বর্তমান পদ্ধতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: জিএম কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান পদ্ধতিতে সুষ্ঠুভাবে হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে দাবি করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সব ব্যবস্থা সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকতে হবে। বর্তমানে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে তাতে করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

বুধবার (২৪ মে) বিকেলে রংপুরে ৫ দিনের সফরে এসে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার এই দুই মাধ্যমের বাইরে এমন একটা পদ্ধতি খুঁজতে হবে যে পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।

ডলার সংকটের কারণে দেশে রাজনৈতিক সংকট বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে জিএম কাদের বলেন, ডলার সংকট একটি ভয়াবহ সংকট। এটি সঠিকভাবে সমাধান না করতে পারলে, রাজনৈতিক সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে। বর্তমান সরকারের জন্য ডলার সংকট আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

সাবেক এই মন্ত্রী আরও বলেন, জাতীয় পার্টির সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই আগামী দিনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিকল্প বড় দল হিসেবে কিভাবে জনগণের ভোটে সরকার গঠন করা যায়, সেই লক্ষ্য নিয়ে সারাদেশে দল গোছানোর কাজ চলছে।

জিএম কাদের বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একক না কারও সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে হবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সময় ও পরিস্থিতি বলে দেবে জাতীয় পার্টি কি করবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির প্রমুখ।

‌‌‌‌‌‌রংপুরে স্বস্তির বৃষ্টি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
‌‌‌‌‌‌রংপুরে স্বস্তির বৃষ্টি

‌‌‌‌‌‌রংপুরে স্বস্তির বৃষ্টি

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরে বেশ কয়েকদিনের দাবদাহের পর বিভিন্ন এলাকায় স্বস্তির বৃষ্টি হয়েছে।

রোববার (৪ জুন) বিকাল চারটার পর থেকে রংপুর মহানগরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। এর সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া।

গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন জেলার মতো রংপুরেও মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না থাকায় তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়ে শহর থেকে গ্রামে। তাপপ্রবাহের মাত্রাও মৃদু থেকে তীব্র হয়। প্রচণ্ড গরমে দুর্বিষহ হয়ে ওঠে জনজীবন। অবশেষে রোববার সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এতে খানিকটা সময়ের জন্য হলেও জনজীবনে স্বস্তি ফিরেছে।

দীর্ঘদিন পর নামা এ বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরেছে নগরীর প্রাণ প্রকৃতিতে। বৃষ্টির কারণে তীব্র গরম কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সকালের চেয়ে বিকেলের তাপমাত্রা বেশি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্বর এলাকার ব্যবসায়ী হেলাল রহমান বেলাল বলেন, রোববার বিকেলে আচমকা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে খানিকটা সময় বৃষ্টি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছি।

গত কয়েক দিন ধরে লোডশেডিংয়ে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। সঙ্গে টানা কয়েকদিন ধরে তীব্র দাবদাহের কারণে সবখানে হাঁসফাঁস অবস্থা বিরাজ করছিল।

কাউনিয়া উপজেলার নয়া পাড়ার বাসিন্দা মজনু মিয়া জানান, তার গ্রামে বিকেল চারটার আগমুহূর্তে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া ছিল। তবে বৃষ্টির স্থায়ীত্ব বেশিক্ষণ ছিল না।

রংপুরে মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয় তাপপ্রবাহ। গত ১ জুন জেলায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর দিন ২ জুন তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৭ ডিগ্রির ঘরে ছিল। ৩ জুন ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় আগুন ঝরা গরম এবং রাতে ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ ছিল মানুষ। এই দুর্ভোগের সঙ্গে যুক্ত হয় লোডশেডিং। যা কষ্টের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ রোববার (৪ জুন) সকালে দিনের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৭ দশমিক ২ এবং বেলা চারটায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, রোববার বিকেলে জেলার বিভিন্ন স্থানসহ প্রত্যন্ত এলাকায় ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির স্থায়িত্ব ছিল ২০ মিনিট। এ সময় ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

;

১০ টাকায় গাছ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
১০ টাকায় গাছ

১০ টাকায় গাছ

  • Font increase
  • Font Decrease

৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে টাঙ্গাইলে ১০ টাকায় গাছ বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন ও যুবদের জন্য ফাউন্ডেশন।

রোরবার (৪ জুন) দুপুরে শহরের নিরালা মোড় শহীদ মিনার চত্ত্বরে শতাধিক বৃক্ষপ্রেমীরা ১০ টাকায় গাছ কিনতে পেরেছেন।

পরিবেশ রক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতেই এমন উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। সেগুন, আকাশমনি, আমলকি, হরতকি, বহেরা, বাসক, শতমূলী, কাঁঠাল, পেয়ারা, জলপাই, কদবেল, আতা, চালতা,লটকন, ড্রাগন ফলসহ ২৪ প্রজাতির দেড় শতাধিক গাছ ১০ টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে।

১০ টাকায় গাছ কিনতে পেরে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থী জান্নাতুর রহমান বলেন, আমি পেয়ারা গাছ কিনেছি এত কম দামে গাছ পাবো ভাবিনি।

গৃহিনী রোকেয়া সুলতানা বলেন, মাত্র একটি গাছ কিনতে পেরেছি আরও কেনার ইচ্ছা ছিল কিন্তু আয়োজকরা জানিয়েছেন একজন একটির বেশি গাছ ক্রয় করতে পারবেন না।

শিক্ষার্থী রাইয়ান সম্রাট বলেন, ড্রাগন ফল গাছ মাত্র ১০ টাকায় কিনতে পেরেছি এমন আয়োজন নিয়মিত হওয়া উচিত।

সংগঠনের উপদেষ্টা সংস্কৃতিকর্মী সাম্য রহমান বলেন, আমরা যে পরিমাণ গাছ কাটছি তার অর্ধেক গাছও রোপণ হচ্ছে না। মানুষের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে আমাদের এ আয়োজন। পরবর্তীতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বল্পমূল্যে গাছ বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হবে।

১০ টাকায় গাছ কর্মসূচির উদ্যোক্তা মুঈদ হাসান তড়িৎ জানান, এ আয়োজনে দেড় শতাধিক ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ স্বল্পমূল্যে মাত্র ১০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। প্লাস্টিক দূষণ রোধ ও পরিবেশ রক্ষায় বেশি বেশি গাছ রোপণে জনগণ ও শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করতেই আমাদের এ উদ্যোগ।

তিনি আরও জানান, অন্তত মাসে একবার আমরা ১০ টাকায় গাছ বিক্রি করবো। বিত্তবানেরা এগিয়ে এলে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজন করতে চাই আমরা।

এ কর্মসূচিতে সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ মির্জা তৌহিদুল ইসলাম সুলভ, সমন্বয়কারী রাদিত আহমেদ, সামি খান,আহসান খান মিলন, রকিবুল রায়হান, সামিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

;

‘সব জিনিসের দাম বাড়তি, এমন পরিস্থিতি আর হয়েছিল কিনা জানি না’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা বিশ্বে খাদ্যমন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতিতে প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আজকে স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশন, বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের অভাব, যার জন্য এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে কিন্তু জ্বালানির অভাব হচ্ছে। সেখানে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, চলমান অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী

রোববার (৪ জুন) জাতীয় সংসদে উত্থাপিত শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আফসারুল আমীনের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব তোলা হয়। পরে তা সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।

শেথ হাসিনা বলেন, উন্নত দেশে বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বব্যাপী। আমি জানি না আর কখনো এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল কি না। হয়তো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তো দুর্ভিক্ষ, মনান্তর দেখা দিয়েছিল। করোনাভাইরাসের অতিমারি আর এরপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সমগ্র বিশ্বে যে খাদ্যমন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি—এটা প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের অভাব সারা বিশ্বব্যাপী। এখন তো কেনাটাই অনেকটা মুশকিল। ক্রয় করাটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

ইতিমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে আমাদের চুক্তি সই হয়ে গেছে। আমরা জলবিদ্যুৎও আমদানির ব্যবস্থা নিয়েছি। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যেন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আমরা আবার চালু করতে পারি,' যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাইকে অনুরোধ করব বিদ্যুৎ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। সব জিনিস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। আমাদের খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। আমাদের দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য তাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের যা যা করণীয় তা করে যাচ্ছি।

আফসারুল আমীনকে স্মরণ করে তিনি বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রামে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দলের প্রতি তার নিষ্ঠা ও সততা ছিল অতুলনীয়। তিনি মন্ত্রী হিসেবেও অত্যন্ত সাফল্য দেখিয়েছেন।

;

কয়লা গ্যাসের অভাব বিশ্বব্যাপী, কেনা মুশকিল: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের অভাব সারা বিশ্বব্যাপী। এখন কেনাটাই অনেকটা মুশকিল। ক্রয় করাটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়ে গেছে। জলবিদ্যুৎ আমদানিরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আবার চালু করা যায়। রোববার সংসদের বৈঠকে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের অতিমারি আর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সমগ্র বিশ্বে যে খাদ্যমন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি- এটা প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশ সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।

আওয়ামী লীগ দলীয় চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হয়। চলতি সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুতে বৈঠক মূলতবি করার রেওয়াজ রয়েছে। শোক প্রস্তাব গ্রহণের পরের দিনের কার্যক্রম স্থগিত করে সোমবার বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা বলেন, সরকার জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ নিয়েছে। আজকে স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের অভাবের কারণে এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে কিন্তু জ্বালানির অভাব হচ্ছে।

সরকারপ্রধান বলেন, লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত দেশেও বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বব্যাপী।

তিনি বলেন, জানি না আর কখনও এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল কিনা। হয়তো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তো দুর্ভিক্ষ ও মন্বন্তর দেখা দিয়েছিল।

সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, বিদ্যুত ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। সব জিনিস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। চেষ্টা করে যেতে হবে। বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। তবে দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য, তাদের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় তা করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

মরহুম আফসারুল আমীনকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রামে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ও সততা ছিল অতুলনীয়। তিনি মন্ত্রী হিসেবেও অত্যন্ত সাফল্য দেখিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ এরপর ২১টি বছর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ারও সাহস পেতেন না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সেই সংগ্রামে আফরারুল আমিনকে পাওয়া গেছে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সবসময়ই দুর্গতদের সেবা করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালের ঘুর্ণিঝড় হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। তৎকালীন বিএনপি সরকার জানেইনি যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। সকলের আগে আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছুটে যায়। আমি নিজেও ছুটে যাই। সেই কুতুবদিয়া, মহেলখালী, বাশখালী- মানুষের লাশ, মহিলা ও শিশুর লাশ ভাসছে। তখন আফসারুল আমিনসহ চট্টগ্রামের সকল নেতারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা সাধ্যমতো রিলিফ দেওয়া ও লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। এটা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন, যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মানুষ মরেনি। তিনি তখনও জানেননি। তাঁর কাছে কোনো খবর ছিল না। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম কত মানুষ হলে আপনার তত মানুষ হবে।

শোক প্রস্তাবের ওপর অন্যদের মধ্যে সিনিয়র পার্লামেন্টারিয়ান তোফায়েল আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সরকারি দলের মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওয়াসিকা আয়শা খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙা বক্তব্য রাখেন।

;