টাঙ্গাইলে মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলে এক মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

সোমবার (২২ মে) রাত ১টা দিকে শহরের পার দিঘুলীয়া সেতুর পাশে তাকে হত্যা করা হয়।

নিহত মাছ ব্যবসায়ীর নাম আলী আকবর বাপ্পী (৩৩)। তিনি চর দিঘুলীয়া এলাকার দেলবর বেপারির ছেলে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ এএসআই আতিকুর রহমান বলেন, রাতে বাপ্পীর লাশটি উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে রেখেছে সদর থানা পুলিশ। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য জখমের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আরও ১৪১ জন হাসপাতালে ভর্তি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪১ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

শনিবার (৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১২৮ জন। আর ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৩ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৯৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ৩৪৫ জন ঢাকায় এবং ৫২ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২ হাজার ২৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৬০৭ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৬৭২ জন ডেঙ্গু রোগী।

অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ১ হাজার ৮৬৯ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ১ হাজার ২৫২ জন ঢাকার ও বাকি ৬১৭ জন অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।

এছাড়া চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৩ জন।

;

অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি না থাকায় হুমকির মুখে কৃষি



তরিকুল ইসলাম সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্বতন্ত্র কর্তৃপক্ষ ও অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি না থাকায় আমদানিকৃত খাদ্যশষ্য ও বীজ দেশের কৃষি ব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলা ফসল সংগ্রহোত্তর ক্ষতি, কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও বিতরণসহ ক্রমহ্রাসমান আবাদি জমিতে ক্রমবর্ধমান বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বাংলাদেশের কৃষির জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অন্যের সংস্থানের জন্য একদিকে বিদেশ থেকে কৃষি পণ্য সামগ্রী আমদানি করা হচ্ছে, অন্যদিকে শস্য বীজও আমদানি করতে হচ্ছে। বাজারে দেশীয় বীজের সরবরাহ একেবারেই কম। আগে হাট বাজারে দেশি শস্যের বীজ মিললেও এখন তা দুষ্প্রাপ্য। দেশীয় উৎপাদনে চাহিদা মেটাতে না পেরে চায়না, ভিয়েতনাম, ভারত, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, মিশরসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চফলনশীল জাতের বীজ ও কৃষিপণ্য আমদানি করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আমরা আমাদের প্রয়োজনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে কৃষি পণ্য আমদানি করলেও আগত কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের নমুনা সংগ্রহ ও প্রাপ্ত নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ ও ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে ছাড়পত্র প্রদানের বিষয়টি সব সময় গুরুত্ব দেওয়া হয় না। ফলে বিদেশ থেকে ফসলের নানা ক্ষতিকর পোকামাকড়, রোগজীবাণু দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বালাইয়ের আক্রমণে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান কে বলেন, আমরা সবসময় পরিবেশের কথা চিন্তা করে কাজ করি। কৃষিজ পণ্য বা বীজ আমদানির ক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে নিরোধ কেন্দ্রের কার্যকারিতা বাড়াতে হবে। তা না হলে নানা ধরনের রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা অনেক সময়ে ফসলে নতুন পোকা বা ফসলের রোগ দেখি যা আমাদের ছোট সময়ে দেখিনি। অনেক সময়ে বিদেশ থেকে আনা বীজে ফসল না হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিদেশি কোনো কৃষিজ পণ্য আমদানি আগেই পণ্যগুলো নিয়ে ব্যাপক গবেষণা প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুর্যোগকালীন প্রয়োজন হয় খাদ্য বা কৃষি পণ্য আমদানির। তাছাড়া সব ফসল, ফল-মূল জলবায়ুজনিত কারণে আমাদের দেশে উৎপাদন সম্ভব নয়। এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় কৃষি পণ্য আমদানির। উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োজন সর্তকতার। পণ্য আমদানিতে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করা না হলে বিদেশ থেকে ফসলের নানা ক্ষতিকর পোকামাকড়, রোগজীবাণু দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের বালাইয়ের আক্রমণে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

কৃষিমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পৃথিবীর সব দেশেই কৃষি পণ্য আমদানি ও রফতানির কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশে বর্তমানে মোট ৩০টি বন্দরে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫টি বন্দরে (বেনাপোল, হিলি, বুড়িমারি, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়) বীজ পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। বাকি ২৫টির অধিকাংশইর এ সার্ভিসটি নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ বলেন, আমদানিকৃত পণ্যের সাথে পরিবাহিত হয়ে ধ্বংসাত্মক পোকামাকড় ও রোগ বালাইয়ের জীবাণু দেশের অভ্যন্তরে বা আমাদের দেশ থেকে অন্যান্য দেশে অনুপ্রবেশ ও বিস্তার রোধ করার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করাই হচ্ছে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ বা প্লান্ট কোয়ারেন্টাইন। বাংলাদেশে আমদানি ও রফতানি প্রায় ৯২ শতাংশ সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রামের মাধ্যমে হয়ে থাকে। বিদেশ থেকে আগত কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের নমুনা সংগ্রহ ও প্রাপ্ত নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ ও ল্যাবরেটরি টেস্টের মাধ্যমে ছাড়পত্র প্রদানের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হলেই কেবলমাত্র ছাড়পত্র দিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (উদ্ভিদ সংগনিরোধ উইং) উপপরিচালক (আমদানি) মুহাম্মদ লিয়াকত হোসেন খান বলেন, আমদানির দুটি পর্যায়ে আমরা কাজ করি একটি খাদ্য শস্য, অন্যটি বীজ। তবে প্রতিটি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমরা আমদানিকারকেরদের কিছু শর্ত দিয়ে থাকি যা তাদের অবশ্যই মানতে হয়। সকল ক্ষেত্রেই আমরা সকলকে পণ্য বা বীজ বাধ্যতামূলক ভিউমিগেশন (ধোঁয়ার মাধ্যমে জীবানু মুক্ত) করার পরে জাহাজকে বা পবিহনের জন্য তুলতে হয়। আমাদের দেশে আসলে বন্দর এলাকার নমুনা সংগ্রহ করে তার (তিনদিন সংরক্ষণ) কালচার করে। পরীক্ষায় উন্নিত হলে পণ্য ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়। ল্যাবরেটরির মান বিষয়ে তিনি কোনো উত্তর নেননি। তবে এটা সত্য আমাদের সব কেন্দ্র সকল সুবিধা নেই। ৫টি কেন্দ্র বীজ পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

সূত্র জানায়, সীমিত কৃষি জমির সর্বোত্তম ব্যবহার, শস্য চাষের নিবিড়তা বৃদ্ধি, উন্নত কৃষি ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন করেও বিশাল জনগোষ্ঠীর খাদ্য যোগান দেওয়া কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে গত অর্থবছরে এক কোটি ৮৬ লাখ মেট্রিক টন উদ্ভিদ ও উদ্ভিজাত পণ্য আমদানি করতে হয়েছে যা মাত্র পাঁচ বছর পূর্বেও ছিল মাত্র এর অর্ধেকেরও কম। তাছাড়া যে পরিমাণে আমরা পণ্য আমদানি করি তার মাধ্যমে যেকোন পণ্য দিয়ে বা যেকোন ভাবে বিদেশ থেকে ফসলের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর বালাই দেশে প্রবেশ করে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত করে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে। গমের ব্লাস্টের কারণে উৎপাদন কমেছে প্রায় তিন লাখ মেট্রিক টন আবার ভুট্টার ফল অর্মি ওয়ার্ম প্রবেশের মাধ্যমে আশানুরূপ ভুট্টার ফলন পাওয়ার সম্ভবনা কম।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কারণে দানাদার খাদ্যশস্যের পাশাপাশি শাক সবজি ও ফলমূল উৎপাদনে দেশে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। শাক-সবজি উৎপাদনে বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। কিন্তু উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য রফতানির এক বিশাল সম্ভবনা থাকলেও সেই সুযোগ আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। আমাদের দেশে কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে এখনো অর্গানিক ফার্মিং/ কনট্রাক্ট ফার্মিংয়ের ব্যাপক প্রসার ঘটেনি। ফলে প্রথাগতভাবে কৃষিজ পণ্য উৎপাদনে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক, সার ইত্যাদি ব্যবহার হচ্ছে। আর কনট্রাক্ট ফার্মিং ছাড়াই কৃষিজাত এই সব পণ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত তাতে কি কি ইনপুট (সার, কীটনাশক ইত্যাদি) কি মাত্রায় কখন প্রয়োগ করা হচ্ছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে শাক সবজি সংগ্রহ করে কীটনাশক অবশিষ্টাংশের বিষক্রিয়ার মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত কোনো ল্যাবরেটরি না থাকায় দেশের জন্য গ্রহণযোগ্য এম.আর.এল অথবা একসেপটেবল ডেইলি ইনটেক (এডিআই) মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি।

বর্তমানে বাংলাদেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কোন অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরি নাই। বাংলাদেশ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র এবং ইন্টারন্যাশনাল প্লান্ট প্রটেকশন কনভেনশন (আইপিপিসি) এবং ওয়ার্ল্ড ট্রেড আর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও) এর বিধি বিধান অনুসরণ করা সকল দেশের জন্য বাধ্যতামূলক। এ বিধি-বিধান অনুসরণ করার জন্য পৃথিবীর সকল দেশই আলাদাভাবে স্বতন্ত্র স্বাধীন সংস্থা সৃষ্টি করেছে যা বাংলাদেশে হয়নি। ফলে বাংলাদেশে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কার্যক্রম গতি লাভ করছে না। উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কর্তৃপক্ষ সৃষ্টি করা হয়নি। বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি কৃষি, কৃষিজাত পণ্য আমদানি-রফতানিতে ও প্ল্যান্ট কোয়ারেন্টাইন কাযক্রমে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি না থাকায় যে কোনো সময় অজানা বিদেশি ধ্বংসাত্মক রোগজীবাণু প্রবেশ করে খাদ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।

ঢাকার শ্যামপুরস্থ কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউজে স্থাপিত উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ একটি ল্যাবরেটরি রয়েছে। সেটাকে আন্তর্জাতিক মানের করার কাজ চলছে বলে জানাগেছে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

;

বসবাসযোগ্য ঢাকার জন্য পরিবেশ শৃঙ্খলা জরুরি: মন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বসবাসযোগ্য ঢাকা নগরী গড়তে সরকার নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং সেসব উদ্যোগগুলোর বাস্তবায়নও দৃশ্যমান।

তিনি বলেন, নানা ধরনের অব্যবস্থাপনা ও দুর্বৃত্তায়ন উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্তির ফলে পরিবেশ দূষণসহ দখলদারিত্বের সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হতে আমাদের সময় লাগছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অসম্ভবকে সম্ভব করে যেভাবে দারিদ্র্যসীমা হ্রাস করেছে, খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, এলডিসি উত্তীর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশে রুপান্তরিত হয়েছে সেভাবে পরিবেশ দূষণ রোধে শৃঙ্খলাও একদিন আমরা অর্জন করব।

শনিবার (৩ জুন) ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজনে এবং নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সহযোগিতায় ‘২৮ বছরে রাজধানীর জলাধর ও সবুজ নিধনঃ বাস্তবতা ও উত্তরণের পথনকশা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ ও গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মানুষই পরিবেশের দূষণ করে এবং মানুষই পারে দূষণ প্রতিরোধ করতে। তিনি বলেন, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ না হলে ঢাকার নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছরে যা অর্জন হয়েছে তা অন্য কোন সরকারের সময় হয়নি জানিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এমডিজি অর্জন করেছি, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রায় কাজ করছি, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ এবং ২১০০ সালের মধ্যে ডেল্টা মহাপরিকল্পনাও শেখ হাসিনা নিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শুধু বর্তমানের কথা চিন্তা করেননি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, মুদ্রার যেরকম এপিঠ-ওপিঠ উভয় দিকই রয়েছে তেমনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ইতিবাচক দিকের সাথে সাথে নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। সেই নেতিবাচক প্রভাবকে কিভাবে কমিয়ে আনা যায় সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় নানা ধরনের প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশটা আমাদের সবার এবং এদেশের উন্নতির জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।

ঢাকা শহরের সবুজ ভূমি ও জলাভূমি রক্ষায় এই মহানগরীতে কত মানুষ বসবাস করবে তারও একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকা প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, অসংখ্য মানুষের চাপে যেকোনো ভালো পরিকল্পনা ও নাগরিক সুবিধা ভেঙ্গে পড়তে বাধ্য। সীমার অতিরিক্ত মানুষ ঢাকায় বসবাস করাকে নিরুৎসাহিত করতে নানা ধরনের পরোক্ষ নীতিমালাও নেওয়ার সময় হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

সরকার সিভিল সোসাইটির সমালোচনা ও যেকোনো আন্দোলনকে সাধুবাদ জানায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামাজিক আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টার অসংখ্য উদাহরণ আমাদের দেশে রয়েছে। বৃক্ষ নিধন, জলাশয় দখল ও নদীর দূষণের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতভাবে সব সময় সোচ্চার জানিয়ে নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবুজ ভূমি এবং জলাভূমিও গুরুত্বপূর্ণ কারণ খাঁচার মতো অবকাঠামোয় মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না ।

গোলটেবিল বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি তার বক্তব্যে সংবিধানকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন উল্লেখ করে সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সবুজ ভূমি ও জলাভূমি দখলমুক্ত রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। ঢাকা মহানগরের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু উল্লেখ করে তিনি বলেন, বসবাসযোগ্য ঢাকা অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য এবং রাজধানী ঢাকা না বাঁচলে আমাদের অর্থনীতি বাঁচবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, পুরনো ঢাকার গেন্ডারিয়া দিঘী ভরাট, হাতিরঝিলের লেক ভরাট এবং গাবতলীতে বিএডিসির জন্য নিম্নভূমি ভরাট এখনই বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি সুলতানা কামাল ঢাকার সবুজ ভূমি ও জলাভূমি রক্ষায় রাষ্ট্রকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) মেজর শামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সোসাইটি অব এক্সপার্টস অন এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্টের সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইসরাত ইসলাম, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সহ-সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, নগদ উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ শেখ মুহম্মদ আহসান।

;

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের আহ্বান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিল্প উৎপাদন সচল রাখতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার সুপারিশ করেছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। পাশাপাশি কল-কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর গুরুত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

শনিবার (৩ জুন) এফবিসিসিআইয়ের বোর্ড রুমে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান এফবিসিসিআই‘র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রয়োজনে যাতায়াত খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে কিছুটা কাটছাট করে হলেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার বলে মন্তব্য করেন মো. জসিম উদ্দিন। এসময় নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে গুরুত্ব দিয়ে এর কাঁচামালের ওপর ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যাহার করার আহ্বানও জানান তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকারের রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করতে শিল্প উৎপাদন সচল রাখতে হবে। আর এজন্য সাশ্রয়ী এবং নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের বিকল্প নেই। বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আর্থিক বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারকে আরও বেশি কৌশলী হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাজেটের ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেবে সরকার। এরমধ্যে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা নেয়া হবে ব্যাংক খাত থেকে। যা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এমন অবস্থায়, ব্যাংক খাতের পরিবর্তে সরকারকে কস্ট অব ফান্ড বিবেচনা করে যথাসম্ভব সুলভ সুদে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন প্রাপ্তির বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানানি তিনি।

বাজেটে টেক্সটাইল এবং রফতানি খাত ও এসএমই খাতের জন্য তেমন কিছু দেখা যায়নি উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, টেক্সটাইল খাতের উন্নয়নে ম্যান মেড ফাইবার থেকে ভ্যাটসহ সকল ধরনের কর প্রত্যাহার এবং রপ্তানির উৎস কর ১% থেকে কমিয়ে ০.৫ % শতাংশ করার জন্য পুনরায় সুপারিশ করেন তিনি।

ব্যক্তি করসীমার বিষয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় ব্যক্তি শ্রেণির আয়করের সীমা বর্তমান ৩ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩.৫ লাখ করা হয়েছে। বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় এই করমুক্ত সীমা ৪ লাখ টাকা করার জন্য আমরা প্রস্তাব করেছিলাম। এসময় বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করেন মো. জসিম উদ্দিন।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষায় আরও গুরুত্ব দেওয়ার কোন বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি আমিন হেলালী, হাবিব উল্লাহ ডন, পরিচালকবৃন্দ, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ব্যরিস্টার সামির সাত্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

;