ভার পেয়ে মওকা খুঁজলেন মাউশির ডিজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে উকিল নোটিশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: মাউশির ডিজি প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী

ছবি: মাউশির ডিজি প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী

  • Font increase
  • Font Decrease

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)র মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে ভারপ্রাপ্ত হয়েছিলেন অধিদপ্তরের কলেজ প্রশাসনের পরিচালক প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী। এ সময়ে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করে উচ্চতর পদটি পাওয়ার চেষ্টাই করার কথা ছিলো তার। কিন্তু সেটা না করে মওকা বুঝে অর্থ আত্মসাৎ করে নিয়েছেন এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে উকিল নোটিশ। বলা হচ্ছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির বড় অংকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন এই অধ্যাপক।

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির বর্তমান সভাপতি ও অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর শাহেদুল খবির ২০১৬ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে গত দুই বছর ধরে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ছয় বছরে দুই পদে দায়িত্ব পালনের সময়ে সমিতির সাধারণ তহবিল ও বিশেষ তহবিল খাতের অর্থ জনতা ব্যাংকের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে তুলে বিভিন্ন কাজে ব্যয় করেন। যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এছাড়া সারাদেশের বিভিন্ন কলেজ থেকে চাঁদা আদায়সহ সমিতির নানাখাতের আয় ও ব্যয়ের হিসাব নিয়ে সদস্যদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ফলে অনেকটা চাপের মুখে শাহেদুল খবিরের নিজের লোক হিসেবে পরিচিত প্রফেসর আ ন ম শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে অডিট কমিটি গঠন করেন। এই কমিটি সমিতির ব্যাংক হিসাব ও আয়-ব্যয়ের অডিট করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকার গড়মিল খুঁজে পায়। 

আর সেই অডিটের সূত্র ধরে শাহেদুল খবিরকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সমিতির সাধারণ সদস্য খাগড়াছড়ি জেলার রামগর সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক।

এই শিক্ষকের পক্ষে আইনি নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. শাহীন আলী।

এই নোটিশে শাহেদুল খবিরের পাশাপাশি তার সঙ্গে আর্থিক অনিয়মে জড়িত জড়িত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর খান রফিকুল ইসলাম, সমিতির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও বর্তমানে ওএসডি হয়ে চট্টগ্রাম জেলার স্বন্দীপের হাজী আব্দুল বাতেন কলেজে সংযুক্ত সহযোগী অধ্যাপক মো. শওকত হোসেন মোল্ল্যা, সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও বর্তমানে ওএসডি হয়ে একই কলেজে সংযুক্ত ব্যাবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল আহমেদকে একই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নোটিশে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সমিতির একাধিক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রফেসর নাসরিন বেগম ও আইকে সেমিলউল্লাহ খন্দকার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দায়িত্বে ছিলেন। তাদের মেয়াদে এক কোটি ৯ লাখ টাকা পরবর্তী কমিটি অর্থাৎ ২০১৬ সালে নির্বাচিত সভাপতি আই কে সেলেমউল্লাহ খন্দকার ও মহাসচিব প্রফেসর শাহেদুল খবিরের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে যান। ২০১৬ সালের সমিতির ১২৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। একটি আই কে সেলেমউল্লাহ খন্দকারের প্যানেল, অন্যটি শাহেদুল খবিরের প্যানেল। এই নির্বাচনে সেলেমউল্লাহ খন্দকার সভাপতি নির্বাচিত হন। তার প্যানেলের আর কেউ নির্বাচিত হতে পারেন নি। বাকি ১২২ পদে শাহেদুল খবিরের প্যানেল নির্বাচিত হয়। ফলে কমিটিতে সেলেমউল্লাহ খন্দকার একা হয়ে যান। এই সুযোগে মহাসচিব হিসেবে শাহেদুল খবির ও তার প্যানেলের কোষাধক্ষ্য মুন্সিগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও নায়েমের সাবেক উপ-পরিচালক খান রফিকুল ইসলাম মিলে সভাপতিকে পাশকাটিয়ে সমিতির সকল ব্যাংক একাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এই সুযোগে ২০১৬ থেকে ২০১২২ সাল পর্যন্ত দুজনের স্বাক্ষরে ব্যাংক থেকে কয়েক কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়। সারাদেশের কলেজগুলো থেকে গত ৬ বছর ধরে তারা চাঁদা তুলেছেন। এই সময়ে কোন কলেজ কতটাকা চাঁদা দিয়েছে। এই টাকা কি ভাবে খরচ করা হয়েছে। পূর্বের হিসাবের সঙ্গে বর্তমান হিসাবের কোনো ধারাবাহিকতা তারা রক্ষা করেন নি। 

এর ফলে সমিতির সাধারণ সদস্যদের মাঝে কমিটির নানা খাতের ব্যয় ও আয়ের বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে সমিতির ক্ষমতাশীন নেতাদের এমন অন্যায়ের প্রতিবাদ জানালে চলতি বছরের মার্চ মাসের ৭ তারিখ দুটি অডিট কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি ২৪ দিন পর গত ৩১ মার্চ অডিট প্রতিবেদন জমা দেয়। দুটি কমিটির প্রধান ছিলেন দুজন অধ্যাপক। তারা এই হিসাব ও ব্যাংক বিবারণ দেখে নিজেরাই বিব্রত। ফলে অনেকটা অনিচ্ছা সত্যেও সভাপতির নিজেদের লোকদের করা অডিটেও ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার গরমিল উল্লেখ করা হয়।

সমিতির সদস্যদের আরও অভিযোগ, সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে নিজেদের ক্ষমতাধর ভেবে কমিটির সভাপতি ও তার নেতৃত্বাধীন নেতারা কোনো নিয়ম মানছেন না। এছাড়া বর্তমান কমিটির ভোটেও নয়-ছয়ের অভিযোগও করছেন অনেকে। 

অডিটে অংশ নেওয়া একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অডিট কমিটির কাছে উপস্থাপন করা বেশিরভাগ ভাউচারে কাটাকাটি করা হয়েছে। ব্যয়ের খাত উল্লেখ নেই। এমন কি লাখ লাখ টাকা খরচ করা হলেও তার খাত বা ভাউচার দেখাতে পারেন নি। ফলে বিসিএস ক্যাডারের পেশাজীবি একটি সংগঠনের সদস্যদের কোটি কোটি টাকার ব্যয়ের হিসাব রক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের বড় ধরনের অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। এতে অডিট কমিটির প্রধানসহ সবাই হতবাক হয়েছেন।   

এদিকে ২০২৩ সালের অক্টোবর ও সেপ্টেম্বর মাসে বিসিএস ক্যাডার–বৈষম্য, পদোন্নতিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানসহ বিভিন্ন দাবিতে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারাদের প্রায় ১৫ দিন কর্মবিরতি পালন করেন। এই কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবিতে সারাদেশে শিক্ষকদের ১৫ দিন কর্মবিরতির নেপথ্যে ছিলেন শাহেদুল খবির। তিনি পদোন্নতি এনে দেওয়ার নামে অনেকটা চাপ প্রয়োগ করে বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের শেষ সময়ে নির্বাচনের আগে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। যদিও পরবর্তীতে তার পদ নিয়ে টানাটানি শুরু হলে তিনি আন্দোলন থেকে সরে আসেন এবং শিক্ষকদের  আন্দোলন থেকে বিরত থাকতে বলেন। সেই সময়ে আন্দোলনের বিষয়ে শাহেদুল খবির গণমাধ্যমে নানা বক্তব্য দিয়েছিলেন। বিভিন্ন পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে খুঁজে যার সত্যতা পাওয়া যায়। 

এছাড়া শাহেদুল খবিরের অন্যতম সহযোগী শওকত হোসেন মোল্যার সন্দ্বীপ হাজী আব্দুল বাতেন কলেজে বদলি হলেও তিনি বিগত তিন বছর কলেজে যান না। কলেজে না যেয়েও কলেজ অধ্যক্ষের সহযোগিতায় বেতন তুলছেন। তিনি শাহেদুল খবির চৌধুরীর নিজের লোক হওয়ায় কর্মস্থলে দীর্ঘদিন না গেলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এই শাহেদুল খবির চৌধুরীর যোগসাজশে নোয়াখালী সরকারি কলেজের যাবতীয় অনিয়ম দুর্নীতি শিক্ষক হয়রানি হচ্ছে। শিক্ষা সচিব নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সালমা আক্তার ও উপাধ্যক্ষ লোকমান ভূঞাঁ এর বিরুদ্ধে পৃথক তদন্তের আদেশ দিলেও তদন্ত আটকে রেখেছেন শাহেদুল খবির চৌধুরী। সারাদেশে শিক্ষায় দুর্নীতিবাজদের গুরু শাহেদুল খবির চৌধুরী। কেউ অনিয়ম করে ধরা পড়লেও তার কারণে কোন তদন্ত হয় না। তদন্ত হলেও সেই প্রতিবেদনের কাগজ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় না। এমন কি কুমিল্লা বোর্ডের চিঠি জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার তদন্তও আটকে আছে অদৃশ্যের বাধায়।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক অধিদফতরে চাকরি করে একই অধিদফতরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির একজন সাধারণ সদস্য। সে হিসেবে এই সমিতির আর্থিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব জানার অধিকার আমার আছে। কারো ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নয় সমিতির সকল সদস্যদের মতো আমিও সমিতির আর্থিক হিসাব চাইতে পারি। সে জন্যই সম্প্রতি অডিটে উঠে আসা আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে জড়িতদের আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি। সমিতির কোটি কোটি টাকা ক্ষমতার জোরে তারা আত্মসাৎ করেছেন। এমন কি জোর করে কোষাধ্যক্ষের কাছ থেকে চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার কথাও আমরা ফেসবুকে দেখতে পাই। ব্ল্যাংক চেকে স্বাক্ষর নেওয়ার যৌক্তিকতা কোথায় আছে? একজন ক্যাডার সার্ভিসের কর্তকর্তা হিসেবে তারা এই কাজ করতে পারেন না। যদি আমার নোটিশের উপযুক্ত জবাব তারা দিতে না পারেন, বৈধ কাগজ না দেখাতে পারেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে। 

অধিদফতেরর মহাপরিচালককে আইনি নোটিশ পাঠানোর কারণে হয়রানির আশঙ্কা করছেন কি না জানতে চাইলে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষক বলেন, আমি ২০১৮ সাল থেকে হয়রানির শিকার। মাউশির ১০ স্কুল প্রকল্পের দূর্নীতি বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। সেই সময়ে আমি অভিযোগ দিয়েছিলাম। সেই অভিযোগে ৯ জনের অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি জানতেল। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। অথচ আমাকে ওএসডি করে রাখা হয় দুই বছর। সেখান থেকে নোয়াখালী সরকারি কলেজে বদলি করা হয়। সেখানেও পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল, ফলাফল টেম্পারিং করে টাকা নেওয়া, শিক্ষার্থী ভর্তিতে ব্যাপক দূর্নীতি নিয়ে দুদক ও শিক্ষা সচিবের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। সেখানেও দূর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং আমাকে খাগড়াছড়ি বদলি করা হয়। আমি এতেও ভীত নই। আমি জানি হয়রানির শিকার হবো। তবে আমি যতদিন বেঁচে আছি দূর্নীতির সঙ্গে আপষ করবো না। শুধু তাই নয় আমার এসিআরে বিরূপ মন্তব্য করে আমার পদোন্নতি আটকে দেওয়া হয়েছে। আমার জুনিয়রদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাই আমি থেমে যাবো না। তাদের বিচার না হলেও বরং মানুষ জানুক তারা কিভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দিচ্ছে।

এ দিকে যার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ সেই শাহেদুল খবিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। টানা দুই দিন তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি উত্তর দেন নি।

   

চামড়াশিল্পে ন্যূনতম মজুরি ২২৭৭৬ টাকার প্রস্তাব সিপিডি’র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় দেশের চামড়াশিল্প খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা প্রস্তাব করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। একইসঙ্গে মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রেডিং সিস্টেম যথাযথ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (৪ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘ট্যানারি শিল্পে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আয়োজিত আলোচনা সভায় ট্যানারি শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম এ মজুরি প্রস্তাব করে প্রতিষ্ঠানটি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা, ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ, ভাইস-চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মালেক, অশি ফাউন্ডেশনের ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ প্রমুখ।

গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে সিপিডির সিনিয়র গবেষক তামিম আহমেদ জানান, বর্তমান বাজারে সবকিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। এমন পরিস্থিতিতে ট্যানারি বা চামড়াখাতের একজন শ্রমিকের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের খরচ মাসে ২০ হাজার ৫৬৪ টাকা। আর খাদ্যবহির্ভূত খরচ ১২ হাজার ৯১৪ টাকা। প্রত্যেক শ্রমিক পরিবারের গড়ে সদস্যসংখ্যা ৪ দশমিক ৬ জন। এর মধ্যে উপার্জনক্ষম সদস্য ১ দশমিক ৫ জন। সেই হিসেবে শ্রমিকের মাসিক ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা হওয়া উচিত।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, নানা সময়ে চামড়া খাতের পরিবেশ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু এ খাতের মজুরি নিয়ে আলোচনা কম হয়। সুতরাং মজুরি বাড়লে এই খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেন তিনি।

ন্যূনতম মজুরি নিয়ে সিপিডির প্রস্তাবের বিষয়ে ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মালেক বলেন, সিপিডির প্রস্তাবটি তাদের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মেলেনি। তবে সংস্থাটির প্রতিবেদনে এ খাতের সার্বিক অবস্থা উঠে এসেছে। আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ২৫ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছি। ইতোমধ্যে প্রস্তাবটি মালিকপক্ষ ও মজুরি বোর্ডের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, চামড়া খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে সিপিডির এমন প্রস্তাবনা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। কারণ, ডলারের দাম বাড়ার কারণে আগের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বিপরীতে রফতানিতে চামড়ার ইউনিট মূল্য কমেছে। তবে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য একটি মজুরি নির্ধারণ করা হলে সেটি বিবেচনায় নেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।

ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, বোর্ডে আলোচনা করে দেখা হবে মজুরি কতটা বাড়ানো সম্ভব। যাতে চামড়া শিল্প টিকিয়ে শ্রমিকেরাও বেঁচে থাকতে পারেন এমন একটি বেতন কাঠামো দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।

;

২ মাসের মধ্যে ঢাকা-যশোর রেললাইন উদ্বোধন: রেলমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী দুই মাসের মধ্যে নবনির্মিত ঢাকা-যশোর রেললাইন উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করবেন বলে জানান তিনি।

শনিবার (৪ মে) ঢাকা-ভাঙ্গা-রাজবাড়ী রুটে নতুন ট্রেনের উদ্বোধন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে সস্তা পরিবহন ব্যবস্থা হলো রেল। এটি মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দে্য়ারর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে খুলনা হয়ে যশোরের বেনাপোল পর্যন্ত নতুন ট্রেনলাইন চালু হচ্ছে আগামী দুই মাসের মধ্যে।

তিনি বলেন, এই দুটো লাইন চালু হয়ে গেলে ভাঙ্গা, শিবচর- এসব অঞ্চলের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে। এছাড়া আমরা ডিভিশনগুলো একপেশে করতে চাই না। সমন্বিতভাবে, সব অঞ্চলের লোকজন যাতে পায় সেভাবে আমরা কাজ করার চেষ্টা করছি।

;

সোনাগাজীতে তিন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে ধরতে গেলে সোনাগাজী মডেল থানার তিন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মধ্যম চরচান্দিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন- সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক মাহবুব আলম সরকার, এএসআই আবুল খায়ের এবং কনস্টেবল মোহাম্মদ আলী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মধ্যম চরচান্দিয়া এলাকার কুয়েত প্রবাসী ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে তার ভাইদের দায়ের করা চারটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সম্প্রতি দেশে ফিরে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে তিনটি মামলায় জামিন নেন তিনি। আদালত থেকে জামিন নিলেও ইয়াহিয়া জামিনের আদেশের কপি থানায় জমা দেননি। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতারের উদ্দেশে বাড়িতে গেলে তাদের ঘরে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। পরক্ষণে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়।

রাতে পুলিশের উপপরিদর্শক মাহবুব আলম সরকার বাদী হয়ে কুয়েত প্রবাসী মো. ইয়াহিয়া ও তার তিন ছেলেকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পরে পুলিশ মো. ইয়াহিয়া (৫৭) এবং তার ছেলে মো. আবদুল আজিজকে (২৪) গ্রেফতার করেন।

অন্যদিকে প্রবাসী মো. ইয়াহিয়ার পরিবারের দাবি জামিনে থাকার পরেও পুলিশ জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে ইয়াহিয়া, তার তিন ছেলেসহ পরিবারের সদস্যদের মারধর করে আহত করেছেন।

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায় বলেন, ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে চারটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তিনটি মামলায় জামিন নিলেও থানায় বা তার কাছে আদেশের কোনো কাগজপত্র ছিল না। শুক্রবার একটি মামলায় তাকে গ্রেফতারের জন্য গেলে তারা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

;

‘মুসলিমদের একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (৩ মে) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রিয়াদ মনসুরের সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক পররাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের জনগণের অকুন্ঠ সমর্থনের কথা তাকে অবহিত করেন।

ফিলিস্তিনি সাধারণ জনগণের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন স্থায়ীভাবে নিরসনের লক্ষ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ওআইসি’র সদস্য দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

উল্লেখ্য, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ওআইসির ১৫তম শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে দিচ্ছেন।

পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও ওআইসি’তে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, গাম্বিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত নাইজেরিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদুর রহমান এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ অণুবিভাগের মহাপরিচালক ওয়াহিদা আহমেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

;