শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলুন: রাষ্ট্রপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ

  • Font increase
  • Font Decrease

পৃথিবী শিশুর নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকল শিশুর ভেতর লুকায়িত পূর্ণ সম্ভাবনার উন্মেষ ঘটাতে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় শিশু ও পুরস্কার প্রতিযোগিতা - ২০২০ ও ২০২১’ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রতিটি শিশুর একটা ব্যক্তিত্ব আছে এবং এই ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করার সুযোগ তৈরি করে দিন। আদর, স্নেহ, ভালোবাসার পাশাপাশি শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলুন।

শিশুরা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রাখতে পারে, এ লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদেরকেও এগিয়ে আসার তাগিদ দেন আবদুল হামিদ।

শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তারাই বহন করবে দেশের দায়িত্বভার। এজন্য শিশুদেরকে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।

রাষ্ট্র্রপ্রধান বলেন, সৃজনশীল মেধাসম্পন্ন প্রজন্ম গড়তে সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রভাব অপরিসীম। বিদ্যার্জনের পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুদের সম্পৃক্ত করে তাদের মানসিক বিকাশের পথ সুগম করা জরুরি।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের শিশু নয় সকল স্তরের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে বৈষম্যহীন মনোভাব নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের খুব ভালবাসতেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, তিনি সময় পেলেই শিশুদের সাথে মিশে যেতেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শিশুদের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক।

রাষ্ট্রপতি বলেন, শিশুদের আলোকিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব পরিবার থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সমাজের প্রত্যেকের। শিশুর মেধা বিকশিত করতে প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশে, পরিচর্যা ও অনুপ্রেরণা।

আবদুল হামিদ বলেন, দেশের আনাচে কাঁনাচে ছড়িয়ে থাকা কোমলমতি মেধাবী শিশুদের খুঁজে এনে সঠিক প্রশিক্ষণ ও পরিচর্যার মাধ্যমে মানসম্পন্ন শিল্পী, আঁকিয়ে বা ক্রীড়াবিদ তৈরি করতে হবে যাতে তারা দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সফলতা লাভ করতে পারে।

সরকারের নানামুখী কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির আলোকে শিশুর সার্বিক অধিকার নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

রাষ্ট্রপতি জানান, জাতীয় কর্ম পরিকল্পনায় শিশুর স্বাস্থ্য-পুষ্টি, শিক্ষা-বিজ্ঞান প্রযুক্তি ইত্যাদিকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নের জন্যও রয়েছে নানা কর্মসূচি ও পরিকল্পনা।

তিনি শিশুদের জন্য যেন গবেষণা ও চাহিদাভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে খেয়াল রাখারও নির্দেশ দেন, কেননা এ প্রক্রিয়ায় শিশুদের মতামতেরও প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

অভিভাবকদের উদেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিশুদের সঠিক শিক্ষা যেমন ন্যায়-নীতি, সত্য-মিথ্যার বিভেদ, সততা, দয়া, দেশপ্রেম, জীবপ্রেম ইত্যাদি প্রদানের মূল কাজ আপনাদের।

বর্তমান বিশ্বায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগে শিশুদের নৈতিক শিক্ষা প্রদানের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রপতি। হামিদ বলেন, এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে শিশুদের হাতে মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক ডিভাইস, ফলে শিশুরা আজ মোবাইলে আসক্ত। তারা খেলার মাঠে বেশি যায় না, শিল্প-সাহিত্য চর্চা করে না, প্রকৃতি-পরিবেশ চিনেনা।

তিনি প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিক থেকে সন্তানদের রক্ষা করে নিয়মিত লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত করতে অভিভাবকদের প্রতিও অনুরোধ করেন।

শিশুদেরকে তিনি উপদেশ দিয়ে বলেন, দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে, দেশপ্রেমে উদ্ধুদ্ধ হয়ে উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তোমরা সবসময় সচেষ্ট থাকবে।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ২০২০ এবং ২০২১ সালের জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতায় প্রায় সাড়ে ৬ লাখ শিশু অংশগ্রহণ করে। ৩০টি বিষয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

এর মধ্যে প্রতিযোগিতার বিজয়ী ৪৭৪ জন শিশু পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। ২০২২ সালের ৬ জন ও ২০২১ সালের ৬ জন মোট ১২ জন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে।

অনুষ্ঠানে শিশুর উন্নয়ন, বিকাশ ও সুরক্ষা বিষয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র ও প্রদর্শন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে স্মারক গ্রন্থ ‘আলোর ফুল’ প্রকাশিত হয়।মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপির সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল প্রমুখ।

বড় প্রকল্পে বড় চুরি, প্রকৌশলীদের পোয়াবারো! 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বড় প্রকল্পে বড় চুরি,  প্রকৌশলীদের পোয়াবারো! 

বড় প্রকল্পে বড় চুরি, প্রকৌশলীদের পোয়াবারো! 

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক বর্ধিতকরণসহ সংস্কার কাজ চলছে প্রায় দুই মাস ধরে। জেলার সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যাচ্ছেতাই ভাবে কাজ সম্পাদন করলেও অজ্ঞাত কারণে সড়কে অনুপস্থিত কর্তাব্যীক্তরা। নিম্নমানের ইট ও বালুর ব্যবহার এবং সড়কের পাশের মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করা হচ্ছে। কালভার্ট নির্মাণে দেওয়া হচ্ছে ঢাকার লোকাল রড। এত কিছুর পরেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন প্রকৌশলী থাকেন না কাজের পাশে। ফলে  এই বড় প্রকল্পে বড় চুরি আর প্রকৌশলীদের পোয়াবারো বলে মন্তব্য করেছেন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

জানা গেছে, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক বর্ধিতকরণ ও সংস্কার প্রকল্পের আওতায় গাংনীর তেরাইল ডিগ্রি কলেজ থেকে খলিশাকুন্ডি ব্রিজের পূর্বপাশ পর্যন্ত একটি প্যাকেজ। এ প্যাকেজটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিং, মেসার্স রিমি নির্মাণ সংস্থা। এ প্যাকেজটির প্রাক্কলিত মূল্য ৯০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

জানা গেছে, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বামন্দী বাজারের অদূরে অস্থায়ী কার্যালয় ও ফিল্ড স্থাপন করেছে। সেখানে প্রকাশ্য দিবালোকে নিম্নমানের ইট ভেঙ্গে বানানো হচ্ছে খোয়া। এই খোয়া ও নিম্নমানের বালু দিয়েই সম্প্রসারিত অংশের ডাব্লিউবিএম সম্পন্ন হচ্ছে। সঠিকভাবে কমপ্কেশন করা হচ্ছে না মর্মে এলাকার লোকজান বারবার অভিযোগ দিলেও তাতে কর্ণপাত করেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজের পাশে দেখা মিলছে না সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের। ফলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছেমাফিক নিন্মমানের কাজ করলেও নালিশ করার জায়গা নেই এলাকার মানুষের।


নিয়ামানুযায়ী বাইরে থেকে মাটি এনে রাস্তার দুপাশ ভরাট করার শর্ত থাকলেও তা অগ্রাহ্য। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাস্তার পাশে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা জমি থেকে মাটি কেটে রাস্তা ভরাট করেছে। এতে জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও প্রতিকার পাচ্ছেন না। তাছাড়া একটু ভারি বৃষ্টি হলেই রাস্তার পাশে দেওয়া ওই মাটি ধ্বসে রাস্তা বিনষ্ট হওয়ার আশংকাও দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, সড়কটিতে রয়েছে কয়েকটি কালভার্ট। কালভার্ট নির্মাণে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট, খোয়া আর ঢাকার লোকাল রড। স্থানীয়রা এ বিষয়টিতে বাধা দিলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হুমকিতে মুখ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, এ সড়কটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপুর্ণ। জেলা থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মে. টন খাদ্য শস্য রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। তাছাড়া দূরপাল্লার যাত্রীবাহি বাস ও স্থানীয় হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ বড় প্রকল্পের আওতাভুক্ত করেছে। কয়েকশ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি সরকারের সুনাম অর্জন হওয়ার কথা। অথচ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রকৌশলীদের আতাতের কারনে তা ভেস্তে যাচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এ প্যাকেজ আওতাধীন সড়কে কয়েকটি  কালভার্ট নির্মাণ হচ্ছে। এতে নিম্নমানের ইট,  বালু আর ঢাকার লোকাল রড ব্যবহার করা হচ্ছে দেদারসে। ফলে নতুন নির্মিত এসব কালভার্ট জীবনঝুঁকির মধ্যে ফেলবে এ সড়কে চলাচলকারীদের।

অভিযোগের বিষয়ে মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সোহেল আহম্মেদ বলেন, আমার পরিষদের সামনে দিয়ে কাজ হচ্ছে। নিম্নমানের ইট, বালু দিয়ে রাস্তা করা হলেও প্রকৌশলীদের কাছে পাইনি। তাছাড়া রাস্তার পাশের মাটি কেটে রাস্তায় দেওয়ায় রাস্তা ভেঙ্গে পড়ার আংশকা দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাচারিতার ভিত্তিতে শত কোটি টাকার কাজে পুকুর চুরি করছে। জনস্বার্থে সড়কটির কাজ ভাল করা দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে কয়েকদিন আগে কল দেওয়া হয় মেহেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সরকারি মোবাইল নম্বর। তিনি কল রিসিভ করে অপর একজন প্রকৌশলীর নম্বরে কর দিতে বলেন। সেই নম্বরে কয়েকদিন যাবত কল দিলেও তা রিসিভ হয়নি। অপরদিকে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানের সময় কাজের পাশে পাওয়া যায়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন প্রকৌশলীর। যার ফলে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীর বিষয়ে কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে।

;

পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে ৪ এপ্রিল



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগামী ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচলের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেছে রেল মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে এ তথ্য জানান রেল মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল আলম।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। তাই আগামী ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্ত থেকে ট্রাককারে মূল সেতুর রেলের ট্র্যাক প্যানেল (লোহার পাত) আর মালামাল নেওয়া হচ্ছে। বিশাল আকৃতির ট্র্যাক প্যানেল বোঝাই ট্রাককারটি ভায়াডাক্ট পেরিয়ে মূল সেতুতে চলছে পাথরবিহীন রেললাইনের ওপর দিয়ে। সেখানে ভায়াডাক্ট ও মূল সেতুর রেল কাজের প্রকৌশলীরাও আছেন। সেতুর রেললাইন নির্মাণে চলছে শত শত শ্রমিকের কর্মযজ্ঞ।

ক্রেনের সাহায্যে রেলের ট্র্যাক প্যানেল বসানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় নির্ধারিত স্থানে। এরপর ধীরে ধীরে বসিয়ে দেওয়া হয় সেতুর ওপর। যন্ত্রের সাহায্যে তা নিখুঁতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ওয়ার্কশপ থেকে নিয়ে মূল সেতুতে তৈরি করা হচ্ছে পাথরবিহীন রেলের ট্র্যাক স্ল্যাব।

;

রাজশাহীতে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে হলুদ চাষ



মোঃ আব্দুল হাকিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে মসলা জাতীয় শস্য হলুদ চাষ। খরচের তুলনায় লাভ দ্বিগুণ, চাষ করা যায় অন্য ফসলের সঙ্গে। হলুদ ক্ষেতে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ তেমন একটা হয় না। শুধুমাত্র উঁচু জমি, পতিত জমি কিংবা বাড়ির আঙিনাই নয়; বাঁশ গাছ, কলা বাগান ও আমসহ অন্যান্য বাগানেও সাথী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে হলুদ। মানে ও গুণে ভালো হওয়ায় বিভিন্ন জেলায় সুনাম কুড়িয়ে চলছে ফসলটি। এ ফসল চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে কৃষকরা। এদিকে ভালো মানের হলুদ চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত মৌসুমে উপজেলায় হলুদের আবাদ হয়েছিল ৪৭০ হেক্টর জমিতে। যেখানে শুকনা হলুদ পাওয়া যায় ২ হাজার ৬৮ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে ৫৭৪ হেক্টর জমিতে চাষ হয় হলুদ। তবে বৃষ্টিপাতের অপেক্ষায় শেষ পর্যন্ত কিছুটা কমেছে হলুদ উৎপাদন। এবছর ১ হাজার ৭১৫ মেট্রিক টন শুকনা হলুদ পাওয়া গেছে। সেই অনুযায়ী হলুদের বাজার মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৪০ কোটি টাকায়। ইতোমধ্যে হলুদ মজুদে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, উপজেলায় প্রায় এক হাজার লোকের জীবিকা জড়িয়েছে হলুদ চাষ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিক্রিতে। কাঁচা হলুদকে বিক্রির উপযোগী করতে গড়ে উঠেছে শতাধিক চাতাল। কাঁচা হলুদ বাছাই থেকে শুরু করে হলুদ সেদ্ধ, শুকানো ও অন্যান্য প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। বিগত কয়েক বছরে হলুদ ব্যবসায় নেমে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন ব্যবসায়ীরাও।

হলুদ চাষিরা বলছেন, হলুদের বীজ জমিতে বপনের পর পাঁচ থেকে ছয় মাস লাগে হলুদ পরিপক্ক হতে। তখন বিঘাপ্রতি কাঁচা হলুদ হয় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মণ। এরপর সেই কাঁচা হলুদ গরম পানিতে সেদ্ধ করে সমতল জমিতে চাতাল করে শুকাতে হয়। ২০ থেকে ২৫ দিন রোদে শুকানোর পর শুকনো হলুদ পাওয়া যায়। প্রকারভেদে শুকনা হলুদ বিক্রি হয় কেজি প্রতি ১৬০ থেকে ২২০ টাকা দরে। আর কাঁচা হলুদ বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে। চার থেকে পাঁচ মণ কাঁচা হলুদ শুকানোর পর পাওয়া যায় এক মণ শুকনা হলুদ।

তাদের দাবি, কৃষকরা আগে মাঠ ভর্তি হলুদ চাষ করতেন। তখন উৎপাদনও ভালো হতো, দামও বেশি পাওয়া যেত। এখন বেশিরভাগ চাষিই আম বাগানে সাথী ফসল হিসেবে হলুদ চাষ করেন। ফলে হলুদের উৎপাদন ফলন কিছুটা কম হচ্ছে। আগে যেখানে বিঘা প্রতি ১০০ মণ পর্যন্ত কাঁচা হলুদ পাওয়া যেত, সেখানে ৭০ থেকে ৮০ মণ হলুদ পাওয়া যাচ্ছে। তবে হলুদ উত্তোলনে ও সেদ্ধ কাজ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন অনেকেই।

বাঘা উপজেলার বাউসা গ্রামের একটি আম বাগানে হলুদ চাষ করেছেন শাহাজাহান আলী। শিক্ষকতার পাশাপাশি চাষাবাদও করছেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বছর এক বিঘা আম বাগানে হলুদ লাগিয়েছি। সাধনা ও শ্রম দিয়ে চাষাবাদ করলে যে কোন আবাদে সাবলম্বী হওয়া সম্ভব।

উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, বিগত সময়ে চরের মাটিতে কখনোই হলুদের চাষবাদ করেননি। কিন্তু গত বছর হলুদ চাষ করে বাম্পার ফলন পান তিনি। ব্যাপক দাম পাওয়ায় হলুদ চাষে আবারও আগ্রহী হয়েছেন। এবার উচু জমিতে হলুদ আবাদ করেছেন তিনি।

পৌর এলাকার জোতরঘু গ্রামের কৃষক সুজাত আহম্মেদ তুফান বলেন, প্রথম কয়েক দফা জমি চাষাবাদ করে সার দিয়ে জমি প্রস্তুত করার পর বীজ বপন করতে হয়। আগে হলুদ চাষে তেমন কীটনাশক ব্যবহার করা লাগতো না। এবছর হলুদে রোগ দেখা দেওয়ায় কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে। এক বিঘা জমিতে হলুদ চাষ করতে ১০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।

আড়ানী পৌর এলাকার গোচর গ্রামের শিক্ষক আমানুল হক আমান বলেন, আগে ফাঁকা জমিতে হলুদ চাষ করতাম। এখন আম বাগানে সাথী ফসল হিসেবে চাষ করছি। পাঁচ হাজার টাকার বীজ কিনে হলুদ রোপণ করেছি। হলুদের গাছ গজানোর সময় দুইবার সেচ ও প্রয়োজন অনুযায়ী সামান্য রাসায়নিক সার ও কিটনাশক দিয়েছি। এতে যে পরিমাণ হলুদ উৎপাদন হয়েছে, তাতে খরচের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি টাকা আয় হবে।

আড়ানী পৌর এলাকার হলুদ ব্যবসায়ী আসরাফ আলী বলেন, আগে আড়ানী এলাকার কৃষকরা হলুদ বেচাবিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করতাম। উপজেলার আড়ানী পৌর বাজারে সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার দুইদিন হলুদের হাট বসে। সেখানে প্রতি হাটে ১০০ থেকে ৩০০ মণ হলুদ বেচাকেনা হয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুকনো হলুদ ও হলুদের গুড়া সরবারহ করি বলেও জানান তিনি।

আড়ানী পৌর বাজারের মোল্লা ট্রেডার্সের একটি কারখানায় শুকনা হলুদের পরিচর্যাও বাছাই করছিলেন শ্রমিকরা। সেখানে মোল্লা ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপক নূর মোহাম্মদ মোল্লা বলেন, প্রতিবছর ৫ থেকে ৭ হাজার মণ শুকনা হলুদ বিভিন্ন কৃষকদের কাছ থেকে কিনি। তারপর সেই হলুদ কারখানায় বাছাই করা হয়। বাছাইয়ের জন্য ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করেন। বাছাই শেষে আকৃতিভেদে প্যাকেটজাত করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। আবার সরাসরি হলুদের গুঁড়া তৈরির কোম্পানির কাছেও হলুদ বিক্রি করা হয়।

আড়ানী পৌরসভার কাউন্সিলর মোজাম্মেল হক জানান, সরকার বাজারে হলুদের ন্যায্য দাম পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলে দেশে কখনোই হলুদের সঙ্কট পড়বে না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, আগের চেয়ে আবাদের পরিমাণ কমলেও হেক্টর প্রতি হলুদের উৎপাদন বেড়েছে। কৃষকরাও হলুদ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। আগে যেখানে কৃষকরা হলুদ লাগিয়ে পরিচর্যা না করে ফেলে রাখতেন, এখন সেখানে সার, সেচ ও কীটনাশক দেওয়ায় হলুদের উৎপাদন বেশি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, হাইব্রিড, বারি ও উফসী জাতের কিছু হলুদের উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে হলুদ চাষে কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে। এখন চেষ্টা করা হচ্ছে, স্থানীয় জাত বাদ দিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ উদ্ভাবিত বেশি ফলনের হলুদ যাতে চাষীরা চাষাবাদ করেন সেই বিষয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

;

দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের কোথাও কোথাও বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে একথা জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়- ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহী সদরে ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বুলেটিনে আরও বলা হয়, সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এদিকে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

;