মেহেরপুরে সকাল থেকেই তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়ছে জনজীবন। কয়েকটি জেলার মত মেহেরপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব তাপপ্রবাহ।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে জেলার আবহাওয়া অফিস।
এদিকে রোদের তীব্রতায় ক্ষেত খামারের কাজে নেমে এসেছে স্থবিরতা। প্রয়োজনীয় শ্রমিক না পেয়ে ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষকরা।
চাষিরা জানান, বৈশাখ মাঠের আবাদ হিসেবে পাট ও সবজি বীজ বপন এবং বোরো ধানের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ততা রয়েছে। তবে সকাল ১০ টার পর থেকে মাঠে অবস্থান বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে।
এছাড়া জেলাজুড়ে ভুট্টা ও তামাক ঘরে তোলার কাজ চলছে পুরোদমে। প্রচণ্ড গরমে রোদের মধ্যে কাজ করতে চাইছেন না শ্রমিকরা। কাজের জন্য মিলছে না প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রমিক। দুয়েকজন শ্রমিক পাওয়া গেলেও তারা দিনের পুরো সময় কাজ করতে নারাজ। রোদ ও গরমে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেক শ্রমিক ও চাষি। কাজের ফাঁকে প্রয়োজনীয় পানি পান করেও মিলছে না স্বস্তি। বিশ্রামের ফাঁকে ফাঁকে কাজ করার চেষ্টা হলেও তাতে মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে ফসল ঘরে তোলার কাজ।
পুনর্গঠিত বিএনপিকে অভিনন্দন, শান্তির পক্ষে কাজ করার আহ্বান হানিফের
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
জাতীয়
বিএনপিকে অভিনন্দন জানিয়ে শান্তির পক্ষে কাজ আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি নতুন করে পুনর্গঠিত হয়েছে তাদেরকে আমরা অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি ও শান্তির পক্ষে তারা কাজ করবে। অতীতের মতো সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে বিরত থেকে দেশ গড়ার কাজে সরকারকে সহায়তা করবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
সোমবার (১৭ জুন) সকালে কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজ শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে মানুষের মতের পার্থক্য থাকলেও আমরা আশা করি, সবাই মিলেমিশে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে।
কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহেতেশাম রেজা, ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশারসহ সর্বস্তরের মুসল্লিরা অংশ নেন।
নামাজ শেষে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোলাকুলি করেন মাহবুবউল আলম হানিফ।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, তিনি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণ রয়েছেন। কি হবে আল্লাহ জানেন।
সোমবার (১৭ জুন) ঈদুল আজহার নামাজ শেষে চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, আমরা দেশবাসীর কাছে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাই। তিনি যেনো সুস্থ হয়ে ওঠেন। খালেদা জিয়া নিজেও দোয়া চেয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপির বহু নেতাকর্মী জেলে অবস্থান করছে, বহু নেতাকর্মীর ফুটপাতে থাকে, যারা পুলিশের ভয়ে ফুটপাতে থাকে। তাদের সমবেদনা জানাচ্ছি যদিও সমবেদনা জানানো ছাড়া কিছু করার নেই। ঈদ শব্দের অর্থ খুশি, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মনে খুশি নেই। ঈদের প্রকৃত আনন্দ ছিল খালেদা জিয়ার শাসনামলে।
তিনি বলেন, মানুষ না খেয়ে মারা যাবে তবু কথা বলার অধিকার। আজকের দিনের কামনা হোক সমস্ত ভয়ভীতিকে কোরবানি দিয়ে এই সরকারকে মোকাবিলা করার তৌফিক দিক।
ঈদের খুশি-আনন্দ পরিবারের সঙ্গে উপভোগ করতে পারে না সবাই। কেউ কেউ পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে বাড়িতে যান। আবার কেউ বাড়তি রোজগারের আশায় ঘর ও পরিবার ছেড়ে পড়ে থাকেন কংক্রিটের এই মায়াহীন শহরের বুকে। অন্যের আনন্দে রোজগার বাড়ে তাদের।
এমনই একজন রহিম মিয়া। বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও। তিন ছেলে মেয়েসহ পাঁচ জনের সংসার। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মাত্র তিনি নিজেই। রাজধানী শ্যমলী এলাকার একটি রিকশা গ্যরেজে থাকেন তিনি। পরিবেশের জন্য সদস্যরা থাকেন বাড়িতে।
রহিম মিয়া পেশায় একজন রিকশাচালক। রিকশা চালিয়ে উপার্জিত টাকায় পরিবার চলে তার। ধর্মীয় বড় উৎসব ঈদুল আজহা হলেও পরিবারের কাছে ফেরেননি তিনি। ঈদের দিন সড়কে বের হলেই ভালো রোজগারের আশায় পরিবার ছেড়ে রাজধানীতেই থেকে গেছেন। শুধু রহিম মিয়াই নয়, নিম্নবিত্ত পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরানো সংসারের খেটে খাওয়া শত শত মানুষ বাড়তি রোজগারের আশায় পরিবার রেখে ঈদ করছেন ইট-কংক্রিটের এই নগরীর রাস্তায়।
রহিম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, রিকশা চালিয়ে খাই মামা। ময়মনসিংহের গফরগাঁও এ আমার বাড়ি। বাড়িতে দুই ছেলে এক মেয়ে ও আপনাগো মামি থাকে। আমি রিকশা চালিয়ে বাড়িতে টাকা পাঠাই মামা, সেই টাকাই সংসার চলে।
ঈদ করতে বাড়িতে যান নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাগো কি আর ঈদ আছে। একদিন বসে থাকলেই লস। এক বেলা না খেয়ে থাকলে কেউ খাবার দিবে না। ঈদের দিন রাস্তায় খুব বেশি গাড়ি থাকে না। অনেকের রিকশায় ঘুরতে বের হয়। ভাড়াও একটু বেশি হয়। তাই আর বাড়িতে যাইনি।
রহিমের আশা, নগরীর উচ্চবিত্তরা ঈদ আনন্দে ঘুরতে বের হলে কিছু বাড়তি রোজগার হবে তাদের। নগরীর মানুষ যত বেশি আনন্দ উপভোগ করতে রাস্তায় বের হবে, ঘুরতে যাবে এত বেশি রোজগার হবে তাদের।
এখন পর্যন্ত কত টাকা রোজগার হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সকালে নামাজের আগে ও পরে কয়েকজন যাত্রী পেয়েছি। এখন পর্যন্ত ২০০ থেকে ২৫০ টাকা মতো ভাড়া হয়েছে।
টাঙ্গাইলের বাসিন্দা আমান। রাজধানীর বুকে দীর্ঘদিন রিকশা চালান তিনি। আমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঈদের দিন রিকশা চালালে বেশি ভাড়া হয়। অনেকে বকশিসও দেন। সবাই ঘুরতে বের হয়। রাস্তায় গাড়ি কম থাকে তাই আমাদের ভালো হয়। বেশি টাকা ইনকামের আশায় সময় বাড়িতে যায় না।
আরেক রিকশাচালক জীবন। এক মেয়ে ও বৌকে নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের একটি বস্তিতে থাকেন তিনি। রিকশা চালিয়ে পরিবার চালান জীবন। পরিবারের একটু স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপনের জন্য জীবনের স্ত্রী করেন অন্যের বাসায় গৃহিণীর কাজ।
জীবন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বউ মেয়ে নিয়ে ঢাকায় থাকি। ঈদ করতে বাড়িতে গিয়ে আর কি হবে। ঢাকায় থাকলে ঈদের দিনও রিকশা চালালে ভালো উপার্জন হয়। আর আপনাগো মামি যে বাসায় কাজ করে সেখান থেকে আমাদের কোরবানির গোস্ত দেয়। আমরা সেগুলো রান্না করে খেতে পারি। কিনে খাওয়ার সামর্থ্য তো আমাদের নেই।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
সোমবার (জুন ১৭) সকালে গণভবনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সরকার প্রধান।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলটির শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ, যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী তার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গেও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। গণভবনে অতিথিদের সেমাই, মিষ্টি, মৌসুমি ফল দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।