খোঁড়াখুঁড়িতে রাস্তার বেহাল দশা, ভোগান্তিতে টিকাটুলিবাসী



খন্দকার আসিফুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা খুঁড়ে চলছে ঢাকা ওয়াসা, ডেসকো, ডিপিডিসি ও নগর কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম। তবে উন্নয়ন কার্যক্রমের এই খোঁড়াখুঁড়িতে চরম ভোগান্তিতে নগরবাসী।

নগরবাসীর স্বার্থে ভূগর্ভস্থ পানির সংযোগ, গ্যাসের সংযোগ, বৈদ্যুতিক সংযোগ কিংবা ড্রেনেজ ব্যবস্থা- এ সমস্ত সংযোগের রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়নে রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি হবে এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু জনগণের প্রশ্ন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নতুন রাস্তা কেটে ফেলতে সময় না নিলেও মেরামত করতে কেন এত সময় নেয়া হয়, আর কেনই বা একই রাস্তা বছরে কয়েকবার করে কাটতে হয়? জনসাধারণের এত ভোগান্তির পরও বছরের পর বছর ধরে এইসব সংস্থাগুলোর মধ্যে কেন হয়না সমন্বয়?

রাজধানী ঢাকার টিকাটুলি এলাকায় রয়েছে জনপ্রিয় শপিংমল রাজধানী সুপারমার্কেট, চৌধুরী শপিংমল ও সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটিসহ বেশকটি স্থাপনা ও মন্দির। এর ফলে উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত- সব শ্রেণির মানুষের আনাগোনায় জমজমাট থাকে পুরো এলাকা। চৌধুরী শপিংমল, রাজধানী সুপার মার্কেট ও সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির মাঝের সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষসহ, রিকশা, ভ্যান ও ব্যক্তিগত যানবাহনের যাতায়াত। এ কারণে মার্কেটগুলোতেও ক্রেতা উপস্থিতি হতো বেশ। কিন্তু গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ডিপিডিসি ও ওয়াসা'র উন্নয়ন কার্যক্রমের খোঁড়াখুঁড়িতে টিকাটুলির এই সড়কটির বেহাল দশার কারণে ভোগান্তির শেষ নেই বলে জানিয়েছেন সেখানকার ব্যবসায়ী ও জনসাধারণ।

সড়কটির বেহাল দশার কারণে ভোগান্তির শেষ নেই

বুধবার (২২ মে) টিকেটটুলি এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চৌধুরী শপিং মল ও রাজধানী সুপারমার্কেটের সামনের সড়কটি যেন একটি বিধ্বস্ত সড়কের রূপ নিয়েছে। টিকাটুলি মোড় থেকে রাজধানী মার্কেটের দিকে ঢোকার শুরুতেই চোখে পড়বে রাস্তার বেশিরভাগ জায়গাজুড়ে বিশাল এক গর্ত। সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে চলছে ওয়াসার কাজ। তিন-চারদিন ধরে এখানে কাজ চলছে বলে জানান শ্রমিকরা। 

বিশাল এই গর্তের পাশ দিয়েই ভাঙা রাস্তায় খুব কষ্টে প্যাডেল ছেড়ে শরিরের সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে রিকশা টেনে নিয়ে যাচ্ছেন চালকরা। এখানেই শেষ নয়। একটু সামনে এগিয়ে গেলেই দেখা যায়, আরও একটি লম্বা বিশাল গর্ত। সেখানে কাজ করছে ডিপিডিসি। গর্তের উপরে এবং আশপাশে রাখা আছে বিশাল বিশাল ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক ক্যাবল। রাস্তার ভালো অংশটুকুতে রাখা হয়েছে গর্তের মাটি, বালি ও শুরকি। বন্ধ হয়ে গেছে রাস্তা। পুরো রাস্তাজুড়েই এই একই অবস্থা। খুব কষ্টে রাস্তায় চলতে হচ্ছে পথচারীদের। 

উন্নয়নের খোঁড়াখুঁড়িতে এই সড়কের বেহাল দশা কবে থেকে এমন প্রশ্নে সেখানকার ব্যবসায়ী মো. শুক্কুর আলম বার্তা২৪. কমকে জানান, রোজার ঈদের পর থেকেই শুরু হয়েছে এই খোঁড়াখুড়ি।

তিনি বলেন, ‘এতদিনের এই খোঁড়াখুঁড়িতে আমাদের ব্যবসা শেষ। কাস্টমার দোকানে আসতে পারে না ব্যবসা হবে কোথা থেকে। রাস্তা এমনভাবে কাটছে যে, গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, মানুষের হাঁটাচলাই অনেক কষ্ট হয়ে যায়। অবস্থা দেথে আমার মনে হচ্ছে কোরবানি ঈদের আগে এই কাজ শেষ হবে না। সরকার উন্নয়ন করুক, উন্নয়নের দরকার আছে কিন্তু সময়ের কাজ সময়ে শেষ করুক। আমাদের এই কষ্টের কথা কার কাছে বলব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘কারে বলব দুঃখের কথা। না পারি কইতে, না পারি সইতে। দোকানে একদম বেচাকেনা নাই। সারাদিন বইসা বিক্রি হয় ২০০, ২৫০, ৩০০ টাকা। এই টাকা দিয়া কি করমু, দোকানের স্টাফের বেতন দিমু না নিজে চলমু?। আজকে এক মাসের উপরে হইছে রাস্তাটার এই অবস্থা। কাটা ছেঁড়া কইরা কিচ্ছু রাখে নাই। না চলতে পারে গাড়ি-ঘোড়া, আর মানুষের চলার তো কষ্টের শেষ নাই। মানুষ না আসলে আমরা বিক্রি করব কার কাছে?। সরকারের প্রতি অনুরোধ, রাস্তাটা যেন খুব তাড়াতাড়ি মেরামত করে দেয়।

রাস্তার বেশিরভাগ জায়গাজুড়ে চলছে নির্মাণ কাজ

এই রাস্তা ধরেই প্রতিদিন যাতায়াত করেন ব্যবসায়ী মো. মনিরুল ইসলাম। প্রতিবেদককে তথ্য সংগ্রহ করতে দেখে নিজে এসেই কথা বলেন তিনি।

মনিরুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তাটা কাটা থাকার কারণে গত একমাসেরও বেশি সময় ধরে অনেকদূর ঘুরে আমার কর্মস্থলে যেতে হয়। এই রাস্তাটি প্রতি বছর কমপক্ষে ৩/৪ বার কাটা হয়। যেখানে একবারে করলে হয়ে যায় সেখানে এক এক কোম্পানি একেকবার এসে কাটাকুটি করে। দুই মাস আগেই রাস্তাটি কেটেছিল। এখন আবার কেটেছে। আমাদের সাধারণের বলার কিছু নাই। বিভিন্ন সংস্থার গাফিলতির কারণে আমাদের জনসাধারণের এই ভোগান্তি। এই কাজের সাথে সংযুক্ত কর্তৃপক্ষের উচিত এদিকে সুষ্ঠু নজর দেয়া। 

পথচারীরা আরও জানান, ঢাকা ওয়াসা, ডেসকো, ডিপিডিসি ও নগর কর্তৃপক্ষসহ এসব পরিষেবা সংস্থার খোঁড়াখুঁড়িতে বৃষ্টি নামলেই কাদা-পানিতে আরও বেশি নাজেহাল হতে হচ্ছে নগরবাসিকে। ভোগান্তির বোঝা কাধে নিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়েই এই সড়কে আসা-যাওয়া করেন শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণ। তাদের দাবি, জনসাধারণের ভোগান্তি এড়াতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব পরিষেবা সংস্থার কাজ শেষ করে সড়কটি যেন মেরামত করে দেওয়া হয়। 

এক মাসেরও বেশি সময় ধরে টিকাটুলির এ সড়কের খোঁড়াখুঁড়ির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসা'র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ও এন্ড এম) প্রকৌ. এ.কে.এম সহিদ উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমিতো বলতে পারব না ফিল্ডের অবস্থা। হয়ত কয়েকদিন হয়েছে কেটেছে।’ 

বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদকের কাছে সড়কের ঠিকানা চেয়ে এ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘কোথায় সমস্যাটা বলেন, আপনি আমাকে ঠিকানাটা দেন আমি দায়িত্বরতদের বলে দিচ্ছি। তারা রেক্টিফাই করে ঠিক করে দিবে। অথবা আমাকে জানালে আমি আপনাকে বিস্তারিত জানিয়ে দিব এবং সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে পারব।’

এর আগে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি নিয়ে গণমাধ্যমে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম বলেন, এসব প্রকল্প আগে থেকেই নেওয়া হয়ে থাকে, জুনের আগেই এসব প্রকল্পের কাজ শেষ করার তাড়া থাকে। ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে কাজগুলো করতে দেরি হয়ে যায়। তবে যেসব এলাকায় জনদুর্ভোগ বেশি হচ্ছে সেসব এলাকার কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা চলছে। নগরের উন্নয়ন কাজের জন্য নগরবাসীকে সাময়িক একটু ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

   

বোট ক্লাব থেকে পদত্যাগ করলেন বেনজীর আহমেদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাভারের বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। গত ১৩ জুন ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজীজের কাছে চিঠি পাঠিয়ে তিনি এ পদ ছাড়েন।

বোট ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

নাসির বলেন, বোট ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে থাকা বেনজীর আহমেদ ক্লাবের উপদেষ্টা রুবেল আজীজের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, জরুরি কাজে পরিবারের সঙ্গে তিনি দেশের বাইরে আছেন। যে কারণে তিনি ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।

নাসির জানান, বেনজীর আহমেদের পদত্যাগের পর রুবেল আজীজকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ও তার পরিবারের সম্পদ অনুসন্ধান করছিল। তার মধ্যেই গত ৪ মে তিনি সপরিবার দেশ ছাড়েন। তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি এবং ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‍্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন বেনজীর। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন।

;

ফেনীতে বজ্রপাতে অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে দশ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ সময় বজ্রপাতে রোকসানা আক্তার নামের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও তিনজন। ঝড়ের কবলে পড়ে মারা গেছে চারটি গবাদিপশু। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে বেশ কয়েকটি এলাকা। নিহত রোকসানা ছাগলনাইয়া উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের উত্তর মন্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

শনিবার (১৫ জুন) জেলার ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলায় এসব ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ের মধ্যে মাঠে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে রোকসানা আক্তারের মৃত্যু হয়। একইসময় বজ্রপাতে ফুলগাজী উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী উত্তর জামমুড়া এলাকায় মা-মেয়েসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- ওই এলাকার মো. আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী সামছুন্নাহার (৪২), মেয়ে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফারহানা আক্তার (২১) এবং ভগ্নিপতি মোহাম্মদ মোস্তফা (৫২)।

আহতদের স্বজন মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বজ্রপাতে আহত হয়ে আমার মেয়ে ও স্ত্রী ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত ভগ্নিপতি জামমুড়া গ্রামের বাড়িতে রয়েছে।

এ ছাড়া বজ্রপাত-ঝড়ে ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়ায় চারটি গবাদিপশুর মৃত্যু হয়েছে। তারমধ্যে দুপুরে গাছের নিচে চাপা পড়ে ফুলগাজীর বাশুড়া গ্রামে একটি গরু, কোরবানির হাটে নেওয়ার পথে ফুলগাজী বাজারে একটি, বজ্রপাতে মুন্সীরহাট ইউনিয়নের নোয়াপুর গ্রামে একটি গরু ও ছাগলনাইয়ায় একটি মহিষ মারা গেছে।

ফুলগাজীর মুন্সিরহাট এলাকার কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অনেক কষ্ট করে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য গরুটি লালনপালন করেছিলাম। ফুলগাজী বাজারে বিক্রির জন্য বের হলে পথিমধ্যে বৃষ্টি আসলে রাস্তার পাশে গরুটি রেখে আমি পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। এমন সময় হঠাৎ বাতাসে গাছ ভেঙে গরুর উপর পড়ে।

এদিকে ঝড়ো হাওয়ায় গাছপালা উপড়ে পড়ে জেলার ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া সড়কে যানচলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় ফুলগাজী মহিলা কলেজ সংলগ্ন সড়কে গাছ উপড়ে পড়ে ৫-৭টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝোড়ো হাওয়ায় বিদ্যুৎ লাইন ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ছাগলনাইয়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা মিরাজুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে ছাগলনাইয়ার কালাপুল থেকে রেজুমিয়া পর্যন্ত অন্তত অর্ধশত গাছ উপড়ে ও ভেঙে পড়ে। এতে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করে যানচলাচল স্বাভাবিক করে।

ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, দুপুরে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ কম হলেও ঝড়ে বাতাসের বেগ বেশি ছিল। কোথাও কোথাও ভারি বজ্রপাতও হয়েছে।

সায়েম চৌধুরী নামে একজন বলেন, বৃষ্টি হচ্ছিল সাথে বজ্রপাত হয়েছে। ঝড়ো বাতাস ছিলনা। হঠাৎ করে ঝড়ো বাতাস শুরু হয় যা সর্বোচ্চ ১০ মিনিট স্থায়ী ছিল। এরমধ্যে এলাকার বেশ কয়েকটি স্থানে গাছ উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছি।

ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন মজুমদার বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারমধ্যে বসন্তপুর, বাশুড়া এলাকায় ১৫টির মতো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া লাইনে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে ফায়ার সার্ভিস ও বন বিভাগের লোকজন কাজ করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবো।

ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো. ফজলুর রহমান বলেন, ঝড়ে ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীতে বিদ্যুৎ লাইনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকা এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সংযোগ স্বাভাবিক করতে কাজ চলছে।

;

প্রস্তুত সাভারের চামড়া শিল্প নগরী, লক্ষ্যমাত্রা ১ কোটি ১০ লাখ পিস



মো. কামরুজ্জামান স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদ-উল-আযহাকে কেন্দ্র করে ঢাকার সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। কারখানাগুলোতে চলছে ধোয়া মুছার কাজ। প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বিসিক ও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, এ বছর ১ কোটি ১০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৫ জুন) সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হরিণধরা এলাকায় বিসিক চামড়া শিল্প নগরীতে ঘুরে দেখা যায়, কারখানাগুলোতে জোর প্রস্তুতি চলছে। কোনো কারখানায় আনা হচ্ছে লবণ। কোথাও আনা হচ্ছে কেমিক্যাল। আবার কোথাও মেশিনারিজগুলো পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। কারখানা ও সড়কের পাশে বর্জ্য যেমন সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। তেমনই পানি নিষ্কাশনের নালাও পরিষ্কার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ সিইটিপির মেশিনারিজ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেছে বলে জানায়। বিসিক কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে চামড়া সংগ্রহের জন্য ৫০ জনের স্বেচ্ছাসেবক দল ঠিক করেছে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত উল্ল্যাহ বলেন, গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া মিলিয়ে আমরা এ বছর ১ কোটি থেকে ১ কোটি ১০ লাখ পিস চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্য নিয়েছি। এ বছর লবণের দামও অনেকটা আয়ত্ত্বে রয়েছে। এ বছর আশংকার বিষয় হচ্ছে, গরম। যেহেতু কোরবানির মৌসুম গরমে পড়েছে আর এবছর গরমও বেশি তাই যারা সারাদেশে চামড়া সংগ্রহ করবেন তারা যথাযথ নিয়ম মেনে চামড়া সংরক্ষণ করবেন, তাহলে চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাবেন। এছাড়া সিইটিপির অবস্থা পূর্বের যেকোন সময়ের চাইতে ভালো।

চামড়া শিল্পনগরীর প্রস্তুতির বিষয়ে সাভারের বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান রিজোয়ান বলেন, এবারের কোরবানির ঈদে আমরা শিল্প নগরীতে মোট ৬ লাখ চামড়া সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া আমাদের চামড়া শিল্পনগরের পার্শ্ববর্তী যে আড়ৎ রয়েছে, সেখানেও ৬ লাখ পিস সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। চামড়া শিল্প নগরীতে চামড়া প্রবেশ যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, সেজন্য আমরা ৫০ জনের অধিক স্বেচ্ছাসেবকের একটি দল গঠন করেছি। ঈদের দিন বিকাল তিনটা থেকে কাজ করা শুরু করবে। আশা করছি এ সময় আমাদের চামড়া সংগ্রহ করা আমাদের চামড়া সংগ্রহ করা ও চামড়া প্রসেস করা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।

ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ওয়েটেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলাম শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা কোরবানির জন্য ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। পাশাপাশি বছরই আমাদের প্রস্তুতি থাকে। আমাদের কমন ক্রোম রিকভারি ইউনিট (সিসিআরইউ) গত এক বছর বন্ধ ছিল। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে এটির ক্রোম সেপারেশন সেকশনের ৫০% আমরা চালু করেছি। আগামী এক মাসের মধ্যে বাকি ৫০% চালু হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর আমাদের যে ওভারহোলিং করা হয়, কোরবানির সময় এটি এ বছর আরও ব্যাপকভাবে করা হচ্ছে। আমাদের ইপিএস ১, ২ ও ৩ থেকে শুরু করে ইকুলেশন, ইফ্লুয়েন্ট পাম্পিং স্টেশন, থিকিনিং ট্যাংক সবই আমরা প্রস্তুত রেখেছি যাতে আমাদের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান বলেন, এ বছর চামড়া সংরক্ষণে ঢাকা জেলা প্রশাসন ব্যতিক্রম উদ্দ্যোগ নিয়েছে। এটির মূল কার্যক্রম মানুষকে সচেতন করা। ঢাকার দুই সিটির ২০ গরুর হাঁটে বিসিকের সঙ্গে সমন্বয় করে জেলা প্রশাসন স্টল দিয়ে জেলা প্রশাসন লিফলেট বিতরণ করছে। রোভার স্কাউট, আমাদের কর্মচারীসহ সবাই চামড়া কিভাবে ছাড়াতে হবে, কিভাবে লবন দিতে হবে সে বিষয়ে প্রচার করছেন।

তিনি বলেন, চামড়া পরিবহনের জন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় চামড়ায় মান কমতে থাকে। ফলে চামড়া পরিবহনকারী যানগুলোকে সড়কে যাতে যানজটের কবলে না পড়তে না হয়, ও চামড়া যাতে দ্রুত সংরক্ষণাগারে পৌঁছানো যায়, সেজন্য পোস্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর সাভার চামড়া শিল্পনগরীতেও ওসি ও ইউএনওর সমন্বয়ে সেখানে যাতে কোনো যানজট না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

;

চট্টগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রামে ঈদুল আজহা পালিত হবে রোববার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের প্রায় ৬০ গ্রামে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোববার (১৬ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরীফ ও চন্দনাইশের জাঁহাগিরিয়া শাহছুফি মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা এ ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন। ইতোমধ্যে ঈদের জামাত আদায়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, সুফি সাধক মাওলানা মোখলেসুর রহমান (র.) ২০০ বছর আগে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহার নামাজ পালন করার নিয়ম প্রবর্তন করেন। তার সেই দেখানো পথে এখন পর্যন্ত এ নিয়ম মেনে আসছেন তার ভক্ত- অনুসারীরা।

দরবারের সূত্র জানায়, মির্জাখীল দরবার শরীফের খানকাহ মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদুল আযহার প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে। হজরত শাহ জাহাঁগীর শেখুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর ফখরুল আরেফীন (কঃ), হজরত শাহ জাহাঁগীর শমসুল আরেফীন (কঃ) এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বর্তমান সাজ্জাদানশীন হজরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীন (কঃ) এর তত্ত্বাবধানে উনারই জানশীন হজরত ইমামুল আরেফীন ড. মৌলানা মুহাম্মদ মকছুদুর রহমান নামাজে ইমামতি করবেন।

মির্জাখীল দরবার শরীফ সূত্রমতে, সাতকানিয়ার মির্জাখীল, এওচিয়ার গাটিয়াডাঙ্গা, আলীনগর, মাদার্শা, খাগরিয়া, মৈশামুড়া, পুরানগড়, বাজালিয়া, মনেয়াবাদ, চরতি, সুঁইপুরা, হালুয়াঘোনা, চন্দনাইশের কাঞ্চননগর, হারালা, বাইনজুরি, চরবরমা, কেশুয়া, কানাই মাদারি, সাতবাড়িয়া, বরকল, দোহাজারী, জামিরজুরি, বাঁশখালীর কালিপুর, চাম্বল, ডোংরা, শেখেরখীল, ছনুয়া, পুইছড়ি, আনোয়ারার বরুমছড়া, তৈলারদ্বীপ, বারখাইন, খাসখামা, কাঠাখালী, রায়পুর, গুজরা, লোহাগাড়ার পুঁটিবিলা, কলাউজান, চুনতী এবং সীতাকুন্ডের মাহমুদাবাদ, বারিয়াঢালা, বাঁশবাড়িয়া, সলিমপুর, মহালংকা, ফেনী, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ঢাকা, মুহাম্মদপুর, মুন্সীগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, মনোহরদী, মঠখোলা, বেলাব, আব্দুল্লাহনগর, কাপাসিয়া, চাঁদপুর জেলার মতলব, সিলেট, হবিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, মিরশরাই, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, রাউজান ও ফটিকছড়ির কয়েকটি গ্রামসহ চট্টগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী জেলাসমুহের শতাধিক গ্রামের বহুসংখ্যক অনুসারী আজ ঈদুল আজহা উদযাপন করবে।

সাতকানিয়ার মির্জাখীল দরবার শরিফের সৈয়্যদ মাওলানা আবদুর রহমান শাহ জাঁহাগিরী ও চন্দনাইশ কাঞ্চনাবাদ ইউনিয়নের জাঁহাগিরিয়া শাহসুফি মমতাজিয়া দরবারের শাহজাদা মাওলানা মো. মতি মিয়া মনসুর বলেন, আমরা হানাফী মাযহাবের অনুসারী হিসেবে বিগত দ্বিশতাধিক বছর ধরে ইয়াউমুল আরাফাহ বা পবিত্র হজ্জ্ব দিবসের পরের দিনই পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করে আসছি। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ হতে চাঁদের অবস্থান এবং আজ হজ্জ্ব পালনের খবর সচিত্র অবগত হয়ে তথা এই বছর শায়খ মাহের আল মুয়াক্কিল কতৃর্ক প্রদত্ত হজ্জের খুতবা সরাসরি পবিত্র আরাফাতের মসজিদে নামিরা হতে দেখে-শুনেই দেশ-বিদেশে সিলসিলায়ে আলীয়া জাঁহাগীরিয়া, মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারীগণ আগামীকাল রবিবার ঈদুল আজহা উদযাপন করবে।

;