প্রধানমন্ত্রীর কাছে বুয়েট শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মেধাবীদের পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এই চিঠি পাঠ করেন শিক্ষার্থীরা।

চিঠিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, আশির দশকে স্বৈরাচার পত্তন আন্দোলনে এই দেশের আপামর জনগোষ্ঠীর মধ্যে জনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অথচ বিগত বছরগুলোতে আমরা বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে ক্ষমতার নেতিবাচক দিকগুলোই প্রত্যক্ষ করেছি। ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের মাঝে সূচনা ঘটেছে আধিপত্য, দাপট, র‌্যাগিং, শিক্ষকদের অপমান, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী নিপীড়ন, খুনোখুনিতে মেতে ওঠার মত ঘটনা এবং এর ব্যাপ্তি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে এর চরমতম মূল্য হিসেবে আমরা আমাদের কেমিকৌশল ৯৯ এর সাবেকুন্নাহার সনি আপু, যন্ত্রকৌশল ০৯ এর আরিফ রায়হান দ্বীপ ভাই এবং সর্বশেষ তড়িৎকৌশল'১৭ এর আবরার ফাহাদ ভাইকে হারিয়েছি।

তারা বলেন, বুয়েটে আরো অসংখ্য শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা রয়েছে। দাপটের আড়ালে ছাত্ররাজনীতি আমাদের ক্যাম্পাসে উন্মুক্তভাবে বিচরণের অধিকার, ক্যাম্পাসের সুস্থ অ্যাকাডেমিক পরিবেশ, আমাদের স্বাধীনতা, হলের মেসের টাকার সৎ ব্যবহার, ক্যাম্পাস মাদকমুক্ত থাকা, নবীন আগত বুযেটিয়ানদের একটি সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় জীবন উপভোগ এর অধিকার সবকিছুই হারিয়ে গিয়েছিল। ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েটের পরিবেশ ছিল সর্বোচ্চ নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব। মৌলবাদী শক্তিকেও রুখে দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা বরাবরই একটি নিরাপদ এবং সুস্থ ক্যাম্পাস চেয়ে এসেছে যেখানে ক্ষমতাচর্চার লোভ-লালসার শিকলে আবারো জিম্মি হয়ে যাবে না সকলের নিরাপত্তা, শিক্ষাঙ্গনের উপযুক্ত পরিবেশ। সুস্থ নেতৃত্ব এবং নৈতিকতা বিকাশের সকল উপাদান ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির উপস্থিতি ব্যতীতও গত কয়েক বছরে উপস্থিত ছিল এবং এতে সুস্থ নেতৃত্বের চর্চায় শিক্ষার্থীরা তাদের উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছে। বর্তমানে বুয়েটে শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ থাকায় নিজ জায়গা থেকে শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণামুখী কাজে মনোনিবেশ করতে অনুপ্রাণিত হওয়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। একটি রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য সারাদেশব্যাপী জনগণের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত এবং সমাদৃত হয়েছে। রাজনীতিমুক্ত বুয়েট ক্যাম্পাসের গত ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের সকল সফলতা জানান দেয়, আমরা আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি ব্যতীতও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন নেতৃত্ব গঠন এবং বিকাশ প্রয়োজন, তা করতে পারি, স্মার্ট বাংলাদেশ এর লক্ষ্য অর্জনে আমরা নিরন্তর কাজ করে যেতে পারি।

মৌলবাদের বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে তারা বলেন, আমরা দেশের যেকোনো স্থানের ন্যায় আমাদের ক্যাম্পাসকে আমরা অবশ্যই যেকোনো প্রকারের সন্ত্রাস, মৌলবাদ বা নিষিদ্ধ গোষ্ঠী থেকে নিরাপদ রাখতে সর্বদা তৎপর। সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে অনেক মহল থেকেই বলা হচ্ছে যে, ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ মৌলবাদী বা সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম বিদ্যমান এবং এর ফলশ্রুতিতেই তারা বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির চর্চার পক্ষে যুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আপনাকে নির্দ্বিধায় বলতে চাই, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি যেকোনো মুহূর্তে এসকল নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর যেকোনো কার্যকলাপ ক্যাম্পাসে চলমান দেখি শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান দিব এবং প্রশাসনকে অবহিত করব। এমনকি ভবিষ্যতে যদি ক্যাম্পাসে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে সেটার বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান দৃঢ়।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, চার বছর আগে আপনার দৃঢ় এবং দ্রুত হস্তক্ষেপে আমরা নতুন করে এই ক্যাম্পাসে বাঁচতে শিখেছি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এই ছোট্ট একটা চাওয়ার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি হুমকি, হচ্ছি লাঞ্ছিত, অপদস্থ। আমরা, আমাদের ছোট ভাই বোনেরা আরও একবার সেই অন্ধকার দিনগুলোর সাক্ষী হতে চাইনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে সবিনয়ে অনুরোধ আপনি আমাদের পাশে দাঁড়ান। আপনি সকল সময়ে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছেন, আমরা জানি এই দুর্দিনে আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না। বুয়েটকে ঘিরে আমাদের জাতির জনকের যে ভিশন ছিল, তাকে বাস্তবায়ন করা হোক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন বুয়েটের প্রকৃতি ভিন্ন। তাই তিনি নিজে রাজনীতির আওতা থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাইরে রেখেছিলেন। আজ যখন তাঁরই গড়ে তোলা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বুয়েটের মতো বিশেষায়িত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে যেকোনো মূল্যে রাজনীতির আওতায় আনার কথা বলে, আমরা বিশ্বাস করি তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও সিদ্ধান্তকে অপমান করা হয়।

প্রয়োজনে আইন সংস্কার করে হলেও ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার প্রতি আমাদের আকুল আবেদন, বুয়েটকে নিয়ে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে পলিসি গ্রহণ করেছিলেন, তার বাস্তবায়ন করুন। বুয়েটকে ছাত্র রাজনীতির বাইরে রাখুন, প্রয়োজনে আইন সংস্কার করে হলেও। কারণ সুবিচারের জন্যই আইনের সৃষ্টি। আমাদের অনুরোধ, আপনি দয়া করে আমাদের ক্যাম্পাসে আসুন: ছাত্ররাজনীতিহীন বুয়েট গত কয়েকবছর ধরে শিক্ষার্থীদের জন্য যে আদর্শ ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে, সেটা আমরা আপনাকে দেখাতে চাই।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দফতর সম্পাদকসহ অনেকের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশকে কেন্দ্র করে রাজনীতি প্রতিরোধে আন্দোলন শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে সহযোগিতায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিলসহ বেশকিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ও ক্যাম্পাসের ছাত্ররাজনীতি পুনরায় চালুর দাবিতে ছাত্রলীগ এক প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে এবং নেতাকর্মী নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে প্রবেশ করে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে। এরপর সবশেষ, গত সোমবার বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত ঘোষণা করেন উচ্চ আদালত। দেশের শীর্ষ এ প্রকৌশল উচ্চশিক্ষালয়ে ছাত্ররাজনীতি চলতে বাধা নেই বলে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ আদেশ দেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সেতু ভবন পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সেতু ভবন পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও সেতু ভবন পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশব্যাপী তাণ্ডব চলাকালে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত এসব বিভাগ পরিদর্শন করেন তিনি।

এসময় তিনি সেতু ভবনে প্রবেশের পর অশ্রুসিক্ত চোখে এর বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত অংশ দেখে হতবাক হয়ে যান।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্টরা এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

গত ১৮ জুলাই কয়েকশ’ দুষ্কৃতকারী সেতু ভবনে প্রবেশ করে এটি ভাঙচুর ও আগুন জ্বালিয়ে দেয়। তারা ভবন থেকে সরকারি সম্পত্তি লুট করে।

প্রধানমন্ত্রী পরে মহাখালীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ পরিদর্শন করেন এবং ১৮ জুলাই সন্ত্রাসী হামলার শিকার ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।

এসময় সেতু ভবন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভবন দু’টির ধ্বংসযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন।

সরকার প্রধান একইসঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজার ধ্বংসযজ্ঞও পরিদর্শন করেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সহিংসতায় আহতদের দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে আহতদের খোঁজখবর নেন। তিনি চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন। আহতদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেন।

তার আগে ওই দিন রাজধানীর রামপুরায় নাশকতাকারীদের হামলা ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ভবন পরিদর্শন করেন সরকারপ্রধান।

;

বিনামূল্যে সবজির বীজ দেন পাবনার ‘সাইকেল বাদশা’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পাবনা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পেশায় তাঁত শ্রমিক হলেও কাজের ফাঁকে আশেপাশের গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সবজির বীজ বিতরণ করেন পাবনার সাইকেল বাদশা। দেন রোপণ ও পরিচর্যার পরামর্শও। এ যেন প্রায় শতবছর বয়সী নাটোরের সেই পলান সরকার। যিনি পায়ে হেঁটে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বই দিয়ে আসতেন। তবে সাইকেল বাদশা দেন সবজি বীজ, পার্থক্য এটুকুই।

পাবনার বেড়া উপজেলা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে জগন্নাথপুর গ্রাম। এই গ্রামের দরিদ্র তাঁত শ্রমিক বাদশা আলম (৪৫)। নামে যেমন বাদশা, মনেও তিনি বাদশা। সব সময় তার মনে উঁকি দেয় কি করে মানুষের ভালো করা যায়। এ জন্য তিনি ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে প্রায়ই বেড়িয়ে পড়েন বেড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সবজির বীজ বিতরণ করেন পাবনার সাইকেল বাদশা। সাইকেলের হ্যান্ডেলে ও তার নিজের গলায় ঝোলানো থাকে বিভিন্ন সবজি-বীজ ভর্তি বোতল। বিনামূল্যে সেই বীজ পতিত জমি রয়েছে এমন পরিবারের মানুষের কাছে বিনামূল্যে বিতরণ করেন। কিভাবে বীজ বপণ করতে হয় তা-ও শিখিয়ে দেন। কখনও কখনও নিজের খরচে বাল্য বিবাহ ও যৌতুক বিরোধী লিফলেট ছাপিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করেন। এ জন্য ইতিমধ্যেই তিনি মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছেন ‘সাইকেল বাদশা’ নামে।

সচেতনতা বাড়াতে নানা শ্লোগান লিখে সাইকেলের সামনে পিছনে সেঁটে দিয়েছেন সাইকেল বাদশা। 

পরিবারের ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই বাদশা অন্যদের চেয়ে আলাদা। গ্রামের কেউ কোনো বিপদে পড়লে সবার আগে ছুটে যাওয়া তার নেশা। কাউকে হাসপাতালে নিতে হলে, ওষুধ কিনে আনার দরকার হলে বা বাজার থেকে জরুরী কোনো জিনিসের প্রয়োজন হলে ছুটে গিয়ে তা করে দেন বাদশা। এভাবেই ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন সবার প্রিয়পাত্র। তিনি নিজেই ছন্দ মিলিয়ে সমাজ সচেতনতামূলক নানা শ্লোগান লিখে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে সেঁটে দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এর পরিধি। এর পর আর্টিস্ট দিয়ে টিনের ওপর সাইনবোর্ড আকারে বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও মাদকবিরোধীসহ সচেতনতামূলক নানা শ্লোগান লিখিয়ে গ্রামের বাইরেও সাঁটতে শুরু করেন। প্রায় বছর পনের আগে একটি সাইকেল কিনে তাতেই শুরু করেন মানুষকে সচেতন করার প্রচারণা। আর সেই প্রচারণার সঙ্গে সবজির বীজ বিতরণের কর্মকাণ্ডটি যুক্ত হয়েছে দশ বছর ধরে। ওই সময় থেকে তিনি বিনামূল্যে বিভিন্ন এলাকায় বীজ বিতরণ করে আসছেন। বিনামূল্যে বীজ বিতরণের জন্য এলাকার সবজিচাষির অনেকেই তাকে ভালোবাসেন। দেশের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির উপস্থাপক হানিফ সংকেত ২০১৭ সালে তাকে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে পুরস্কৃত করেন।

চাষিদের অনেকেই বাদশার বিনামূল্যে বীজ বিতরণের কথা জানেন। তারাই বীজ উৎপাদনের সময় বাদশার জন্যও বেশি করে উৎপাদন করেন। সেখান থেকেই বিনামূল্যে মেলে বীজ। এর পর সেই বীজ প্লাস্টিকের বিভিন্ন বোতলে ভরে প্রতি মঙ্গলবার তাত বুনানোর সাপ্তাহিক ছুটির দিন তিনি বেরিয়ে পড়েন বিতরণ করতে। গত দশ বছরে তিনি বেড়ার অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক শ' বাড়িতে বীজ বিতরণ করেছেন। তিনি সবাইকে শিখিয়ে দেন কি করে কোন জায়গায় বীজ বপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। কখনও কখনও তিনি নিজেই বিভিন্ন বাড়ির পতিত জায়গা খুঁজে বীজ বপণ করেন। বাদশা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। ইচ্ছা থাকলেও দারিদ্রতার জন্য তিনি বেশি দূর আগাতে পারেননি। তিনি বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক। তাঁত শ্রমিকের কাজ করে প্রতিদিন আয় করেন গড়ে ৪০০ টাকা।

বাদশা জানান, যখন ছোট ছিলাম তখন দেখতাম আমার মা পাড়ার সবাইকে লাউ, কুমড়া, শাক বীজ সহ অনেক রকম বীজ দিত। সেই থেকেই বিজ বিতরণ করা, গাছ লাগানো আমার নেশায় পরিণত হয়। কাজের ফাঁকে সাইকেল আর বীজ নিয়ে বের হই। আমার চাওয়া চারিদিক সবুজে ভরে উঠুক। পাশাপাশি ফাঁকা জমিকে কাজে লাগিয়ে অন্তত ব্যক্তিগত চাহিদা মিটুক।

হাটুরিয়া-নাকালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ সরকার বাদশার ব্যাপারে জানান, বাদশা তার সীমিত সামর্থ্য দিয়ে সমাজ পরিবর্তনে অসামান্য ভূমিকা রাখছে। তার অবদানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সবুজে ভরে উঠছে।

বেড়া উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার নুর আলম বলেন, আমরাও সাইকেল বাদশার বিনামূল্যে বীজ বিতরণের বিষয়ে জানি। উনার এই মহতী উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ওনার যদি বীজ বিতরণের ক্ষেত্রে কোন সহয়তা দরকার হয় উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ হতে যতটুকু সম্ভব তাকে সহায়তা করা হবে।

;

চট্টগ্রামে আজ ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল



স্টাফ কসেরপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল

চট্টগ্রামে ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের অন্যান্য জেলার মতো বন্দর নগরী চট্টগ্রামেও চলছে সরকার ঘোষিত কারফিউ।

শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানিয়েছেন, শনিবার (২৭ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ছে।

চট্টগ্রাম জেলায় শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২৪ ও ২৫ জুলাই) দুইদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। এ তিনদিন সকাল থেকেই নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হন নগরবাসী।

কারফিউ শিথিলের সময়ে মহাসড়কে চলছে দূরপাল্লার যানবাহন। সকাল থেকে নগরে আসা-যাওয়া করছে পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ও যাত্রীবাহী বাস। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী।

;

আন্দোলনে আহত শ্রমিকের চমেক হাসপাতালে মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় চাঁদপুরে আহত আবদুল মজিদ (২০) নামে এক পরিবহন শ্রমিক চট্টগ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।

শুক্রবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত আবদুল মজিদ পরিবহন শ্রমিক ছিলেন। চাঁদপুরে একটি গণপরিবহনের হেলপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি খাগড়াছড়িতে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষের ঘটনায় গত ১৮ জুলাই চাঁদপুরে আহত হন মজিদ। সেখানে সহিংসতার ঘটনায় তার শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন জানান, মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কোটা সংস্কারের আন্দোলনে সহিংসতার ঘটনায় এ নিয়ে চমেক হাসপাতালে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

;