বার্তা২৪.কম-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. সাহাব এনাম খান

‘মধ্যপ্রাচ্য সংকটে প্রথম ভিকটিম বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলি’



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েল-হামাস এর সংঘাতের পথ ধরে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরতার কোন কিনারা না হতেই ফের ইসরায়েল-ইরান সংঘাত গোটা মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাব এনাম খান এমনটাই মনে করেন। তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার প্রথম ভিকটিম হবে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো। চলমান এই সংকটকে ‘দীর্ঘমেয়াদী’ উল্লেখ করে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে শুধুমাত্র গার্মেন্টস আর রেমিটেন্স নির্ভর হয়ে না থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কুটনীতিকে ঢেলে সাজাতে হবে। বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন অধ্যাপক সাহাব। কথা বলেছেন পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম

বার্তা২৪.কম: মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? এটি কি ধরণের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে, বিশেষ করে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশের জন্য?

ড. সাহাব এনাম খান: মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি পুরোই আনপ্রেডিকটেবল এবং এই আনপ্রেডিকটেবিলিটি অনেক লম্বা সময় ধরে থাকবে। এই আনপ্রেডিকটেবিলিটি শুধু ইসরায়েল বা ইরান ক’দিন লাফালাফি করলো এরপর আবার বন্ধ হয়ে গেল এরকম না। এই আনপ্রেডিকটেবিলিটি অনেকটা লম্বা সময় ধরে চলতে থাকবে এবং এর মূল কেন্দ্রবিন্দু থাকবে ইসরায়েল। ইসরায়েলেকে ঘিরেই আরব ও পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্ক। সুতরাং এখানে ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে ভোলাটাইলিটি। আর এর মূল দিকটা হল পশ্চিমা বিশ্বই এটাকে হ্যান্ডেল করে। স্পষ্ট করে বলতে গেলে এখানে আরববিশ্বের কোন রোল নেই বাক্-যুদ্ধ করা ছাড়া। আরেকটা পয়েন্ট আছে তা হচ্ছে-এই ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে এখন একটি বড় মেরুকরণ হয়ে গেছে রাশিয়া-চীন-তুরস্ক-ইরান, এদেরকে কেন্দ্র করে। অন্যদিকে ইসরায়েলকে ঘিরে পশ্চিমা বিশ্বেও একটা মেরুকরণ হয়ে গেছে। এই মেরুকরণ বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এরা চাইবে ওয়েস্ট এটা করতে না পারুক, যে কারণে বিশ্ব অর্থনীতি ও মুদ্রা ব্যবস্থার ওপর একটা বড় রকমের চাপ পড়বে। যার প্রথম ভিকটিম হবে উন্নয়নশীল দেশগুলি।

বার্তা২৪.কম: তার মানে কি এটি স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে বিশ্বব্যবস্থায় পশ্চিমা মনোপলি ভেঙে পড়েছে?

ড. সাহাব এনাম খান: একদমই। এজন্যই তো বিশ্বে মোটাদাগে মেরুকরণ তৈরি হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের মনোপলিতে ইসরায়েল রয়েছে কিন্তু ইরান নেই। তবে পশ্চিমাদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কটা কি হবে, তারা এই সম্পর্ককে কিভাবে হ্যান্ডেল করবে তার ওপর নির্ভর করবে সামনের দিনগুলি কি রকম হবে। আরবদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক কেমন হবে সেটা এখানে ম্যাটার করবে না।

বার্তা২৪.কম: পশ্চিমাদেশসমূহ, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে যে বক্তৃতা-বিবৃতি দেয় আর তাদের ভেতরকার যে স্ট্যান্ড তার মাঝে কি এক ধরণের বৈপরিত্য লক্ষ্য করা যায় না…অন্ততঃ পরিস্থিতি মূল্যায়ন করলে?

ড. সাহাব এনাম খান: তা তো বটেই। আরও একটি বিষয় যোগ করব, তা হচ্ছে-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ কারণে ইসরায়েল-পশ্চিমা সংযোগটি একটা লম্বা সময় ধরে অস্থিরই থাকবে। ঠিক এ কারণেই বিশ্ব অর্থনীতি ও মুদ্রা ব্যবস্থায় বড় রকমের চাপ তৈরি হচ্ছে। যার প্রভাব বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে হবেই।

বার্তা২৪.কম: কি ধরণের প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করেন আপনি?

ড. সাহাব এনাম খান: প্রথমতঃ বিভিন্ন রকমের স্যাংশন, অলটারনেটিভ কারেন্সির প্রেশার আসবে। দ্বিতীয়তঃ কৌশলগত কুটনৈতিক চাপও প্রচুর আসবে এই সময়ে। ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর আমাদের এক ধরণের সাংবিধানিক অঙ্গীকারও আছে, আমরা তা দেখিয়েও আসছি। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রেও আমরা একই অবস্থান নিয়েছি। বিপন্ন মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো।

বার্তা২৪.কম: বাস্তবতার নিরিখে আমাদের কি ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

ড. সাহাব এনাম খান: আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে আমাদের সম্পর্ণ নতুন করে চিন্তা ভাবনা করা দরকার। শুধুই গার্মেন্টস আর রেমিটেন্স নির্ভর হয়ে থাকলে হবে না। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে আমরা যতটা না হিট হব বা ইউক্রেন সংকটে যতটা হয়েছি-ভারত কিন্তু ততটা হয়নি এর কারণ ভারতের অর্রথনীতির ডাইভার্সিটি আছে। আমি মনে করি-চারটি জায়গায় আমাদের খুব জোর দিয়ে কাজ করতে হবে। প্রথমতঃ এনার্জি সিকিউরিটি, আরও স্পষ্ট করে বললে স্বনির্ভর এনার্জি অর্জন করতে হবে আমাদের, যা জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, আমাদের দেশের জাতীয় স্বার্থকে অনেকে ব্যকিক্তগত স্বার্থের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। জাতীয় স্বার্থে আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা ইন্ডিজেনাস সোর্স থেকে করতে হবে। অদক্ষ এনার্জি ইনস্টিটিউশনস দিয়ে আমাদের হবে না। পুরো জ্বালানি ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

দ্বিতীয়তঃ আমাদের বাণিজ্য কুটনীতিতে কেবল মৌখিকভাবে বললে হবে না, প্রায়োগিক অর্থে বাণিজ্য কুটনীতি জোরদার করতে হবে। এর মধ্যে নম্বার ওয়ান প্রায়োরিটি থাকবে, ‘ডাইভার্সিটি’। অর্থাৎ অর্থনীতির নানা খাত চাঙা করে তুলতে হবে।   

তৃতীয়তঃ আরব দেশগুলির সঙ্গে বিদ্যমান যে সম্পর্কে আছে, তাকে আরও গভীর করতে হবে। সেইসঙ্গে বৈশ্বিক এই উত্তেজনা ও সংঘাতে উন্নয়নশীল আরও যেসব দেশ আক্রান্ত হবে তাদের সঙ্গেও শক্তিশালী জোটবদ্ধতা তৈরি করা জরুরি। আমরা ব্রিকসে যেতে আগ্রহী না হয়ে নিজেরা একটা কিছু করতে চেষ্টা করতে পারি, যেখানে নিজেদের স্বার্থ অগ্রাধিকার পাবে। যেখানে বাংলাদেশের মত এমন অনেক দেশ বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শঙ্কায় আছে। যদি বাংলাদেশ অনেকগুলি ইকনমিকে একসঙ্গে নিয়ে একটি কালেক্টিভ ভয়েস তৈরি করতে পারে তবেও তা কার্যকর ফল বয়ে আনবে।

অনেক দেশই আমাদের অনেক কথা বলবে, কিন্তু তা প্রায়োগিক ক্ষেত্রে কতটা ফলপ্রুসু হবে তা আমাদের চিন্তা করে দেখতে হবে। অন্ততঃ এক দশক ধরে বাংলাদেশ বাণিজ্য বহুমূখিকরণের কথা বলে আসছে, কিন্তু কি রপ্তানি করবে, কি আছে-তা নিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। এখানে ইন্ডিজেনাস কোন ইন্ডাষ্ট্রি সৃষ্টি করছে না, সম্ভাবনাময় পাটকে নিয়ে সেভাবে বড় রকম কিছু করা গেল না। তার মানে কেবল কথা নয়, প্রায়োগিক অর্থে বাস্তবভিত্তিক প্রচেষ্টা নেওয়া দরকার।

চতুর্থ হচ্ছে-অভ্যন্তরীণ বাজারকে আরও শক্তিশালী ও সম্প্রসারণ করা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজার বহুলাংশে পরনির্ভরশীল হয়ে আছে। ভারতে একটি ক্যাডবেরি চকলেট ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ডে নিজেরা উৎপাদন করে ভোক্তাদের দেয়। তাতে ফরেন কারেন্সি নিয়ে আর ঝামেলা থাকে না। বাংলাদেশে পুরনো গাড়ি কিনতে মানুষজন একেবারে উদগ্রিব। এতবড় মার্কেট থাকতে কেন এখানে ইন্ডিজেনাস কার ইন্ডাষ্ট্রি হচ্ছে না? এটা যদি ভুটান বা মালদ্বীপের মতো স্বল্প জনসংখ্যার দেশ হতো তাহলে চিন্তা করা যেত, কিন্তু ব্যাপারটি তো আসলে তা নয়। আমরা পুরনো গাড়িতে চড়তে পারলেই খুব স্বস্তি পাই, কারণ বাস্তবতা হচ্ছে গাড়ি একটি প্রয়োজন। যেখানে অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা বেড়েছে, স্কেল বেড়েছে; স্বাভাবিকভাবে মানুষের মবিলিটি বাড়বে। কিন্তু এখানে ২০০-৪০০% ট্যাক্স দিয়ে আমদানি করে মানুষের প্রোডাক্টিভিটি ও সেফটিকে ছোট করে ফেলা হচ্ছে।

২০২৬-এ উন্নয়নশীল দেশ হিসবে রূপান্তর নিয়ে অনেক হইচই হচ্ছে, কিন্তু এখানকার ওষুধশিল্প নিয়ে কি হবে? সরকার সাবসিডি দিয়ে এপিআই তৈরি করুক, তা দিয়ে কমোডিটিজগুলো তৈরি করা হোক-কিন্তু এসব বাদ দিয়ে সব হাতি-ঘোড়া মারার চিন্তাভাবনা আমাদের ভর করছে, যা মোটেও উচিত নয়।

বার্তা২৪.কম: সম্ভাবনা ও বৈচিত্রকে নিরুৎসাহিত করার অন্তরায় কি তবে বাড়তি আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা?

ড. সাহাব এনাম খান: অবশ্যই, অর্থনীতি কখনো আমলানির্ভর হতে পারে না। এখানে প্রাইভেট সেক্টরকে আরও নীতিনির্ধারণে আনা দরকার। প্রাইভেট সেক্টর মুনাফায় বিশ্বাস করে। সুতরাং তারা সব সময় বৈচিত্র চাইবে। আমলারা যদি এক্সপোর্ট ডাইভার্সিফিকেশন বুঝতে পারতেন তবে পাট শিল্প কেন মুখ থুবড়ে পড়ল? আমি মনে করি, এক্সটেন্সিভ প্রাইভেটাইজেশনে গিয়ে আমলা নির্ভরতাকে কমিয়ে ক্রিয়েটিভ ইন্ডাষ্ট্রিকে এখানে ঢুকাতে হবে। বর্তমান বৈশ্বিক সংকটে এটি দেশের অর্থনীতিকে অনেক সহায়তা করবে।

বার্তা২৪.কম: মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনা তো থামছেই না, কোন টেকসই সমাধানের পথ কি দেখেন আপনি?

ড. সাহাব এনাম খান: টেকসই সমাধান তখনই হবে যখন আরাকান স্থিতিশীল হবে। আরাকানকে স্থিতিশীল করতে বাংলাদেশের একটি সন্মুখ ভূমিকা থাকা প্রয়োজন। অনেকভাবেই তা হতে পারে-একক সহায়তা হতে পারে বা অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যেতে পারে। ওদের সিভিল সোসাইটি, পলিটিক্যাল সোসাইটিকে শক্তিশালী করতে পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। দেখা যাবে আমেরিকানরা আললান্টিকের ওপার থেকে এসে ঠিকই করে ফেলছে। বাংলাদেশ তো গণতন্ত্রের কথা বলছে, তাহলে সেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ কাজ করতেই পারে। এখানে শুধু আরাকান আর্মি নয়-যেসব অ্যাক্টরগুলো সেখানে সক্রিয় তাদের সঙ্গে আমাদের এনগেজ হতে হবে। কারণ এদের ছাড়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে না। তাতমাদো (মিয়ানমারের সরকারি সামরিক বাহিনী) এটি সমাধান করবে না। কিংবা তাতমাদো রাখাইনে গেড়ে বসলেও রোহিঙ্গা সংকট সমাধান হবে না। তাতমাদো যদি না থাকতে পারে, আরাকান আর্মি আসে, তাতেও সমাধান আসবে না, যদি তাদের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখা হয়। যদিও রোহিঙ্গা ইস্যুতে গত এক বছরে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে, তার আগে কিছু হয়নি।

সম্পাদনা: মাহমুদ মেনন, এডিটর-অ্যাট্-লার্জ, বার্তা২৪.কম

বিজিবির পাহারায় সারাদেশে চলছে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বিজিবির পাহারায় সারাদেশে চলছে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন

বিজিবির পাহারায় সারাদেশে চলছে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সারাদেশে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কঠোর পাহারায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে বিজিবির চট্টগ্রাম রিজিয়ন ও চট্টগ্রাম ব্যাটালিয়নের (৮ বিজিবি) নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন হতে তেলবাহী ট্রেন ঢাকা ও সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে তেল পৌঁছে দিচ্ছে।

বিজিবি সদরদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় ২৪টি তেলবাহী বগিসহ একটি ট্রেন ঢাকার উদ্দেশ্যে, সকাল সাড়ে ৬টায় ১৬টি তেলবাহী বগিসহ আরও একটি ট্রেন সিলেটের উদ্দেশ্যে, সকাল ১০টায় ১২টি তেলবাহী বগিসহ একটি ট্রেন দোহাজারীর উদ্দেশ্যে এবং বেলা ১১টায় ১২টি তেলবাহী বগিসহ আরেকটি ট্রেন হাটহাজারীর উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম রেলস্টেশন ছেড়ে যায়।

এছাড়া বিজিবির নিরাপত্তায় খুলনা ও ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে এবং শ্রীমঙ্গল থেকে সিলেটে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন চলাচল করে।

সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে জ্বালানি তেলবাহী ট্রেন পৌঁছে দিতেও বিজিবি সদস্যরা নিরাপত্তা সহায়তা দেবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

;

আজ কোন এলাকায় কত সময় কারফিউ শিথিল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

কারফিউর মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) থেকে শুরু হয়ে এখনও দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান রয়েছে। এর মধ্যে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, শনিবার (২৭ জুলাই) কারফিউ তুলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্দান্ত আসতে পারে। 

তবে আজও (২৬ জুলাই) রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও এলাকা কারফিউয়ের আওতায় থাকবে।

ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। এরপর বিকেল ৫টা থেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরসহ চার জেলায় ফের শুরু হবে কারফিউ।

সবচেয়ে বেশি সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে রংপুর ও বরিশালে। রংপুরে সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা সেখানে কারফিউ শিথিল থাকবে। বরিশালেও একই সময় ধরে কারফিউ শিথিল থাকবে। 

এছাড়া চট্টগ্রামে সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা, রাজশাহীতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা এবং সিলেটে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টা থেকে রোববার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত সারা দেশে কারফিউ জারি করে সরকার।

;

জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ক ডিবিতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামসহ তিনজনকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অপর দুই সমন্বয়ক হলেন- আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদার।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে ডিবির একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ডিবি বলছে, নিরাপত্তা এবং জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তিন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

তারা তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

;

কারফিউ তুলে নেয়ার ব্যাপারে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত কারফিউ নিয়ে সবাইকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা, তা আমরা দেখছি।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাতে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারফিউ শিথিল করা যায় কিনা আমরা দেখছি। পুলিশ বিজিবি, সেনাবাহিনী কাজ করছে। জনজীবন স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করতে হবে। জনগণকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। এ বিষয়ে শনিবার (২৭ জুলাই) আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলেও জানান তিনি।

এ সময় আন্দোলনের নামে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্ষতির দায় কে নেবে? বিএনপি বলছে সহিংসতার মধ্যে তারা নেই। তাহলে কে করেছে? এটা জনগণের প্রশ্ন।

কোটা আন্দোলনকারীদের আটকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকারী নেতারা নিজেরাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। এসময় সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়।

পরবর্তীতে নির্ধারিত সময়ের জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও এখনো পুরোপুরি এখন তুলে নেয়া হয়নি।

;