রইল বাকি এক!
ছবি: সংগৃহীত
আর দুদিন পরেই তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন। কিন্তু তার আগেই চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে দাঁড়ানো তিন প্রার্থীর দুজনেই পড়লেন ‘বিপদে’। তাঁদের মধ্যে শত কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হওয়ায় প্রার্থী জসিম উদ্দিনকে অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালত।
অন্যদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে একই উপজেলার আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু আহমেদ চৌধুরী জুনুর প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন এই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ‘টিকে’ আছেন প্রার্থী আহমেদ হোসেন ফকির।
জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুটি ব্যাংকের প্রায় ১১৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। একটি ব্যাংকের করা মামলায় এ ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা, গ্রেফতারি পরোয়ানা ও সম্পদ জব্দ করা—এই তিনটি আদেশ রয়েছে আদালতের। এরপরও প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় তাঁকে গ্রেফতারে চন্দনাইশ থানার ওসিকে এই নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৬ মে) চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম।
গত ১৩ মে চট্টগ্রাম নির্বাচনী কার্যালয়ে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের সময় দলবল নিয়ে হাজির হয়ে নির্বাচনে ১০০ লাশ ফেলে জিতবেন বলে হুমকি দেন আবু আহমেদ চৌধুরী। তাঁর সেই বক্তব্য ছড়িয়ে পড়লে নানা আলোচনা-সমালোচনা হয়। বিষয়টি নজরে আসলে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় রিটার্নিং কর্মকর্তা। রোববার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে এই শুনানি শেষে কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান সচিব জাহাংগীর আলম।
জাহাংগীর আলম বলেন, দু’জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলার চান্দনাইশ উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবু আহমেদ চৌধুরী (ঘোড়া প্রতীক) উপস্থিত হন। তিনি অভিযোগের দফা অনুযায়ী জবাব দিয়েছেন। কমিশনও তা শুনেছে। শেষে তাঁর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত দিয়েছে কমিশন।
চন্দনাইশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন গত ১২ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, যুগ্ম সম্পাদক মো. আবু হেনা ফারুকী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার আরেক প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম চৌধুরী খোকন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। নির্বাচনের দৌড়ে এরপর ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ চৌধুরী জুনু (ঘোড়া), জসিম উদ্দীন আহমদ (মোটর সাইকেল) এবং জোয়ারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ হোসেন ফকির (আনারস)। কিন্তু দুদিন আগে একজনকে গ্রেফতারের নির্দেশ ও অন্যজনের প্রার্থীতা বাতিল হওয়ায় মাঠে রইলেন কেবল আহমদ হোসেন ফকির। অবশ্য জুনুর সামনে হাইকোর্টে আপিলের মাধ্যমে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। আর গ্রেফতার হলেও নির্বাচন করতে বাঁধা নেই জসিমের সামনেও।