ভরসার খালে নোনা পানি, নিরুপায় কৃষক



ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কিছুদিন আগেও সরষে ফুলে ভরে ছিল মাঠ। এরই মধ্যে ঘরে উঠেছে সূর্যমুখী এবং আলু। এখন তরমুজ চাষাবাদের ভরা মৌসুম। বাড়ছে রোদের প্রখরতা। মাটি হারাচ্ছে জোঁ। ফলে সকাল সন্ধ্যে দুর থেকে পাইপ দিয়ে পানি আনতে হচ্ছে সেখানে। যদিও ওই জামির পাশেই খুলনার কয়রা উপজেলার তেরআউলিয়া খালে ঢেউ খেলছে নোনা পানি।

ওই খালের উপর ভরসা করেই এ এলাকার কয়েক‘শ একর জমি চাষাবাদ হয় দীর্ঘদিন ধরে। তবে বর্ষার শেষ থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ওই খালে থাকে মিষ্টি পানি। তবে বর্তমানে ইজারাদার ওই খালে কৌশলে ঢুকিয়েছে নোনা পানি। ফলে নষ্ট হতে বসেছে কৃষকের পরিশ্রমে গড়া লালিত স্বপ্ন।

যদিও এসব খালে নোনাপানি ওঠানো নিষেধ। কিন্তু ইজারাগ্রহীতারা গোপনে স্লুইস গেটের কপাট খুলে নোনাপানি তোলে। ফলে ওই সব খালের পানির ভরসা করে যারা চাষাবাদ করে। তখন তাদের কপালের ভাঁজ বাড়তে শুরু করে। প্রতিবছর ওই এলাকার কৃষকেরা তেরআউলিয়া খালের উপর ভরসা করে বীজ বুনে। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের আগেই ইজারাদারের কৌশলের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয় কৃষকদের। বাধ্য হয়ে কৃষকেরা দূর থেকে পাতা পাইপলাইন থেকে উচ্চমূল্যে পানি আনে। বেড়ে যায় চাষাবাদের খরচ। লাভের খাতা ছোট হয়ে তৈরি হয় লোকসানের খাতা।

খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানাযায়, কয়রা উপজেলার ৩৯টি খাল নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ওই খালগুলোতে নোনা পানির অনুপ্রবেশ বন্ধ করলে এবং মিষ্টি পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে ওই এলাকর ৭ হাজার ২ হেক্টর জমিতে বছরে ৩শ’ ৭০ কোটি ৮০ লাখ টাকার ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

কয়রা উপজেলার চুন্ডিপুর গ্রামের এই তেরআউলিয়া খালের একপাশ দিয়ে চলে গেছে চলাচলের রাস্তা। আর অন্য পাশে সুবিশাল ক্ষেত। এই খালটি উপজেলার মসজিদকুড় গ্রাম থেকে শুরু হয়ে চন্ডিপুর, দশবাড়িয়া, কিনুকাঠী, খেপনা গ্রামের মধ্য দিয়ে ঘোষখালী খাল হয়ে শিবসা নদীতে মিশেছে।

ওই গ্রামের কৃষক আফসার আলী গাজী জানান, আমাগে খেতের পাশেই খাল। খালে পানি ভরা। কিন্তু সে পানিতে চাষাবাদ হয় না। খেতের জন্য পানি আনতে হয় ৩ রশি দূরে সেচ পাম্প থেকে। অনেক খরচ। কিন্তু করবো। খালের পানি এতো নোনা যে, ওই পানি একটু গাছের গায়ে লাগলে কচি গাছ মরে যায়।

উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক মোঃ ইসহাক আলী সরদার জানান, আমি আমার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আমন চাষের পর সবজি আবাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার জমির পাশে তেরআউলিয়া নামের এ খালে মিঠাপানি ছিল। বর্তমানে নোনাপানি উঠিয়ে মাছ চাষ করছেন খালের ইজারাদার। ফলে খালের আশপাশে প্রায় ২০০ একর জমিতে চাষাবাদে পানির স্কংট দেখা দিয়েছে। শুধু এ খাল নয়, আমাদের উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে এমন শতাধিক বন্ধ খাল মাছচাষিদের কাছে প্রতি ৩ বছর পরপর ইজারা প্রশাসন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ এলাকার প্রায় সব বিলের মধ্যে ছোট-বড় খাল রয়েছে। এসব খাল বর্ষা মৌসুমে মিষ্টি পানিতে টৈটম্বুর থাকে। শুষ্ক মৌসুমে এ খালের পানি সেচ কাজে লাগাতে পারলে চাষিরা লাভবান হতেন। কিন্তু সেই সময় ইজারাদাররা গোপনে নোনাপানি তোলে।

চুন্ডিপুর গ্রামের ওই তেরআউলিয়া খালের ইজারাদার মো. মইনুদ্দিন মিস্ত্রি জানান, এই খালটি স্লইজ গেটের কাছে। অন্যদিকে ওই স্লুইজ গেটের পাটা বা গেটটি নষ্ট। সেজন্য কিছু নোনা পানি উঠেছে। কদিন আগে সেটি সংস্কার করা হয়েছে। ফলে আর নোনা পানি উঠবে না।

কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, এ সমস্যায় জন্য অনেক কৃষক আমাদের কাছে আসে। কিন্তু আমাদের কি করার আছে? আমরা কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেই।

কয়রা উপজেলা জলমহাল কমিটির সভাপতি ও কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম তারিক-উজ-জামান জানান, রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যে খাল, জলাশয়, খাস জমি ইজারা দেয়া হয়। তবে সেখানে নোনাপানি তোলা যাবে না। যদি কেউ গোপনে নোনাপানি তুলে কৃষকের ক্ষতি করে, তাহলে ওই ইজারা বাতিল করা হবে।

   

অন্য বাংলাদেশকে দেখে গেলেন ডোনাল্ড লু



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
যে আশার বাণী শোনালেন ডোনাল্ড লু

যে আশার বাণী শোনালেন ডোনাল্ড লু

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের ‘এক দফা’ আন্দোলনের সময়ে গত অক্টোবরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্ব যেভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিষয়ে অবস্থান নিয়েছে, তা আমাদের সাহস যোগাচ্ছে। তাই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো দেশে আর নির্বাচন হবে না’। আগের দুই নির্বাচনের মতো নির্বাচন হতে যাচ্ছে, এই আশঙ্কায় শেষ পর্যন্ত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেই যায়নি বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। দলটির আশা ছিল নির্বাচন হবে না, পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে আমেরিকা যেভাবে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে, তাতে নির্বাচন করার সাহস হবে না আওয়ামী লীগের। আর নির্বাচন করলেও পশ্চিমা বিশ্ব সরকারকে সমর্থন দেবে না, সরকার টিকতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত তাদের সেই আশা হতাশায় পরিণত হয়েছে।

নির্বাচনের পর এরই মধ্যে চার মাসের বেশি সময় পার করে ফেলেছে সরকার। এই সময়ে দেশি-বিদেশি সকল প্রতিবন্ধকতা প্রায় অতিক্রম করেও ফেলেছে। অর্থাৎ দেশে সরকারের জন্যে অস্বস্তিকর বিরূপ রাজনৈতিক পরিবেশ নেই। বিএনপিও নেই আন্দোলনে। যদিও নির্বাচনের আগে যারা কারান্তরীন হয়েছিলেন তাদের বেশিরভাগই ছাড়া পেয়েছেন। তারা ছাড়া পেলেও দলকে সংগঠিত করতে পারেননি। কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছেন না।

যে আমেরিকা নিয়ে এত উচ্চাশা ছিল বিএনপির, তারাও শেষ পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেছে। নির্বাচনের আগে অতি-তৎপর থাকা পিটার হাসের রাজনৈতিক অভিসন্ধিমূলক দৌড়ঝাঁপ এখন নেই। তিনিও ফিরেছেন স্বাভাবিক কূটনৈতিক কার্যক্রমে। অন্য সকল রাষ্ট্রদূতের যে কার্যক্রম সেটা তার মাঝেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

গত নির্বাচনের আগে আলোচিত ছিল আমেরিকার অবস্থান। এটা প্রতি নির্বাচনের আগেই থাকে। তবে ওই সময়ে তারা যে প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছিল তাতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের পর্যায়েই যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সরকারের কঠোর অবস্থান এবং ভারতের ভূমিকায় তারা নমনীয় হতে বাধ্য হয়। এরপরেও আশঙ্কা ছিল নতুন সরকারের সঙ্গে আমেরিকার কাজ করা নিয়ে, যা দূরীভূত হয় মূলত গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন ‘আমেরিকা-বাংলাদেশের সম্পর্কের ভিত্তি দুই দেশের জনগণের শক্তিশালী সম্পর্ক’। চিঠিতে বাইডেন বাংলাদেশের উচ্চাভিলাষী অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সমর্থনের পাশাপাশি একটি অবাধ ও মুক্ত ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অভিন্ন স্বপ্ন পূরণে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় ঢাকার সঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

‘যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ অংশীদারত্বের পরবর্তী অধ্যায় শুরুর পর্বে’ জো বাইডেন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ আরও অনেক বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। বাইডেনের সে চিঠির বাস্তবায়ন-পর্বে ঢাকা সফর করে গেছেন দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। গত মঙ্গলবার কলম্বো থেকে ঢাকায় এসে বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকা ত্যাগ করেছেন এই কূটনীতিক।

সফর প্রসঙ্গে ডোনাল্ড লু বুধবার প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অহিংস নির্বাচন নিশ্চিতে গত বছর জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেক পরিশ্রম করেছে; যা আমাদের সম্পর্কে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি করেছিল। যদিও এটি আমাদের সম্পর্কে খুবই সাধারণ বিষয়। কিন্তু এখন আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই, মোটেও পেছনে ফিরতে চাই না। আমরা আমাদের সম্পর্ককে দৃঢ় করার উপায় খুঁজে বের করতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘কীভাবে দু’দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হয়, আমরা সে বিষয়গুলোতে আগ্রহী। এরই অংশ হিসেবে আমি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের মধ্যকার অস্বস্তিকর বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার বিষয়ে আলোচনা করেছি।’ যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক ও আস্থা নতুন করে তৈরি করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন বলেও উল্লেখ করেছেন।

ডোনাল্ড লুর এই সফর এবং তার বক্তব্য সরকারের জন্যে ‘স্বস্তির’ অনেকটাই। দেশ দুটোর মধ্যকার অবিশ্বাস, সন্দেহ সেটা দূর করতে সহায়ক হতে পারে। বিশেষত তিনি যখন বলছেন, দেশে-দেশের উত্তেজনা তাদের জন্যে ‘খুবই সাধারণ বিষয়’, তখন! নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা যে দেশে-দেশে উত্তেজনা ছড়ায়, এবং বাংলাদেশের বিষয়টি তেমনই এক, বক্তব্যে স্বীকারোক্তি আছে এর। বক্তব্যে তিনি যখন পেছন ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন, তখন এটাকে ইতিবাচকভাবে নেওয়া যেতে পারে।

ডোনাল্ড লুর এই সফরে একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র সচিবের বৈঠক হয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ চেয়েও পাননি। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগের দেশি-বিদেশি চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি, ফলে নির্বাচন নিয়ে অনেক আলোচনা থাকলেও নির্বাচন ভণ্ডুল হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির তৈরি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আগের সেই ঋজু অবস্থান ধরে রেখেছেন। ডোনাল্ড লুর ‘সম্পর্কোন্নয়নের’ সফরেও সাক্ষাৎ দেননি তাকে। এরবাইরে সফরসূচির কোন পর্যায়েই বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উচ্চারিত হয়নি। অর্থাৎ এই সফরকে আমেরিকা স্রেফ কূটনৈতিক সফর এবং সম্পর্কোন্নয়নের এক সফর হিসেবে নিয়েছে।

ডোনাল্ড লুর সঙ্গে বিএনপির কোন পর্যায়ের কারো দেখা হয়নি। তাকে ও তার দেশকে নিয়ে ‘হতাশ’ বিএনপি নেতারা এই সফরকে গুরুত্বহীন বলতে চাইছেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সফর শুরুর আগে বলেছিলেন, ‘কে আসলো আর কে গেলো তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই।’ স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘ডোনাল্ড লুর আসা-না আসায় কিছু যায়-আসে না।’ সফর চলাকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত নির্বাচনের আগের তাদের আশাবাদের ভিন্ন ব্যাখ্যায় এবার বলছেন, ‘আমি জানি না আপনারা কী অবস্থানে তাদের ভেবেছিলেন। আমরা যেটা দেখেছি, সেটা হচ্ছে তারা একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে কথা বলেছেন। এটা তারা এখনো অব্যাহত রেখেছেন।’ তবে বিএনপির বোধোদয় হয়েছে এবার হয়ত। নির্বাচন হলেও সরকার টিকতে পারবে না বিএনপির সেই আশাবাদের বিপরীতে এবার তিনি বলছেন, ‘যেকোনো দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে হয় সবাইকে। সে জন্য তারা (আমেরিকা) সেটাকে অব্যাহত রাখেন। এমনকি সামরিক শাসকদের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক রাখতে হয়। আজকে বাংলাদেশের যে অবস্থাটা, সে অবস্থার প্রেক্ষাপটে তারা তাদের দেশের প্রয়োজনে যেটা উপকারী মনে করছেন, সেটা করছেন।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, ‘তারা তাদের দেশের প্রয়োজনে যেটা উপকারী মনে করছেন, সেটা করছেন’, একইধরনের কথাও উচ্চারিত হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কণ্ঠেও। ডোনাল্ড লু ঢাকায় আসার দিন তিনি বলেছেন, ‘ডোনাল্ড লুকে দাওয়াত করে আনা হয়নি। তিনি নিজ দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আলোচনা করতে এসেছেন।’ প্রায় অভিন্ন কাদের-ফখরুলের ভাষ্য, তবে দুজন দুই অবস্থান থেকে একজন আশা আর আরেকজন হতাশা থেকেই এসব বলছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

তিনদিনের সফর শেষে ফিরে গেছেন ডোনাল্ড লু। তবে তার এই সফর সরকারের জন্যে আশাব্যঞ্জক নিঃসন্দেহে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই অঞ্চলের নীতি বাস্তবায়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যক্তি যখন পেছন ফিরে না যাওয়ার কথা বলছেন, উত্তেজনাকে যখন খুবই সাধারণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন তখন ধারণা করা যায় ভিসা-বাণিজ্যসহ বিবিধ নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা অনেকটাই দূর হতে শুরু করবে। র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম অধিকার, মানবাধিকার, ব্যবসায়িক পরিবেশের সংস্কারসহ নানা বিষয় নিয়ে ইতিবাচক পথ প্রশস্ত হবে।

ডোনাল্ড লুর হয়ত পুরো দেশের নীতি বদলানোর ক্ষমতা নেই, তবে যেটুকু ক্ষমতা তার সেখান থেকেই আশাবাদের বাণী রেখেছেন এখানে। এটা স্বপ্রণোদিত তার। আমেরিকা নিজেদের প্রয়োজনে এমনটা করে থাকে। তবে আমরা আমরা যারা কিনা রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে দেখেই পুরো আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির সিদ্ধান্ত নেওয়া লোক, তারা তারচেয়ে অন্তত বেশি ক্ষমতার ডোনাল্ড লুকে দেখে খানিকটা আশাবাদী হলাম! যদিও এটা আমাদের জন্যে খানিকটা অপমানের, তবু...। বিদেশের মুখাপেক্ষী হয়ে যে অপমান গায়ে মেখে এসেছি আমরা এতদিন সে অপমান উগরাতেও পারছি না সহসা।

তবু কথা থাকে, কেন তিনি এত আলোচনার? তাকে অতি-আলোচনায় নিয়ে আসলাম তো আমরাই। বিবিধ চাপে নতজানু না হওয়া সরকার এবারও তার অবস্থান ধরে রেখেছে বলে দৃশ্যমান। যা সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যে স্পষ্ট; ‘দাওয়াত করে আনা হয়নি।’

‘বিনা-দাওয়াতে’ আসা ডোনাল্ড লু ঢাকা সফর করে চলেও গেছেন। যাওয়ার আগে দেখেছেন নিশ্চয়ই আত্মসম্মানবোধে ঋজু হয়ে থাকা দেশটাকে। বিবিধ চাপে নতজানু না হওয়া বাংলাদেশকে চিনেছেন তিনি এবার অন্যভাবে। বাংলাদেশে এসে যে বার্তা পেলেন তিনি, দিতে চাইলেন যে বার্তা সেটা দুই দেশের সম্পর্ককে ভিন্ন মাত্রা দেবে নিঃসন্দেহে; কিছু শিক্ষণীয় আছে বৈকি!

;

বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে তাপপ্রবাহ, আরও বাড়ার শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে তাপপ্রবাহ, আরও বাড়ার শঙ্কা

বিভিন্ন অঞ্চলে বইছে তাপপ্রবাহ, আরও বাড়ার শঙ্কা

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন তাপপ্রবাহের পর টানা কয়েকদিন বৃষ্টির ফলে জনজীবনে স্বস্তি ফিরেছিল। তবে আবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বইতে শুরু করেছে। এমন পরিস্থিতিতে ৪৮ ঘণ্টার সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।

বুধবার (১৫ মে) সন্ধ্যার আবহাওয়াবিদ মল্লিক জানান, সারাদেশে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। তবে ৪০ ডিগ্রিতেই ওঠানামা করবে। পাবনা, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এবং রাঙ্গামাটি জেলার ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এর বাইরে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বাকি অংশে।

বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় দিনাজপুরে। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

;

ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশব্যাপী তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলার পর ঢাকায় বৃষ্টিপাত হলেও বায়ুমানে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। ১১৫ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাস আজ অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকাল ১০টা ২ মিনিটের দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার এ তথ্য জানায়

তথ্য মতে, ১১৫ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ৯ নম্বরে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। যা দূষণের দিক থেকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ঢাকার বায়ুদূষণ থেকে বাঁচতে আইকিউএয়ার যে পরামর্শ দিয়েছে, তার মধ্যে আছে ঘরের বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। বাসার বাইরে গিয়ে ব্যায়াম করা যাবে না। দূষণ থেকে রক্ষা পেতে ঘরের জানালা বন্ধ রাখারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

এদিন বিশ্বের বায়ুদূষণের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার স্কোর ২৪৯। ১৯৬ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কিনশাসা, ১৮৪ স্কোর নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। এছাড়া ১৬৩ স্কোর নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা উগান্ডার কাম্পালা, যার স্কোর ১৪৯।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু বলে মনে করা হয়।

;

ঢাকা ছাড়লেন ডোনাল্ড লু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন দিনের সফর শেষে ঢাকা ছাড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ভোর পৌনে ৪টায় তাকে বহনকারী বিমানটি শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

এই সফরে তিনি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকটি বৈঠক এবং মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের দেওয়া এক নৈশভোজে যোগ দেন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। ডোনাল্ড লু নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।

মঙ্গলবার ঢাকা পৌঁছে তিনি নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাতে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসভবনে বৈঠক করেন। সেখানেই ছিল নৈশভোজের আয়োজন।

বুধবার তিনি পররাষ্ট্র সচিব, পরিবেশমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন। যৌথ ব্রিফিংয়ে ডোনাল্ড লু বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন চায় যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, গত ১৪ মে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন ডোনাল্ড লু। ঢাকায় আসার আগে তিনি ভারত ও শ্রীলঙ্কা সফর করেন। চলতি বছর ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডোনাল্ড লুর এটাই ছিল প্রথম ঢাকা সফর।

;