মুক্তিযোদ্ধার মৃতদেহ বাঁশে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখে পাকসেনারা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আজ সোমবার (১০ ডিসেম্বর) নড়াইল মুক্ত দিবস।  ছবি: বার্তা২৪.কম

আজ সোমবার (১০ ডিসেম্বর) নড়াইল মুক্ত দিবস। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ সোমবার (১০ ডিসেম্বর) নড়াইল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে নড়াইলের মুক্তিপাগল দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করে তাদের হাত থেকে নড়াইলকে মুক্ত করে।

সোমবার সকালে নড়াইল মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, নড়াইল প্রেসক্লাব, চিত্রা থিয়েটারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটিকে উদযাপন করছে।

কর্মসূচির মধ্যে সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধুর মুর‌্যাল, স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভ, জজকোর্ট সংলগ্ন বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ও রূপগঞ্জ ওয়াপদায় গণকবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, বিশেষ মোনাজাত, র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাজী মাহাবুবুর রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান জিন্নাহ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম কবীরসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে দশ লক্ষাধিক মানুষের বিশাল জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে স্বাধীনতার যে আহ্বান ছিল নড়াইলের মুক্তিপাগল জনতা তা থেকে পিছপা হয়নি। ওই সময় নড়াইলের এসডিও’র বাসভবনকে স্থানীয় মুক্তিযুদ্ধের হাই কমান্ডের সদর দপ্তর করা হয়। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে তৎকালীন নড়াইলের এসডিও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, এমএনএ খন্দকার আব্দুল হাফিজ, এমপিএ শহীদ আলী খান, আওয়ামী লীগ নেতা এখলাছ উদ্দিন, বিএম মতিয়ার রহমান লোহাগড়া হাইস্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও নড়াইলের সংগঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের এক করে বিশাল বাহিনী যশোর অভিমুখে পাঠিয়ে দেন।

৬ এপ্রিল সকালে পাক হানাদার বাহিনী দুটি জেট বিমান হতে নড়াইল শহরের ওপর ব্যাপক ভাবে মেশিনগানের গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে প্রচুর ক্ষতি করে। এরপর নড়াইল শহর জন শূন্য হয়ে পড়ে। ১৩ এপ্রিল হানাদার বাহিনীর একটি দল নড়াইল শহরের চৌরাস্তায় রেস্টুরেন্ট মালিক মন্টুকে গুলি করে আহত করে এবং হরিপদ সরদার, ভাটিয়া গ্রামের কালু বোস, সরসপুর গ্রামের প্রফুল্য মিত্রকে ধরে নিয়ে দাইতলা পুলের কাছে গুলি করে ফেলে রেখে চলে যায়।

এদিকে ক্যাপ্টেন দোহারের উদ্যোগে লোহাগড়ার ইতনা ও আড়িয়ারায় প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হয়। এ কারণে মধুমতি-নবগঙ্গা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলের ভাটিয়াপাড়াস্থ হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প হতে তাদের দোসরদের সহযোগিতায় গানবোট যোগে ইতনা গ্রামে নৃশংস অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের ৫৮ জন নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যা করা হয়। ওই সময় নড়াইলের জামায়াত নেতা মাওলানা সোলায়মানের নেতৃত্বে ‘শান্তিবাহিনী গঠিত হয়’।

এ বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে দেশপ্রেমিক শত শত মানুষকে ধরে এনে নড়াইল ডাকবাংলোয় আটকে রাখা হত। এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ এনে মাওলানা সোলায়মান রেজিস্ট্রারে যাদের নামের পাশে লালকালি দিয়ে ‘রিলিজ ফর ইভার’ লিখে দিত, তাদের গভীর রাতে নড়াইল শহরের লঞ্চঘাটের প্লাটুনের ওপর নিয়ে গিয়ে গলা কেটে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়া হত। এভাবে মাওলানা সোলায়মান চেনা অচেনা সহস্রাধিক মানুষকে গলা কেটে হত্যা করে বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।

ব্যক্তিগত আক্রোশে মাওলানা সোলায়মান নিজগ্রাম তুলারামপুরের আওয়ামী লীগের সদস্য, নড়াইল ভিসি স্কুলের মাস্টার আতিয়ার রহমান তরফদার, আ. সালাম তরফদার, রফিউদ্দিন তরফদার, মাহতাব তরফদার, মোকাম মোল্যা, কাইজার মোল্যা, মকবুল হোসেন সিকদার ও চাচড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানসহ অনেককে ধরে এনে শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকায় নিয়ে হত্যা করে কবর খুঁড়ে সেখানে পুতে রাখে।

এছাড়া নকসালরা পেড়লী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আ. হামিদ মোল্যা, আবুয়াল হোসেন, নায়েব নজির হোসেনসহ অনেককে হত্যা করে।

এভাবে শত কষ্টের মাঝেও দেশ হানাদার মুক্ত করার এক দুর্জয় আকাঙ্ক্ষা নিয়ে মুক্তি বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে সদর থানায় উজির আলী, লোহাগড়া থানায় মোক্তার আলী, কালিয়া থানায় ওমর আলী এবং মুজিব বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে সদর থানায় শরীফ হুমায়ুন কবীর, লোহাগড়া থানায় শরীফ খসরুজ্জামান, কালিয়া থানায় আব্দুল মজিদ সরদারকে নিযুক্ত করা হয়। পরে তারা নড়াইলে প্রবেশ করে।

অক্টোবর মাস হতে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুক্তিপাগল মানুষের মনে এক বিশ্বাস জন্মাতে থাকে যে হানাদার বাহিনী বা তাদের দোসররা আর বেশিদিন টিকতে পারবে না। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকেই নবগঙ্গা নদীর উত্তর ও পূর্বাঞ্চল হানাদার মুক্ত হয়ে যায়। লোহাগড়া থানা পাক হানাদার বাহিনীর ঘাঁটিকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মুক্তি বাহিনীর কমান্ডার গণ আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়।

তবে তারা আত্মসমর্পণ না করায় ৮ ডিসেম্বর শরীফ খসরুজ্জামান, দবির উদ্দিন, ইউনুস আহমেদ, লুৎফর মাস্টার, আলী মিয়া, লুৎফর বিশ্বাসসহ আরও অনেক গ্রুপ এক হয়ে সম্মিলিত ভাবে তিন দিক থেকে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করে। প্রচন্ড যুদ্ধের পর হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইলে হানাদার বাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী এস এম ফজলুর রহমান জিন্নাহের নেতৃত্বে নড়াইল কলেজের দক্ষিণে মাছিমদিয়া গ্রামে সমবেত হয়ে পুলিশ-রাজাকারদের ওপর অতর্কিত হামলা চালালে এই যুদ্ধে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা জয়পুরের মিজানুর রহমান হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন।

মিজানুর রহমানের মৃতদেহ হানাদার বাহিনীর দোসররা হাত-পা বেঁধে বাঁশে ঝুলিয়ে রাখে। পরে নড়াইল শহর প্রদক্ষিণ করে কৃতিত্ব দেখায় এবং ছবি তোলে। এ ঘটনার পর ৯ ডিসেম্বর রাতে বিজয়ের তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কমান্ডার ফজলুর রহমান জিন্নাহ, আমির হোসেন, উজির আলী, শরীফ হুমায়ুন কবীর, আ. হাই বিশ্বাসের নেতৃত্বে বর্তমান নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ চালায়। তবে পাল্টা আক্রমণে বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন। এ সময় শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাংলোতে অবস্থানরত ৪০ জন পাক মিলিটারিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিলে তারা অস্বীকার করেন। এ সময় মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা চারদিক থেকে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ শুরু করলে পাক মিলিটারিরা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এখানে কয়েকজন পাক মিলিটারি নিহত হয় এবং অন্যদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।

প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা সারা রাত শহরে বিজয় উল্লাস করতে থাকে ও জয় বাংলা স্লোগানে শহর মাতিয়ে তোলে এবং ১০ ডিসেম্বর সকালের দিকে নড়াইলকে পাক হানাদার মুক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে মুক্তি পাগল হাজারো জনতার উপস্থিতিতে ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তলন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধে নড়াইলের ৫ জন খেতাবপ্রাপ্ত হলেন- ল্যান্স নায়েক বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ, বীর উত্তম মুজিবুর রহমান, বীর বিক্রম আফজাল হোসেন, বীর প্রতীক খোরশেদ আলম ও বীর প্রতীক মতিয়ার রহমান।

   

মালয়েশিয়ায় প্রতারিত হওয়া শ্রমিকরা পাচ্ছেন আড়াই কোটি টাকা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাউথ ইস্ট এশিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার জোহরবারুতে প্রতারিত হওয়া ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে তাদের পাওনা বেতন বাবদ আড়াই কোটি টাকার বেশি প্রদান করা হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে জোহরবারুতে ৭৩৩ জন বাংলাদেশি শ্রমিকের খোঁজ মেলে। তাদেরকে প্রায় ৪ মাস ধরে বিনা বেতনে কাজ করানো হচ্ছিল এবং প্রতিশ্রুত কাজও দেয়া হয়নি। এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জোহর শ্রম অধিদফতর এই শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করার জন্য ৪৫ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করেনি কর্তৃপক্ষ।

শ্রম বিভাগ জানিয়েছে মোট অপরিশোধিত বেতনের পরিমাণ ১০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৫৭ বাথ। যা বাংলাদেশি অর্থে আড়াই কোটি টাকারও বেশি।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় শুক্রবার (১৭ মে) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্মসংস্থান আইন ১৯৫৫ এর ধারা ৬৯(৪) এর অধীনে জোহর শ্রম অধিদফতর এখন নিয়োগকর্তাকে দায়রা আদালতে এনে শ্রম আদালতের জারি করা আদেশ কার্যকর করবে।

মালিকপক্ষ দোষী সাব্যস্ত হলে, কোম্পানি প্রতিটি অপরাধের জন্য ৫০ হাজার রিঙ্গিত বা ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হবে এবং শ্রমিকদের পাওনা মজুরি নিষ্পত্তি করতে হবে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোম্পানিটির বিরুদ্ধে চলা মোট ১০টি তদন্তের মধ্যে ৪টিতে মামলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। বাকি ৬টি অধিকতর তদন্তের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও কোম্পানিটিতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের কোটা প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং নিয়োগকর্তাকে নতুন বিদেশি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, একটি বিশেষ ‘নিয়োগকর্তা পরিবর্তন প্রক্রিয়া’ (পিটিএম) এর মাধ্যমে মোট ৬৯২ জন ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীকে এরই মধ্যে নতুন কর্মস্থলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

;

সকাল ৯টার মধ্যে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা কিছুদিন বৃষ্টিপাতের পর গত ২-৩ দিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় সিলেট বিভাগে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে। 

শুক্রবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ১১টা থেকে শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯টার মধ্যে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। 

নদীবন্দরের জন্য দেয়া সতর্কবার্তায় বলা হয়, সিলেট অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে সন্ধ্যায় দেয়া আবহাওয়া বার্তায় জানানো হয়, সিলেটে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এ ছাড়া রাজশাহীতে ৩, নওগাঁর বদলগাছী ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ২, বগুড়ায় ১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় রংপুরেও সামান্য বৃষ্টি হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। 

এর পরের ২৪ ঘণ্টা ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। 

;

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের আনন্দ শোভাযাত্রা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা করেছে চট্টগ্রামের ওমরগণি এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ।

শুক্রবার (১৭ মে) নগরীর জিইসি মোড় থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এতে এম.ই.এস কলেজ ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে যোগ দেয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশরত্ন শেখ হাসিনা যখন বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশে ফিরে আসে তখন থেকে বাঙালি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। শেখ হাসিনাকে বারবার হত্যাচেষ্টা করে বাঙালির সেই স্বপ্নকে নষ্ট করতে চেয়েছিল খুনিরা। কিন্তু শত বাধা,ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।

'আজকে শেখ হাসিনা মানেই উন্নত বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন, শেখ হাসিনা মানেই তারুণ্যের চোখে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন। ১৯৮১ সালে আজকের দিনে বিদেশের মাটি থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা স্বদেশে এসে খুনি, স্বৈরাচার জিয়ার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ঘোষণা করেন, আমার হারানোর কিছুই নাই, এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য আমি লড়াই করবো।'

তারা আরও বলেন, আজ বাংলার মানুষ ভোট এবং ভাতের অধিকার ফিরে পেয়েছে, তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। সমুদ্র জয় থেকে মহাকাশ জয় শুধু শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং সাহসিকতার জন্য সম্ভব হয়েছে। আজকে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমরা এম ই এস কলেজ ছাত্রলীগ ধন্য।

শোভাযাত্রায় কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ইমাম উদ্দীন নয়ন, রাকিব হায়দার, নুরুন নবী সাহেদ, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সাজ্জাদ হোসেন, রবিউল ইসলাম খুকু, আব্দুর রাজ্জাক, সাজ্জাদ আলম, নুর মোহাম্মাদ সানি, আওরাজ ভূইয়া রওনক, নুরুজ্জামান বাবু, তৌফিক চৌধুরী প্রমুখ।

;

লালমনিরহাটে নির্মিত হলো দেশীয় প্রযুক্তির প্রথম টার্ন টেবিল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাট রেল বিভাগে ব্রিটিশ আমলের প্রযুক্তি সরিয়ে দেশেই তৈরি হলো প্রথম টার্ন টেবিল। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি করা লালমনিরহাটে রেলের ইঞ্জিন ও কোচ ঘোরানোর টার্ন টেবিলটি প্রায় তিন দশক আগে বিকল হলে তা ব্যবহার বন্ধ করে রেল বিভাগ। তাই ইঞ্জিন বা কোচ ঘোরানোর জন্য ঢাকায় যেতে হত। লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশনের সিক লাইন এলাকায় প্রস্তুত দেশে তৈরি এ টার্ন টেবিলটি উদ্বোধন হলে সময় ও অর্থ দু'টোই সাশ্রয় হবে রেলওয়ের।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে দফতর জানায়, রেলের কোচ বা ইঞ্জিনকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর টার্ন টেবিলের ওপর রেখে ঘোরানো হয়। এতে বাঁ দিকের চাকা ডান দিকে, ডান দিকের চাকা বাঁ দিকে চলে যায়। ফলে দুই পাশের চাকা সমানভাবে ক্ষয় হয়। এতে চাকার স্থায়িত্ব বাড়ে ও দুর্ঘটনা ঝুঁকি কমে। ব্রিটিশ আমলে তখনকার কর্মকর্তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে লালমনিরহাটে টার্ন টেবিল প্রস্তুত করেন। যা ১৯৯৩ সালে বিকল হয়ে পড়লে ব্যবহার বন্ধ করে রেলওয়ে দফতর।

'এরপর থেকে লালমনিরহাট বিভাগের কোচ ও ইঞ্জিন ঘোরানোর জন্য কোচ ও ইঞ্জিনগুলো কয়েক মাস পর পর ঢাকায় নেয়া হত। যাতে সময় ও অর্থ অপচয় হত। তাই দেশেই টার্ন টেবিল নির্মাণের উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। লালমনিরহাটে সিক লাইন এলাকায় এটি নির্মাণের জন্য ৯শতক জমি নেয়া হয়। নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া ২৫ লাখ টাকা। বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) নকশা ও প্রযুক্তিতে এ টার্ন টেবিলটি তৈরি হয়েছে। নির্মাণকাজ শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে আর শেষ হয়েছে গত মার্চ মাসে। খুব শীঘ্রই এটি উদ্বোধন করা হবে।

বিভাগীয় রেলওয়ে দফতরের প্রকৌশলী (ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন) তাসরুজ্জামানের (বাবু) বলেন, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এ টার্ন টেবিলের কার্যকারিতা সফলভাবে যাচাই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম টার্ন টেবিল। ৩৫০ টন ওজনের ভার বহনে সক্ষম এ টার্ন টেবিলে ১৪ টন ওজনের একটি ব্রিজ রয়েছে। এটি এই যন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর ওপরে ইঞ্জিন ও কোচ তুলে ঘোরানো হয়। স্থাপনাটির তিন ধাপে পাকা দেয়াল রয়েছে, যা সীমানা প্রাচীর, সুরক্ষা প্রাচীর ও লাইন দেয়াল নামে পরিচিত। এর মেঝে আরসিসি ঢালাই দেওয়া। এতে পানি জমলে পানির পাম্প দিয়ে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, টার্ন টেবিলটি নির্মাণে ৩৫০ টন ভার বহনে সক্ষম একটি রোলার থ্রাস্ট বিয়ারিং, আটটি এক্সেল বিয়ারিং, ব্রিজ নির্মাণের জন্য এমএস লোহার তৈরি এইচবিম, অব্যবহৃত রেললাইন, ট্রেনের অব্যবহৃত চারটি চাকা, এমএস টপ প্লেট, চেকার প্লেট, বলস্টার প্লেট, এমএস অ্যাঙ্গেল ও জিআই পাইপের রেলিং ব্যবহার করা হয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবদুস সালাম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সম্পূর্ণ দেশি প্রযুক্তিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে স্বল্প টাকা ব্যয়ে টার্ন টেবিলটি নির্মিত হয়েছে। এতে অব্যবহৃত লাইন, চাকাসহ অন্য লৌহজাত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। রেলের কর্মকর্তারা সব সময় নিজেদের মেধা দিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেন। এটি তার উদাহরণ।

;