ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল' মোকাবিলায় বরিশাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা ২৪
জাতীয়
সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল' মোকাবিলায় বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে শনিবার (২৫ মে) বেলা ১২টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্যরাসহ জুমে সংযুক্ত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বৃন্দ। সভায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ রেমাল মোকাবিলায় জেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার আলোচ্য বিষয়:
১. সকল ধরনের সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
২. পর্যাপ্ত শুকনো খাবারের পাশাপাশি পানি বিশুদ্ধ করন ঔষধ, মোমবাতি, ম্যাচ, খাবার স্যালাইন, প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ঔষধ এর ব্যবস্থা রাখা।
৩. বরিশাল জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে যেখানে মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিগত বহুতল ভবন, অফিস সমূহ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. জেলার সকল স্থানে মাইকিং ও আবহাওয়ার সর্বশেষ তথ্য প্রচার করতে হবে।
৫. প্রাণীসম্পদ রক্ষায় গুরুত্বারোপ করতে হবে এবং পর্যাপ্ত গোখাদ্য'র ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৬. সিপিপি, রেড ক্রিসেন্ট সহ সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল ধরণের প্রস্তুতি রাখতে হবে।
৭. জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হবে।
৮. বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
বলিউডের কোরিওগ্রাফার ও পরিচালক ফারাহ খানের মা মেনকা ইরানি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তার মৃত্যুর খবরটি সোশ্যাল হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন (কেআরকে) ওরফে কমল আর খান।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) ভারতের মুম্বাইয়ে মারা গেছেন এই তারকার মা।
সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই পরিচালকের মা অসুস্থ ছিলেন। তিনি মুম্বাইয়ের নানাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীনও ছিলেন।
এরপরে, তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল এবং বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু স্বাস্থ্যের ফের অবনতি হয়। এবং তাকে অন্য কোনও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। যেখানে তিনি শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ফারাহ খান ও সাজিদ খান উভয়েই বলিউডের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। নাচের কোরিওগ্রাফার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা ফারাহ সিনেমা পরিচালনায়ও সফল হন। তার পরিচালিত ‘ম্যায় হু না’ এবং ‘ওম শান্তি ওম’ বক্স অফিসে দারুণ সাড়াও ফেলে। অন্যদিকে তার ভাই সাজিদ খানও বলিউডের পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা এই সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৮ জুলাই কয়েকশ’ দুষ্কৃতকারী সেতু ভবনে প্রবেশ করে এটি ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারা ভবন থেকে সরকারি সম্পত্তি লুট করে।
প্রধানমন্ত্রী পরে মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেন এবং ১৮ জুলাই সন্ত্রাসী হামলার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।
এসময় সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবন দু’টির ধ্বংসযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।
সরকার প্রধান একইসঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ধ্বংসযজ্ঞও পরিদর্শন করেন।
এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে আহতদের খোঁজখবর নেন। তিনি চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন। আহতদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেন।
তার আগে ওই দিন রাজধানীর রামপুরায় নাশকতাকারীদের হামলা ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শন করেন সরকারপ্রধান।
পেশায় তাঁত শ্রমিক হলেও কাজের ফাঁকে আশেপাশের গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সবজির বীজ বিতরণ করেন পাবনার সাইকেল বাদশা। দেন রোপণ ও পরিচর্যার পরামর্শও। এ যেন প্রায় শতবছর বয়সী নাটোরের সেই পলান সরকার। যিনি পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দিয়ে আসতেন। তবে সাইকেল বাদশা দেন সবজি বীজ, পার্থক্য এটুকুই।
পাবনার বেড়া উপজেলা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে জগন্নাথপুর গ্রাম। এই গ্রামের দরিদ্র তাঁত শ্রমিক বাদশা আলম (৪৫)। নামে যেমন বাদশা, মনেও তিনি বাদশা। সব সময় তার মনে উঁকি দেয় কি করে মানুষের ভালো করা যায়। এ জন্য তিনি ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে প্রায়ই বেড়িয়ে পড়েন বেড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সবজির বীজ বিতরণ করেন পাবনার সাইকেল বাদশা। সাইকেলের হ্যান্ডেলে ও তার নিজের গলায় ঝোলানো থাকে বিভিন্ন সবজি-বীজ ভর্তি বোতল। বিনামূল্যে সেই বীজ পতিত জমি রয়েছে এমন পরিবারের মানুষের কাছে বিনামূল্যে বিতরণ করেন। কিভাবে বীজ বপণ করতে হয় তা-ও শিখিয়ে দেন। কখনও কখনও নিজের খরচে বাল্য বিবাহ ও যৌতুক বিরোধী লিফলেট ছাপিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করেন। এ জন্য ইতিমধ্যেই তিনি মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন ‘সাইকেল বাদশা’ নামে।
সচেতনতা বাড়াতে নানা শ্লোগান লিখে সাইকেলের সামনে পিছনে সেঁটে দিয়েছেন সাইকেল বাদশা।
পরিবারের ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই বাদশা অন্যদের চেয়ে আলাদা। গ্রামের কেউ কোনো বিপদে পড়লে সবার আগে ছুটে যাওয়া তার নেশা। কাউকে হাসপাতালে নিতে হলে, ওষুধ কিনে আনার দরকার হলে বা বাজার থেকে জরুরী কোনো জিনিসের প্রয়োজন হলে ছুটে গিয়ে তা করে দেন বাদশা। এভাবেই ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন সবার প্রিয়পাত্র। তিনি নিজেই ছন্দ মিলিয়ে সমাজ সচেতনতামূলক নানা শ্লোগান লিখে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে সেঁটে দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এর পরিধি। এর পর আর্টিস্ট দিয়ে টিনের ওপর সাইনবোর্ড আকারে বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও মাদকবিরোধীসহ সচেতনতামূলক নানা শ্লোগান লিখিয়ে গ্রামের বাইরেও সাঁটতে শুরু করেন। প্রায় বছর পনের আগে একটি সাইকেল কিনে তাতেই শুরু করেন মানুষকে সচেতন করার প্রচারণা। আর সেই প্রচারণার সঙ্গে সবজির বীজ বিতরণের কর্মকাণ্ডটি যুক্ত হয়েছে দশ বছর ধরে। ওই সময় থেকে তিনি বিনামূল্যে বিভিন্ন এলাকায় বীজ বিতরণ করে আসছেন। বিনামূল্যে বীজ বিতরণের জন্য এলাকার সবজিচাষির অনেকেই তাকে ভালোবাসেন। দেশের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির উপস্থাপক হানিফ সংকেত ২০১৭ সালে তাকে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে পুরস্কৃত করেন।
চাষিদের অনেকেই বাদশার বিনামূল্যে বীজ বিতরণের কথা জানেন। তারাই বীজ উৎপাদনের সময় বাদশার জন্যও বেশি করে উৎপাদন করেন। সেখান থেকেই বিনামূল্যে মেলে বীজ। এর পর সেই বীজ প্লাস্টিকের বিভিন্ন বোতলে ভরে প্রতি মঙ্গলবার তাত বুনানোর সাপ্তাহিক ছুটির দিন তিনি বেরিয়ে পড়েন বিতরণ করতে। গত দশ বছরে তিনি বেড়ার অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক শ' বাড়িতে বীজ বিতরণ করেছেন। তিনি সবাইকে শিখিয়ে দেন কি করে কোন জায়গায় বীজ বপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। কখনও কখনও তিনি নিজেই বিভিন্ন বাড়ির পতিত জায়গা খুঁজে বীজ বপণ করেন। বাদশা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। ইচ্ছা থাকলেও দারিদ্রতার জন্য তিনি বেশি দূর আগাতে পারেননি। তিনি বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। তাঁত শ্রমিকের কাজ করে প্রতিদিন আয় করেন গড়ে ৪০০ টাকা।
বাদশা জানান, যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম আমার মা পাড়ার সবাইকে লাউ, কুমড়া, শাক বীজ সহ অনেক রকম বীজ দিত। সেই থেকেই বিজ বিতরণ করা, গাছ লাগানো আমার নেশায় পরিণত হয়। কাজের ফাঁকে সাইকেল আর বীজ নিয়ে বের হই। আমার চাওয়া চারিদিক সবুজে ভরে উঠুক। পাশাপাশি ফাঁকা জমিকে কাজে লাগিয়ে অন্তত ব্যক্তিগত চাহিদা মিটুক।
হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সরকার বাদশার ব্যাপারে জানান, বাদশা তার সীমিত সামর্থ্য দিয়ে সমাজ পরিবর্তনে অসামান্য ভূমিকা রাখছে। তার অবদানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সবুজে ভরে উঠছে।
বেড়া উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার নুর আলম বলেন, আমরাও সাইকেল বাদশার বিনামূল্যে বীজ বিতরণের বিষয়ে জানি। উনার এই মহতী উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ওনার যদি বীজ বিতরণের ক্ষেত্রে কোন সহয়তা দরকার হয় উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ হতে যতটুকু সম্ভব তাকে সহায়তা করা হবে।
দেশের অন্যান্য জেলার মতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও চলছে সরকার ঘোষিত কারফিউ।
শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানিয়েছেন, শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ছে।
চট্টগ্রাম জেলায় শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২৪ ও ২৫ জুলাই) দুইদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। এ তিনদিন সকাল থেকেই নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হন নগরবাসী।