রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নতুন জনবল নিয়োগের টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। নতুন নিয়োগ না হতেই চুক্তিভিত্তিক প্রায় অর্ধেক কর্মী ছাটাই করেছেন সদ্যবদলি হওয়া পরিচালক। এ অবস্থায় হাসপাতালের কার্যক্রম ব্যাহতসহ ছাঁটাইকৃত স্বাস্থ্যকর্মীদের বেড়েছে দুর্গতি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমনিতেই জনবল সংকট তার উপর ছাঁটাই। সংকটের উপর সংকট সৃষ্টি মানেই রোগী ও স্বজনদের ভোগান্তি। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে দীর্ঘদিন ধরে জনবল সংকটে থাকা রমেক হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাসহ সেবামূলক কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে।
এদিকে রমেকে জনবল বৃদ্ধি না পেলেও হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার পরিধি বেড়েছে দ্বিগুণ। ঘোষিত ১ হাজার রোগীর স্বাস্থ্য সেবার পরিবর্তে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশী রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন। এছাড়াও প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন।
পাশাপাশি রোগীর স্বজন, চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে প্রতিদিন অনেক মানুষের সমাগম হয় এই হাসপাতালে।
কর্মচারীরা বলছেন, জনবল সংকটে তিন শিফটে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় নাভিশ্বাস উঠেছে তাদের। উপরন্তু, নতুন জনবল নিয়োগ না হতেই চুক্তিভিত্তিক জনবল হ্রাস করায় পরিস্থিতি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সচেতন মহল বলছেন, সম্প্রতি নতুন জনবল সরবরাহের জন্য টেন্ডারে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানটির দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) কর্তৃক সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও কাজ না দেয়া রহস্যজনক।
দ্রুত স্থগিত জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে ঠিকাদাররা বলেছেন, মূল্যায়ন কমিটির সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার পর কেন গোল্ফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডকে কাজ না দিয়ে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান এবং সর্বশেষ টেন্ডার স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে টিইসির সদস্য সচিব এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আ. ম. আখতারুজ্জামান বলেন, সদ্যবদলি হওয়া পরিচালক নিজ ক্ষমতাবলে পুনরায় টেন্ডার আহ্বান ও স্থগিত করেছেন। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না। তবে প্রাথমিক এবং কারিগরি মূল্যায়ন শেষে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত গোল্ফ সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের সুপারিশসহ টেন্ডার অনুমোদনের পরবর্তী গ্রহণ ও অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদনে রমেক পরিচালককে অবগত করা হয়েছিল।
তিনি স্বীকার করেন, বর্তমানে হাসপাতালের পরিধি ও কার্যক্রম অনেক বেড়েছে, কিন্তু জনবল সে তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি নতুন জনবল নিয়োগ না করে চুক্তিভিত্তিক জনবল হ্রাস ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে সদ্যবদলি হওয়া রমেক হাসপাতালের পরিচালককে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন দেয়ার জন্য বলেন। পরে একাধিকবার হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায় নি।