দর-কষাকষি করে শিশুকে বিক্রি, স্ত্রীকে তালাক

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দর-কষাকষি করে শিশুকে বিক্রি, স্ত্রীকে তালাক। ছবি: সংগৃহীত

দর-কষাকষি করে শিশুকে বিক্রি, স্ত্রীকে তালাক। ছবি: সংগৃহীত

দর-কষাকষি করে প্রকাশ্যে ৯ দিনের কন্যা শিশুকে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এক বাবার বিরুদ্ধে। এছাড়াও পরপর তিনজন কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন তিনি।

এমন ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামে। ওই এলাকার রবিউল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে পাইকপাড়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে রবিউলের সঙ্গে একই এলাকার রেজাউল হকের মেয়ে জেসমিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। পরে তাদের দুটি কন্যা সন্তান হয়। এরপর ৭ নভেম্বর আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন জেসমিন। এ নিয়ে তিনটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। আর এ কারণে ৯ দিনের শিশুসহ স্ত্রীকে তালাক দেন স্বামী রবিউল।

পরে স্থানীয় মাতব্বররা মিলে দর-কষাকষি করে ওই শিশুকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। শিশুটিকে একই এলাকার ঈদগাহ পাড়ার আয়ুব আলীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

জেসমিন অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনটি কন্যা সন্তান হওয়ায় আমাকে আমার স্বামী জোর করে স্থানীয়দের সহায়তায় তালাক দিয়েছে। একই সঙ্গে আমার ৯ দিনের মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছে।’

জেসমিনের বাবা রেজাউল হক বলেন, ‘বিয়ের পর আমার মেয়ে দু’টি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। কিছুদিন আগে আরও একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। এ জন্য আমার মেয়েকে তালাক দেয় তার স্বামী রবিউল। গত তিনদিন আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম, খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান আসলাম মিলে টাকার বিনিময়ে রবিউল দিয়ে আমার মেয়েকে তালাক দেওয়ায় এবং আমার নাতনিকে বেঁচে দেয়। আমার মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ৯ দিনের শিশুকে জোর করে কেড়ে নেয়। পরে এ বিষয়টি আমি চেয়ারম্যানকে জানাই।’

এদিকে, একাধিকবার রবিউলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বিচারের সময় আমি ছিলাম না।’

খলিসাকুন্ডি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি, তবে কারা বিচার করেছে বা কী হয়েছে সেটা জানি না।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমিও শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’