‘জায়গাটিকে খুবই নিজের বলে মনে হয়’
![ছবি: বার্তা২৪.কম](https://imaginary.barta24.com/resize?width=800&height=450&format=webp&quality=85&path=uploads/news/2024/Mar/08/1709890333144.jpg)
ছবি: বার্তা২৪.কম
সম্প্রতি ঢাকা সফর করে গেছেন ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া মেঘালয় প্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী স্নিয়াভলং ধরের নেতৃত্বে ৬৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ঢাকায় মেঘালয় তথা পূর্ব ভারতের অধিবাসীদের কাছে পরম শ্রদ্ধেয় স্বাধীনতা সংগ্রামী খাসিয়া বীর ইউ তিরৎ সিংয়ের ভাস্কর্য উন্মোচনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা প্রতিনিধি দলটি পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের জেলখানা পরিদর্শন করেন, যেখানে একসময় কারাবন্দী ছিলেন তিরৎ সিং।
পরে প্রতিনিধি দল ঢাকার আহসান মঞ্জিল জাদুঘরও পরিদর্শন করেন। আহসান মঞ্জিল চত্বরে বার্তা২৪.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রতিনিধি দলের প্রধান মেঘালয়ের উপ-মুখ্যমন্ত্রী স্নিয়াভলং ধর পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে তিনি ‘জায়গাটিকে খুবই নিজের বলে মনে হয়’ উল্লেখ করে বাংলাদেশের সঙ্গে মেঘালয়ের নাগরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য তাঁর প্রাদেশিক সরকারের আগ্রহের কথাও তুলে ধরেন।
রিপন রেজার ক্যামেরায় স্নিয়াভলং ধরের এই সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন পরিকল্পনা সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম ও স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইশতিয়াক হুসাইন।
বার্তা২৪.কম: এবার মেঘালয় সরকারের এই প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফরের সম্পর্কে জানতে চাই…
স্নিয়াভলং ধর: বাংলাদেশে আমাদের এবারের সফর মেঘালয়ের জনগণের জন্য নানা কারণেই বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত এজন্য যে, ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনামলে আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী ‘খাসিয়া বীর’ ইউ তিরৎ সিং ঢাকাতে বন্দি অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন, তাঁর প্রতি আমরা শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি। এই সফর আমাদের জনগণের আবেগকে স্পর্শ করেছে। বাংলাদেশের সরকার ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনকে আমরা মেঘালয় ও ভারতের জনগণের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য।
বার্তা২৪.কম: মেঘালয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের স্থলসীমা রয়েছে। রাজধানীর ঢাকার সবচেয়ে কাছের ভারতীয় রাজ্য মেঘালয়। ব্যবসা ও পর্যটনে ক্ষেত্রে এ সুযোগকে কিভাবে কাজে লাগাতে পারি আমরা?
স্নিয়াভলং ধর: নি:সন্দেহে বাংলাদেশ ও মেঘালয়ের মধ্যে একটি শক্তিশালী বন্ধন রয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসার ক্ষেত্রে। আমাদের মধ্যে অনেক কিছু আমদানি-রপ্তানি হচ্ছে। আপনারা জানেন, বহু বাাংলাদেশি মেঘালয়ে ঘুরতে যান। আমরা সব সময় এদেশের মানুষকে মেঘালয়ে স্বাগত জানাই। আবার আমাদের মানুষেরা এখানে আসেন। আমরা এই আসা-যাওয়া আরও সহজ করতে পর্যটন নীতিমালা করতে চাই; যাতে দু’দেশের মানুষেরই উপকৃত হয়। এরই অংশ হিসেবে এখন মেঘালয় ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক বিষয়ে আলোচনা করছি। কারণ বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মেঘালয়ে তাদের ব্যবসা বিস্তৃত করছে। আমরা চাইছি, এই ব্যবসায়িক সম্পর্ক কিভাবে আরো জোরদার করা যায়।
বার্তা২৪.কম: সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও মুক্তিসংগ্রামের চেতনা এই সম্পর্ক উন্নত করতে কি প্রভাব ফেলতে পারে…
স্নিয়াভলং ধর: আমাদের অনেক ক্ষেত্রেই অভিন্ন ঐতিহ্য রয়েছে। সেটা সংস্কৃতিগত ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের আলোকে একটি গভীর সংযোগ রয়েছে বাংলাদেশ আর মেঘালয়ের মধ্যে। আমরা এই পরম্পরাকে কাজে লাগাতে চাই। খাসিয়া বীর তিরৎ সিংয়ের ঢাকার স্মৃতি দেখতে আমাদের এই সফর তারই অংশ। সেই সঙ্গে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মসূচি বিনিময়ের পরিকল্পনা করছি।
বার্তা২৪.কম: বাংলাদেশ-মেঘালয়ের জনগণের সম্প্রীতি বাড়াতে গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা কিভাবে দেখেন…
স্নিয়াভলং ধর: প্রতিবেশী দেশের জনগণের পারস্পারিক যোগাযোগ বাড়াতে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। লক্ষ্য করে দেখবেন, ঢাকায় তিরৎ সিংয়ের এই মেমোরিয়াল উম্মোচনের সংবাদটি গণমাধ্যমের মাধ্যমেই গণমানুষ জানতে পারছে। আমি নিজেও মনে করি, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে; বিশেষ করে নাগরিক সম্পর্ক গভীর করতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অব্যাহত থাকা জরুরি।
বার্তা২৪.কম: বর্তমান বাংলাদেশ ঘুরে দেখার পর এখন আপনার অনুভূতি কেমন?
স্নিয়াভলং ধর: যখনই আমি বাংলাদেশে আসি এই জায়গাটিকে খুবই নিজের বলে মনে হয়। বাংলাদেশের ক্রমাগত এগিয়ে যাওয়া আমাদের দারুণভাবে আনন্দিত করে। এখানে যতগুলো কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি সব জায়গাতে আমাকে ও আমার প্রতিনিধি দলকে উঞ্চ সবংর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আমরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান। এর জন্য এদেশের মানুষ ও সংশ্লিষ্ট সবাই অনেক ধন্যবাদ জানাই।