চট্টগ্রামে বাসে উঠে প্রথমে যাত্রীকে টার্গেট করে মাথার ওপর বমি করা হয়। এরপর অন্য একজন সেই যাত্রীর কাছে থাকা টাকাসহ মূল্যবান জিনিস নিয়ে নেয়। চট্টগ্রামে এমন একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বন্দর থানা পুশিল। এসময় তাদের থেকে ছিনতাই করা ১৫ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (২২ মে) ঢাকার কাফরুল থানা এলাকা থেকে মো.আনোয়ার হোসেন সোহাগ (৩৯) ও নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানা এলাকা থেকে মো.সাহাব উদ্দিনকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, গত ৬ মে দুপুরে নগরের ১০ নম্বর বাসের যাত্রী সাইফুল ইসলামের মাথায় বমি করে তার কাছে থাকা ব্যাগ কেটে ৯ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। বিশেষ অভিযানে বমি পার্টির সদস্য কাফরুল থানা এলাকা থেকে মো.আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানা এলাকা থেকে মো.সাহাব উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুজন থেকে ছিনতাইকৃত ১৫ হাজার ২শ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতার ও টাকা উদ্ধারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে সিএমপি ও ডিএমপির বিভিন্ন থানায় চুরিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় ঈদের প্রধান জামাত রাজধানীর মিরপুর গোলারটেক মাঠে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে ডিএনসিসি।
সোমবার (১৭ জুন) সকাল ৭টায় জামাত শুরু হবে বলে জানানো হয়। এ দিন প্রধান জামাতে এলাকাবাসীর সঙ্গে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং ডিএনসিসির কাউন্সিলররা এবং কর্মকর্তারা এই জামাতে অংশগ্রহণ করবেন।
রোববার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
আতিকুল ইসলাম বলেন, 'ঢাকা উত্তরে বসবাসরত নগরীবাসীর মধ্যে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে এবার ঈদে গোলারটেক মাঠে ডিএনসিসির প্রধান জামাত আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এলাকাবাসীর মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠবে। আমি নিজেও এই জামাতে অংশগ্রহণ করবো। এর ফলে ঢাকা উত্তরের জনগণের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ হবে। ওয়ার্ড ভিত্তিক ঈদের জামাত আয়োজনের পাশাপাশি এবার প্রথম বড় পরিসরে মিরপুরে ডিএনসিসির প্রধান জামাত আয়োজন হচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় নগরবাসীকে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন এবং সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গুলশানে এ বছর পহেলা বৈশাখ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসও উদযাপন করা হয়েছে।'
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান সংলগ্ন গোলারটেক মাঠে আয়োজিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ঈদের জামাতে ৩০ হাজারের অধিক মুসুল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫টি করে ঈদের জামাত আয়োজন করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ২৭০টি ঈদের জামাত আয়োজন করা হচ্ছে ডিএনসিসির উদ্যোগে। এর মধ্যে প্রথমবারের মতো মিরপুর গোলারটেক মাঠে ডিএনসিসির ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
জাতীয়
ঈদ মানে হাসি। ঈদ মানে খুশি। সেই হাসি-খুশি নেই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে। সোমবার (১৭জুন) পালিত হবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমা নিয়ে ঈদ উদযাপন করবে সারাদেশের মানুষ। কিন্তু ইতোমধ্যেই সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। তাই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে নেই ঈদের আনন্দ।
জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির পানিতে সিলেটের সীমান্ত উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রদান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কিছু কিছু স্থানে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে।
সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। পুরো জেলায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৮ জন মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা। এই উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ জন। জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ৫৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে জেলা প্রশাসন। আশ্রয় নিয়েছেন ৫৩ জন। এরমধ্যে ওসমানী নগরে ৪৩ জন ও বালাগঞ্জে ১০জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, রোববার (১৬জুন) বিকাল ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৯২ সেন্টিমিটার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেটে ১৬ জুন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের সতর্কবাণী দিয়েছেন।
এদিকে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের উপর দিয়ে একাধিক স্থানে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তাছাড়া কানাইঘাট উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বাজার হাটে হাঁটু সমান পানিও দেখা যায়।
নতুন করে কানাইঘাট উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে হাওর ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ওই এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণ এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।
সিলেট জেলা প্রশাসন ও সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি আছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় উদ্ধারকাজের জন্য নৌকাও প্রস্তুত আছে। ঈদের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ খাবারের আয়োজনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণসহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
জাতীয়
ঈদ উৎসব পালন করতে মেগাসিটি ঢাকার বেশিরভাগ বাসিন্দারা গ্রামে ফিরে গেছেন। এ কারণে নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে গলির সড়কগুলোও প্রায় খাঁ খাঁ করছে। মুহূর্তেই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চলে যাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোনো সিগন্যালে দাঁড়ানোর প্রয়োজন পড়ছে না। অন্য সময়ে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহন গিজগিজ করলেও ঈদের আগের দিনে মাঝে মধ্যে দু’চারটি বাসের দেখা মিলছে।
রোববার (১৬ জুন) হাসপাতালগুলোর সামনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ধানমন্ডিতে পপুলার মেডিকেল কলেজ, গ্রিন রোডে অবস্থিত ল্যাবএইড হাসপাতাল, গ্রিন লাইফ হাসপাতালের সামনে রাস্তার ওপর অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘ সারির পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। যা নগরীর আর কোনো সড়কে দেখা যায়নি।
আজও অনেকেই রাজধানী ছেড়েছেন। যে কারণে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ ও রেল স্টেশন কমলাপুর ও বিমানবন্দরে কিছুটা যাত্রীর চাপ দেখা গেছে।
রাজধানীতে মধ্যম আয়ের লোকদের শপিংয়ের অন্যতম গন্তব্য নিউ মার্কেটও ক্রেতা শূন্য। অনেকেই দোকান খুলে বসে থাকলেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। ফাঁকা সড়কের মধ্যে, মাঝে মধ্যে দু’চারজন ক্রেতা হাজির হচ্ছেন। যে কারণে দুপুরের পর কিছু দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন।
কাপড়ের দোকানে ক্রেতার সমাগম না থাকলেও জুতার দোকানে কিছুটা ক্রেতা সমাগম দেখা গেছে। রাজধানীর নিউ এলিফ্যান্ট রোড ও বাটা সিগন্যাল এলাকায় কিছুটা সরব দেখা গেছে। অনেকেই ঘুরে দেখছেন নতুন কোনো ডিজাইন এসেছে কিনা। তবে ক্রেতার তালিকায় তরুণদের আধিক্য লক্ষণীয়। অনেকে বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন জুতা কিনতে।
মিরপুর রোড, রোকেয়া সরণি, বিজয় সরণি, প্রগতী সরণি ঘুরে তেমন লোক সমাগম দেখা যায় নি।
গলি ও মহল্লার প্রশস্ত সড়কগুলোকে শোভা পাচ্ছে অস্থায়ী বিশাল বিশাল সেড। যেখানে কোরবানির পশু এনে রাখা হয়েছে। কিছু লোকজন কোরবানির পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত, আর ছোট শিশুরা মেতে উঠেছেন ভিডিও এবং সেলফি তোলায়।
অন্যদিকে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পাড়া-মহল্লায় ঘুরছে গরু ছাগলের খাবার নিয়ে। তাদের কারো ভ্যানে কাঁঠাল পাতা, কোনো ভ্যানে খড় ও ঘাস শোভা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে পুরো উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে রাজধানীজুড়ে। আকাশ মেঘলা থাকায় রাজধানীর তাপমাত্রা কয়েকদিনের তুলনায় অনেকটা কম। তাই ফাঁকা রাস্তায় ব্যাটবল হাতে নেমেছেন শিশুরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সারা বছর ব্যবসা যেমনই যাক না কেন মুসলমানদের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুই ঈদ এবং হিন্দুদের পূজা-পার্বণে তাদের ব্যবসা বেশ ভালো হতো।
কিন্তু গেল বছর থেকেই দেশের বাজারে স্বর্ণের ভরি লাখ টাকার ওপরে। সোনার দাম তো কমছেই না, বরং বাড়ছেই। সময়ে সময়ে এই ধাতুর দাম এক টাকা কমলে তো বাড়ে দুই টাকা! ফলে সোনার চলমান এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে কোনো ভাবেই সুবিধা করতে পারছেন না গাইবান্ধার ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ সময় ধরে এই মন্দার বাজারে টিকতে না পেরে গেল দেড় বছরে জেলায় ব্যবসা ছেড়েছেন অন্তত ৪০ জন জুয়েলার্স ব্যবসায়ী। এছাড়া পেশাও বদল করেছেন অনেক কারিগর। যারা টিকে আছেন তারাও রয়েছেন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স আ্যসোসিয়েশনের (বাজুস) সর্বশেষ (১১ জুন-২০২৪) নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী দেশের বাজারে এখন ভালো মানের ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৫৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের মূল্য ১ লাখ ১১ হাজার ৬৩৬ টাকা। আর নিম্নমানের ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের বর্তমান বাজার মূল্য ৯৫ হাজার ৬৯১ টাকা।
জুয়েলার্স ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকট, স্বর্ণের বাজারের ঊর্ধ্বগতি আর বড় বড় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে আজ দেশের জুয়েলারি ব্যবসার করুণ অবস্থা। যার ফল স্বরূপ এক দিকে ধনাট্য ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে লাভবান হচ্ছেন। অন্যদিকে, এর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এই পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া যারা মাঝামাঝিতে রয়েছেন তারা পড়ছেন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে।
এছাড়া একাধিক জুয়েলার্স ব্যবসায়ী বলছেন, মফস্বল এলাকায় স্বর্ণ ক্রয়ের সব চেয়ে বড় অংশই হচ্ছেন মধ্যবিত্ত শ্রেণি। কিন্তু গত বছরের শেষের দিকে অস্বাভাবিকভাবে স্বর্ণের দাম বাড়তে শুরু করলে স্বর্ণ ক্রয় তাদের সামর্থ্যের বাইরে চলে যায়। ফলে স্বর্ণের বাজার উর্ধ্বকালের শুরু থেকেই বিশেষ করে মফস্বলে জুয়েলারি ব্যবসায় মন্দা কাটছেইনা। তবে, তারা জানান দেশের অভিজাত এলাকার জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরা মোটামুটি ব্যবসা করলেও অন্যদের অবস্থা খুবই খারাপ।
রোববার (১৬ জুন) দুপুরে সরেজমিনে গাইবান্ধার পুরাতন বাজার সংলগ্ন সব চেয়ে বড় স্বর্ণের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দুই-একটি দোকানে কারিগররা কাজ করলেও বেশিরভাগ দোকানের কারিগররা কাজ করছেন সাধারণ দিনের মতই। কেউ কেউ অলস সময় পার করছেন। আবার কাউকে মোবাইল চেপে সময় পার করতেও দেখা গেছে।
এ সময় শ্যামা জুয়েলার্সে আসা শারমিন জাহান নামের এক স্বর্ণ ক্রেতা বলেন, ‘আমার ভাতিজিকে আমি একটি স্বর্ণের চেইন গিফট করতাম। কিন্তু স্বর্ণের দাম অনেক বেড়ে গেছে, যা এখন আমার সাধ্যের বাইরে। আমি এখন তাকে কানের রিং দেবো। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দাম বৃদ্ধির কারণে দিতে পারছি না।
শ্যামা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী মানিক কুমার মল্লিক বলেন, ‘দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট এবং স্বর্ণের ঊর্ধ্বগতির কারণে চরম সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আমাদের জুয়েলারি ব্যবসা। গাইবান্ধায় আমাদের কাস্টমার (ক্রেতা) বলতে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। কিন্তু বর্তমান সময়ে স্বর্ণের দামের উর্ধ্বগতির কারণে ক্রয় ক্ষমতা তাদের বাইরে চলে গেছে। এর প্রধান কারণ দেশের অর্থনৈতিক সংকট।
তিনি আরও বলেন, অল্প কিছুদিন আগেও মানুষ বিয়ে শাদি কিংবা জন্মদিনের উপহার হিসেবে সোনার আংটি, কানের দুল কিংবা চেইন দিতেন। কিন্তু এখন সোনার উপহারের বদলে নগদ অর্থ দেন। কারণ স্বর্ণের দাম তাদের নাগালের বাইরেই বলা যায়। বিশেষ প্রয়োজন এবং বাধ্য হওয়া ছাড়া বিলাসিতা বা শখ পূরণের জন্য তারা আর স্বর্ণ ক্রয় করছেন না।
এ সময় ওই বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়েলার্স ব্যবসায়ী বলেন, ‘বর্তমান দেশের ধনাঢ্য শ্রেণির স্বর্ণ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে আমাদের মতো মধ্য শ্রেণির জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরা চরম সংকটের মধ্যে আছি। এই সিন্ডিকেটের কারণেই অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আজ ব্যবসা ছেড়েছেন। অনেক কারিগর পেশা বদল করে অটোরিকশা চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির গাইবান্ধার সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম সঞ্জু মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সারা দেশেই স্বর্ণের ব্যবসার একই অবস্থা। এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সাথে সম্পর্ক যুক্ত। গাইবান্ধা জেলায় ৩০০ জুয়েলার্স ব্যবসায়ী রয়েছে। সংকটের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা ছেড়েছেন। পেশাও বদল করেছেন অনেক কারিগর।