ঈদ যাত্রায় দুর্ভোগের অপর নাম ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ঈদ-উল ফিতরে সারাদেশের সাথে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম বরিশাল-ফরিদপুর-ঢাকা জাতীয় মহাসড়কে বড়ধরনের বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ নিয়ে শংকিত পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। ঘরমুখী এবং  ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখী মানুষের বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ নিয়ে শঙ্কায় সবাই। 

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হবার পর বরিশাল ও সন্নিহিত এলাকার সাথে রাজধানীসহ প্রায় সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ রক্ষাকারী বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কটিতে যানবাহনের সংখ্যা প্রায় চারগুণ বেড়ে গেছে। কিন্তু ঢাকা থেকে ছয় লেনের বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পদ্মা সেতু পার হয়ে ৬৫ কিলোমিটার দূরে ভাঙ্গায় পৌঁছানোর পর বরিশাল পর্যন্ত ২৪ ফুট প্রশস্ত ৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়কে তীব্র যানজট ও দুর্ঘটনা এখন নিত্যদিনের ঘটনা।

জানা গেছে, ১৯৬০ থেকে ’৬৬ সালের মধ্যে মাত্র পাঁচ টন বহনক্ষম এ মহাসড়কটি দুই যুগ আগে জাতীয় মহাসড়কের মর্যাদা লাভ করলেও ১২ ফুট থেকে ২৪ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত হয়েছে। কিন্তু বহন ক্ষমতা আর বাড়েনি। উপরন্তু দুই পাশের নানা অবৈধ স্থাপনা মহাসড়কটিকে গলা টিপে ধরেছে। পাশাপাশি বাড়তি ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে মহাসড়কের অবৈধ যানবাহনের আধিক্য। এতে করে বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্ঘটনার সংখ্যা।

সড়ক অধিদপ্তর ও হাইওয়ে পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কে এখন প্রতিদিন গড়ে ১৮ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করছে যা ছয় লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় সমান। এ অবস্থায় বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কটি সিঙ্গেল লেনের হওয়ায় প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচটি করে দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ২০ মার্চ পূর্ববর্তী ছয় মাসে এ মহাসড়কে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো দুই শতাধিক। এসব দুর্ঘটনাজনিত কারণ ছাড়াও নিত্যদিনের যানজটে প্রতিদিন নাকাল হচ্ছেন এ মহাসড়ক ব্যবহারকারী হাজার হাজার যাত্রীরা। এসব দুর্ঘটনা ও যানজটে এ মহাসড়ক ব্যবহারকারী পণ্য পরিরবহনেও দীর্ঘসময় ব্যয় হচ্ছে। 

সূত্রমতে, ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের রাজৈর, টেকেরহাট, ভাঙ্গা, তালমামোড়, গৌরনদী, বাটাজোর, ভূরঘাটা, বরিশাল মহানগরীর নথুল্লাবাদ, নবগ্রাম রোড, চৌমুহনী, আমতলা মোড়, রূপাতলী ও বাকেরগঞ্জে যানজট এখন নিয়মিত ঘটনা। যেকারণে পদ্মা সেতু চালু হবার পর ভাঙ্গা থেকে বরিশাল পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতেই এখন বিভিন্ন যানবাহনের প্রায় তিন ঘণ্টা সময় চলে যাচ্ছে। ফলে সেতু চালুর পরে দ্রুত সময়ে ঢাকা ও সন্নিহিত এলাকায় পৌঁছানোর যে আশা করা হয়েছিল, তা ইতিমধ্যে মিলিয়ে যেতে শুরু করেছে। 

বরিশালের গৌরনদী হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে মাদারীপুর সীমানার ভুরঘাটা পর্যন্ত মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩২ কিলোমিটারেই ২৭টি ব্ল্যাক স্পট বা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছেন। দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলো হলো- ভুরঘাটা, ইল্লা, বার্থী, তারাকুপি, কটকস্থল, সাউদের খালপাড়, নীলখোলা, টরকী, গয়নাঘাটা, গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড, আশোকাঠী, কাসেমাবাদ, বেজহার, মাহিলাড়া, বাটাজোর, বামরাইল, সানুহার, জয়শ্রী, সোনার বাংলা, ইচলাদী, শিকারপুর-দোয়ারিকা টোল প্লাজা, মেজর এমএ জলিল সেতুর ঢাল, নতুনহাট, রহমতপুর ব্রিজের ঢাল, রেইনট্রিতলা ও কাশিপুর ব্র্যাক অফিসের মোড়। এসব স্পটগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ, অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাধারণ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু জায়গায় সতর্কতামূলক চিহ্ন বসানো হচ্ছে।

ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে চলাচলরত সাউদিয়া পরিবহনের সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর বদৌলতে যানবাহন কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় অপ্রশস্ত মহাসড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই ব্যস্ততম এ মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা এখন খুবই জরুরি।

সড়ক অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিক্রমে ২০১৫ সাল থেকে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কটি সাগরকন্যা কুয়াকাটা পর্যন্ত ছয় লেনে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শুরু করে যা ২০১৮ সালে শেষ হয়। এমনকি সমীক্ষার পথনকশা অনুযায়ী প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণে ১৮শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে একটি আলাদা প্রকল্পও অনুমোদন করা হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের তিন বছর পরেও ভূমি অধিগ্রহণ কাজের অর্ধেকও সম্পন্ন হয়নি। তবে ওইসব জমির বর্তমান বাজার মূল্য দ্বিগুণেরও বেশী বৃদ্ধি, নতুন পথনকশা অনুযায়ী বাড়তি প্রায় দু‘শ হেক্টরসহ জমির মূল্য পরিশোধে দ্বিগুণেরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হবে।

বাস্তবতার আলোকে ইতিমধ্যে বরিশাল মহানগরীর পরিবর্তে প্রায় ১৬ কিলোমিটার বাইপাস নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হওয়ায় সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পটুয়াখালীতেও পথ-নকশার কিছু পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ফলে এ দুটি স্থানে আরো অন্তত দু‘শ হেক্টর বাড়তি ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে। এজন্য ইতিমধ্যে সংশোধিত ‘উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা-ডিপিপি’ তৈরীর কথাও জানিয়েছে সড়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল।

অপরদিকে মহাড়কটির বরিশাল বিমানবন্দর ও ফরিদপুরে একটি প্রতিববন্ধী স্কুলের কাছে এলাইনমেন্ট নিয়েও কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ দুটি স্থানের এলাইনমেন্ট নিয়ে মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হতে পারে ।

সূত্রের দাবি, অর্থ সংগ্রহের বিষয়টি চূড়ান্ত না হলে এডিবি ছাড়া আরো কয়েকটি দাতা সংস্থার সাথে প্রকল্পটির অর্থায়ন নিয়ে কথা চলছে। অপরদিকে ২০১৫ সাল থেকে ’১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা, সমীক্ষা ও পথনকশা অনুযায়ী ২১১ কিলোমিটার মহাসড়কটির জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ২১ হাজার কোটি টাকা ধরা হলেও ভূমি অধিগ্রহণেই অন্তত দেড় হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত প্রয়োজন হতে পারে। যার পুরোটাই দিতে হবে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে। 

বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান বলেন, অনন্ত ঈদ-উল ফিতরের আগে ও পরে মহাসড়কে চলাচলরত পরিবহনগুলো যেন বেপরোয়াগতিতে এবং প্রতিযোগিতার মনোভাব পরিহার করে ওভারটেকিং করতে না পারে। স্ব-স্ব এলাকার হাইওয়ে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে সকল দুশ্চিন্তার অবসান ঘটবে। এতে করে ঈদ মৌসুমে সড়ক দূর্ঘটনা জিরোতে নামানো সম্ভব হবে। তবে হাইওয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বরিশাল অফিসের কর্মকর্তারা এসব বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখাসহ সময়নুযায়ী প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন ।

বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা যাত্রীরা যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, এজন্য বরিশালে পুলিশ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। হাইওয়ে পুলিশের সাথে সমন্বয় করে ভুরঘাটা থেকে বাকেরগঞ্জ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার মহাসড়কের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাকে নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি দূর্ঘটনা প্রবন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এবং যানজটের সৃষ্টি হতে পারে এমন সব এলাকায় ট্রাফিক পরিদর্শকদের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে ঈদে ঘরমুখী মানুষের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে ভাঙ্গা পর্যন্ত ছয়লেনের এক্সপ্রেসওয়ে পৌঁছলেও সেখান থেকে ৯১ কিলোমিটার দক্ষিণে বরিশাল, ৩০ কিলোমিটার উত্তরে ফরিদপুর শহর এবং ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণে পায়রা সমুদ্র বন্দর ও ২০৩ কিলোমিটার দক্ষিণে সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পৌঁছানোর মহাসড়কের কোনটিই মানসম্মত নয়। এসব মহাসড়ক এখনো মাত্র ১৮ থেকে ২৪ ফুট প্রস্থ। ফলে  আসন্ন  ঈদ-উল ফিতরের আগে ও পরে দেশের ৮ নম্বর বরিশাল-ফরিদপুর জাতীয় মহাসড়কে সুষ্ঠু পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন ।

   

বহিষ্কৃত মেয়রের স্ত্রী মিতুই কাটাখালীর নতুন মেয়র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম রাজশাহী
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভায় মেয়র পদে উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন রাবেয়া সুলতানা মিতু। তিনি ওই পৌরসভার বহিষ্কৃত মেয়র আব্বাস আলীর স্ত্রী। অন্যদিকে, পুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম জুয়েল নির্বাচিত হয়েছেন।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। এর মধ্যে কাটাখালী পৌরসভা উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)।

আর পুঠিয়া ইউপি নির্বাচনের ভোট নেওয়া হয় ব্যালট পেপারে। নির্বাচন কমিশন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় ভোটারদের দেওয়া তথ্য মতে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কাটাখালী পৌরসভা উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আজাদুল হেলাল।

তিনি জানান, ৬৬ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। হ্যাঙ্গার প্রতীকের প্রার্থী রাবেয়া সুলতানা মিতু ৬ হাজার ৩০৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ডাবগাছ প্রতীকের আবু সামা পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৮৭ ভোট।

এদিকে, পুঠিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন দুই জন। বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফ খান ঝন্টু ঘোড়া প্রতীকে ও পুঠিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জুয়েল আনারস প্রতীকে লড়াই করেন।

৫ হাজার ৩৯৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন জাহাঙ্গীর আলম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ঝন্টু পান ৪ হাজার ৮৭ ভোট।

;

বগুড়ায় পটকা তৈরীর কারখানায় বিস্ফোরণ, শিশুসহ ৪ জন দগ্ধ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম বগুড়া
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়া শহরের মালতিনগরে পটকা তৈরির কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশুসহ ৪ জন গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩ জনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিস্ফোরণে ওই বাড়ির দেয়ালগুলো ধসে যায় এবং টিনের চালা উড়ে যায়। বাড়ির মালিক দাবি করেছেন গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বগুড়া শহরের মালতিনগর শ্মশান রোডের একটি বাড়িতে বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে।

বিস্ফোরনে আহত ৪ জন হলেন- বাড়ির মালিক রেজাউল করিমের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা(৪০), মেয়ে সুমাইয়া আকতার(১৫), রেজাউলের ভাই রাশেদুল ইসলামের মেয়ে জিম আক্তার(১৬) ও তাদের প্রতিবেশী আলী হোসেনের মেয়ে তাসনিম বুশরা(১৪)।

৪ জনের মধ্যে রেবেকা ছাড়া ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বুশরার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদশীরা জানান, রবিবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে মালতিনগর এলাকায় বিকট শব্দে আকস্মিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিকট বিস্ফোরণের শব্দে এলাকাবাসী ছুটে গিয়ে দেখেন ওই বসভবনের দেয়াল ধসে গেছে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

বাসার মালিক রেজাউল করিম জানান, তিনি ও তার ভাই রাশেদুল একই বাড়িতে থাকেন। তাদের দুই ভাইয়ের মেয়ের সাথে প্রতিবেশী মেয়েটির ঘনিষ্ঠতা হওয়ায় তারা একই সঙ্গে গল্প করছিলো। এ সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে তারা ৩ জন এবং তার স্ত্রী আহত হন।

বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের সহকারি পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে পটকা তৈরির কাঁচামাল থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, ওই বাসভবনে থাকা তিনটি গ্যাস সিলিন্ডারই তারা অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পটকা তৈরী করা হচ্ছিল। বাড়িটি পটকা তৈরীর কারখানা হিসেবে পরিচিত।

বাড়িটি পরিদর্শনে যাওয়া বগুড়া সদর থানার উপপরিদর্শক ( এসআই) জাকির হোসেন তাৎক্ষণিক ঘটনা সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তিনি বলেন পুরো ঘটনা তদন্ত শেষে পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানানো হবে।

;

পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক-পুলিশ সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম দিনাজপুর
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ ও চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আলী (৬৫)। তার বাড়ি উপজেলার সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। নির্বাচনে বিজয়ী ইউপি সদস্য প্রার্থী (টিউবওয়েল) জোবায়দুর রহমানের চাচা মোহাম্মদ আলী।

পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, ভোট গণনায় আজিমপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন জোবায়দুর রহমান। এর পর পরাজিত প্রার্থী সাইফুল ইসলামের সমর্থকরা ফলাফল না মেনে জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এর পর ওই প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালাতে থাকলে ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড শটগান থেকে গুলি ছোড়ে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন ঘটনাস্থলে পড়ে যায়।

পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, রবিবার বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ, বিরল ও আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ছিল। সকাল ৮টায় ব্যালটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৪টায়।

;

প্রকল্প বসবাসের উপযোগী না হওয়ায় সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর ও ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প এখনও বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এত বছরেও এই দুটি প্রকল্প বসবাসের উপযোগী না হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে জুলাই মাসে সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন কমিটির সদস্যরা।

এছাড়াও তারা ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের পরিত্যক্ত জমিতে ফ্ল্যাট নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে।

রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমতি হিসাব সম্পর্কিত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম।

বৈঠকে জানানো হয়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। কাজ শুরুর পর প্রকল্পের মেয়াদ এখনও পর্যন্ত সাত বার বাড়ানো হয়েছে। সবশেষ প্রকল্পের মেয়াদ দেড় বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

এছাড়া কেরানীগঞ্জে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে ঝিলমিল আবাসিক এলাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ১৯৯৭ সালে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি বলেন, পূর্বাচল ও ঝিলমিল প্রকল্প দুটো যাতে দ্রুত বসবাসের উপযোগী করা হয়, মন্ত্রণালয়কে সেই পরামর্শ দিয়েছি। শুধু রাস্তা করলেই হবে না। সেখানে ওয়াসার সুযোগ-সুবিধা লাগবে, বিদ্যুৎ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লাগবে। এগুলো হলেই মানুষ বাড়িঘর করে সেখানে থাকবে। তা না হলে কেউ থাকবে না।

বৈঠকে বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং চলমান প্রকল্পগুলো সমাপ্ত না করে নতুন প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য সুপারিশ করে কমিটি। এছাড়াও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত এবং গ্রামীণ মাটির রাস্তাগুলো টেকসই করার লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ডকরণ বর্ষাকালের পরিবর্তে শীতকালে করার জন্য সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিদপ্তরের টেন্ডার আহ্বান করার কার্যক্ষমতা ও বিধিবিধান রয়েছে কি না তার তথ্য-উপাত্ত আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটির কাছে উপস্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ও চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, মাহবুবউল আলম হানিফ, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রাণ গোপাল দত্ত, অপরাজিতা হক, শাহরিয়ার আলম এবং খাদিজাতুল আনোয়ার।

;