দেশে এ বছর বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭১ লাখ মানুষ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
দেশে এ বছর বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭১ লাখ মানুষ

দেশে এ বছর বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৭১ লাখ মানুষ

  • Font increase
  • Font Decrease

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চলতি বছর ৭ দশমিক ১ মিলিয়নেরও বেশি বাংলাদেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। যা ২০৫০ সালের মধ্যে ১৩ দশমিক ৩ মিলিয়নে (এক কোটি ৩৩ লাখ) পৌঁছতে পারে। সোমবার রাজধানীর শেরাটন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

পাঁচ দিনব্যাপী তৃতীয় গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ শীর্ষক অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করে ডব্লিউএইচও। শরণার্থী এবং অভিবাসী স্বাস্থ্য সমস্যাগুলিকে ভালোভাবে মোকাবিলা, পেশাদার দক্ষতা ও সক্ষমতা গড়ে তোলার জন্য দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সহায়তা করতে পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জলবায়ু পরিবর্তন, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য, দ্বন্দ্ব, বাণিজ্য এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি এই বাস্তুচ্যুত ও অভিবাসন সমস্যা বাড়াচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বে প্রতি ৮ জনের মধ্যে এক জন, ১ বিলিয়ন লোকের মধ্যে ২৮১ মিলিয়ন অভিবাসী এবং কয়েক মিলিয়ন মানুষ রাষ্ট্রহীন হয়েছে।

ডব্লিউএইচও কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ১৯৭৮ সাল থেকে বাংলাদেশ তিনটি বড় ধরনের অভিবাসী সমস্যা প্রত্যক্ষ করা গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মিয়ানমার থেকে আসা বাস্তুচ্যুতরা। মিয়ানমার তার বেশকিচু নাগরিককে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করেছে, যাদের প্রত্যেকের খাবার, চিকিৎসা ও বসবাসের ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার বাস্তুহীন এবং অভিবাসীদের স্বাস্থ্য ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক ডা. সান্তিনো সেভেরোনি বলেন, বার্ষিক গ্লোবাল স্কুল অন রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেন্ট হেলথ হচ্ছে ডব্লিউএইচও হেলথ অ্যান্ড মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের একটি ফ্ল্যাগশিপ এবং প্রচারের জন্য গ্লোবাল অ্যাকশন প্ল্যান। যা বাস্তবায়নের দিকে উদ্বাস্তু ও অভিবাসী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত আঞ্চলিক এবং দেশীয় অফিসগুলোর সঙ্গে কৌশলগত এবং অপারেশনাল সহযোগিতা জোরদারের জন্য একটি বড় সুযোগ।

সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক ড. টেডরস আধানম ঘেব্রেইসুরস বলেন, অভিবাসন এবং বাস্তুচ্যুতি শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার ওপর গভীর এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য, আর্থিক বাধা, কুসংস্কার এবং বৈষম্য সবই উদ্বাস্তু ও অভিবাসীদের জন্য স্বাস্থ্য পরিষেবার অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। শরণার্থী গ্লোবাল স্কুলের মাধ্যমে শরণার্থী এবং অভিবাসীদের আরও ভাল সেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সক্ষমতা তৈরি করার লক্ষ্য রয়েছে।

ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুনম ক্ষেত্রপাল সিং সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্বাস্থ্যের অধিকার সর্বত্র সব মানুষের জন্য সমান অধিকার। বিশেষ করে উদ্বাস্তু এবং অভিবাসীদের জন্য প্রসারিত। কারণ সত্যিকার অর্থে সম্মানিত, সুরক্ষিত এবং পরিপূর্ণ হতে হলে, স্বাস্থ্যের অধিকার অবশ্যই সবচেয়ে প্রান্তিক এবং ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের ভালোভাবে দিতে হবে, যারা এখনো সমস্যায় এবং ঝুঁকিতে আছে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রেক্ষাটের চিত্র ও চ্যালেঞ্জ একই নয়, সমাধানও একই না। তবে সব দেশ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এমন একজন স্বাস্থ্য কর্মী, যিনি প্রশিক্ষিত ও সাংস্কৃতিকভাবে সংবেদনশীল।

ডব্লিউএইচওর আঞ্চলিক পরিচালক রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ শুধুমাত্র তাদের ( রোহিঙ্গা) বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার সুবিধাই দেয়নি, আরও অনেক কিছু করেছে। যার মধ্যে সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ছাড়াও সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং আইনি দুর্বলতাগুলি মোকাবিলার জন্য সমন্বিত চেষ্টাও করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজনে গবেষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, বেসরকারি সংস্থা, যুব প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশ নেবেন।

   

দায় এড়ানোর সুযোগ নেই কারিগরির সাবেক চেয়ারম্যানের: ডিবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জিজ্ঞাসাবাদে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খান দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। তাকে দুদিনের মধ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ব্যাখ্যা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে যদি তিনি সেটা না করেন এবং পরবর্তীতে সনদ জালিয়াতির তথ্য প্রমাণ মেলে তাহলে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় ডিবি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় প্রতিষ্ঠানটির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে। এরপর ডিবি কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ।

হারুন অর রশীদ বলেন, সম্প্রতি রাজধানীর পীরেরবাগ, পাইকপাড়ায় সিস্টেম এনালিস্ট শামসুজ্জামানের বাসায় অভিযান পরিচালনা করেছিলাম। অভিযানকালে দেখা যায় তিনি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে হাজার হাজার কাগজ এনে সনদ জালিয়াতি করছেন। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৫ জন দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানের স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, তিনি সিস্টেম এনালিস্ট শামসুজ্জামানের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। আজকে আমরা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।

জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে চেয়েছি, কারিগরির ওয়েবসাইটের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে কীভাবে মাসের পর মাস ধরনের এ জালিয়াতি হয়েছে? তিনি ওই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। প্রতিষ্ঠান চলে তার নির্দেশনা ও নেতৃত্বে। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে কাগজ নিয়ে যাচ্ছে, সিসিটিভিতেও দেখা যাচ্ছে। তারপর কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। আবার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও সার্টিফিকেটগুলোতে স্বাক্ষর করে গেছেন মাসের পর মাস।

হারুন বলেন, এসব কাজ চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অবহেলায় করেছেন নাকি স্বপ্রণোদিত হয়ে করেছেন, সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। এমন জালিয়াতি জেনেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। স্ত্রীর বিষয়টিও তিনি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। জানতেন না বলে দাবি করেছেন।

ডিবি প্রধান বলেন, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নজিরবিহীন জাল-জালিয়াতির ঘটনা ইতিহাসে শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য কলঙ্কিত ও কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করার মতো ঘটনা। আমি মনে করি, এ ঘটনার দায় কারিগরির চেয়ারম্যান এড়াতে পারেন না। কোনো সুযোগ নেই। আমরা এখন দেখব, তিনি আসলেই সনদ বিক্রির বিষয়টি জানতেন কি না? তার তো জানার কথা। তিনি তো আসল সার্টিফিকেট বিক্রির মাধ্যমে শিক্ষা ও জাতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন। তিনি কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন, তার তো জানার কথা, একটা মানুষ কতো পরিশ্রম করে ভালো রেজাল্ট করতে পারছে না, সেখানে পড়াশোনা না করেই টাকা দিয়ে আসল সার্টিফিকেট কিনে নিচ্ছে। এটা কাঙ্ক্ষিত নয়।

হারুন বলেন, সনদ জালিয়াতির ঘটনায় সদ্য সাবেক চেয়ারম্যানের দায় সম্পর্কে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে। প্রয়োজনে তাকে এক দুদিনের সময় দিবো। তিনি যদি সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারেন আর যদি তার সংশ্লিষ্টতা বা অনৈতিক যোগসাজশের তথ্য-প্রমাণ পাই তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

তিনি বলেন, পরীক্ষার হলে নকল প্রতিরোধে আমরা কাজ করেছি, অপরাধী চক্রকে গ্রেফতার করেছি। অথচ দুঃখজনক হলো, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, তার পরিবার, সিস্টেম এনালিস্ট, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মিলে সিন্ডিকেট বানিয়ে যেভাবে প্রতারণা, সনদ জাল-জালিয়াতি করা হয়েছে তা নজিরবিহীন। এটা আসলে কাম্য হতে পারে না, তাই জড়িত প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। কাউকে ছাড় দিবো না।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও চেয়ারম্যান জানার পরও ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরও তদন্ত করবো। জানার পরও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না? ইচ্ছেকৃত, অবজ্ঞা নাকি জেনেও ব্যবস্থা নেননি। দায় এড়ানোর তো সুযোগ নাই। তিনি তো ইতোমধ্যে ওএসডি হয়েছেন।

সাবেক চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট কি-না জানতে চাইলে হারুন বলেন, আসল সার্টিফিকেট বিক্রি করে টাকা নেওয়ার বিষয়টি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এই সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনা লজ্জাজনক। দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। স্ত্রী যে টাকাটা নিতেন সেটা তিনি জানেন কিনা?পারিপাশ্বিক তথ্য প্রমাণ লাগবে।

হারুন বলেন, সার্টিফিকেটগুলো কারা কিনেছেন, কোথায় কোথায় বিক্রি হয়েছে। সেটা দেখা হবে। বুয়েটের একটা পরীক্ষক দল আসবে। বিশ্লেষণ করে দেখা হবে আসলে কী পরিমাণ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছিল। কী পরিমাণ টাকা লেনদেন করা হয়েছে। তদন্ত আরও চলবে। কারা টাকা দিয়েছে, কারা সনদ নিয়েছে। তারা কখন কাকে কী পরিমাণ টাকা দিয়েছেন, সেসব বিষয় দেখা হবে। আর্থিকভাবে চেয়ারম্যান জড়িত কি না তা খুঁজে বের করা হবে। সব কিছু তদন্ত করা হবে। তাকে ছেড়ে দেওয়া হলেও ডিবির নজরদারিতে থাকবেন। যারা অন্যায় করেছেন, রক্ষক হয়ে যদি এখন ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেন তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

;

শত শত কোটি টাকার প্রকল্পেও বদলায়নি ট্রাফিক ব্যবস্থা



রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
শত শত কোটি টাকার প্রকল্পেও বদলায় নি ট্রাফিক ব্যবস্থা

শত শত কোটি টাকার প্রকল্পেও বদলায় নি ট্রাফিক ব্যবস্থা

  • Font increase
  • Font Decrease

নেত্রকোনা জেলার মো. ফেরদৌস হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন বাংলাদেশ পুলিশে। চাকরি জীবনের ২২ বছরের প্রায় ১০ বছরেই দায়িত্ব পালন করেছেন ট্রাফিক বিভাগে। বিশ্বের ছোট-বড় বেশিরভাগ দেশেই ট্রাফিক ব্যবস্থায় রিমোট কন্ট্রোল লাইট অথবা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হলেও বাংলাদেশে এখনো ভরসা ফেরদৌস হোসেনদের হাতের ইশারা।

ফলে প্রতিনিয়ত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকি নিয়েই গাড়ির সামনে দাঁড়াতে হয় ফেরদৌস হোসেনের মতো এ-বিভাগের দায়িত্বরত সবাইকে। কখনো কখনো হাতের ইশারার এই ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে হতে হয় দুর্ঘটনার শিকার। রোদ অথবা বৃষ্টি যাই হোক। ডিজিটাল বাংলাদেশে এখনো দায়িত্ব পালনে দু-পায়ের উপর ভর দিয়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে থাকাই বড় দায়িত্ব ফেরদৌস হোসেনের।

ফেরদৌস হোসেন বলেন, রোদ হোক বৃষ্টি হোক সরকারি কাজের জন্য আমাদের ঝুঁকি নিতে হয়। কখনো কখনো দুর্ঘটনার শিকারও হতে হয়। তবে আধুনিক ব্যবস্থা থাকলে আমাদের কষ্ট কম হতো। সাথে জীবনের ঝুঁকিও কমতো।


শুধু ফেরদৌস হোসেনই নন। যানজটের শহর ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে এমন করুণ গল্প প্রায় ২ হাজার ৭০০-র বেশি পুলিশ সদস্যের। এতে জনসম্পদ অপচয়ের পাশাপাশি বিপুল অর্থও ব্যয় হচ্ছে সরকারের।

জনসম্পদ অপচয়ের পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষও। হাতের ইশারায় নিয়ন্ত্রণের ফলে অতিরিক্ত সময় রাস্তায় বসে থাকতে হচ্ছে অনেককে। পাশাপাশি পথচারীদের ঝুঁকিও ক্রমশ বাড়ছে ঢাকার সড়ককে।

প্রাইভেট কারচালক সামসুল হক বলেন, চলন্ত অবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশদের দেখা যায় না। তাদের হাতের ইশারা কখনো কখনো চোখে পড়ে না । এর জন্য আমাদের জরিমানা গুনতে হয়। এছাড়া যখন তখন মানুষ রাস্তা পার হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনাও ঘটছে। আধুনিক ব্যবস্থা থাকলে এসব এড়ানো যেত।

তথ্য অনুসারে, ২০০১-০২ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ঢাকা আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পের (ডিইউটিপি) আওতায় ৭০টি ইন্টারসেকশনে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল স্থাপন করা হয়। এছাড়া ২০১২-২৩ অর্থবছরে ‘ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ (কেস) প্রকল্পের আওতায় আবারও ২৯টি ইন্টারসেকশনে ডিজিটাল ট্রাফিক সিস্টেম ব্যবস্থা বসানো হয়। এই প্রকল্পেও ছিল বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা। এসব প্রকল্পেরে দেখভালের দায়িত্ব ছিল দুই সিটি করপোরেশনের। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এসব প্রকল্প দেখেনি আলোর মুখ। অল্প কদিনেই অচল হয়ে পড়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা।

২০১৮-১৯ অর্থবছরে সরকার ঢাকার ৪৩টি ট্রাফিক সিগন্যাল সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয় কেস প্রকল্পের আওতায়। এর ফলে শুধুমাত্র গুলশান দুই সিগন্যালে লাল ও সবুজ বাতি জ্বললেও বাকিগুলোর সবই অকেজো।


ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, গত দুই দশকে এসব প্রকল্পে শুধু ট্রাফিক ইন্টারসেকশন আর সিগন্যাল স্থাপনেই খরচ হয়েছে প্রায় পৌনে দুইশ কোটি টাকা। তবে এত টাকা খরচ করেও রাজধানীর সড়ক সংযোগে আসেনি নিয়ন্ত্রণ। অথচ ১১৫টির বেশি ট্রাফিক সিগন্যালসহ আরও ৫৫০টির মতো স্থানে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণের ভরসা হাতের ইশারা দিতে বাড়ানো হয়েছে পুলিশ। তথ্য বলছে, শুধু যানবাহন চলাচলের ইশারা দিতেই বছরে বিপুল সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশের বেতন দিতে সরকারে প্রায় ৪৪০ কোটির বেশি টাকা ব্যয় হচ্ছে। তবে আধুনিকায়ন করা গেলে সড়কের দুর্ঘটনা কমার সাথে ট্রাফিক পুলিশদের ঝুঁকি কমে আসবে, সাথে সরকারের বিপুল অর্থ ও জনশক্তি সঞ্চয় হবে।

এ বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশের গুলশান জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের প্রতিটি ইন্টারসেকশনে কম পক্ষে চার জন পুলিশ সদস্য কাজ করে। যদি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হয় সে ক্ষেত্রে আমাদের জনশক্তি কম অপচয় হবে পাশাপাশি আমাদের যে ঝুঁকি তা কমে আসবে।

এদিকে ঢাকার চারটি ইন্টারসেকশনে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সিস্টেম বসানোর আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছিল ডিটিসিএ। এতে ব্যয় হয় ৫২ কোটি টাকা। দুই সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ চারটি স্থানে ইনটেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম (আইটিএস) নিয়ে কাজ করে ডিটিসিএ। পরীক্ষামূলক ভাবে বসানো এসব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ট্রাফিক লাইট উত্তর সিটি করপোরেশনের মহাখালী ও গুলশান-১ ইন্টারসেকশনে সফটওয়্যারের অভাবে দাঁড়িয়ে আছে প্রদর্শন হিসেবে। দক্ষিণের যন্ত্রপাতি তো খোয়া গেছে।


প্রশ্ন হলো দুই দশকে এত সব প্রকল্পের ব্যর্থতা কার? নতুন পরিকল্পনাই বা কি দুই সিটি করপোরেশনের?

দুই দশকে প্রায় পৌনে দুইশত কোটি টাকার সব প্রকল্পই ছিল পাইলট প্রকল্প। পাইলট প্রকল্পে সফলতা না আসায় মুল প্রকল্প নেওয়া হয়নি। তাই ব্যর্থতার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট অফিসার মো. সেলিম খান বলেন, এর আগের সব প্রকল্পই ছিল পাইলট প্রকল্প। এখানে ব্যর্থতা বা সফলতার নয়। প্রকল্পগুলোতে ভালো সম্ভাবনা না থাকায় পরে মূল প্রকল্প নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা আরও একটি পাইলট প্রকল্প নিয়ে কাজ করছি। এআই বেইজড। আশা করি আগামী দুই মাসের মধ্যে সফলতা আসবে। এর পর আমরা এটা নিয়ে কাজ করব।

এ বিষয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার দেখভালের দায়িত্বে থাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দায়িত্বরত কারো বক্তব্য পাওয়া না গেলেও উত্তর সিটি করপোরেশনের মাথাব্যথা নেই আগের প্রকল্প নিয়ে। তবে নতুন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম।

তিনি বলেন, আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পাইলটিং করছি গুলশান-২ এ। ইতোমধ্যে আমরা সফলতাও পেয়েছি। এবার ডিজিটাল নয় হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বেইজড। এর পর যত প্রকল্প হবে । সব এআই দিয়ে চলবে। আমরা সে দিকে এগুচ্ছি।

;

বরিশালে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ও উন্নয়ন সাংবাদিকতা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশালে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও অংশীজনের সাথে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ও উন্নয়ন সাংবাদিকতা’ শীর্ষক ঘণ্টাব্যাপী মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩) এপ্রিল নগরীর বিএম কলেজ রোডস্থ বরিশাল বিভাগীয় গণগ্রন্থাগার সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি, বরিশাল কার্যালয়ের আয়োজনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাবেদ ইকবাল ডিপিআইও, পিআইডি বরিশাল এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন- বরিশাল সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আমিনুল হক।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- বরিশাল জেলা তথ্য অফিস পরিচালক মো. রিয়াদুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে স্থানীয় বিপ্লবী বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম ফরিদ, বরিশাল প্রেসক্লাব দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি কাজী আল মামুন, বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাব সভাপতি কাজী আবুল আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি সাধারণ সম্পাদক ও বৈশাখি টিভি প্রতিনিধি মিথুন সাহা, যমুনা টিভি বরিশাল ব্যুরো কাউসার হোসেন, বাসস প্রতিনিধি দেবব্রত দত্ত ফিল্ম, মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবসহ সভাপতি প্রিন্স প্রমুখ।

মতবিনিময় সভায় অতিথিরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ‘৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ করার ঘোষণাই দেননি তিনি। এর বাস্তবায়নের জন্য সকল পর্যায়ে তিনি কাজ করে যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জিত হলে সেই সাথে এদেশের গণমাধ্যমকর্মীরা স্মার্ট হওয়ার পাশাপাশি তাদের পেশাদারিত্ব বেড়ে যাবে। এর জন্য আমাদের সকলকে এদেশটাকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে কাজ করার করতে হবে।

মতবিনিময় সভায় বরিশাল প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি, বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাব সদস্য, বরিশাল বেতার ও বরিশালে কর্মরত জাতীয়, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার ৫০ জন গণমাধ্যমকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

;

উপজেলা ভোট

সাত চেয়ারম্যান, ৯ ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৭ চেয়ারম্যান, ৯ ভাইস চেয়ারম্যান, ১০ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চূড়ান্ত তালিকা আসলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ইসি থেকে এই তথ্য জানা গেছে। 

ইসি জানায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন- বালিয়াডাঙ্গী(ঠাঁকুরগাও) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। হাকিমপুর (দিনাজপুর)- উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) উপজেলা চেয়ারম্যান, বেড়া (পাবনা) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সিংড়া (নাটোর) উপজেলা চেয়ারম্যান, কুষ্টিয়া সদরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনাভোটে নির্বাচিত।

বাগেরহাট সদরে ৩টি পদ, মুন্সীগঞ্জ সদর- ৩টি পদ, শিবচর (মাদারীপুর)-৩টি পদে বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। বড়লেখা (মৌলভীবাজার) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পরশুরাম (ফেনী)- ৩টি পদ, সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান, কক্সবাজার সদরের ভাইস চেয়ারম্যান, রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) উপজেলা চেয়ারম্যান, কাউখালী (রাঙামাটি) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। 

;