কুষ্টিয়ার দেড়শ ইটভাটার মধ্যে ১২৪টিই নিয়ম বর্হিভূত



এস এম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশসেরা উর্বরা কৃষি জমি ও উদ্বৃত্ত খাদ্য শস্য উৎপাদনের অঞ্চল খ্যাত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা কুষ্টিয়া। জেলার মোট ১লাখ ৬২হাজার হেক্টর জমির মধ্যে প্রায় ১ লাখ ১৭হাজার হেক্টর কৃষি জমি হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে অতি উর্বরা তিন বা অধিক ফসলি কৃষি জমির পরিমাণ মাত্র ৭৬ হাজার হেক্টর।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, প্রতি বছর এসব কৃষি জমিতে উৎপাদিত খাদ্য শস্য জেলার প্রায় ২২ লাখ মানুষের বার্ষিক খাদ্য চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত খাদ্য শস্য দেশের অন্যান্য জেলায় খাদ্য সরবরাহের যোগান দিচ্ছে।

সর্বশেষ উৎপাদন বর্ষেও এই জেলা থেকে অন্তত ২লাখ ১ হাজার মে.টন উদ্বৃত্ত খাদ্য অন্যত্র সরবরাহ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করছেন জেলার কৃষি বিভাগ। খাদ্য শস্য উৎপাদনে এমন গৌরবময় অর্জন থাকলেও জেলায় ক্রমবর্ধমান কৃষি জমি ধ্বংসের শঙ্কার কথা জানাচ্ছেন তারা।

বিশেষ করে বেপরোয়া ইটভাটা মালিকদের কৃষি জমি আগ্রাসনকে এক আত্মঘাতি ঘটনা হিসেবে দেখছেন কৃষি বিভাগ।

ইটভাটা মালিকরা তাদের কাজকে বেআইনি বলে স্বীকার করেই বলছেন, কিছুই করার নেই; কারণ এসব দেখার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের সবাইকে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে ম্যানেজ করেই হচ্ছে এসব। কেউবা বলছেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু প্রকৃত চিত্র হলো- নামকাওয়াস্তে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই একটি অভিযান পরিচালিত হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না এমনই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/19/1542644664759.jpg

বিধি মতে, জেলায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থানের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে যথাযথ নিয়ম মেনে লাইসেন্সসহ আনুষঙ্গিক ছাড়পত্র নিতে হয়।

জেলা প্রশাসন ইটভাটা স্থাপনে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়ার ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ইতিবাচক ছাড়পত্র আছে কি না সে বিষয়টি দেখেন। তবে কুষ্টিয়া জেলার ছয়টি উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষি জমিতে গড়ে উঠা কেবলমাত্র তালিকাভুক্ত প্রায় ১৫২টি ইটভাটার মালিকদের কেউই উল্লেখিত নিয়ম মেনে ভাটা স্থাপন করেননি।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন চৌধুরী জানান, ভূমি জোনিং এ্যাক্ট-২০১০, কৃষি জমি সুরক্ষা আইন-২০১৫, পরিবেশ সুরক্ষা আইন-১৯৯৫সহ  ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনে আইনগত নীতিমালা-২০১৩ সবই লঙ্ঘিত হয়েছে উপজেলার সকল ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে। সরেজমিনে অভিযানে গিয়ে তাদের কাছে ইটভাটা স্থাপনে লাইসেন্স বা ছাড়পত্র কিছুই পাওয়া যায়নি।

কয়েকটি ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমরা ভ্যাট-ট্যাক্সসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরেই নিয়মিত টাকা দিচ্ছি। আমরা যদি অবৈধ হই তাহলে আমাদের কাছ থেকে এসব টাকা কেন নেয়া হচ্ছে ? আবার কেনইবা মাসে মাসে প্রশাসন অভিযানের নামে এসে জরিমানা আদায় ও ভাটা ভাঙচুরসহ নানা ভাবে আমাদের আর্থিক ক্ষতিসাধন করছেন? আমরাও তো দেশ উন্নয়নে অবকাঠামো নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ইট তৈরি করছি। আমরাও চাই এর একটা সঠিক সমাধান হোক।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভূতিভূষণ সরকার বলেন, কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে কৃষি ধ্বংসের একমাত্র এবং অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইটভাটা। বিগত এক দশকে জেলার অতি উর্বর তিন ফসলি ৭৫ হাজার ৮৮০হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে ২৮৮হেক্টর জমিতে গড়ে উঠা দেড় শতাধিক ইটভাটা প্রত্যক্ষভাবে ধ্বংস করেছে। এছাড়া এসব ইটভাটার দুষণ ও বিরূপ প্রভাবে চতুর্দিকে আরও ৪ গুণ জমি ফসলহানির শিকার হচ্ছে।

এত কিছু জানার পর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষি জমিতে কিভাবে ভাটা স্থাপনে ছাড়পত্র দেবে? কৃষি বিভাগ থেকে কোন প্রকার ছাড়পত্র ছাড়াই কৃষি জমিতে দেদারসে ইটভাটা গড়ে উঠলেও আমাদের হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা না থাকায় কিছুই করার নেই। ইটভাটা মালিকদের ‘সবাইকে ম্যানেজ’ প্রক্রিয়ার সাথে কৃষি বিভাগ কোন ভাবেই জড়িত নয় বলে তিনি দাবি করে  জানান, এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) ড. হায়াৎ মাহমুদ জেলার কৃষি উৎপাদনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, দিনে প্রতি একজনের মাথাপিছু খাদ্য চাহিদা ৪৮৭গ্রাম হিসেবে ধরে জেলার ২২লক্ষ মানুষের একদিনের খাদ্য যোগানে প্রয়োজন ১০৭১.৪ মে. টন এবং  বার্ষিক খাদ্য চাহিদা যোগানে প্রয়োজন ৩ লাখ ৯১ হাজার ৬১ মে.টন খাদ্যশস্য। জেলার সর্বশেষ বার্ষিক খাদ্য শস্য উৎপাদনে অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ছিলো- ৫লাখ ৯২ হাজার মে. টন (শুধুমাত্র চাল, গম ও ভুট্টার হিসেব ধরে) যা বার্ষিক খাদ্যের যোগান দিয়েও ২ লাখ এক হাজার মে.টন খাদ্য শস্য উদ্বৃত্ত ছিলো।

এছড়াও অন্যান্য খাদ্য শস্য যেমন চিনি, সবজি, ডাল বীজ কলা প্রভৃতিও রয়েছে। উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য উৎপাদনে দেশের হাতে গোনা কয়েকটি জেলার  মধ্যে কুষ্টিয়া অন্যমত। এই সফলতা অর্জনে জেলার কৃষি বিভাগ নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তবে এতদ্সত্ত্বেও নানাবিধ কারণে উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদনের এই ধারা অব্যাহত রাখাটা ক্রমান্বয়ে শঙ্কাগ্রস্ত হয়ে উঠছে। বিশেষ করে কৃষি জমিগুলি ক্রমবর্দ্ধমান গতিতে যেভাবে নানামুখি অকৃষিজ খাতে চলে যাচ্ছে তাতে কৃষি উৎপাদনের মূল আঁধার যে জমি তার সিংহভাগই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/19/1542644701921.jpg

এদিকে কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়া ম্যানেজ করে ইটভাটা নির্মাণের সত্যতা পেয়েছেন বলে জানালেন দুদক কুষ্টিয়ার সহকারি পরিচালক হাফিজুল ইসলাম।

পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার সিনিয়র কেমিস্ট মিজানুর রহমান বলেন,  জেলায় প্রায় দেড় শতাধিক ইটভাটার মধ্যে মাত্র ২৬টি ইটভাটা স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়া থাকলেও অন্যদের কোন ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। তবুও কিভাবে এসব ভাটা চলছে তা সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বলতে পারবেন। তবে এসব অবৈধ ভাটা মালিকদের সাথে পরিবেশ অধিপ্তরের কারো সাথে কোন অনৈতিক সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেন তিনি।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ ওবাইদুর রহমান জানান, জেলায় ভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে ভাটা মালিকরা নীতিমালা লংঘন করেই এসব করছেন। তবে ব্যক্তিগতভাবে কেউ ইচ্ছে করলেই জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে পারবেন না। কৃষি জমিকে অকৃষিজ দেখিয়ে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে এমন অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় দুটি অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব ইটভাটার কারণে পরিবেশ ধ্বংস, ফসলি জমির উর্বরতা বিনষ্ট ও জীববৈচিত্র্য ক্ষতির অভিযোগ রয়েছে। দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ও মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর নির্দেশে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

   

ধর্মান্ধরা সমাজকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে: ভূমিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আজকে ধর্মান্ধরা সমাজকে পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যার যার ধর্ম তার তার কাছে থাকবে এটা নিয়ে হিংসা করার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন ভূমিমন্ত্রী শ্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

শুক্রবার (১৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু,বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। আলোচনা সভায় ভূমিমন্ত্রী বলেন, ৭৫ এর পরে মৌলবাদের যে প্রভাব শুরু হয়েছে সেটি এখনো পর্যন্ত কন্ট্রোলে নিয়ে আসা যায়নি। আজকে তারা পহেলা বৈশাখকে বিতর্কিত করতে চায়। আমাদের নতুন প্রজন্ম এই পহেলা বৈশাখকে গ্রহণ করতে চায়; কিন্তু তারা এটা চায় না।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৮৮ সালে যে পরিমাণ সাম্প্রদায়িকতা ছিল, বর্তমানে সেটির অবস্থা আরও ভয়াবহ। বর্তমানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে মিথ্যাচার করা হচ্ছে সেটি অসাম্প্রদায়িকতার পরিপন্থী। নির্বাচনের সময় যে ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরী হয় সেটি আমরা কখনোই চাই না। রাজনীতির ক্ষেত্রে আমরা যা-ই বলি না কেন; কিন্তু বাস্তবে তা ভিন্ন। সামাজিক শক্তি আমাদের এখানে খুবই দূর্বল হয়ে গেছে। সমাজ এখন মৌলবাদের হাতে চলে গেছে। অসাম্প্রদায়িকতা এখন আর নেই। সরকার যেভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স হয়েছে, আমরা চাইবো এই অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আমরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন চাই। আমাদের যে শক্তি আছে আমরা কখনোই চাই না সেটা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাক

বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুর সংখ্যা এখন একেবারেই কম। আমরা প্রায় পাকিস্তানের সমানে হয়ে এসেছি। আমাদের উপরে যে আচরণ করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে সেগুলোর বিচার তেমন হয় না। অসাম্প্রদায়িকতা এখন আর নেই। এদেশে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করে সাম্প্রদায়িক দেশে তৈরি করার প্রচেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাস গুপ্ত, নাট্যকার শ্রী রামেন্দু মজুমদার, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. বিরেন সিকদার, অর্থনীতিবিদ ড. দেব প্রিয় ভট্টাচার্য, প্রফেসর ড. মেজবাহ কামাল প্রমুখ।

;

নওগাঁয় মাদ্রাসা ছাত্র হত্যা মামলায় প্রধান আসামি গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর বদলগাছীতে চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসা ছাত্র সাকিব হত্যা মামলার প্রধান আসামি আকবরকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ

শুক্রবার (১৭ মে) সকালে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মাহবুবুর রহমান তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামি আকবর হোসেন উপজেলার জাইজাতা গ্রামের মো: হেলাল হোসেনের ছেলে। দীর্ঘ ১০ মাস ২০ দিন পর তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। এ নিয়ে মামলার পাঁচ আসামিই গ্রেফতার হয়েছে পুলিশের হাতে। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সন্ধ্যা ৬ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আকবরকে তার নিজ বাড়ী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

থানা পুলিশ এবং মামলা সুত্রে জানা যায়, নিহত সাকিব হোসেন মহাদেবপুর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে। সাকিব ফতেপুর মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। গত ১৯ শে জুন সাকিব ভ্যান নিয়ে বাহিরে যায়। বাড়িতে ফিরে না আসলে পরিবার থানায় জিডি করে। তার এক সপ্তাহ পর মাতাজিহাট রোডে গাবনা ভোবন ব্রিজের নিচে স্থানীয়রা একটি লাশ দেখতে পায়। পরে থানায় জানালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরিবার লাশের পরিচয় সনাক্ত করে থানায় এজাহার দাখিল করে। এর ২৪ ঘন্টার মধ্যে থানা পুলিশ সাকিব হত্যার রহস্য উদঘাটনসহ হত্যায় জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করে।

ছিনতাই এর উদ্দেশ্যে মাদ্রাসার ওই ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে বলেও তারা জানান। মামলার প্রধান আসামি আকবর হোসেন দীর্ঘ দিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে থাকে। ফলে আদালত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তথ্য প্রযুক্তি এবং গোপন সংবাদের ভিক্তিতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানতে পারে মামলার প্রধান আসামি আকবর নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

;

সিইসি’কে স্বশরীরে চাটখিলের ভোট প্রত্যক্ষ করার আহবান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে স্থানীয় প্রশাসন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাদের অতি-উৎসাহী আচরণ ও জনগনের মাঝে ভয়-ভীতি প্রদর্শনের কারণে সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরী হয়েছে দাবি করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) স্বশরীরে চাটখিল এসে ভোট গ্রহণ প্রত্যক্ষ করার আহবান জানিয়েছেন আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জেড.এম আজাদ খান।

শুক্রবার (১৭ মে) বিকালে চাটখিল পৌরসভার নিজ বাসভবনে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সিইসি’কে তিনি এই আহবান জানান।

সাংবাদিক সম্মেলনে জেড.এম আজাদ খান বলেন, তিনি নির্বাচনী কর্মকান্ড শুরু করার পর থেকে তার নির্বাচনী কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি এমনকি প্রাণ নাশেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে রিটার্নি কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিয় কর্মকর্তা ও থানা পুলিশে অভিযোগ করেও তিনি কোন প্রতিকার পাননি। দোয়াত কলম প্রতিকের প্রার্থী (বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান) জাহাঙ্গীর কবিরের পক্ষে থানার ওসি সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন। যা তার কর্মকান্ডে প্রতীয়মান হচ্ছে। ওসি তার দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। যাহা সুষ্ঠ-নিরপেক্ষ ভোটের পরিবেশে বাধাঁ সৃষ্টি করবে বলে দাবি করেন তিনি। তাই অবাধ, সুষ্ঠ নির্বাচনের স্বার্থে চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ইমদাদুল হকের অপসারণের দাবি জানান এই প্রার্থী ।

জেড.এম আজাদ খান আরো বলেন, চাটখিল মহিলা ডিগ্রি কলেজের সভাপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান দোয়াত কলমের প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির। তাই ওই কলেজের শিক্ষকদের প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দিয়ে নির্বাচনে তাদের মাধ্যমে ভোট জালিয়াতির আশঙ্কা রয়েছে। একইভাবে খিলপাড়া আবদুল ওহাব ডিগ্রি কলেজের শিক্ষকগণও সরাসরি তার সমর্থনে রয়েছে। ফলে এই দুই কলেজের শিক্ষকদের কোনভাবেই নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে রাখা যাবে না। যদি রাখা হয় তাহলে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে চেয়ারম্যান প্রার্থী আজাদ খানের কর্মী-সমর্থকসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেক্টনিক্স ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকগন উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালীল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে ওসির বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠলে নির্বাচনের সময় তাকে প্রত্যাহার করা হবে।

;

বাসাবোতে তিন শ্রমিকের মৃত্যু

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও নিথর দেহে বাড়ির পথে আলতাবুর!



আল-আমিন রাজু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম ঢাকা
কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও নিথর দেহে বাড়ির পথে আলতাবুর!

কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও নিথর দেহে বাড়ির পথে আলতাবুর!

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরের মাদারগঞ্জ থানার গুইনারবাড়ি এলাকার গোলাপ শেখের ছেলে আলতাবুর রহমান (৪০)। রাজমিস্ত্রীর কাজ করে পরিবার নিয়ে রাজধানীর বাসাবো মায়াকানন এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। জীবন যুদ্ধে স্ত্রী আফরোজা বেগমকে সঙ্গে করে ঢাকায় থাকলেও দুই সন্তান থাকতেন গ্রামের বাড়িতে বাবা-মায়ের কাছে। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ঢাকায় ফিরে সকালে কাজে যোগ দিয়েছিলেন আলতাবুর। কিন্তু দিন পার হওয়ার আগে ফের বাড়ির পথে। তবে এবার নিথর দেহে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে চেপে।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছয় দিন আগে আলতাবুরের বড় বোন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বোনের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে যান। পাঁচদিন পর গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকায় ফিরেছিলেন। আজ সকালে কাজে যোগ দিয়ে কাজ শুরুর আগেই ১০ তলা ভবন থেকে পড়ে মারা যান।

শুধু আলতাবুর নয় রাজধানীর সবুজবাগ থানার আহমেদবাগ ফাস্ট লেন মায়াকানন মসজিদের পেছনের একটি নির্মাণাধীন ভবনের ১০ তলায় কাজ করতে গিয়ে তিন নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়।

শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই আলতাবুর ও মো. অন্তরের মৃত্যু হয়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মফিজুল ইসলাম (২০)কে উদ্ধার মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করে স্থানীয়রা। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তিনজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে আনা হয়েছে।


শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে গিয়ে দেখা যায়, নিহত তিন জনের কারোই স্বজন উপস্থিত নেই। কয়েকজন পরিচিত, বন্ধু ও দূর সম্পর্কের আত্মীয় এসেছেন। তাদের কাছ থেকে নিহত তিন শ্রমিকের সঙ্গে কাজ করা মিন্ত্রী মো. হালিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, গতকাল ভবনের বাইরের দিকে প্লাস্টার করার জন্য বাঁশ দিয়ে মাচা বানানো হয়েছে। আজ সকালে প্লাস্টারের কাজ শুরুর আগে পানি দেওয়ার জন্য আলতাবুর, মফিজ ও শান্ত মাচার ওপরে যান। হঠাৎ মাচার একটি বাঁশ ভেঙে তারা দুই ভবনের মাঝে পড়ে যায়। কপাল খারাপ ছাড়া কিছুই বলার নেই।

তিনি আরও বলেন, আলতাবুর ছয়দিন পর আজ সকালে কাজে আসেন। তার বড় বোন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলো। হঠাৎ তার মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামের বাড়িতে যান। গতকাল রাতে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসেন। আজ সকালে কাজে এসে পানি দিতে গিয়ে বাঁশ ভেঙে নিচে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনার সময়ে আমি নিচে ছিলাম ওরা ওপরের দিকে ছিলো। নিচে পড়ে যাওয়ার পরপরই মৃত্যু হয় আলতাবুর ও অন্তরের। হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান মফিজুর।

নিরাপত্তা বেল্ট ব্যবহার করতেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না। আমরা কোনো বেল্ট ব্যবহার করতাম না। কেউ কখনো এগুলো ব্যবহার করতে দেয়নি।

রাজমিস্ত্রীর সহকারীর কাজ করা মফিজুর রহমানের মৃত্যুর খবরে তার কয়েকজন বন্ধু ছুটে এসেছেন ঢামেকের মর্গের সামনে। তারা বন্ধুর লাশের অপেক্ষা করছেন। মফিজুরের বন্ধুরা বার্তা২৪.কমকে বলেন, মফিজুর তিন মাস আগে বিয়ে করেছে। তার বাবাও একজন রাজমিস্ত্রী। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সদর থানার চরপাড়া এলাকায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। গতকাল রাত ১০ টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বাসায় গেছে। সকালে কাজে এসে ভবন থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়।

একই ঘটনায় নিহত অন্তরের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার তাড়াটিয়া চরপাড়া এলাকায়। তিনি রাজমিন্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করতেন।

তিন শ্রমিকের ঘটনায় সবুজবাগ থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রলয় কুমার সাহা। তিনি বলেন, বাসাবোর মায়াকানন এলাকায় ভবন থেকে পড়ে তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন আলতাবুরের স্ত্রী আফরোজা। মামলায় অবহেলা জনিত কারণে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

;