জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর উপকূলীয় এলাকা। পূর্ণিমা এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে নদীতে স্বভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) দুপুর ৩ টার দিকে নদীতে জোয়ার শুরু হলে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করে। গত বুধবার থেকে প্রতিদিন জোয়ারের পানিতে উপকূল প্লাবিত হচ্ছে। প্রতিদিনই দুপুর থেকে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর আবার পানি নামতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে জেলার কমলনগর ও রামগতি উপজেলার কয়েকলক্ষ উপকূলবাসী ব্যাপক ক্ষতির কবলে রয়েছেন।
উপকূলের বাসিন্দারা জানান, বুধবারের (১০ আগস্ট) জোয়ারের পানির চেয়ে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার জোয়ারের পানির পরিমাণ বেশি ছিল। ফলে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়াসহ বসত বাড়ি এবং বসত ঘরে পানি উঠে পড়ে।
ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী অন্ততঃ ৯ টি ইউনিয়ন অরক্ষিত হয়ে আছে। বাঁধ নির্মাণের কাজে ধীরগতি হওয়ায় বার বার তাদেরকে জোয়ারের পানিতে ডুবতে হচ্ছে। এতে নদী ভাঙাসহ ব্যাপক ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে উপকূলীয় বাসিন্দাদের। দ্রুত বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দাবি তাদের।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, প্রতি অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার জোয়ারে মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। এখন পূর্ণিমা এবং বঙ্গোপসাগরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংকেত থাকায় জোয়ারের অতিরিক্ত পানি উপকূলে উঠে পড়েছে। আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আড়ম্বর ও জাঁকজমকপূর্ণ পর্যটন মেলায় এবারে থাকছে নানান আকর্ষণ। এবারের পর্যটন মেলা হবে দেশের নানান অঞ্চলের সংস্কৃতির মিলনমেলা। দেশীয় সংস্কৃতি উপভোগ করতে করতে পর্যটকদের জন্য বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে তিন দিনের সরকারি ছুটি। তাই এবারে পর্যটন মেলাকে ঘিরে সবার রয়েছে উৎসবমুখর আমেজ।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটকের মেলা নিয়ে রয়েছে বাড়তি আগ্রহ।
পর্যটন মেলার কার্ড হাতে কয়েকজন তরুণ তরুণী পছন্দের শিল্পী, প্রিয় ব্যান্ড চিরকুট, আভাস ব্যান্ডের তুহিনের কনসার্ট নিয়ে বেশ আগ্রহের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতেও দেখা গেছে। মেলা ঘিরে পর্যটকদের মাঝে যেমন আগ্রহ রয়েছে তেমনি তারকা মানের হোটেল মোটেল রেস্তোরাঁগুলোরও রয়েছে প্রবল আগ্রহ।
নিজেদের ব্র্যান্ডিং করতে তারাও মেলায় কয়েকটি করে স্টল রাখছে। মেলা ঘিরে থাকছে নারী উদ্যোক্তাদের নানান বাহারের স্টল। উৎসবের আমেজে অনেকেই স্পন্সর করছে। আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছে স্টলও।
ছুটির দিন গুলোতে মেলা মাতিয়ে রাখতে থাকছে দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা। ২৮ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবীকে সম্মান জানিয়ে জেলা প্রশাসন কোন প্রোগ্রাম না রাখলেও পরবর্তী দুই দিনের মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির গীতিনাট্য দল, সোনার বাংলা সার্কাস ও ডিজে প্রান্তসহ নানা আয়োজন থাকছে। এছাড়াও ৩০ সেপ্টেম্বর থাকছে চট্টগ্রামের প্রিন্স অফ আর্টিস্ট, লালন দল, প্রেম সুন্দর, জাতীয় শিল্পী লিজা ও ডিজে সবুজসহ আরো অনেকেই।
আদিবাসীদের নাচ, ফানুস উৎসব, ঘুড়ি উৎসব, বিচ ম্যারাথন, বিচ বাইক র্যালি নানান নতুন নতুন ইভেন্ট সহ বিচকে নানান ভাস্কর্যে জীবন্ত করে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
অনেকের আগ্রহ কুদ্দুস বয়াতিকে নিয়ে। সোনার বাংলা সার্কাস নিয়েও অনেকে মাতামাতি করছে। সব মিলিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে এবারে মেলা জমে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। লালন একাডেমি, শাহ আবদুল করিমের গান সব মিলিয়ে সর্বস্তরের দর্শকদেরও এবারের মেলায় টানবে বলে গুঞ্জন চারদিকে। এছাড়াও বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নানান সংস্কৃতির এক মিলন মেলায় পরিণত হবে পর্যটন মেলাটি।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড় থাকে পর্যটকদের। সেই সাথে তিন দিনের সরকারি ছুটি থাকায় প্রচুর পর্যটকের সমাগম হবে বলে মনে করছেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান। এ পর্যটন মেলা বিদেশি নাগরিকদের কক্সবাজারে ভ্রমণে আসতে আগ্রহ সৃষ্টি করবে বলেও জানান তিনি।
পর্যটন মেলা বিষয়ে সাজ সজ্জা, শেষ মুহূর্তের নানান প্রস্তুতি নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইয়ামিন হোসেন জানিয়েছেন, পর্যটন দিবস, পর্যটন মেলা ও বিচ কার্নিভাল তিনটি স্তরে বিভক্ত এই মেলা। বর্ণাঢ্য র্যালিসহ নানা প্রোগ্রামের সঙ্গে পালিত হবে পর্যটন দিবসটি। এরপর ৭ দিনব্যাপী মেলা ও বিচ কার্নিভাল চলবে। তিন স্তরের প্রোগ্রামে স্থানীয়, আঞ্চলিক, জাতীয় পর্যায়ের শিল্পীরা গাইবেন। একদিন একেক অঞ্চলের শিল্পীরা গাইবেন। পুরো সৈকতকে উৎসবমুখর করে গড়ে তোলা হবে। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিও। দেশ খ্যাত নামা শিল্পী, ব্যান্ড দল, সার্কাস দল যেমন মেলা মাতিয়ে রাখতে আসছেন তেমনি সৈকতকেও নানান রূপে সাজানো হচ্ছে। সৈকতের বালিয়াড়িতে আঁকা হবে নানান ভাস্কর্য। বিদেশিরাও নাচবেন, গাইবেন উপভোগ করবেন এই মেলা। বিমান, বাস, হোটেল, রেস্তোরাঁসহ সবকিছুতেই ছাড় রাখা হয়েছে। উপজাতিদের নাচ, সিলেটি, আঞ্চলিক, ভাওয়াইয়া, সার্কাস সব মিলিয়ে এবারের পর্যটন মেলা কক্সবাজারকে বিশ্বের বুকে ব্রান্ডিং করে গড়ে তোলবে।
মেলা উপলক্ষে সকল স্তরের ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছায় ছাড় রাখছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও কোন প্রতিষ্ঠান ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়ে কোন পর্যটককে হয়রানি, ঠকানো বা প্রতারণা করে মেলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করলে বিষয়টি কারো জন্য সুখকর হবে না বলেও হুঁশিয়ারি করেছে জেলা প্রশাসন। মেলার এলাগুলো থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪১ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ডিএমপির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক বিক্রি ও সেবনের অপরাধে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৫৩.৫ গ্রাম হেরোইন, ৯০ বোতল ফেনসিডিল, ৬ হাজার ২৬৬ পিস ইয়াবা ও ৩৭ কেজি ৪০০ গ্রাম গাঁজা জব্দ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে ডিএমপির থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর পপুলার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ভুবন চন্দ্র শীলের শ্যালক পলাশ চন্দ্র শীল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তেজগাঁওয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত অ্যাডভোকেট ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায় অপারেশন করে দুটি স্প্লিন্টার বের করা হয়। কিন্তু তিনি লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় আজ মারা যান।
গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার সিটি পেট্রলপাম্প এবং বিজি প্রেসের মাঝের সড়ক দিয়ে ভাড়ার মোটরসাইকেলে চড়ে বাসায় যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন ভুবন। তার মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায় গুলি। শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুনকে লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীদের করা গুলি লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়ে আহত হন ভুবন। তাকে প্রথমে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই ভুবনকে রাজধানীর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বরিশালের পাইকারি বাজারে আজ থেকে আলু বিক্রি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।
সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করতে না পারার কারণে গত বৃহস্পতিবার নগরীর আড়তগুলো আলু শূন্য হয়ে পড়ে। এরপর থেকে গত চারদিন ধরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি বন্ধ ছিলো। কোন আড়তে আলু দেখা যায়নি।
বরিশাল নগরীর পেঁয়াজপট্টি এলাকার আড়তদার মো. শিপন হোসেন জানান, রোববার বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে আড়তদাররা সাক্ষাৎ করেন। তিনি সহনশীল দামে আলু বিক্রির পরামর্শ দেন। আলু কেনা বেচার ভাউচার রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার আশ্বাসে সোমবার থেকে আলু বিক্রি শুরু করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ৩৮ থেকে ৪০ টাকা ও খুচরা বাজারে ৪৫ টাকা দরে বিক্রির সিদ্বান্ত হয়েছে। এ সিদ্বান্ত অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জ ও রাজশাহী অঞ্চল থেকে আলুবোঝাই ট্রাক সকালে বরিশালে এসে পৌঁছে। দুপুরের মধ্যে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বেচা-বিক্রি শুরু করা হবে।
আড়তদার মো. আল আমিন বলেন, দ্রব্যেমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আলু বেশি প্রয়োজন। সরকার ২৭ টাকা দরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রির সিদ্বান্ত দেয়। কিন্তু এ দামে আলু কোনভাবেই বিক্রি করা সম্ভব নয়। তাই আলু বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বরিশাল নগরীর পেঁয়াজ পট্টি এলাকায় ৩৫টি আড়ত রয়েছে। এ সকল আড়ত থেকে প্রতিদিন দেড় হাজার থেকে দুই হাজার বস্তা আলু বিক্রি হয়। আলু না থাকায় আড়তদের চেয়ে বেশি ভোগান্তিতে ছিলো শ্রমিকরা। গত চারদিন বেচা-বিক্রি না থাকায় অনেক শ্রমিক অর্থ সংকটে ছিলো।