৃষকের জীবন-মান উন্নয়নে।

আমাদের হিসেবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে পারিবারিক কৃষির জন্য মোট বরাদ্দ ৪০ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা-যা মোট বাজেটের ৫.৩%।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে পারিবারিক কৃষি-সংশ্লিষ্ট কৃষিখানার সদস্যপ্রতি বরাদ্দ ছিল গড়ে ৬ হাজার ৪৬৯ টাকা, যা জাতীয় মাথাপিছু গড় বরাদ্দের (যার পরিমাণ ৪৬ হাজার ১২৪ টাকা) তুলনায় ৮৬% কম।

পারিবারিক কৃষিসংশ্লিষ্ট মানুষের জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পারিবারিক কৃষি-সংশ্লিষ্ট মানুষদের জন্য মোট বরাদ্দ হবে ৪৫ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ৭ হাজার ২৬৫ টাকা। চলমান বাজেট বরাদ্দে পারিবারিক কৃষিসংশ্লিষ্ট মানুষ তার ন্যায্য বরাদ্দ পাননি। 'আদর্শ অবস্থা' বাস্তবায়ন কঠিনসাধ্য। তাই, পারিবারিক কৃষিসংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর জন্য বিদ্যমান মাথাপিছু বরাদ্দের প্রকৃত পক্ষে দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমরা হিসেব করেছি। যদি মাথাপিছু ২ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসেব করি, তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৯১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা, যা মোট অনুমিত জাতীয় বরাদ্দের ১০.৬%।

গ্রামীণ নারী কারা কেমন আছেন তুলে ধরে তিনি জানান, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি নারী (৫০.৪৯%)। মোট জনসংখ্যার মধ্যে গ্রামীণ নারী ৩৫.১%। গৃহস্থালী বিভিন্ন কাজের পাশাপাশি গ্রামীণ নারীদের অন্তত ৭০% প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। যদিও তাদের কাজের আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয় না। কৃষিতে নারীরা যে শ্রম দেন তার ৪৫.৬% ক্ষেত্রে কোনো পারিশ্রমিক পান না। আর বাকি ৫৪.৪% ক্ষেত্রে পারিশ্রমিক পান বাজারমূল্যের চেয়ে কম। একই বৈষম্য অকৃষি খাতেও।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীণ নারীর জন্য বাজেট বরাদ্দের হিসেবপত্তর তুলে ধরে জানান, আমাদের হিসেবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটে গ্রামীণ নারীর জন্য মোট বরাদ্দ ৩১ হাজার ৩১৩ কোটি টাকা-যা মোট বাজেটের ৪.১%। অর্থাৎ, গ্রামীণ নারীর জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ গড়ে ১০ হাজার ৮১৪ টাকা, যা জাতীয় মাথাপিছু বরাদ্দের চেয়ে প্রায় ৭৬% কম।

গ্রামীণ নারীর মধ্যে ভূমিহীন, কৃষি-মৎসজীবীতার সাথে যুক্ত নারী, বিধবা, এবং প্রতিবন্ধী নারীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ। তাদের বাজেট-বরাদ্দ বঞ্চনা আরও বেদনাদায়ক। অনুমিত যে এই ধরণের গ্রামীণ নারীরা বাজেট থেকে মাথাপিছু পান সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৫৭০ টাকা।

গ্রামীণ নারীর জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত সে বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ নারীর জন্য মোট বরাদ্দ হবে ৩৫ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ১২ হাজার ১৪৪ টাকা। যদি আমরা মাথাপিছু ২ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসাব করি, তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ৭০ হাজার ৩২৯ কোটি টাকা, যা মোট অনুমিত জাতীয় বরাদ্দের ৮.২২%।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্রামীন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেট বরাদ্দের হিসাব তুলে ধরে জানানো হয়, জাতীয় বাজেটে আদিবাসীদের জন্য কাঙ্খিত প্রতিফলন নেই, যার ফলে তাদের উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এটি একটি বড় বৈষম্য যা বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আমাদের হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আদিবাসী মানুষের জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার ২৩ কোটি টাকা, অর্থাৎ, আদিবাসী মানুষের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ছিল গড়ে ১২ হাজার ৪৭ টাকা। অর্থাৎ, আদিবাসী মানুষের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ জাতীয় মাথাপিছু বরাদ্দের চেয়ে প্রায় ৭৪% কম।

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২২ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, দেশে আদিবাসীর সংখ্যা (যদিও, সরকারি কাগজে এই পরিচয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৪৭৮ জন, তন্মধ্যে সমতলের আদিবাসী ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪৬৫ জন আর পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ৯ লাখ ৯১ হাজার ১৩ জন। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের মতে এদেশে আদিবাসীর সংখ্যা ৩০ লাখ। ২০১৬ সালের আরেক হিসেবে এই সংখ্যা ৫০ লাখ (আবুল বারকাত, ২০১৬)।

বাংলাদেশে আদিবাসীদের সংখ্যা নিয়ে যেমন বিতর্ক আছে, তেমনই বিতর্ক আছে বিভিন্ন ধরনের আদিবাসী গোষ্ঠীর সংখ্যা কতো তা নিয়েও।

আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য মোট বরাদ্দ হবে ৬ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ১৩ হাজার ৫২৮ টাকা (এই হিসেব আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ ধরে করা; যদি তর্কের খাতিরে এই সংখ্যা ৩০ লাখও ধরা হয় তাহলেও মাথাপিছু এই অঙ্ক দাঁড়ায় ২০ হাজার ৭৮ টাকা, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মাথাপিছু জাতীয় বাজেট বরাদ্দ ছিল ৪৬ হাজার ১২৫ টাকা)।

চলমান বাজেট বরাদ্দে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানুষ তার ন্যায্য বরাদ্দ পাননি। আদর্শ অবস্থা বাস্তবায়ন কঠিনসাধ্য। তাই, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য বিদ্যমান মাথাপিছু বরাদ্দের প্রকৃত পক্ষে দ্বিগুণ বৃদ্ধি আমরা হিসেব করেছি। যদি আমরা মাথাপিছু ২ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসেব করি তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ১২ হাজার ৪৭ কোটি টাকা, যা মোট অনুমিত জাতীয় বরাদ্দের ১.৪০%।

কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের কথা তুলে ধরে বলা হয়, ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল সরকার গঠন করতে পারলে 'ভূমি সংস্কার কমিশন' গঠন করা হবে, আর ২০১৪ সালে সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ওয়াদা করা হয়েছিলো বিজ্ঞানভিত্তিক ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতি গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এই দুই প্রতিশ্রুতি পূরণে বাজেটীয় উদ্যোগ কখনোই নেয়া হয়নি। বাজেটে কোনো চিহ্ন নেই খাস জমি জলার বন্টন ব্যবস্থাপনা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য বাজেট বরাদ্দের হিসেব তুলে ধরে বলা হয়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দকৃত বাজেটের পরিমাণ দেখেই প্রতীয়মান হয় যে এটি সরকারের সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের একটি, অথচ উন্নয়নের জন্য ভূমি অপরিহার্য এবং ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসন স্বচ্ছ ও সহজ হওয়া বাঞ্ছনীয়। 'কৃষি সংস্কার', 'ভূমি সংস্কার', 'জলা সংস্কার- এগুলোর কোনোটির নামে কোনো উপখাত/লাইন আইটেম প্রচলিত বাজেটে থাকেনা।
আমাদের হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা (যা মোট বাজেটের ১.৩৬%)-যেখানে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কার- উদ্বিষ্ট জনসংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৮২.৮%। অর্থাৎ, কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ছিল গড়ে মাত্র ৭৬১ টাকা।

কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের জন্য বাজেটে ন্যায্য বরাদ্দ কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে বলা হয়, বিগত অর্থবছরের বাজেট বৃদ্ধির ধারা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারউদ্দিষ্ট মানুষের জন্য মোট বরাদ্দ হবে ১১ হাজার ৬৭১ কোটি টাকা; অর্থাৎ, মাথাপিছু বরাদ্দ হতে পারে ৮ শত ৫৪ টাকা। চলমান বাজেট বরাদ্দে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারউদ্দিষ্ট মানুষ তার ন্যায্য বরাদ্দ পাননি। "আদর্শ অবস্থা" বাস্তবায়ন কঠিনসাধ্য। তাই, কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারউদ্দিষ্ট মানুষের জন্য বিদ্যমান মাথাপিছু বরাদ্দের কমপক্ষে ১০ গুণ বৃদ্ধি আমরা হিসেব করেছি।

যদি আমরা মাথাপিছু ১০ গুণ বৃদ্ধি ধরে বরাদ্দ হিসেব করি, তাহলে মোট বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়াবে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা, যা মোট অনুমদিত জাতীয় বরাদ্দের ১৩.৬৫%।

বাজেটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুব-জনগোষ্ঠী এবং নগরে বাস করা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি বাজেটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলেও সেমিনারে জানানো হয়।

র‍্যাবের অভিযানে রাজধানীসহ সারাদেশে গ্রেফতার ২৯০



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
র‍্যাবের অভিযানে রাজধানীসহ সারাদেশে গ্রেফতার ২৯০

র‍্যাবের অভিযানে রাজধানীসহ সারাদেশে গ্রেফতার ২৯০

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ঢাকাসহ সারাদেশে সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুর, সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত মোট ২৯০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শনিবার (২৭ জুলাই) র‍্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, সহিংসতা-নাশকতার ঘটনায় গোয়েন্দা তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নাশকতার অভিযোগে ঢাকায় ৭১ জন ও ঢাকার বাইরে ২১৯ জনসহ সারা দেশে মোট ২৯০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি। 

;

ঢাকার বাতাস আজ ‘মাঝারি’ মানের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ঢাকার বাতাস আজ ‘মাঝারি’ মানের

ঢাকার বাতাস আজ ‘মাঝারি’ মানের

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী ঢাকাসহ বিশ্বের বেশ কিছু শহর দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণের কবলে। তবে সম্প্রতি ঢাকার বায়ুমানে উন্নতি হয়েছে।

শনিবার (২৭ জুলাই) শহরটির বাতাসে দূষণ মাঝারি পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার।

এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একিউআই স্কোর ৫৫ নিয়ে ৫৮তম স্থানে রয়েছে ঢাকা, যা দূষণের দিক থেকে মাঝারি হিসেবে বিবেচিত। আগের দিন শুক্রবার (২৬ জুলাই) একিউআই স্কোর ৪৪ নিয়ে ৭৩তম অবস্থানে ছিল শহরটি, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো হিসেবে বিবেচিত।

এদিকে আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ১৭০ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কিনশাসা, ১৫৬ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা শহর, ১৫৩ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটির আরেক শহর মেদান, ১৪৪ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে চিলির শহর সান্তিয়াগো এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা ভারতের দিল্লি শহরের স্কোর ১৩৭।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।

;

অর্থনীতিকে পঙ্গু করতেই দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

অর্থনীতিকে পঙ্গু করতেই ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৭ জুলাই) জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে আহতদের খোঁজখবর নিতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করেছে তাদের বিচার দেশবাসীর কাছে চাই।

এ সময় তিনি আহত ব্যক্তিদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

নিটোর পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী শামীম উজ্জামান আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। শেখ হাসিনা আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আহতদের অবস্থা দেখে আবেগাপ্লুত ও অশ্রুসজল হয়ে পড়েন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে আহতদের খোঁজখবর নেন। তিনি চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন। আহতদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেন।

তার আগে ওই দিন রাজধানীর রামপুরায় নাশকতাকারীদের হামলা ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শন করেন সরকারপ্রধান।

;

মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নিহত

মেহেরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নিহত

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চোখতোলায় শ্যালো ইঞ্জিন চালিত গরু বহনের একটি যানের ধাক্কায় বুড়ি খাতুন (৫৫) নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নিহত হয়েছেন।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল নয়টার দিকে রাস্তা পারাপারের সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বুড়ি খাতুন গাংনী উপজেলা কাষ্টদহ গ্রামের মোতলেব হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয়রা জানান, বুড়ি খাতুন ঘটনার সময় মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক পার হচ্ছিলেন। এসময় বামন্দী থেকে গাংনীগামী একটি (লাটা হাম্বার স্থানীয় নাম) শ্যালো ইঞ্জিন চালিত গরু বহনের অবৈধ যান তাকে ধাক্কা দেয়। এতে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত আঘাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ওই অবৈধ যানটি আটক করে। তবে পালিয়ে যায় এর চালক।

গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ও দুর্ঘনার জন্য দায়ী যানটি পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ওই যানের চালককে আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুড়ি খাতুন দীর্ঘদিন থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী। বিভিন্ন সময়ে রাস্তাঘাটে তাকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত।

;