দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় আইন করা হচ্ছে: ভূমিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় আইন তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ২০১৩ সালেই অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন প্রণয়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তিনি। সম্প্রতি এ সম্পর্কিত দুইটি পরিপত্রও জারি করা হয়েছে।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) জেলার কাহারোল উপজেলার কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে 'বিংশতি (২০) সহস্রাধিক কণ্ঠে পবিত্র ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজক রংপুর বিভাগীয় পবিত্র বেদ ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা শিক্ষাদান সংঘ।

অনুষ্ঠানে সম্মাননীয় অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালা, সাবেক সংসদ সদস্য ও হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোরঞ্জন শীল গোপাল, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল ও ভারতের বিবেকানন্দ মিশনের অধ্যক্ষ ড. মানস ভট্টাচার্য।

নারায়ণ চন্দ্র বলেন, বৈচিত্র্যের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানেই দেশের ঐক্যের প্রেরণা নিশ্চিত করে। এই অনুষ্ঠান বাংলাদেশের বৈচিত্র্যেময় সৌন্দর্যকে আরও শক্তিশালী করেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের জন্য এই অনুষ্ঠান অপরিসীম সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে। ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরে শান্তিপূর্ণভাবে পূজনীয় গীতা পাঠ করে এত বড় সমাবেশ প্রত্যক্ষ করা ছিল অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

ভূমিমন্ত্রী বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সহনশীলতা, বোঝাপড়া ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

   

মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই ৯০০ মরদেহ দাফনের তথ্য দেয় মিল্টন: ডিবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)'র অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কথিত মানবতার ফেরিওয়ালা ও চাইল্ড এন্ড এইজ কেয়ার আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সামাদ্দার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন ভিডিওতে ৯০০ মানুষ দাফনের তথ্য দিয়েছে। অথচ বাস্তবে সে দাফন করেছে মাত্র ১৩৫ জন। ভিডিওর মাধ্যমে এমন তথ্য ছড়িয়ে সমাজের মানবিক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টাকা হাতিয়ে নিত।

বৃহস্পতিবার (০৯ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, মানবপাচার ও জালিয়াতিসহ মিল্টন সামাদ্দারের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। তাকে দুই মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মিল্টনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত যে অভিযোগগুলো উঠেছে তার বেশিরভাগই স্বীকার করেছে। ভুয়া মৃত সনদ তৈরি করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। অপারেশন থিয়েটারে চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ স্বীকার করেছে। মাদক সেবন করে সে তার আশ্রমের অসুস্থদের নির্যাতন করত।

মিল্টন কাউকে পরোয়ানা না করার কারণ অনেক বিশেষ ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না। আবার অনেকেই মিল্টনের আশ্রমে শিশু ও অসুস্থ মানুষ দিয়ে আসত। কিছুদিন পর যখন তারা খোঁজ নিতে যেতো তখন সে তাদের ধরেই পিটাত। এর সবই সে স্বীকার করেছে।

৯০০ লাশ দাফনের বিষয়ে রিমান্ডে মিল্টন বলেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ও লাইভে এসে সে টাকার লোভে এই তথ্য ছড়াত। ৯০০ লাশ কবর দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা নেই। বরং সে মাত্র ১৩৫ টি মরদেহ দাফন করেছে। তার আশ্রমে থাকা অনাথ শিশু ও অসুস্থ মানুষদের দেখিয়ে ভিডিও তৈরি করে মানুষের বিবেকে নাড়া দেওয়ার চেষ্টা করত। তার ভিডিও দেখে অনেক মানবিক মানুষ তাকে টাকা পাঠাতো। যেহেতু সে মানবতার ফেরিওয়ালা সেঁজে অসহায় মানুষের সেবা দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু তার আশ্রমে কোনো চিকিৎসক না রেখে মিল্টন নিজেই অপারেশন করত। অনেক সময় হাত পা কেটে ফেলত। এর ফলে রোগীরা আত্মচিৎকার করত। আর এতেই মাদকাসক্ত মিল্টন পৈশাচিক আনন্দ পেতো। ব্লেড ও ছুরি দিয়ে কাটাছেঁড়ার ফলে অনেকে যন্ত্রণায় ভুগে মারা যেতো কিন্তু মিল্টনের পাষণ্ড হৃদয় নাড়া দিতো না। আমরা অনেক তথ্য বের করেছি। প্রয়োজনে আবার রিমান্ডে আনবো।

হারুন আরও বলেন, আমাদের সমাজে যদি এ ধরনের মানুষ থাকে যারা মানবতার ফেরিওয়ালা সেঁজে প্রতারণা করছে, এমন মানুষদের বিষয়েও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। যে মানবতার ফেরিওয়ালা সেঁজে টাকা হাতিয়ে নিয়ে মানুষকে সেবা দিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারা তাকে সহায়তা করেছে, কারা তাকে ভিডিও বানানোর পরামর্শ দিয়েছে তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মিল্টনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা একবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ডিবির হারুন অর রশীদ বলেন, ইতোমধ্যে মিল্টনের আশ্রমের বাসিন্দাদের ভালো খাবার ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

মিল্টন অনেকের হাত-পা কেটে ফেলত। এতে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা ভয়াবহ অপরাধ। মিল্টন বারবার বলেছে ৯০০ লোক মারা গেছে, আবার বলছে ১৩৫ জন মারা গেছে। যারা মারা গেছে তাদের তো স্বজন ছিল। তার উচিত ছিল স্বজন ও ঠিকানা খুঁজে বের করা, বাবা মা বেঁচে আছে কি না তার খোঁজ নেওয়া। রেজিস্ট্রারে লেখা দরকার ছিল। এটা না মেনে থানা জিডি না করে, অসহায় মানুষদের পরিবার ও স্বজনদের না জানিয়ে কবর দেওয়া ভয়াবহ অপরাধ। সব কিছুই আমরা তদন্তে আনবো।

;

সরকারি কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পর্যায়ক্রমে শেয়ার বাজারে নিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছাতক সিমেন্ট কারখানাসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারে অন্তর্ভুক্তি করা যায় কিনা সে বিষয়ে অর্থ বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়রসচিব সত্যজিৎ কর্মকার। ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল আব্দুস সালাম (অব.), পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুজ্জামান সরকারসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

একনেক বৈঠকে খুলনা মেডিকেল কলেজ প্রকল্প থেকে ‘শেখ হাসিনা’ নামটি বাদ দেওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে উপস্থিত সবার অনুরোধে এই প্রকল্পে তার নাম থাকলেও আগামীতে কোনো প্রকল্পে নিজের নাম না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল না করে ওই টাকা অন্য কোনো স্থানে ব্যয় করতেও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

;

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করায় ফুফাতো ভাইয়ের সংবাদ সম্মেলন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মানিকগঞ্জ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে হেয় প্রতিপন্ন না করে গঠনমুলক নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ফুফাতো ভাই মো: ইসরাফিল হোসেন।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের হলরুমে দলীয় নেতাকর্মী ও সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসরাফিল হোসেন।

লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তিনি বলেন, গেলো কয়েকদিন আগে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উদ্দেশ্য ও বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য দিয়ে মানিকগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে ছোট করেছে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সুদেব সাহা।

সংবাদ সম্মেলনে সুদেব সাহার আনিত দাবী মিথ্যা উল্লেখ করে ইসরাফিল হোসেন বলেন, সুদেব সাহা আমার (ইসরাফিলের) নেতাকর্মীদেরকে তার পক্ষে কাজ করার জন্য হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে সুদেব সাহা নিশ্চিত পরাজয় জেনে এমন মিথ্যা প্রপাগন্ডা ছড়াচ্ছে বলে দাবি করেন ইসরাফিল হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার সরকার, জাগীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর এ আলম সরকারসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা এসময়ে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গেলো ৭ই মে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও চেয়ারম্যান প্রার্থী ইসরাফিল হোসেনের পক্ষে স্থানীয় এম.পি বিভিন্ন কৌশলে কাজ করছেন বলে অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উপজেলা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সুদেব সাহা।

আগামী ২৯ই মে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হবে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান মো: ইসরাফিল হোসেন ও সুদেব সাহা ছাড়াও আরও পাঁচজন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

;

সত্যজিৎ রায়ের দুই’শ বছরের পৈতৃক বৈশাখী মেলা বন্ধ, হতাশ ব্যবসায়ীরা



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
দূর থেকে মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন

দূর থেকে মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্কার বিজয়ী কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ির ঐতিহ্যের বৈশাখী মেলা প্রায় দুই শত বছরের পুরোনো। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এ মেলাটি নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে উপজেলা প্রশাসন অনুমতি দেয়নি ৷

এ কারণে দূর থেকে মেলায় আগত ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এই খবরে এলাকাবাসীসহ দূর থেকে আগত পর্যটকদের মনে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে৷ কেননা এই মেলার জন্য একবছর ধরে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে কবি সাহিত্যিকরা দীর্ঘ প্রতীক্ষায় থাকেন।

বুধবার (৮ মে) থেকে মেলাটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। মেলা না হওয়ায় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ওপর বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন সংস্কৃতি কর্মী ও সাহিত্যিকরা৷ দ্রুত সময়ে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অচলাবস্থা নিরসন করে মেলা আয়োজনের দাবি জানান তারা৷

জানা যায়, প্রায় ২০০ বছর আগে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ শিশুসাহিত্যিক হরি কিশোর রায়চৌধুরী শ্রীশ্রী কালভৈরব পূজা উপলক্ষে বৈশাখের শেষ বুধবার এ মেলার প্রচলন করেছিলেন। এই রায় চৌধুরী বাড়িতেই ১৮৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী। রায় চৌধুরী বাড়ির প্রায় চার একর ভূমিসহ আশপাশের বিশাল এলাকাজুড়ে এ মেলা বসে। মেলায় রকমারি পণ্যের কয়েক শ স্টল বসে। বাউলগান ও কবিতা পাঠের আসরও হয়। এতে দেশের প্রথিতযশা কবি-সাহিত্যিকরা অংশ নেন। এছাড়াও থাকে বিনোদনের নানা আয়োজনও।


স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কটিয়াদীর মসুয়া ইউনিয়নে রায় বাড়ির মাঠে প্রতিবছর মেলা হয়ে আসছে। এবছর মেলার নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব নিতে নজর পড়ে একটি পক্ষের। ভাগাভাগি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের একটি অংশের কোন্দল দেখা দেয়৷ এতে বিভক্তির শুরু৷ মেলা কমিটিতে নিজের পছন্দের কিছু লোককে যুক্ত করতে চেষ্টা চালান স্থানীয় মো. রুবেল হোসেন৷ তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু নিজের ইচ্ছার প্রতিফলন না হওয়ায় মেলাটি বন্ধের পক্ষে অবস্থান নেন তিনি৷ যদিও তিনি এটি অস্বীকার করেছেন।

মেলার অনুমতি না দেয়ার জন্য রুবেল কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরসহ বিভিন্ন দফতরে একটি লিখিত আবেদন করেন।

আবেদনপত্রে উল্লেখ করেন, মেলার ওই দিন পার্শ্ববর্তী উপজেলা পাকুন্দিয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং কটিয়াদী ও পাকুন্দিয়া উপজেলার পোড়াবাড়ী মেলায় কিশোর গ্যাং দৌরাত্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করার কারণে মারামারি ঘটনা থেকে খুনের ঘটনা ঘটেছে। এই মেলাতেও তা হতে পারে বলে তিনি কারণ উল্লেখ করেন৷

বৃহস্পতিবার (৯ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এবারও সেই তারিখ অনুযায়ী বিভিন্ন জেলা থেকে হরেক রকম পণ্য নিয়ে ব্যবসায়ীরা এসে মেলার অনুমতি না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তাদের চোখে মুখে হতাশার ছাপ৷ অনেকের কাছে ফিরে যাওয়ার ভাড়ার টাকাও নেই৷

মেলাতে নরসিংদী জেলা থেকে আসা কসমেটিক ব্যবসায়ী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি ৫ বছর ধরে এই মেলাতে এসে ব্যবসা করি। এবারও এসেছিলাম। মেলার অনুমতি না থাকায় মনডা খারাপ হইয়া গেল। যাওয়ার টাকা নেই।  খালি হাতে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।’

কটিয়াদী সাহিত্য সংসদের সভাপতি কবি মেরাজ রাহীম বার্তা২৪.কমকে বলেন, মেলা হচ্ছে না এটি আমাদের জন্য হতাশার৷ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর আঘাত। এটি কটিয়াদী তথা কিশোরগঞ্জের জন্য ঐতিহাসিক স্থান। মেলা যেন কখনো বন্ধ না হয় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই এটা হোক, এই দাবি জানাচ্ছি৷’


স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহ জালাল সাজু জানান, মেলা নিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রুবেলের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি জেলা প্রসাশক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। আমরা মেলার অনুমতির জন্য গেলে উপজেলা প্রশাসন মেলার অনুমতি দেয়নি।

মেলা বন্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়া মো. রুবেল হোসেন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কায় মেলা বন্ধের পক্ষে আমি ছিলাম। এটা সত্য। কিন্তু মেলা নিয়ে আমার কোনো স্বার্থ বা আগ্রহ ছিল, এটি সঠিক নয়৷ এবং বনিবনা না হওয়া এ কথাও সঠিক নয়৷’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান বৃহস্পতিবার (৯ মে) সকালে বার্তা২৪.কমকে বলেন, মেলার দিন বুধবার পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ছিল। আগামী ২১ মে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাচন থাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক বিবেচনা করে বৈশাখী মেলার অনুমতি দেয়নি।

নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পরে দেবেন কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবস্থার উন্নতি হলে পরে অনুমতির বিষয়টি বিবেচনা হতে পারে৷

;