দেশে সবচেয়ে বেশি শিশু শ্রমিক চট্টগ্রামে

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’


রেদ্ওয়ান আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
দেশে সবচেয়ে বেশি শিশু শ্রমিক চট্টগ্রামে

দেশে সবচেয়ে বেশি শিশু শ্রমিক চট্টগ্রামে

  • Font increase
  • Font Decrease

 

শাহজাহান মিয়ার বাড়ি ভোলায়। পেটের দায়ে এসেছেন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী তীরে। যখন যা পান তাই করে খেয়ে বাঁচা শারীরিকভাবে অসুস্থ শাহজাহানের ছোট মেয়ের নাম মোর্শেদা। বাবার সাথে সে জীবন সংগ্রামে যুক্ত হয়েছে আরও আগেই! বিভিন্ন আড়তে পঁচে পোকায় ধরা পেয়াজ কম দামে কিনে এনে রোদে শুকানোর সময় চাক্তাই খালের পাড়ে দেখা মিলেছে এই বাবা-মেয়ের।

কথা হয় বাবা শাহজাহান মিয়ার সাথে। ১১ বছরের এতো অল্প বয়সের মেয়েকে পড়ালেখায় না পাঠিয়ে নিজের সাথে রেখে কাজ করানোর বিষয়ে শাহজাহান মিয়াকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ’আমাগোতো সংসার চলা লাগবো। সংসার না চললে মাইয়ারে পড়ালেখা করামু কী দিয়া। টেকা পয়সার লাগি মাইয়ারে পড়ালেখা করাইতে পারি না। মাইয়া ফাইভ পর্যন্ত পড়ছে।’

অপু, আরাফাত ও আজগর তিন বন্ধু। তাদের বয়স যথাক্রমে ১২, ১১ ও ১২ বছর। তাদের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজিতে। রহমতগঞ্জ বাই লেইনের একটি ‘প্রিন্টিং এন্ড ফয়েল পেপার কাটিং হাউস’— এ কর্মরত অবস্থায় দেখা মিলে এই তিন বন্ধুর সঙ্গে।

এতো অল্প বয়সে তিন বন্ধুর এই শ্রমজীবনের গল্প জানতে চাইলে তারা বিনিময় করে এক করুণ অভিজ্ঞতা। তাদের তিনজনেরই গল্প এক। তারা জানায়, তাদের বাবা-মায়েরাই তদেরকে এই পেশায় পাঠিয়েছে আয়-রোজগারের জন্য। তবে, তিনজনের বেতন মিলিয়েও অযুতের ঘর ছুঁতে পারেনি।

উপরোক্ত গল্প দু’টিতে যে শিশুদের চিত্রায়ণ করা হয়েছে, আমাদের দেশে বর্তমানে সেসব শ্রমজীবী শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৭ জনে। যা বাংলাদেশের মোট শ্রমের ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এরমধ্যে চট্টগ্রামে নিয়োজিত রয়েছে ৬ লাখ ৪০ হাজার শিশু। যা বাংলাদেশের মোট শিশুশ্রমের ৩৬ শতাংশ।

সরকারি তথ্য মতে, দেশের ১৭ লাখ ৭৬ হাজার শিশু শ্রমিকের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বাধিক সংখ্যা রয়েছে। ৩ লাখ ৪০ হাজার শিশুশ্রমিক নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ঢাকা বিভাগে। গত কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রামে শিশুশ্রমের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে মোট শিশুশ্রম ছিলো ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এবছর সেটা বেড়ে হয়েছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

চট্টগ্রামের শিশুরা গৃহস্থালীর কাজসহ ডাম্পিং স্টেশন, ড্রাই ফিশ সেক্টর, মেটাল ফ্যাক্টরি, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপ, পরিবহন এবং জাহাজ ভাঙার কাজে জড়িত। যার কারণে তাদের জীবনের ঝুঁকিও ব্যাপক।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রামের অলাভজনক সংস্থা (এনজিও) ’মমতা’র সহকারী পরিচালক (শিশু সুরক্ষা প্রকল্প) মুজতাহিদা কাউসার বার্তা২৪.কমকে এসব তথ্য প্রদান করেন।

তবে, চট্টগ্রামে শিশুশ্রমের শীর্ষে রয়েছে এলুমিনিয়াম খাত। এরপর যথাক্রমে গণপরিবহন, হোটেল, পোশাক শিল্প, নির্মাণ, স্বাস্থ্য ও বিউটি পার্লার খাত রয়েছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্ট্যাডিজের (বিলস) সহায়তায় ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষকের পরিচালনা করা জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুারোর তথ্যমতে (বিবিএস), বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ৪৩টি সেক্টরকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো থেকে জানা যায়, এ ঝুঁকিপূর্ণ পেশাগুলোতেই সবচেয়ে বেশি মিশু কাজ করে থাকে।

মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন (বিএইচআরএফ) এর মহাসচিব জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘রাষ্ট্রের বিভিন্ন আইনে শিশুর বিভিন্ন সংজ্ঞা দেওয়া হলেও অধিকাংশ আইনে একজনকে ১৮ বছর পর্যন্ত শিশু বলা হয়। ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু শ্রম আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কোন কোন ক্ষেত্রে শিশুদের নির্দিষ্ট বয়স ও শর্ত অনুসারে শ্রমের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে, দুঃখের বিষয় হলো পাশের দেশ ভারতেও শিশু সুরক্ষা আইন আছে। কিন্তু বাংলাদেশে নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘একটা নির্দিষ্ট শিশুদের কাজের অনুমতি থাকলেও এর কিছু শর্ত আছে। যেমন- দৈনিক ৪-৫ ঘন্টার বেশি কাজ করানো যাবে না। ভারী কাজ করানো যাবে না। কেমিক্যাল, ব্যাটারি, ওয়ার্কশপ, ওয়্যারিং, ইলেক্ট্রিক্যাল, পরিবহন, ডাম্পিং ইত্যাদি ভারী কাজ করানো যাবে না। ফুলটাইম কাজ করানো যাবে না। তাদের ফিটনেস পরীক্ষা করে তাদের নিয়োগ দিতে হবে ইত্যাদি। তবে, হতাশার কথা হলো- শিশুর মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্র দায়িত্ব হলেও রাষ্ট্র তা পালন করছে না।’

শিশুরা কেনো শিশুশ্রমে জড়াচ্ছে? এর পেছনে কী কারণ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রামের অলাভজনক সংস্থা (এনজিও) ’মমতা’র প্রধান নির্বাহী রফিক আহামদ বলেন, ’চট্টগ্রামে শিশু শ্রম বাড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে দারিদ্র। তাছাড়া, চট্টগ্রাম বানিজ্যিক রাজধানী হওয়ার কারণে অনেকেই ছোটবেলা থেকেই কাজের সাথে জড়িয়ে যান। আবার শিশুদের পারিশ্রমিক কম দেওয়া যায় বলে অনেক প্রতিষ্টান মালিক শিশুদের নিয়ে এসে কাজে লাগিয়ে দেয়। এছাড়াও আরও বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে, সবচেয়ে বড় কারণ হলো দারিদ্র। রাষ্ট্র সবার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে এই শিশু শ্রম কমবে বলে আশাবাদী।’

ইলমা (এনসিওর লিগ্যাল সাপোর্ট থ্রো লোকাল মুভমেন্ট এন্ড একশান) এর প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু বলেন, ’আমাদের জনসংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এটাও শিশু শ্রম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। তাছাড়া অনেক পরিবার ছেলেমেয়েদের টাকার জন্য কাজে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু শিশু শ্রম তো শুধু শিশু শ্রম না। এই শিশু শ্রম করতে গিয়ে যে শিশুরা কীরকম শারীরিক ও মানসিক হেনস্তার শিকার হয় তা কল্পনারও বাহিরে। তাছাড়া, সরকার বলছে, একটা শিশুও পিছনে পড়ে থাকবে না। একটা শিশুও রাস্তায় থাকবে না। কিন্তু বললে কী হবে, সেরকম তো কোন উদ্যোগ নেই। শিশু কই আছে, মরে গেছে না বেঁচে আছে, সে খবর কেউ রাখে না। কিন্তু সরকারি ও বেসরকারিভাবে জোরালো উদ্যোগ গ্রহণ করলে, পদক্ষেপ নিলে শিশু শ্রম একদিন কমে আসবে বলে আমি মনে করি।’

   

রংপুরে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে নগরীতে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বেশকিছু তুলার বস্তা পুড়ে যায়। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

বুধবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার গুদামে এ ঘটনা ঘটে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হঠাৎ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তুলার  গোডাউনে আগুন জ্বলে উঠে। এতে প্রাথমিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। 

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক শওকত আলী জানান, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের দোতলায় একটি পাকা গোডাউন ঘর ছিল, সেখানে আগুন লাগলে আমাদের খবর দেয়। খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। তুলার বস্তা ছাড়া অন্য কিছু পোড়া যায়নি।

তিনি বলেন, কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা যাবে না।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;

রেস্তোরাঁয় নেই রান্নাঘর, চলে অসামাজিক কাজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর শিক্ষাপাড়া খ্যাত চকবাজার থানার অদূরে গুলজার মোড়ে অবস্থিত 'কফি ম্যাক্স' রেস্তোরাঁ। নামে রেস্তোরাঁ হলেও তার আসল কর্মকাণ্ড ধরা পড়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি অভিযানে। এসময় ওই রেস্তোরাঁ রান্নার কোনো আলামত না পেলেও পাওয়া যায় অসামাজিক কাজে বেশকিছু উপকরণ। পরে এই রেস্তোরাঁকে সার্বিক বিষয় বিবেচনায় সিলগালাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেয় আভিযানিক দল।

বুধবার (১৫ মে) দুপুরে চকবাজার এলাকায় পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ ফয়েজ উল্লাহ। এরপর পৃথক একটি অভিযানে একই থানার কেয়ারি মোড়ে অবস্থিত দাবা রোস্তারাঁকে অস্বাস্থ্যকর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার উৎপাদন এবং পরিবেশনের দায়ে সিলগালা করে দেওয়া হয়।

এ অভিযান পরিচালনা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রানা দেবনাথ, সহকারী পরিচালক মোহাম্মাদ আনিছুর রহমানসহ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সহযোগিতা করেন।

ভোক্তা অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মাদ ফয়েজ উল্লাহ জানান, কফি ম্যাক্স রোস্তোরাঁয় অভিযানের সময় আমরা বেশ কিছু অসামাজিক কার্যকলাপের আলামত ও উপকরণ পাই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটিকে বন্ধের আদেশসহ সিলগালা করা হয়েছে। এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির মালিক জনাব নজরুল ইসলাম নামক ব্যক্তি। কিন্তু অভিযান পরিচালনার সময় প্রতিষ্ঠানটির কর্তব্যরত কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারেনি।

তিনি আরও জানান, অন্যদিকে দাবা নামক ফাস্টফুড আন রেস্টুরেন্টে খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং নোংরা পরিবেশে খাবার উৎপাদন ও পরিবেশন করা হচ্ছে। যেখানে পূর্বের দিনের নষ্ট খাবার গুলোও নতুন করে পরিবেশন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির মালিক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। যিনি মেসার্স কফি ম্যাক্স নামক প্রতিষ্ঠানটিরও স্বত্বাধিকারী। দাবা নামক রেস্টুরেন্টে সার্বিক পরিবেশ ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠানটিকে সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধের নোটিশ প্রদানসহ সিলগালা করা হয়েছে।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;

যাত্রী সংকটে বরিশাল-ঢাকা রুটে চলছে একটি লঞ্চ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল-ঢাকা নৌ-পথে যাত্রী সংকট চরম আকার ধারন করেছে। এ কারণে জনপ্রিয় এই রুটে এখন একটিমাত্র লঞ্চ চলাচল করছে। মঙ্গলবার বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে মাত্র একটি লঞ্চ। বুধবার (১৫ মে) ছেড়ে গেছে দুইটি। যা সাধারণ মানুষের কাছে বিস্ময় হিসেবে দেখা দিয়েছে।

পদ্মা সেতু হওয়ার পর থেকে বরিশাল-ঢাকা নৌ-পথে যাত্রী সংকট শুরু হয়। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পূর্বে প্রতিদিন উভয় রুটে ৭ থেকে ৮ টি লঞ্চ চলাচল করতো। সেখান থেকে কমে অর্ধেকে নেমে আসে। এখন তা একটিতে নেমে এসেছে।

বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া এমভি পারাবত-১২ লঞ্চের যাত্রী মো. লোকমান হোসেন বলেন, বরিশাল নৌ-বন্দর থেকে মাত্র একটি লঞ্চ চলবে তা আমরা কখনো কল্পনাও করিনি। এ বিষয়ে বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে একটি করে লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রী সংকটের ফলে মালিক পক্ষের রোটেশনের কারনে একটি করে লঞ্চ চালানো হচ্ছে। কিন্তু দুইটি করে লঞ্চ চালানোর কথা ছিল।

তিনি জানান, বর্তমানে প্রতিদিন ৫/৭ শ’র বেশি যাত্রী হয় না। একটি লঞ্চ দিয়ে তা পরিবহন সম্ভব। তাই হয়তো মালিকরা মিলে একটি করে লঞ্চ চালাচ্ছে।

একটি করে লঞ্চ চালানোর জন্য যাত্রী ভোগান্তি হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সদ্য অবসরে যাওয়া পরিদর্শক মো. কবির হোসেন। তিনি বলেন, বরিশাল-ঢাকা রুটে চলাচলের জন্য ২০ টি লঞ্চ রয়েছে। 

প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৬/৭টি এবং একইভাবে বরিশাল থেকে ৬/৭টি ছেড়ে যেতো। ঈদ ও কোরবানির সময় একেকদিন ২০/২৫ টি লঞ্চও চলাচল করেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রী সংকট শুরু হয়। বর্তমানে যে যাত্রী রয়েছে তাতে দুইটি লঞ্চ ঠিক ছিল। কিন্তু একটি লঞ্চ চলাচল যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে। একটি লঞ্চ চালানোর কারণে কেবিন নিয়ে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ নয়-ছয় করে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি লঞ্চে ঠাসা যাত্রী। তবে সেটি ধারণ ক্ষমতার বেশি নয়। লঞ্চের নিচতলা ও দুই তলার ডেকে যাত্রী ভর্তি। লঞ্চ যাত্রীরা জানিয়েছেন, দুইটি লঞ্চ থাকলে তারা স্বাচ্ছন্দে যেতে পারতেন। কিন্তু একটি লঞ্চ হওয়ায় গাদাগাদি করে যেতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে লঞ্চ কর্মচারীরা জানান, যত যাত্রী রয়েছে তা নিয়ে দুইটি লঞ্চ চললে আর্থিক ক্ষতি হয়। তাই একটি লঞ্চ চালানো হচ্ছে। তারা স্বীকার করেছেন, একটি লঞ্চ চলাচল করায় যাত্রীরা একটু গাদাগাদি হয়।

দেশের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় নৌ-রুট বরিশাল-ঢাকা। লিফটসহ নানা অত্যাধুনিক সুবিধার লঞ্চগুলোতে এক সময় যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় থাকত। ভিভিআইপি, ভিআইপি, সেমি ভিআইপি,  প্রথম শ্রেণির এক শয্যা ও দুই শয্যার কেবিন, সোফা পেতে হেনস্তা হতে হতো। কিন্তু পদ্মা সেতু পাল্টে দেয় সেই চিত্র। যাত্রী সংকটের কারণে লঞ্চের সংখ্যা কমতে শুরু করে।

অভিযোগ রয়েছে, যাত্রী সংকটের অজুহাত দিয়ে বরিশাল-ঢাকা রুটের লঞ্চ মালিকরা সিন্ডিকেট করে। তারা রোটেশনের মাধ্যমে লঞ্চের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। এখনো যত সংখ্যক যাত্রী রয়েছে তাতে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি লঞ্চ প্রয়োজন। কিন্তু মালিকরা বিআইডব্লিউটিএ ও যাত্রীদের জিম্মি করে একটি/দুইটি লঞ্চ চালায়। এতে ভোগান্তিতে যাত্রীরা।

তবে লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, যাত্রী সংকটে লঞ্চ এখন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রত্যেক লঞ্চ মালিক কম বেশি ঋন নিয়েছেন। তারা এখন ঠিকমতো ঋনের টাকা পরিশোধ করতে পারেন না। একটি লঞ্চ ব্যাংক নিয়ে গিয়ে কেটে বিক্রি করছে। এক স্বনামধন্য কোম্পানীর একটি লঞ্চ বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

শুধু ঢাকা বরিশাল নয়, দক্ষিনাঞ্চলের সকল রুটে যাত্রী নেই জানিয়ে সুন্দরবন নেভিগেশনের মালিক রিন্টু বলেন, এ ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এজন্য সরকারকে পরিকল্পনা নিতে হবে।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;

মিতু হত্যা মামলায় ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
মিতু হত্যা মামলায় শেষ হল ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

মিতু হত্যা মামলায় শেষ হল ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ

  • Font increase
  • Font Decrease

আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাবেক মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দীন। এ নিয়ে মামলায় মোট ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

বুধবার (১৫ মে) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী নেছার আহম্মেদ। তিনি জানান, মিতু হত্যা মামলার সাক্ষী হিসেবে সাবেক চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফি উদ্দীন স্যারের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। এ নিয়ে মামলায় মোট ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সাতজনকে আসামি করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে। এতে মামলার বাদি বাবুল আক্তারকেই প্রধান আসামি করা হয়।

অভিযোগপত্রে আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, মো. কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতেশামুল হক প্রকাশ হানিফুল হক প্রকাশ ভোলাইয়া, মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খাইরুল ইসলাম কালু এবং শাহজাহান মিয়া। আসামিদের মধ্যে শুধু মুসা পলাতক আছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে।

ওই বছরের ১০ অক্টোবর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ওই বছরের ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন সাক্ষ্য দেন। এ পর্যন্ত ৫০ জনের সাক্ষ্য সম্পন্ন হয়েছে।

  ‘শ্রমিকের জয়গান কান পেতে শোন ঐ’

;