‘এক নিমেষেই সব শেষ হয়ে গেলো আমার’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

‘এক নিমেষেই সব শেষ হয়ে গেলো আমার। এখন কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবো, কীভাবে সংসার চালাবো, কীভাবে কর্মচারীদের বেতন দিবো তা ভেবে পাচ্ছি না।’ রাজধানী মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের এক ব্যবসায়ী কান্না জড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন। 

ব্যবসায়ীদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠেছে মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট এলাকা। আগুনে পুড়ে গেছে কোটি কোটি টাকার মালামাল। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। রাত ৪টার দিকে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে সকাল সাড়ে ৯টায়। এর মধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে অনেক দোকানপাট। 

বিজ্ঞাপন

কৃষি মার্কেটের ভয়াবহ আগুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। এ মার্কেটে সবজি দোকানের পাশাপাশি জুতার দোকান, স্বর্ণের দোকানসহ অনেক ধরনের দোকান রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোতে কোটি কোটি টাকার মালামাল ছিল। 

আবুল হাসান নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ছয় মাস আগে ঋণ করে দোকান নিয়েছি। এখন আমি কীভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করবো? আগুন লাগার পর একটা মালও বের করতে পারি নাই। আমার সব শেষ হয়ে গেলো।’

কাঁদতে কাঁদতে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘ভাই আমি শেষ। রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় গিয়েছি। আর সকালে খবর পেলাম মার্কেটে আগুন লেগেছে। আমার ক্যাশে অনেক টাকা ছিল। আমার আর কোনো সম্বল নেই।’ 

ধানমন্ডি-মোহাম্মদপুর এলাকার বহু মানুষ তাদের নিত্যদিনের কেনাকাটার জন্য এ মার্কেটের ওপর নির্ভর করতেন। মার্টেকটিতে ৫শর বেশি দোকান ছিল। এসব দোকানে কাজ করে ২ হাজারের বেশি মানুষ জীবিকা নির্বাহ করতেন।  

রাজধানী মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে আগুন লাগার দৃশ্য


ব্যবসায়ীরা বলছেন, এর আগে নিউ মার্কেটে, বঙ্গবাজারে আগুনের সময় তারা দেখেছেন আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের প্রধান উপকরণ পানি। কিন্তু রাজধানীতে পানির উৎসের সঙ্কট রয়েছে। পানির উৎস খুঁজতে খুঁজতে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে আরও ছড়িয়ে পড়েছিল। 

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় ফায়ার সার্ভিস অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশনস অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ফুটপাত ও সড়কে দোকান থাকায় ও মানুষের ভিড়ের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। এখানে পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না।’

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৪ টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর অগ্নিনির্বাপণ সাহায্যকারী দল। প্রায় সাড়ে ৫ ঘন্টা চেষ্টার পর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে তারা।