রানা প্লাজা স্মরণ: ছবিগুলো স্মৃতি, গল্পগুলো ভেজায় চোখ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
রানা প্লাজা স্মরণ: ছবিগুলো স্মৃতি, গল্পগুলো ভেজায় চোখ

রানা প্লাজা স্মরণ: ছবিগুলো স্মৃতি, গল্পগুলো ভেজায় চোখ

  • Font increase
  • Font Decrease

আঁখির হয়তো স্বপ্ন ছিল সমুদ্র দেখার। সরাসরি না পারলেও স্টুডিওতে ছবি তুলে পেছনে বসিয়ে নেন সমুদ্রের দৃশ্য। অন্যদিকে শাহেদুলের হয়তো স্বপ্ন ছিল উড়োজাহাজে চড়ার! তাইতো স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে স্টুডিওতে এমন ব্যাকগ্রাউন্ড রেখে ছবি তুলেছিলেন! প্রায় এক যুগ আগে তোলা এসব ছবি এখন শুধুই স্মৃতি। ২০১৩ সালে হাজারো হতভাগ্য শ্রমিকের সঙ্গে সলিল সমাধি ঘটেছিল এই দুজনেরও। এখন সেই স্বপ্নের আদলে তোলা ছবিগুলোতেই স্বজনরা খুঁজে বেড়ান তাদের স্মৃতি। গল্পগুলো বলতে গিয়ে ভিজে আসে চোখ।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সাভার রানা প্লাজার সামনে ‘রানা প্লাজা হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর: হাজারো প্রাণ ও স্বপ্নর গল্প’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

দোষীদের শাস্তি ও সম্মানজন ক্ষতিপূরণের দাবিতে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এ কর্মসূচির প্রথম দিনে আয়োজিত সভায় স্বজনরা স্মরণ করেন নিহত শ্রমিকদের।


এর উদ্বোধন করেন রানা প্লাজা ভবনে দুই দিন আটকা থেকে উদ্ধার হওয়া আহত শ্রমিক জেসমিন।

সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে আলোচনা করেন আহত জেসমিন, নিহত শ্রমিক আঁখি আক্তারের মা নাসিমা আক্তার, নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা আক্তার, নিহত শাহীদার মা এবং  গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেনসহ আরও অনেকে।

প্রদর্শনীতে চার আলোকচিত্রীর তোলা ছবি ও পোশাক শ্রমিকদের সন্তানদের সাতজনের আঁকা ছবি, জীবিত থাকা অবস্থায় স্টুডিওতে তোলা ২০ শ্রমিকের ছবি প্রদর্শন করা হয়।

এরমধ্যে একটি ছবি নিহত শাহেদুলের। স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে স্টুডিওতে ছবি তুলে, ব্যাকড্রপে উড়োজাহাজের ছবি দেওয়া। হয়তো উড়োজাহাজে চড়ার স্বপ্ন ছিল তার!

আরেকটি ছবি ছিল নিহত আঁখির। হয়তো সমুদ্র ভালোবসতেন তিনি। কিন্তু যাওয়া হয়নি কখনো। তাই স্টুডিও থেকে স্বপ্নের ছবি তৈরি করিয়ে নেন সেই সমুদ্রর পারে। আখি আক্তার (১৮) ও তার বন্ধুরা রানা প্লাজার সপ্তম তলার নিউ ওয়েব স্টাইল লিমিটেড কারখনায় কাজ করতেন। বন্ধুদের সঙ্গে পহেলা বৈশাখ ১৪২০ , ১৪ এপ্রিল ২০১৩–এই ছবিটি তোলা। তার ঠিক ১০ দিন পর ২৪ এপ্রিল ২০১৩ থেকে রানা প্লাজার ধসের পর থেকে আঁখি নিখোঁজ। জানা যায়, এই ছবির কেবল একজন বেঁচে আছে, আঁখিসহ এই ছবির সকলেই নিহত বা নিখোঁজ।


আয়োজকরা জানান, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসে এসব শ্রমিকের প্রাণ ও স্বপ্ন নি:শেষ হয়ে যায়। রানা প্লাজার সামনে প্রদর্শনী করে সে আবারও সেই অতীতের স্মৃতিকে সামনে আনা হয়েছে। এই ঘটনাকে ইতিহাসে বাঁচিয়ে রাখতে এবং তরুণদের লড়াইয়ে প্রেরণা দিতেই এই প্রদর্শনী। রানা প্লাজার শ্রমিকদের মতো যাতে আর কারো যাতে অকালে মরতে না হয়, এই প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন তারা।

প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে আলোচনায় আহত শ্রমিক জেসমিন বলেন, এমনভাবে দুই দিন আটকা ছিলাম বাঁচার কোনো আশা ছিলো না। একজন অচেনা মানুষ আমাকে আগলে রেখে বাঁচিয়েছিলো। তখন কে পুরুষ কে নারী কে হিন্দু কে মুসলমান ভাবার সুযোগ ছিলো না। বাঁচার চরম ইচ্ছা ও সন্তানকে দেখার ইচ্ছা ছাড়া কোনো কিছু মাথায় আসেনি।

তিনি বলেন, ১১ বছর ধরে সেই দু:সহ স্মৃতির ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছি মনে ও শরীরে। অথচ এখনো দোষীদের শাস্তি হয়নি। দোষীদের শাস্তি হলে আমরা প্রাণে একটু শান্তি পেতাম।

সভায় বক্তারা বলেন, ১১ বছরেও ১১৭৫ জন প্রাণ হত্যার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্তিত হয়নি। কারখানার ভবন মালিক সোহেল রানা ছাড়া অন্যান্য মালিক, সরকারি কর্মকর্তারা জামিনে জেলের বাইরে আছেন। সোহেল রানাও গত বছর জামনি পায়। পরবর্তীতে তার জামিন উচ্চ আদালত স্থগিত করে।

তাদের মতে, বিচারের এই ধীরগতি সরকার ও রাষ্ট্রের মালিকপক্ষ ও দোষীদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের এবং তাদের বাঁচিয়ে দেবার প্রচেষ্টারই সামিল।

তারা বলেন, যে রাষ্ট্রে কোনো গণতান্ত্রিক চর্চার সুযোগ নাই, জনগণের মত প্রকাশের সুযোগ নাই, সেখানে রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিকরা আরো বিপর্যস্ত হওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নাই।

তারা আরও বলেন, দোষীদের সর্বেবাচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোন পথ খোলা নাই।

ক্ষতিপূরণের বিষয়ে ক্ষোভ জানিয়ে তারা বলেন, নিহত ও আহত পরিবারকে ১১ বছর আগে যে আইনি ক্ষতিপুরণ বা অনুদান দেওয়া হয়েছে তা কখনোই সম্মানজনক বা মর্যাদাপূর্ণ নয়। শ্রম আইনে ক্ষতিপুরণের আইন যা বদল হয়েছে তা অতি নগন্য। ১ লাখ এবং দেড় লাখ থেকে ২ লাখ ও আড়াই লাখ পর্যন্ত বাড়ানো কোনো শ্রমিককে মানুষ হিসাবে গণ্য না করারই উদাহরণ।

বক্তারা বলেন, একদিকে একজীবনের সমপরিমাণ সম্মানজনক-মর্যাদাপূর্ণ ক্ষতিপুরণ প্রদানের ব্যবস্থা না করা। অন্যদিকে ব্রান্ড, এনজিও এমনকি সরকারের দফায় দফায় কিস্তিতে শ্রমিকদের অর্থ সহযোগিতার ও নানা প্রশিক্ষণের নামে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। যাতে শ্রমিকরা বিচারের দাবিতে সংগঠিত না হয়ে, ভিক্ষুকের মতো কেবল সহায়তা খোঁজে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তারা বলেন, ক্ষতিপূরণ কোনো ভিক্ষা নয়, এটি শ্রমিক ও নাগরিকের আইনি অধিকার। এই অধিকার রক্ষায় এক হওয়ার আহবান জানান তারা।

আয়োজকরা জানা, দুই দিন ব্যাপী কর্মসূচিতে আগামীকাল ২৪ এপ্রিল ২০২৪ রানা প্লাজার সামনে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ ও প্রতিবাদী র‌্যালী অনুষ্ঠিত হবে।

   

গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনা: এক এক করে সরানো হচ্ছে রেলের বগি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাজীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজীপুরের জয়দেবপুর জাংশনের কাজী পাড়া এলাকায় দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া রেলের লাইনচ্যুত বগি এক এক করে সরিয়ে নিচ্ছে উদ্ধারকারী দল।

শুক্রবার (৩ মে) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে উদ্ধারকারী একটি ক্রেনসহ ঘটনাস্থলে পৌছায় দলটি। পরে বিকেল ৪ টা থেকে তারা উদ্ধার কাজে তৎপরতা চালানো হয়।

এর আগে গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের কাজী বাড়ি এলাকায় তেলবাহী একটি ট্রেনের সাথে টাঙ্গাইল কমিউটার যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চালকসহ কয়েকজন আহত হলেও নিহতের ঘটনা ঘটেনি।

ঘটনার পরপরই গাজীপুর জেলা প্রশাসক পুলিশ, বিজিবি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

জয়দেবপুর রেলওয়ে জাংশনের স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী বলেন, দুর্ঘটনা কবলিত দুটি ট্রেনের লাইনচ্যুত বগি গুলো এক এক করে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে তেলবাহী ট্রেনের বগিগুলোতে তেল থাকায় উদ্ধার কাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দুর্ঘটনার ৩ ঘন্টা পর থেকে অপর পাশের রেল সড়ক দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে ট্রেন চলাচল করছে।

;

জমিতে পল্লী বিদ্যুতের ছেঁড়া তার, প্রাণ গেল বৃদ্ধার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জমিতে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে সাবা খাতুন (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে উপজেলার ফটিকছড়ি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড ডাক্তার কাশেমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাবা খাতুন ওই এলাকার মোহাম্মদ কালুর স্ত্রী।

নিহতের স্বজনরা জানায়, সাবা খাতুন বিকেলে গরুর জন্য জমিতে ঘাস কাটতে যান। এরপর সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে না আসায় তাকে খুঁজতে গেলে জমিতে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মৃত অবস্থায় পায়।

এদিন বিকেল চারটার দিকে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি থেকে ওই তারটি ছিঁড়ে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে একাধিকবার জানালেও তারা তা ঠিক করতে আসেনি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। স্থানীরা এই মৃত্যুর জন্য পল্লী বিদ্যুতের অবহেলাকে দায়ী করছেন।

মো. সরওয়ার নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ওই মহিলাটি মারা যাওয়ার আগে অর্থাৎ দিনে তার ছিঁড়ে পড়ে রয়েছে দেখে আমি বিদ্যুৎ অফিসে ফোন করে অভিযোগ দিয়েছি। তারা আসতেছি বলে আর আসেনি। তখন আসলে হয়ত এই মহিলাটি মারা যেত না।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. আবুল হাসেম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ওই এলাকায় জমিতে বিদ্যুতের মেইন লাইন থেকে যাওয়া একটি তার ছিঁড়ে পড়েছিল। বিষয়টি স্থানীয়রা বিদ্যুত অফিসকে জানালেও কোনো লোক আসেনি। এদিকে বিকেলে জমিতে ওই মহিলা জমিতে ঘাস কাটতে যায়। মহিলাটি তারে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে। সন্ধ্যায় বিল থেকে ঘরে না ফেরায় খুঁজতে গিয়ে পরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। আমি বিষয়টি মেয়রকে জানিয়েছি।

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ডিজিএম (ফটিকছড়ি জোনাল অফিস) আব্দুস ছালামকে ফোন করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

;

নাম ফলকে বাংলা লেখার অনুরোধ ডিএসসিসির, নইলে ব্যবস্থা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) সকল চিহ্ন ফলক, বিজ্ঞাপন ফলক, ঝুলন্ত বিজ্ঞাপন, রাস্তার নাম, সকল সরকারি দপ্তরের নাম ফলক (দূতাবাস, বিদেশি সংস্থা ও তৎসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র ব্যতীত) বাংলায় লেখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে। এই নির্দেশনা না মানলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শুক্রবার (৩ মে) সম্প্রতি এক গণ-বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিষয়টি জানিয়েছে ডিএসসিসি। সংস্থাটির সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ওই গণ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকায় সকল প্রতিষ্ঠানের নাম ফলক, চিহ্ন ফলক বাংলা ভাষা ব্যবহারের বিষয়ে দায়েরকৃত রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বিভাগ, সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ অনুযায়ী সকল চিহ্ন ফলক, বিজ্ঞাপন ফলক, ঝুলন্ত বিজ্ঞাপন, সকল সরকারি দপ্তরের নাম ফলক (দূতাবাস, বিদেশি সংস্থা ও তৎসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র ব্যতীত) বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এই অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন আওতাধীন এলাকায় সকল চিহ্ন ফলক, বিজ্ঞাপন ফলক, ঝুলন্ত বিজ্ঞাপন, রাস্তার নাম, সকল সরকারি দপ্তরের নাম ফলক বাংলায় লেখার জন্য অনুরোধ করা হলো। এর ব্যত্যয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

;

১০ বছর ধরে রাস্তার পাশে মা, ছেলে নেয় না খোঁজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাতের বেলা হামার ব্যাটা হামাকি বাড়িত থ্যাকে বার করে দিছে, কছে এই বাড়িত যান না ফিরি। হামি আমার ব্যাটা আর ব্যাটার বোউ এর কাছে বোঝা। ১০ বছরের বেশি হলো, হামি রাস্তাত থাকি, কেউ খোঁজ ল্যায় না।

এভাবেই আক্ষেপের স্পঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন মিরজান ওরফে মীরো (৬৫) নামের এক বৃদ্ধা মা। ছেলে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে, ১০ বছর ধরে খেয়ে-না খেয়ে অতি কষ্টে দিনযাপন করছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায় নওগাঁর মান্দা উপজেলার ৩ নং পরানপুর ইউনিয়নের, চককেসব গ্রামে রাস্তার পাশের ঝুপড়ি ঘরে ঝাড়ু বানিয়ে ও গ্রামের মানুষদের ঝাড়ু বেঁধে দিয়ে যা আয় হয় সেই সামান্য টাকা দিয়ে চলছে তার সংসার। কোনোদিন বিক্রি না হলে না খেয়েও দিনযাপন করতে হয় তাকে। আপন বলতে দুনিয়াতে এখন আর কেউ নেই, স্বামীকে হারিয়েছেন অনেক আগেই, ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার পর ঘর ছাড়তে বাধ্য করে ছেলে আস্তান হোসেন। ছেলে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর বয়স্ক ভাতার টাকা জমিয়ে কিছু টিন কিনে রাস্তার পাশে কোনোভাবে বাড়ি বানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

বৃদ্ধা মীরজান ওরফে মীরো বলেন, আমার স্বামীকে নিয়ে আমার ছেলের বোউ খোটা দিয়ে বলে, মরা স্বামীর জায়গায় লজ্জাহীনের মতো কেন আছি, আমাকে ভাত দিত না, নানাভাবে অত্যাচার করতো, কিন্তু আমার ছেলে কোনো প্রতিবাদ করেনি। হঠাৎ একদিন রাতে ছেলে আমাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে বলে- তোমার যেখানে খুশি সেখানে চলে যাও, আমার বাড়িতে থাকতে পারবে না। তাই আমি বাধ্য হয়ে ঘর ছেড়ে এখানে এসে ১০ বছর ধরে আছি। আমার অনেক বয়স হয়েছে, এই বয়সে বাহিরে বের হতেও পারি না, তবুও পেটের দায়ে বের হই, ঝাড়ু নিয়ে পাড়ায় মহল্লায়। দিনশেষে ২০-৫০ টাকা আয় হয়, সেটা দিয়েই চালের খুদ (গুড়ো) কিনে এনে খাই। যেদিন বের হতে পারি না, সেদিন না খেয়ে থাকি। কেউ খোঁজ খবর নেয় না।

তিনি আরও বলেন, যে ছেলেকে এত কষ্ট করে লালনপালন করলাম, নিজে না খেয়ে তাকে খাওয়ালাম। ভেজা জায়গায় আমি শুয়ে তাকে শুকনো জায়গায় রাখলাম। জীবনের চরম কষ্টে আমার ছেলেকে ভালো রাখলাম, কিন্তু আজ সে বড় হয়ে সব ভুলে গেছে। আমার কষ্ট রাখার মত কোনো জায়গা নেই। একমাত্র চোখের পানিই আমার সম্বল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার মা, দয়া করে যদি থাকার মতো জায়গা করে দিতো আমার মা, তাহলে বাকি জীবনটা সেখানে থাকতে পারতাম। আমি খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে আছিরে মা, আমার দিকে একটু তাকাও।

স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস হোসাইন বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই এই বৃদ্ধা মাকে এখানে থাকতে দেখি। মূলত আমরাই এখানে থাকার জায়গা দিয়েছি। তার জীবনে এতই কষ্ট যে আমাদের চোখে পানি চলে আসে। তার ছেলে এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে, এটা অবশ্যই অন্যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন যেন এই বৃদ্ধা মায়ের একটা ব্যবস্থা হয়।

পথচারী মো. কামাল বলেন, আমি রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের সময় এই ছোট্ট বাড়িটি দেখি, খুব খারাপ লাগে। এই বয়সে তিনি এতো পরিমাণ কষ্ট সহ্য করে চলাফেরা করেন। বয়স বেশি হওয়ার কারণে ঠিকমত হাঁটাচলা করতেও পারেন না। বৃদ্ধা মায়ের দ্রুত ব্যবস্থা হওয়াটা জরুরি।

স্থানীয় বাসিন্দা মজিদা বেগম বলেন, আমাদের বাড়ির সামনেই এক ছোট্ট ঘর, মাঝেমধ্যে তাকে খাওয়াই, তবুও কষ্ট লাগে যে তার ছেলে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে বিষয়টা সত্যিই ন্যক্কারজনক। ছেলের বিচার হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. লায়লা আঞ্জুমান বানুকে দুইদিন ধরে একাধিকবার কল দিয়ে অবগত করলে তিনি এ বিষয় জানেন না বলে জানান, এবং প্রকাশিত ভিডিও নিউজের লিংক চান। কিছুক্ষণ পরে প্রকাশিত নিউজের লিংক দেওয়ার পরে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।

পরেরদিন কল দিয়েও একই জানালে তিনি বলেন, প্রকাশিত ভিডিওটির আবার লিংক দিতে। ফেসবুক এবং ইউটিউব ভিডিওটির লিংক হোয়াটসঅ্যাপে দিলে তিনি বলেন, ওপেন হচ্ছে না; সার্চ দিয়ে দেখার সময় আমার নাই।

;