নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে টানা কয়েকদিনের তীব্র গরমেরা মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী ও স্বজনরা। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, হাসপাতালে জেনারেটর থাকলেও লোডশেডিংয়ের সময়ে তা চালানো হয় না। এতে হাসপাতালে আসা রোগী ও তাদের স্বজনসহ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে রাতে লোডশেডিংয়ের সময়ে ভোগান্তি আরও বাড়ে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে বিকল্প বিদ্যুৎ ব্যবস্থা হিসেবে ১০ কেভি কিলো ভোল্টের ইঞ্জিনচালিত একটি জেনারেটর বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে বরাদ্দের পরে সক্ষমতা সম্পূর্ণ সংযোগ ব্যবস্থাসহ নানা জটিলতার কারণে কয়েক বছর পড়ে থাকার পর গত বছরে নাম মাত্র সচল করে ছয় মাসে জ্বালানি খরচ বাবদ ত্রিশ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এই জেনারেটর দিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বর্হিবিভাগ, নারী ও পুরুষ ওয়ার্ডে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সম্ভব। বিদ্যুৎ না থাকলে জরুরি পরিস্থিতিতে এটি বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করার কথা থাকলেও কয়েকবছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে হাসপাতালে। এতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জেনারেটরের যন্ত্রাংশ।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ না থাকার কারণে অসুস্থ রোগীদের হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন স্বজনরা। তীব্র গরমে হাসপাতালের বিছানায় ঘেমে যেন আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মুমূর্ষু রোগীরা। বিশেষ করে অসহায় অবস্থায় পড়েছে শিশু ও ডায়রিয়া রোগী। লোডশেডিংয়ের সময়ে আইপিএসের সাহায্য বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে আলোর শূন্যতা পূরণ করা হলেও মাথার উপর ফ্যান ঝুললেও জেনারেটর সংযোগ না থাকায় ঘুরছে না পাখা। রোগীর স্বজনরা দ্রুত সময়ের মধ্যে জেনারেটর সংযোগ চালু করার দাবি জানায়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রফিকুল নামে এক রোগীর স্বজন জানায়, আমার ভাতিজা চারদিন ধরে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগজনিত কারণে ভর্তি আছে। তীব্র গরমের মধ্যে লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। আমি শুনেছি হাসপাতালে জেনারেটর ব্যবস্থা আছে কিন্তু এখানে কখনো চলতে দেখি নাই।
মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা আরেক স্বজন রেহেনা বেগম জানায়, আমার মেয়ে শিশু বাচ্চা দুইদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছে। গরমে অবস্থা খারাপ, ছোট মানুষ গরম সহ্য করতে পারছে না, এখানে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করতে হচ্ছে। আর এখানে মানুষ বেশি থাকার কারণে গরম খুব বেশি পড়েছে।হাসপাতালে জেনারেটর চালু করলে আমরা ভালোই থাকতাম। সরকারি হাসপাতালে জেনারেটর নাই, গরমে বাচ্চাকে নিয়ে এসে খুব সমস্যায় পড়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো আল মামুন বলেন, আমাদের হাসপাতালে জেনারেটরের পরিবর্তে আইপিএস দিয়ে আলো সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। আগামীতে জেনারেটর চালুর ব্যবস্থা করা হবে।