পুলিশের ওপর হামলাকারীরা ‘অনুপ্রবেশকারী’



সেন্ট্রাল ডেস্ক ৪

  • Font increase
  • Font Decrease
হাইকোর্টের সামনে পুলিশের ওপর হামলাকারীদের অনুপ্রবেশকারী বলে দাবি করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হামলার ঘটনার পরদিন বুধবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এমন দাবি করেন। তিনি বলেন, “গতকাল যে ঘটনাটা ঘটেছে হাই কোর্টের সামনে, যা ইতোমধ্যে পত্র-পত্রিকায় সব জায়গায় এসেছে। আমরা নিজেরাই ছেলেদের চিনতে পারছি না! টু বি ভেরি ফ্র্যাংক, আমরা আশঙ্কা করছি, অনুপ্রবেশকারীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে।” আর এর পেছনে সরকারের হাত থাকতে পারে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। “আমরা যে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছি, শান্তিপূর্ণভাবে যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার চেষ্টা করছি, সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটাকে বিনষ্ট করবার জন্য কাজ করছে।” বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায়ের তারিখ সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারির মধ্যেই মঙ্গলবার বিকালে পুলিশের ওপর হামলার ওই ঘটনা ঘটে। জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় হাজিরা দিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসায় ফেরার পথে হাই কোর্ট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপিকর্মীরা। তাদের বেধড়ক পিটুনির শিকার হন কয়েকজন পুলিশ সদস্য, ভাংচুর হয় তাদের গাড়ি ও আগ্নেয়াস্ত্র। প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে বিএনপিকর্মীরা পুলিশের হাতে আটক দুই নেতাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেন ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার। ঘটনাস্থল থেকে ৬৯ জনকে গ্রেপ্তারের পর রাতে এনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে কয়েকশ নেতাকর্মীকে আসামি করে তিনটি মামলা করা হয় থানায়। মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের তারিখ সামনে রেখে সরকার দেশে ‘অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির উসকানি’ দিচ্ছে। “আমাদের একেবারে শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তার করছে। একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, যেখানে এখন পর্যন্ত আমরা কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করিনি, অথচ গ্রেপ্তার অভিযান চলছে, সবসময় হুমকি-টুমকি দিচ্ছে। দেশের যে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ, সেটা তারা (সরকার) নিজেরাই বিনষ্ট করছে, অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে।” বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, ‘একদলীয় শাসনব্যবস্থা’ পাকাপোক্ত করতে বিএনপি ও বিরোধীকে বাদ দিয়ে ‘একদলীয় নির্বাচন করার নীল নকশা বাস্তবায়নই’ এর উদ্দেশ্য। “সরকারের তরফ থেকে এই উসকানিমূলক কাজগুলো শুরু হয়েছে যাতে বিএনপি নির্বাচনে আসতে না পারে।” ‘দমননীতি’ বাদ দিয়ে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক নেতাকে মুক্তি দিয়ে ভোটের পরিবেশ তৈরির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সাথে কাউকে দেখা করতে দিচ্ছে না। তিনি একজন বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষ। তাকে প্রতিদিন ওষুধ সেবন করতে হয়। ওষুধগুলো পর্যন্ত সঙ্গে নিতে দেওয়া হয়নি।” তিনি অভিযোগ করেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে ‘তুলে নিয়ে গেলেও’ এখন পর্যন্ত তা স্বীকার করেনি। “আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার সাহেবের উত্তরার বাসায় পুলিশ গতরাতে গেছে খোঁজ করেছে। যুবদলের সাবেক সহ সম্পাদক গাজী হাবিব হাসান রিন্টুকে গতরাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীকে আবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এইভাবে দমনপীড়ন চলছে।” বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান ও জিনজিরা যুব দলের সভাপতি মামুনের বাসায় পুলিশ মঙ্গলবার রাত আর বুধবার সকালে ‘অভিযান’ চালিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মেয়ে দলের সহ সম্পাদক অর্পনা রায়, ছেলের স্ত্রী নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ ও মুনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।
   

‘শরীফ থেকে শরীফার’ গল্প পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের আলোচিত ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্প বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি।

চলতি মাসের শুরুতে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আলোচিত ‘শরীফ থেকে শরীফা’ গল্পে ১৯টি শব্দ নিয়ে কমিটির কয়েকজন সদস্য আপত্তির কথা বলেছেন। এসব শব্দগুলো বাদ দিলে ওই গল্পটি আর পরিপূর্ণ থাকছে না। সেজন্য পুরো গল্পটিই বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে সচেতনতামূলক কোনো গল্প নতুন করে লিখে সেটা বইয়ে যুক্ত করা যায় কিনা, সে বিষয়েও মত দিয়েছেন তারা।

৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণি পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রমে পড়াশোনা চলছে চলতি বছর থেকে। তবে, বছরের প্রথম থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হয় সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান বইয়ের শরীফ শরীফার গল্পটি নিয়ে, যার বিচার-বিশ্লেষণের জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, বিশেষজ্ঞ কমিটি এ সংক্রান্ত একটি বিস্তর প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলে আমরা সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ নিয়ে ঢাকা আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুর রশীদ বলেন, এ সংক্রান্ত একটা প্রতিবেদন আমরা জমা দিয়েছি। প্রতিবেদনে কী কী সুপারিশ করা হয়েছে তা মন্ত্রণালয় বলতে পারবে।

এদিকে, নতুন শিক্ষাক্রমের চলতি বছরের মাধ্যমিকের চারটি শ্রেণির ৩১টি বইয়ে ১৪৭টি ভুল সংশোধনের সুপারিশ করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটি।

;

স্ত্রী হত্যার পর ২২ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্ত্রীকে হত্যা করে দীর্ঘ ২২ বছর পলাতক থাকার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সামছুদ্দিনকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে উপজেলার চৌরাস্তা পৌর বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার সামছুদ্দিন সদর উপজেলার মাইজছড়া গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে।

র‍্যাব-১১ সিপিসি-৩ সূত্রে জানা যায়, আসামি সামছুদ্দিনসহ জয়নাল আবেদীন, মনোয়ারা বেগম ও বিলকিস বেগম একে অপরের সহযোগিতায় ভিকটিম আয়েশা খাতুনকে শারীরিক নির্যাতন ও গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে এ ঘটনায় সুধারাম থানার এএসআই মো. মোখলেছুর রহমান নিজে বাদী হয়ে ২০০২ সালের ১৩ জুন সুধারাম থানায় এজাহার দায়ের করেন। উক্ত হত্যা মামলায় বিচারিক কার্যক্রম শেষে ২০০৯ সালের ৩০ জুলাই আসামি সামছুদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আসামি গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিল।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ বলেন, আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুধারাম মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

;

বিদেশি ঋণ শোধ করার অবস্থায় নেই সরকার: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর ফেলো, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দেশ সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। আমাদের রাজস্ব বাড়েনি, এ মুহূর্তে সরকারের খরচ বাড়ানোর কোন অবস্থা নেই। বিদেশি ঋণ শোধ করার মতো অবস্থাও নেই।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে ‘কেমন বাজেট চাই’ নামের এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের রাজনীতি যদি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি তাহলে শরীরে অন্যান্য জায়গায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। গতবার থেকে এবার কী এসেছে। আপনারা যদি দেখেন গত ১০ বছরে আমরা ব্যক্তি পর্যায়ে রাজস্ব সেভাবে বাড়েনি। আজকে যদি করোনার কথা বলেন, তাহলে অর্থনীতির বিবেচনা ঠিক হলো না।

তিনি বলেন, আমাদের কথার সাথে আইএমএফআইয়ের অনেক কথাই মিলবে না, কিন্তু আমাদের দেশের অর্থনীতিবিদের মধ্যে আমরা মোটামুটি একটা ঐক্যমতে এসেছি। সেটা হলো মূল্যস্ফীতি ও সমষ্টিক অর্থনীতির। এটা আমরা যেভাবে বলি না কেন, এটা বিনিময় হার দিয়ে বলি, পণ্য মূল্য দিয়ে বলি অথবা সুদের হার দিয়ে বলি। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ১ নম্বর বিষয় হিসেবে সবার কাছে প্রতিপালিত হবে। কারণ এটা অনেকটা শরীরে ডায়েবেটিকের মত।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরের হিসেব যদি ধরেন, তাহলে এত জটিল ও আর্থিক বাজেট হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। এই জটিল আর্থিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে কারণ হলো আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে। সেটা আপনি পণ্য মূল্যই বলেন আর বাজারে মন্দার কথাই বলেন।

প্রখ্যাত এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পৃথিবীতে এখন যে ধরনের রাজনীতি হচ্ছে তার ফলে আমাদের আঞ্চলিক রাজনীতি এবং ভূ-কৌশলগত বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি আমাদের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। সেহেতু সাধারণ ভাবেই যদি আপনি বলেন, এই বাজেট অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির ভিতরে আসছে। তাই এই বাজেট অন্য যেকোন বছরের থেকে কঠিন এবং সর্বোপরি বাংলাদেশ এই মুহূর্তে আইএমএফএর সাথে একটি শর্তযুক্ত ঋণের মধ্যে রয়েছে। সমস্ত প্রতিশ্রুতি প্রতিপালন করাটা এখন বাধ্যবাধকতা হয়েছে। তাহলে এই পরিস্থিতিতে আগামী বাজেটে আমরা কী চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

;

গাইবান্ধা এলজিইডির উদাসীনতা: টেন্ডার ছাড়াই ব্রিজের মালামাল বিক্রি ঠিকাদারের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গাইবান্ধায় কোনো প্রকার দরপত্র ছাড়াই স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) একটি ব্রিজের পুরোনো মালামাল বিক্রি করে দিয়েছে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে এসব মালামাল বিক্রি করেছেন নতুন ব্রিজ নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘জাকাউল্লা অ্যান্ড ব্রাদার্স’। প্রতিষ্ঠানটি ব্রিজটি ভেঙে ব্রিজের দুই পাশের ইট-রডসহ সবকিছু খুলে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ট দফতরের যোগসাজশে এসব মালামাল বিক্রি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ভাঙা ওই ফুট ব্রিজটি (হেঁটে চলার ব্রিজ) জেলার সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের থানসিংহপুর এলাকায় আলাই নদীর ওপর অবস্থিত। ব্রিজটি সকলের কাছে ‘নোয়াচোরা’ ব্রিজ বলে পরিচিত।

সূত্র জানায়, প্রায় দেড় যুগ আগে সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের থানসিংহপুর এলাকার আলাই নদীর উপর ফুট ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। নদীর উপর নির্মিত এই ব্রিজটি দিয়ে রিকশা-ভ্যান এবং ভারী কোন যানবাহন চলতে না পারলেও এ পথ দিয়ে প্রতিদিন উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এলাকার শত শত মানুষ হেঁটে, মোটরসাইকেল এবং বাইসাইকেল যোগে পারাপার হতেন।

তবে, সময়ের সাথে সাথে যোগাযোগে জরুরি এই ব্রিজটি প্রশস্ত এবং নতুন করে নির্মাণের দাবি তোলে স্থানীয়রাসহ ওই পথ দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। পরে উন্নত যোগাযোগের স্বার্থে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেখানে ৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫৪ মিটার একটি আধুনিক ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় গাইবান্ধার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এলজিইডি।

পরে দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্রিজটি নির্মাণের দায়িত্ব পায় ‘জাকাউল্লা এন্ড ব্রাদার্স’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কেবলমাত্র টেন্ডারপ্রাপ্ত হয়েই কোনো প্রকার দরপত্র ছাড়াই ব্রিজটি ভেঙে ইট ও রডসহ সকল মালামাল দিনে-দুপুরে বিক্রি করে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে এসব মালামাল ভাঙা ও পরিবহনের ভিডিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। পরে বিষয়টি নিয়ে ফুঁসে ওঠেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, সদর এলজিইডি কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে এবং জেলা এলজিইডি বিভাগের উদাসীনতা ও যথাযথ নজরদারির অভাবে এসব মালামাল টেন্ডার ছাড়াই দিনে-দুপুরে চুরি করে বিক্রি করা হয়েছে।

পরে এই ঘটনা প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে সত্যতা মেলায় গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতর থেকে অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সরিয়ে ফেলা মালামাল ফেরত দেওয়ার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়।

বোয়ালী ইউনিয়নের থানসিংহপুর এলাকার মুদি দোকানদার মোসলেম উদ্দিন বলেন, আমরা দেখেছি ঠিকাদারের লোকজন ট্রাক্টর দিয়ে ব্রিজটির ভাঙা অংশের সব মালামাল নিয়ে গেছে। পরে শুনলাম সেটি নাকি টেন্ডার ছাড়াই করেছে ঠিকাদার। তবে, এতবড় ঘটনা ঠিকাদার একা করার সাহস পাবে না, এর সাথে অবশ্যই ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসের লোকজন জড়িত আছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাকাউল্লা এন্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী জাকাউল্লা মোবাইল ফোনে বলেন, সারাদেশেই আমার বেশ কয়েকটি সাইটে কাজ চলমান রয়েছে। গাইবান্ধার ওই ব্রিজটি নির্মাণ কাজের জন্য আমার প্রতিনিধি রয়েছে। টেন্ডার ছাড়া পুরাতন ব্রিজের মালামাল বিক্রির বিষয়ে আমার জানা নেই। আমি কোনো নোটিশও পাইনি। তবে, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব, বলেন তিনি।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলীর কার্যালয়ের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাবিউল ইসলাম মোবাইল ফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘটনার পর পরেই অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সরিয়ে ফেলা মালামাল ফেরত দেওয়াসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

নোটিশের জবাব পেলে অথবা জবাব না দিলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

;