ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতের পরপরই সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ও থানায় চালানো হয় হামলা, করা হয় লুটপাট, ছিনিয়ে নেয়া হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদ।
এ ঘটনার পর গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বিগত ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। এই সময়ের মধ্যে বৈধ অস্ত্রও জমা না দিলে সেগুলোও অবৈধ হবে বলে জানানো হয়।
তবে ঘোষণার পরও অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা না দেওয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে মোট ১৫৫টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে ৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি মিডিয়া ইনামুল হক সাগর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ইনামুল হক সাগর জানান, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ হতে শুরু হওয়া অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে আজ পর্যন্ত মোট অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে ১৫৫টি। মোট গ্রেফতার করা হয়েছে ৭২ জনকে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রিভলবার- ৮টি, পিস্তল- ৪৬টি, রাইফেল- ১১টি, শটগান- ১৮টি, পাইপগান- ৫টি, শুটারগান- ১৯টি, এলজি- ১৩টি, বন্দুক- ২৪টি, একে ৪৭- ১টি, গ্যাসগান- ১টি, চাইনিজ রাইফেল- ১টি, এয়ারগান- ১টি, এসবিবিএল- ৩টি, এসএমজি- ৩টি, টিয়ার গ্যাস লঞ্চার- ১টি।
এদিকে পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ি, গত ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লুট হওয়া অস্ত্রের প্রস্তুতকৃত তালিকায় হারানো অস্ত্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৮১৮টি। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছে ৩ হাজার ৯৩৩টি। এখনও উদ্ধার হয়নি ১ হাজার ৮৮৫টি।
লুট হওয়া ও উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে-
৭.৬২ * ৩৯ মি.মি রাইফেল - (চায়না) = লুট হয়েছে ১১৩৫টি, উদ্ধার হয়েছে ৮৩৯টি, নিখোঁজ ২৯৬টি।
৭.৬২ * ৩৯ মি.মি রাইফেল - টি ০৮ (বিডি) = লুট হয়েছে ১০টি, উদ্ধার হয়েছে ৯টি, নিখোঁজ ১টি।
৭.৬২ * ৩৯ মি.মি এসএমজি -টি ৫৬ (চায়না) = লুট হয়েছে ২৫১টি, উদ্ধার হয়েছে ১৯১টি নিখোঁজ ৬০টি।
৭.৬২ * ৩৯ মি.মি এলএমজি - টি ৫৬ (চায়না) = লুট হয়েছে ৩২টি, উদ্ধার হয়েছে ২১টি নিখোঁজ ১১টি।
৭.৬২ * ২৫ মি.মি পিস্তল - টি ৫৪ (চায়না) = লুট হয়েছে ৪৪২টি, উদ্ধার হয়েছে ২৭০টি নিখোঁজ ১৭২টি।
৯ * ১৯ মি.মি পিস্তল = লুট হয়েছে ১১১৮টি, উদ্ধার হয়েছে ৪৬১টি নিখোঁজ ৬৫৩টি।
৯* ১৯ মি.মি এসএমজি /এসএমটি = লুট হয়েছে ৩৩টি, উদ্ধার হয়েছে ৩২টি নিখোঁজ ১টি।
১২ বোর শটগান = লুট হয়েছে ২১৯১টি, উদ্ধার হয়েছে ১৬২৪টি নিখোঁজ ৫৬৭টি।
৩৮ মি.মি গ্যাস গান- ( সিঙ্গেল শট) = লুট হয়েছে ৫৯৩টি, উদ্ধার হয়েছে ৪৭৬টি নিখোঁজ ১১৭টি।
৩৮ মি.মি টিয়ার গ্যাস লাঞ্চার - ( সিক্স শট) = লুট হয়েছে ১৪টি, উদ্ধার হয়েছে ৯টি নিখোঁজ ৫টি।
২৬ মি.মি সিগন্যাল পিস্তল = লুট হয়েছে ৩টি, উদ্ধার হয়েছে ১টি নিখোঁজ ২টি।
লুট হওয়া ও উদ্ধার হওয়া গোলাবারুদের মধ্যে রয়েছে-
বিভিন্ন বোরের গুলি = লুট হয়েছে ৬০৭২৬২টি, উদ্ধার হয়েছে ৩১২৮৫৭টি নিখোঁজ ২৯৪৪০৫টি
বিভিন্ন ধরনের টিয়ারগ্যাস সেল= লুট হয়েছে ৩২০০৫টি, উদ্ধার হয়েছে ২৩১৯৪টি নিখোঁজ ৮৮১১টি।
বিভিন্ন ধরনের টিয়ারগ্যাস গ্রেনেড = লুট হয়েছে ১৪৫৫টি, উদ্ধার হয়েছে ৭০৪টি নিখোঁজ ৭৫১টি।
সাউন্ড গ্রেনেড = লুট হয়েছে ৪৬৯২টি, উদ্ধার হয়েছে ২১২৮ টি নিখোঁজ ২৫৬৪টি।
কালার স্মোক গ্রেনেড = লুট হয়েছে ২৯০টি, উদ্ধার হয়েছে ২১৩ টি নিখোঁজ ৭৭টি।
সেভেন/ মাল্টিপল ব্যাং স্টান গ্রেনেড = লুট হয়েছে ৫৫টি, উদ্ধার হয়েছে ১৮টি নিখোঁজ ৩৭টি।
ফ্লাস ব্যাং/ ৬ ব্যাং গ্রেনেড = লুট হয়েছে ৮৯৩টি, উদ্ধার হয়েছে ৫৩৩ টি নিখোঁজ ৩৬০টি।
হ্যান্ড হেল্ড টিয়ার গ্যাস স্প্রে (ক্যানিস্টার)= লুট হয়েছে ১৭৭টি, উদ্ধার হয়েছে ৯৪ টি নিখোঁজ ৮৩টি।