টাঙ্গাইলে ব্রিজ না থাকায় দুর্ভোগে পাঁচ লাখ মানুষ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলে ব্রিজ না থাকায় দুর্ভোগে পাঁচ লাখ মানুষ

টাঙ্গাইলে ব্রিজ না থাকায় দুর্ভোগে পাঁচ লাখ মানুষ

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাশিলের ঝিনাই নদীর ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ দুর্ভোগে ভুগছে। ঝিনাই নদীর এক পাড় ভেঙে যাওয়ায় ঠাই দাঁড়িয়ে রয়েছে ভাঙণ কবলিত দির্ঘ দিনের পুরাতন ব্রিজটি। খরস্রোতা নদীতে ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় পারাপার হচ্ছে সাধারণ লোকজন এবং স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। দুই বছর আগে সেখানে একটি নতুন ব্রীজ নির্মাণ শুরু হলেও মাত্র তিনটি পিলারের কাজ সম্পান্ন হয়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সময়মত ব্রিজ না হওয়ার জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা গাফলতি ও অবহেলাকেই দায়ী করছেন স্থানীয় ভুক্তভোগী লোকজন।

২০০০ সালে ঝিনাই নদীর ওপর ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালে বন্যায় এই ব্রিজটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। ব্রিজের নিচের পিলারের রড বেরিয়ে আসে। ভেঙে যায় অনেক পিলার। এছাড়া ঝিনাই নদীর ব্যাপক ভাঙনে ব্রিজের উত্তর পাশে ৫’শ মিটার ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে উপজেলা পাঁচটি ইউনিয়ন উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উপজেলার উত্তরে রয়েছে কাশিল, বাসাইল, কাউলজানী ও ফুলকী ইউনিয়ন। দক্ষিণে রয়েছে হাবলা, কাঞ্চনপুর, ফতেপুর ও ডুবাইল ইউনিয়ন। মাঝ খানে ঝিনাই নদী। নদী ধারা বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ব্রীজ না থাকায় নৌকা দিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে এসব ইউনিয়নের লোকজনকে। আটটি ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে। আবাদি জমির ফসল ও কোন রোগী উপজেলা সদরে নিয়ে আসা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। নদী পাড়ে এসে দির্ঘ সময় দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে অর্থ ও সময়ের অপচয় হচ্ছে।

টাঙ্গাইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২৭০ মিটার ব্রীজটি নির্মাণের জন্য ২৬ কোটি ৫৯ লাখ ৮৭ হাজার ৪৩৯ টাকার দরপত্র আহবান করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালের ২৩ মার্চ ব্রিজটি নির্মাণের জন্য কার্যাদেশ পায় ময়নুদ্দিন লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৬ মাসের মধ্যে ব্রিজের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও নদীর পাড়ে মাত্র তিনটি পিলার করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ব্রিজটি নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

কাশিল দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, ব্রিজ না থাকায় আমরা খুবই কষ্ট করছি। ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। তাছাড়াও নদী পাড়ে এসে নৌকা ধরতে না পারলে প্রায় ২০-২৫ মিনিট বসে থাকতে হয়। সময়মত পৌঁছানো যায় না। তিনি দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।

কাশিল উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র রাব্বি মিয়া বলেন, বর্ষা মাসে নৌকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে আসতে হয়। কখন ডুবে যাবে ভয়ে ভয়ে নদী পার হই।

কাশিল গ্রামের আন্না বেগম বলেন, এই ব্রিজ না থাকার কারণে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে নৌকার জন্য বসে থাকতে হয়। আমরা চাই অতি তাড়াতাড়ি যেন এই ব্রিজটি করে দেয়।


কাশিল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সচিন্দ্র চন্দ্র ঘোষ বলেন, ব্রীজ না থাকায় নাটিয়া পাড়ার সাথে বাসাইলের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এত বড় নদী পাড় হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়। আমরা দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

কাশিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রমজান আলী বলেন, জনস্বার্থে জরুরী ভিত্তিতে এই ব্রিজটি নির্মাণ করা দরকার। ব্রীজ না থাকায় আমাদের এই উপজেলাকে দুই ভাগে বিচ্ছন্ন করে রেখেছে। অপরিকল্পিত খনন ও গাইড বাঁধ নির্মাণ না করায় আগের ব্রীজ ভেঙে গেছে।

বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত নদী খননের ফলে ব্রীজগুলো ভেঙে গেছে। তাদেরকে এ ব্যাপারে লিখিত ভাবে জানানো হলেও তারা এ ব্যাপারে কোন ব্যাবস্থা নেয়নি। বালু দস্যুরা প্রতিদিন নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলন করছে। এতে করে নথখোলা সেতুটিও হুমকির মুখে পড়বে। তিনি যথাসময়ে ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানান।

টাঙ্গাইল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিবার্হী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, নদীর দিক পরিবর্তনের ফলে এখানে আগের ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পানি উন্নয়নবোর্ডের নকশা অনুযায়ী এই ব্রিজটি পল্লী সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ঝিনাই নদী উপর কাশিল নামক জায়গায় হচ্ছে। ব্রীজের সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। বর্ষার সময় কাজের দৃঢ় গতি ছিল। এখন পানি কমেছে দ্রুতই ঠিকাদার কাজ করবে। কাজ করলে সময় মতো কাজ শেষ হবে। আমরা ঠিকদারকে বলেছি ও চিঠি দিয়েছি সে অনুযায়ী সে দ্রুত কাজ করবে সেই অঙ্গীকার করেছে।

   

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবাধিকার উইং চালুর পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানবাধিকার সম্পর্কিত একটি নতুন শাখা চালু করার পরামর্শ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই পরামর্শ দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প কুতুপালং এবং ভাসানচর পরিদর্শনের জন্য বৈঠকে প্রস্তাব করা হয়।

কমিটির সভাপতি এ কে আব্দুল মোমেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, শাহরিয়ার আলম, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান, সাইমুম সারওয়ার, জারা জাবীন মাহবুব অংশ নেন।

 

;

ঢাকাসহ ৮ জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাসহ দেশের আট জেলার ওপর দিয়ে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অফিস। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলা হচ্ছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ঢাকা এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে, আবহাওয়া অফিসের অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এ অবস্থায় শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে।

;

ইসলামি সংগীত শিল্পী সালমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় নিহত তিনজনের একজন সালমান আজাদী। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী এবং ইসলামি সঙ্গীত শিল্পী ও প্রশিক্ষক। তার মৃত্যুতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সালমান আজাদী।

তিনি বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার হাপানিয়া এলাকার মৃত কোরবান আলীর ছেলে। নিহত সালমান স্ত্রী ও এক শিশুপুত্রকে নিয়ে নগরীর মাসকান্দা এলাকায় থাকতেন।

জানা গেছে, ইসলামি সংঙ্গীত শিল্পী হিসেবে ময়মনসিংহে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন সালমান আজাদী। ইসলামি সঙ্গীতের প্রসারে নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন সালমান ইসলামি সঙ্গীত একাডেমি। প্রায় দুই বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানে শিশুদের ইসলামি গান শেখাতেন। এছাড়াও ত্রিশালে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ইসলামি সঙ্গীতের প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

উদীয়মান এ ইসলাম সঙ্গীত শিল্পীর মৃত্যুতে শোকাভিভূত পরিবার, আত্নীয়-স্বজন, ক্যাম্পাসের সহপাঠী-শিক্ষার্থী, ইসলামি সংস্কৃতি প্রেমিসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। শতশত মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসে যেন শোক বইয়ে পরিণত হয়েছে সানমানের ফেসবুক টাইমলাইন।

আব্দুর রহিম ভূঁইয়া নামে একজন লিখেছেন, কিছু মৃত্যুর সংবাদ মানুষকে ভীষণ বেদনা দেয়, ভীষণ কষ্ট দেয়। আর এই মৃত্যু যদি অকালে হয় বা আকস্মিক হয় তার শোক কাটিয়ে উঠা মোটেও সহজ না। সালমান আজাদী ইসলামিক শিল্প একাডেমির শিক্ষক ও স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন। তিনি বাচ্চাদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতেন। বাচ্চাদের সুস্থ ধারার ইসলামিক সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যাপারে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল।

হানজালা রমজান মুন্না নামে আরেকজন লিখেছেন, প্রিয় হাসিমাখা মুখ ও সুন্দর করে কথা উপস্থাপন ছিল যার নৈমিত্তিক অভ্যাস। ইসলামি সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেয়ায় পেছনে ময়মনসিংহ শহরে যাদের অবদান, তাদেরই একজন ছিলেন। মনের মধ্যে ছিল ইসলামের জন্য তীব্র ভালবাসা। ভাইয়ের ভুল ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিয়ে জান্নাতের উঁচু মাক্বাম দান করুন।

স্বামীর শোকে বাকরুদ্ধ স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার ক্লাস করতেই ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ত্রিশাল যাচ্ছিলেন তিনি।

এদিকে সালমান আজাদীর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার। এক শোকবার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের ২০১৭-'১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে স্নাতকোত্তরে ২০২১-'২২ সেশনে অধ্যয়নরত মো. সালমান আজাদী (২৫) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটায় ত্রিশালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছে। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়-পরিবারের পক্ষে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। সেইসঙ্গে সালমানের বিদেহী আত্মার চিরশান্তির জন্য প্রার্থনাসহ শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাঈন উদ্দিন জানান, বিনা ময়নাতদন্তের জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে, ত্রিশালে বাসের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উপজেলার ত্রিশাল বাজারের সাইফুল কমিশনারের বাসার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত অন্য দুইজন হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের রুদ্রগ্রামের এনামুল হকের মেয়ে রুবাইরা তাজনিম (২) ও চিকনা মনোহর এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৪)।

;

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীরাঙ্গনাদের সম্মাননা দাবি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশের বহু যুবক ও ছাত্র জনতার আত্মহুতির অবদান। এই যুদ্ধে নারীদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। এ যুদ্ধে অসংখ্য নারী সরাসরি অংশগ্রহণের পাশাপাশি ইজ্জতও দিতে হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বেদনা দত্ত। বেদনা দত্তের মতো বীরাঙ্গনাদের স্মরণীয় করে রাখতে বীরাঙ্গনা স্মৃতিসৌধ বা রাস্তা ও প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয়দের।

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার বড়ি-বাড়ির বেদনা দত্ত স্বাধীনতা সংগ্রামের পূর্বেই স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ তিন শিশুকে নিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে দিন পার করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়ানোসহ তাদের নানাভাবে সহয়তা করতেন বেদনা দত্ত। আর এমন খবর পেয়ে রাজাকার সদস্যরা বেদনাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে পাকিস্তানি হায়েনাদের হাতে তুলে দেয়। বাড়ির পাশে রেল ব্রিজের নিচে পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে ৪ দিনে নির্যাতন শেষে মৃত ভেবে পাশের জঙ্গলে ফেলে দেয় বেদনাকে।

পরে সেখান থেকে দুইদিন পর প্রাণ ফিরে পেলেও ইজ্জত আর সন্তানদের জীবন রক্ষায় এলাকা ছেড়ে নিজেকে আড়াল করে রাখেন তিনি। দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে আসলেও জীবন চলে অনাহারে অর্ধাহারে। এভাবেই পার করতে হয়েছে জীবনের প্রায় অর্ধশতাব্দি। অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের নজরে আসলে তার কাগজপত্র যাচাই বাছাই শেষে তাকে বীরাঙ্গনা হিসেবে নথিভুক্ত করেন এবং ভাতার আওতায় আনেন। সেই সাথে মুজিব বর্ষের উপহার হিসেবে তার জন্য তৈরি করা হয় বীর নিবাস। এখন এলাকাবাসীর দাবি বেদনা দত্তের অবর্তমানে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মাণের। অথবা তার নামে স্থানীয় কোন রাস্তা বা প্রতিষ্ঠানের নামকরণের দাবি মুক্তিযুদ্ধাসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

স্থানীয় জিনারদী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা জানতামই না আমাদের এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছে। সরকার যখন বেদনা দত্তকে একটি বীর নিবাস তৈরি করে দেয় তখনই জানতে পারি এই এলাকায় একজন বীরাঙ্গনা রয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্মম নির্যাতনের শিকার এই নারী হয়তো একদিন থাকবেনা। কিন্তু তাকে যেনো পরবর্তী প্রজন্ম মনে রাখে এবং স্মরণ করে সেজন্য তার নামে একটি সড়কের নামকরণ বা স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানাই।

নরসিংদী জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেদনা দত্তের মতো আরও যারা বীরাঙ্গনা রয়েছেন তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। নরসিংদীর নারী মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কয়েকটি আবেদন জমা পড়েছে যা প্রক্রিয়া দিন রয়েছে। অচিরেই এ বিষয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।

;