ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গীত প্রশিক্ষণ দেবে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল স্কুলস অব মিউজিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (জিআইএস)-এর শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিকমানের সঙ্গীত প্রশিক্ষণ দেবে যুক্তরাজ্যের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েটেড বোর্ড অব দ্য রয়্যাল স্কুলস অব মিউজিক (এবিআরএসএম)।  আজ বুধবার (৩১ মে) রাজধানীর সাতাকুলে অবস্থিত জিআইএস ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে এ সম্পর্কিত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে পারফর্মিং আর্টস ও সংগীতের ক্ষেত্রে জিআইএস শিক্ষার্থীদের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে এবিআরএসএম’র প্রতিনিধি মো. শাফায়েতুল ইসলাম, গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রিন্সিপাল রমেশ মুডগাল, হেড অব জুনিয়র স্কুল কুমকুম হাবিবা জাহান এবং এসটিএস ক্যাপিটালের হেড অব অপারেশনস জাহাঙ্গীর কবির।

শিশুর শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে পারফর্মিং আর্টসের গুরুত্ব অনুধাবন করে শিক্ষার্থীদের জন্য সমৃদ্ধ ও বিস্তৃত পরিসরের শৈল্পিক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে চায় জিআইএস। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে অভিজ্ঞ এবিআরএসএম কোচদের কাছ থেকে পিয়ানো, গিটার ও বেহালা (ভায়োলিন) শেখার সুযোগ পাবে জিআইএস শিক্ষার্থীরা। এই প্রশিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাদ্যযন্ত্রের দক্ষতা বিকশিত করতে সহায়তা করবে ও তাদের অনুপ্রাণিত করবে; যা বাংলাদেশে কো-কারিকুলার শিক্ষাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে।

এই অংশীদারত্বের কেন্দ্রে রয়েছে এবিআরএসএম সুপারিশকৃত সঙ্গীতের পাঠক্রম। এ পাঠক্রম অনুসরণ করে গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অত্যাধুনিক মিউজিক স্টুডিওতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গীতের পাঠদান করা হবে। বিশেষ এই কারিকুলামের সাথে এবিআরএসএমের দক্ষ প্রশিক্ষকদের নির্দেশনা, সঙ্গীতের পাঠ গ্রহণে শিক্ষার্থীদের মেধা ও দক্ষতার পরিপূর্ণ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কোর্স সফলভাবে শেষ করার পর এবিআরএসএমের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণের সুযোগ পাবে জিআইএস শিক্ষার্থীরা; অর্জন করতে পারবে বোর্ডের সম্মানজনক সনদ।

গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ রমেশ মুডগাল বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বিক শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং গৎবাঁধা শিক্ষাগ্রহণ থেকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই অংশীদারত্ব জিআইএসের জন্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে। সঙ্গীতের প্রতি গভীর উপলব্ধি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একই ধরনের ভাবনা পোষণ করে গ্লেনরিচ ও এবিআরএসএম। এমন একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্ব করতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানে একটি প্রাণবন্ত ও মননশীল মিউজিক্যাল কমিউনিটি গড়ে তুলতে আমরা একযোগে কাজ করবো।’

এবিআরএসএম’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি সাফায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সাথে অংশীদারত্ব নিয়ে আমরা আশাবাদী। স্থানীয় শিক্ষাক্ষেত্রে গঠনমূলক পরিবর্তন নিয়ে আসতে স্কুলটির আগ্রহ আর আমাদের দক্ষতা ও রিসোর্সের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সমৃদ্ধ ‘মিউজিক্যল’ পরিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো আমরা, যেখানে তারা নিজেদের অমিত সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে পারবে ও বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। আমরা বিশ্বাস করি, সঙ্গীত শেখার ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট নির্বিশেষে প্রত্যেক ব্যক্তিরই সুযোগ থাকা উচিত।’

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠার লক্ষ্যে, গ্লেনরিচ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য সার্বিক শিক্ষার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সার্বিক শিক্ষা ও চারিত্রিক উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিকভাবে সমৃদ্ধ ও দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বের উপযোগী করে প্রস্তুত করবে জিআইএস। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় সংগীত শিক্ষাঙ্গন - এবিআরএসএম একইসাথে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মিউজিক এক্সাম প্রোভাইডার, যারা ৯০টিরও বেশি দেশে বছরে ৬ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মূল্যায়ন সম্পন্ন করে। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এবিআরএসএমের অত্যন্ত সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। সংগীতের প্রতি গভীর ভালোবাসা লালন করা ও এর গুরুত্বপূর্ণ অর্জনগুলোকে অনুপ্রাণিত করা, বহু বছর ধরে তারা তাদের এই লক্ষ্যে অবিচল রয়েছে। অনুদানের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে সঙ্গীত শিক্ষার উদ্যোগে সহায়তা করতে নিবন্ধিত এই দাতব্য সংস্থাটি নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

   

৮টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার ১১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম 
৮টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার ১১

৮টি চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার ১১

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম মহানগরী ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোটরসাইকেল চোর চক্রের মূলহোতাসহ ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলে ৮টি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (উত্তর ও দক্ষিণ) উপপুলিশ কমিশনার নিহাদ আদনান তাইয়ান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মোটরসাইকেল চোর চক্রের মূলহোতা আব্দুল্লাহ আল রায়হান (১৯) এবং তার সহযোগী ইরফাদুল আলম (১৯) ও আক্তার হোসেন (২০), শহিদুল (৩০), মোস্তাফিজুর প্রকাশ অনিক(১৯), আব্দুল্লাহ(১৮), মামুনুর রশিদ(২৬), রিয়াজউদ্দিন (১৯), শাকিব (১৯), রিফাত (১৯) ও সাইদুল ইসলাম(১৯)।

নগর ডিবির উপপুলিশ কমিশনার নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, ‘আমাদের একটি টিম সোমবার নগরীর হালিশহর থানাধীন বড়পোল এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেল চোর চক্রের মূলহোতা আব্দুল্লাহ আল রায়হানসহ তিনজনকে চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেফতার করে। 

তিনি আরও বলেন, চোরাই চক্র মহানগর ও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন পন্থায় চুরি মোটরসাইকেল করে নিজেদের হেফাজতে রাখে। পরে তা অনলাইনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে এবং অন্যান্য চোরাই চক্রের সাথে যোগযোগ করে এগুলো বিক্রয় করে দেয়।

তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃতরা তিনজনের দেওয়া তথ্যে মীরসরাই থানা এলাকায় ৫টি, জোরারগঞ্জ থানা এলাকায় ২টিসহ মোট ৮টি নাম্বারবিহীন বিভিন্ন মডেলের চোরাই মোটরসাইকেলসহ ওই চক্রের আরও ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালত পাঠানো হচ্ছে।

;

রংপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
রংপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

রংপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের কাউনিয়ায় বৈদ্যুতিক শক খেয়ে সনিয়া বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গোপিডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে

নিহত সনিয়া ওই গ্রামের রিপন মিয়ার স্ত্রী এবং পাবনা সদরের চর বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে সনিয়া বেগমের সাথে রিপনের বিয়ে হয়। সোমবার বিকেল ৩টার দিকে রিপনকে সন্তান নিয়ে বাজারে যেতে বলেন সনিয়া। রিপন সন্তানকে নিয়ে বাজারে গেলে সনিয়া নিজ শয়ন ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ পরেও তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেন। 

একপর্যায়ে দরজা খুলে বিছানার চাদর ও বালিশে আগুনের ধোঁয়া এবং বিদ্যুতের ছেঁড়া তারের পাশে খাটের ওপর সনিয়াকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ শ্বশুরবাড়ি থেকে সনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে

কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, ‘সনিয়া নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।’

;

কারাভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ২৯ বাংলাদেশি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম কক্সবাজার 
কারাভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ২৯ বাংলাদেশি

কারাভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ২৯ বাংলাদেশি

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। সেখানে তারা বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে বিজিবি’র টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশে ফেরা ২৯ জনের মধ্যে কক্সবাজারের জেলার মহেশখালী উপজেলার বাসিন্দা ১৩ জন, ৩ জন উখিয়ার ও ৭ জনের বাড়ি টেকনাফ উপজেলায়। এছাড়া বান্দরবান সদর উপজেলার ৩ জন এবং রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ৩ জন দেশে ফিরেছেন।

বিজিবি-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে বিজিবি ও বিজিপি’র মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং মিয়ানমারে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের যৌথ উদ্যোগে যথাযথ কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। স্বজনের কাছে তাদের পৌঁছে দিতে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’ 

;

লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের আর্জি: ‘আমরা জানটা ভিক্ষা চাচ্ছি’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘আমরা নয় প্রবাসী বর্তমানে লিবিয়াতে আছি। দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে আমরা এখানে এসেছি। কিন্তু এখানে কোনো কাজ নেই। ফলে আমরা খুব অভাব আর নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাদের দেওয়ার মতো এখন আর কিছু নেই। আমরা তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জানটা ভিক্ষা চাচ্ছি। যেভাবে হোক আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হোক।’

দালালের মাধ্যমে ইউরোপে যেতে গিয়ে লিবিয়ায় আটকে পড়াদের একজন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ করিম তাঁর পরিবারের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় এই আর্জি জানিয়েছেন। ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে করিমের সঙ্গে লিবিয়ায় আটকে পড়া আরও আটজনকেও দেখা যায়। সেই দলের মাঝখানে বসে করিম জানান, তাদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা। করিমের সেই ভিডিওবার্তা পেয়ে চোখ ভিজে যাচ্ছে নয় প্রবাসীর স্বজনদের। তারা ভিডিওটি নিয়ে প্রশাসনের কাছে দৌঁড়াচ্ছেন ভাই কিংবা ছেলেকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনার আবেদন নিয়ে।

করিমের সঙ্গে আটকে পড়া বাকি আটজনও বাঁশখালীর বাসিন্দা। তারা হলেন গন্ডামারা ইউনিয়নের রুকনুল ইসলাম, মো. মোরশেদুল আলম, মোহাম্মদ কাউছার মিয়া, আজগর হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ আশেক ও তার ভাই ইব্রাহিম খলিল এবং বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদীর আইয়ুব আলী।

লিবিয়ায় আটকে পড়া নয় যুবকদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে ইউরোপ নেওয়ার কথা বলে ৮ থেকে ১ বছর আগে দালালেরা তাদের নিয়ে যান। কিন্তু ইউরোপ না নিয়ে তাদের লিবিয়ার বেনগাজিতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখানে গিয়ে তাদের কোনো কাজ দেয়া হয়নি। জঙ্গলে আটকে রেখে উল্টো আরও টাকার জন্য নির্যাতন করা হয়। সেসব শোনার পর অসহায় পরিবারগুলো জমি বিক্রি আর ধারদেনা করে টাকা পাঠিয়ে দালালের হাতে তুলে দেয়। নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকলে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই ৯ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক সহযোগিতা ও সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। এরপর ইউএনও উদ্যোগ নিলে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস ওই নয় প্রবাসীকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসে।

ছেলের ভিডিও পাওয়ার পর ঘুমাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন লিবিয়ায় আটকে পড়া মোহাম্মদ করিমের বাবা আবু আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেসহ নয়জন কি যে কষ্টে আছে তা ভিডিওবার্তা দেখার পর অনুভব করতে পারছি। তাদের কষ্টের কথা শোনার পর থেকে ঘুম আর খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে আমাদের। এত কষ্ট করে, জমি বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশ পাঠালাম এত কষ্ট পাওয়ার জন্য? আমি সরকারের কাছে শুধু একটাই আবেদন করছি-আমার ছেলেসহ সবাইকে একটু দয়া করে মা-বাবার বুকে ফিরিয়ে দিন।’

লিবিয়ায় আটকে পড়া দুই ভাই মোহাম্মদ আশেক ও ইব্রাহিম খলিলের মা সুনিয়া বেগম। স্বামী অলি আহমদ মারা গেছেন আগেই। এখন দুই ছেলের কষ্টের কথা শুনে শয্যাশায়ী বৃদ্ধা সুনিয়া। ছেলেদের কথা জিজ্ঞাসা করতেই কান্নায় গলা বুজে আসে সুনিয়ার। অস্ফুট স্বরে বলতে থাকেন, ‘আমার দুই ছেলেকে দেখে মরতে চাই। আমার আর কিচ্ছু চাওয়ার নেই।’ 

ভিডিও বার্তা দেখার পর গিয়াস উদ্দিনের বাবা আবদুল মজিদের অবস্থাও একই। অসহায় এই বাবা শুধু বললেন, ‘যদি টাকা থাকত, আমি নিজেই ছেলেকে নিয়ে আসতে লিবিয়া উড়ে যেতাম। কিন্তু আমার তো অত টাকা নেই।’

পুরো ভিডিওতেই মোহাম্মদ করিম একাই কথা বলেছেন। তাঁর দুই পাশে বাকি ৮জন দুঃখমাখা চেহেরায় নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

করিম এক নাগাড়ে তুলে ধরেন নির্যাতনের চিত্র, তুলে ধরেন এখন কেমন আছেন তা-ও। বলেন, ‘আমাদের মা বাবারা খুব অসহায় হয়ে পড়েছে। আমাদের যেসব জমি ছিল, সব বিক্রির পরেও আমরা এখান থেকে যেতে পারছি না। আমাদের দুবার আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। একেকজন থেকে ১০-১৫ লাখ টাকা করে আদায় করেছে দালালেরা। এখন আমাদের দেওয়ার মতোও আর কিছু নেই।’

আটকে পড়া লিবিয়ারা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি সাহায্য চান স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। আর বর্তমানে তাঁদের নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা করার জন্য ইউএনওর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

আটকে পড়া নয় বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে আলাপ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার। তিনি বলেন, দূতাবাসকে নয় বাংলাদেশী দালালের হাতে আটক থাকার বিষয়টি জানাই। এরপর দূতাবাসের উদ্যোগে তাঁদের দালালদের হাত থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের ভিসা-পাসপোর্ট কিছু না থাকায় এখন কীভাবে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা চলছে। পরিবারের কাছে পাঠানো ভিডিওবার্তাটি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।’

;