এক গলিতে ১৩ স্কুল, নিচ্ছে ফরম পূরণের গলাকাটা ফি



তাসকিন আল আনাস, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম 
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

পুরান ঢাকার ইসলাম বাগ, ঘিঞ্জি এলাকা। সরু গলিগুলো বিদ্যুতের তারে প্যাঁচানো। শুনলে অবাক হলেও, এই এলাকার একটি গলিতেই ১৩ টি স্কুল। এই স্কুলগুলোতে এসএসসি ফরম পূরণে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ফি। প্রতিটা স্কুলেই নেয়া হচ্ছে সরকার নির্ধারিত ফি এর তুলনায় প্রায় সাড়ে ছয় গুণ বেশি টাকা। আর অভিযোগের আঙ্গুল এই এলাকাটির প্রায় সব স্কুলের দিকেই।

সোমবার (১২ নভেম্বর) অভিযোগের সূত্র ধরে বার্তা২৪ সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে এমন চিত্র দেখতে দেখা।

ইসলামবাগ মডেল স্কুলের এক শিক্ষার্থীর কাছে অতিরিক্ত ফি দাবি করা হয়। এমনকি বাড়তি টাকা না দিতে পারলে ফরম পূরণ করতে দেয়া হচ্ছে না বলেও জানান ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক। এমতবস্থায় নিরুপায় অভিভাবক নিজ সন্তানের ভবিষ্যতে নিয়ে শংকিত হয়ে পড়েন।

এই ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন তৈরিতে অভিযুক্ত স্কুলে  গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে সংস্কার কাজ চলছে স্কুলের।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/13/1542079592554.jpg

পরীক্ষা ফি এর ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ ফিরোজের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অন্য শিক্ষকরা জানান, তিনি এখন স্কুলে নেই তার নিজের অফিস, পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছেন। কখন আসলে ওনাকে (প্রধান শিক্ষক) পাব –জানতে চাইলে তারা জানান, তাহলে বিকাল ৫টার পর আসতে হবে।

তবে পরীক্ষার ফি বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলে অবস্থানরত অন্য শিক্ষকরা বিষয়টি এড়িয়ে যান। তারা এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

পরে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ ফিরোজের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়।  তিনি বলেন ‘ আজকেই টাকা জমা দিতে হবে। কত টাকা জমা দিতে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন ওইখানে লেখা আছে দেখে নেন।

পরে স্কুলের নথি থেকে দেখা যায় সর্বমোট জমা দিতে হবে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা, যেখানে ফরম পূরণের জন্যই নেয়া হচ্ছে প্রায় ১১ হাজার টাকা ।

সরকার নির্ধারিত ফি’র তুলনায় অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইটা সরকারি স্কুল না, আমি যার আন্ডারে পরীক্ষা দেওয়াই তাকে আমার দিতে হয় সাড়ে আট হাজার টাকা। বাকি টাকা কি আমি পকেট থেকে দিবো? আর পরীক্ষা দিতে হলে স্কুল নির্ধারিত ফি ১১ হাজার টাকাই দিতে হবে সাথে কোচিং, মডেল টেস্ট ফি বাবদ দিতে হবে আরো প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা।

শুধু ইসলামবাগ মডেল স্কুল নয়, একই এলাকার ইসলাম বাগ আইডিয়াল স্কুল, চাইল হ্যাভেন প্রি ক্যাডেট স্কুলেরও একই অবস্থা। প্রত্যেকেরই নোটিশ বোর্ডে এসএসসি এর ফরম পূরণের তালিকায় লেখা ১১ হাজার টাকা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/13/1542079634888.jpg

অভিযুক্ত স্কুলগুলো যে স্কুলের অধীনে পরীক্ষা দিবে অতিরিক্ত ফরম ফি নেয়ার ব্যাপারে সেই ইসলামবাগ আশরাফ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, আমরা কখনই অতিরিক্ত ফি নেই না। এমনকি সরকার নির্ধারিত ফি এর বাইরে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়ন ও আবারো পরীক্ষা নিলেও আমরা এক্সট্রা টাকা নেইনা। তাই অতিরিক্ত ফরম পূরণ ফির টাকার সাথে আমাদের কোন প্রকার লেনদেনই নাই। এ সময় তিনি প্রতিবেদককে নিজেদের টাকা নেয়ার স্লিপও দেখান ।  যাতে ১৮০০ টাকাই উল্লেখ আছে।

এবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ফরম পূরণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীপ্রতি সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করেছে এক হাজার ৮০০ টাকা। গত ৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সব বিভাগের জন্যই বিলম্ব ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ঢাকা বোর্ডের জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী, বিজ্ঞান বিভাগ চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি এক হাজার ৮০০ টাকা। এর মধ্যে বোর্ড ফি এক হাজার ৩৮৫ এবং কেন্দ্র ফি ৪১৫ টাকা। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি এক হাজার ৬৮০ টাকা। এর মধ্যে বোর্ড ফি এক হাজার ২৯৫ টাকা ও কেন্দ্র ফি ৩৮৫ টাকা। অন্যদিকে মানবিক বিভাগ চতুর্থ বিষয়সহ ফরম পূরণের ফি এক হাজার ৬৮০ টাকা। এর মধ্যে বোর্ড ফি এক হাজার ২৯৫ টাকা ও কেন্দ্র ফি ৩৮৫ টাকা। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অনলাইনে ফরম পূরণের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত। তবে বিলম্ব ফি দিয়ে ১৪ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে ফরম পূরণ করা যাবে। অার এ নির্দেশনা না মানা হলে উক্ত স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/13/1542077627491.jpg

এদিকে এসবের মাঝেই চলছে দুদকের অভিযান। রোববার ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের  ভারপ্রাপ্ত প্রধান সমন্বয়ক ও মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ) সারোয়ার মাহমুদ এর  নির্দেশে যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল  স্কুল অ্যান্ড কলেজে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানকালে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফি নেওয়া হলেও একই সাথে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কোচিং, মডেল টেস্ট এবং র‍্যাগ-ডে উপলক্ষে অর্থ নেওয়া হচ্ছে।

এসময় দুদক  টিমের সদস্যরা বলেন কোচিং ফি, মডেল টেস্ট কিংবা র‍্যাগ-ডের নামে বাধ্যতামূলকভাবে অর্থ নেওয়া সরকারি বিধি-বিধান পরিপন্থী। কলেজটির অধ্যক্ষ দুদক টিমের সাথে একমত পোষণ করে তাৎক্ষণিকভাবে একটি নোটিশ ইস্যু করে অঙ্গীকার করেন যে, “ এস.এস.সি পরীক্ষা-২০১৯ এর পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ব্যাপারে কোনো অভিভাবক আপত্তি  দিলে তার অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়া হবে।”

অভিযান প্রসঙ্গে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) সারোয়ার মাহমুদ  মন্তব্য করেন, “ ফরম পূরণে সরকার নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া সম্পূর্ণ অনৈতিক। ফরম পূরণের সঙ্গে বিভিন্ন  অজুহাতে অতিরিক্ত ফি নেওয়া সমর্থনযোগ্য নয়। সরকারি বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে অর্থ গ্রহণ বন্ধে কমিশন কর্তৃক এ জাতীয় অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।’

   

ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেলে দুই ভাইয়ের



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (১৮ মে) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আফজাল হোসেন ও আমির হোসেন। তারা দিনাজপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার চকদফরপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিহতরা সম্পর্কে আপন খালাতো ভাই।

স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার আউলিয়াবাদ বাজারে ঘরভাড়া নিয়ে সেখান থেকে আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করতো আফজাল হোসেন ও আমির হোসেন। আজ শনিবার ভোরে বীর বাসিন্দা ইউনিয়নের নোয়াবাড়ি গ্রামের হযরত আলীর ধান ক্ষেতে ৬ জন শ্রমিক ধান কাটতে ছিল। এসময় বৃষ্টি শুরু হলে ধান ক্ষেত থেকে দৌঁড়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় আফজাল ও আমিরের ওপর বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

বীর বাসিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন জানান, আজ সকালে কয়েকজন শ্রমিক হযরত আলীর ক্ষেতে ধান কাটতে যান। এসময় গুড়িগুড়ি বৃষ্টি সাথে বজ্রপাত হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও চারজন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

কালিহাতী থানার এসআই রাজীব জানান, নিহতের স্বজনেরা অপমৃত্যু মামলা দায়ের করলে ওসি স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

;

বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকরা কেন ঢুকবে, প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পৃথিবীর কোন দেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকে অবাধে সাংবাদিকরা ঢুকতে পারে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সবই ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। আপনার জানবার বিষয় থাকলে আপনি ভেতরে ঢুকবেন কেন?

শনিবার (১৮ মে) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

দেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে এখন ১৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসায় সরকার উদ্বিগ্ন কী না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, কে বলল আপনাকে ১৩ বিলিয়ন ডলার? নিউজে বলছে সাংবাদিকদের এমন উত্তরে তিনি বলেন, 'কোন নিউজে বলছে আপনাকে?' আমাদের কাছে হিসাব আছে। তখন সাংবাদিকরা বলেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরই বলেছেন ব্যবহার করার মতো ১৩ বিলিয়ন ডলার আছে। তখন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাহলে গভর্নরকে জিজ্ঞেস করুন যে কী কারণে এইটা এই পর্যায়ে আসল? আমরা তো এটা জানি না, আমরা জানি ১৯ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার, এর মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

রিজার্ভ কমে ১৩ বিলিয়নে নেমে আসায় অর্থনীতিবিদরা অনেকে উদ্ধেগ প্রকাশ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কয় বিলিয়ন ডলার নিয়ে আমরা স্বাধীনতার পর যাত্রা শুরু করেছি। ডলার ছিল আমাদের? বিএনপি কয় বিলিয়ন ডলার রেখে গেছে আমাদের? তিন বিলিয়ন প্লাস। তাহলে এখন ১৯-২০ বিলিয়ন ডলার আছে এটা কি কম নাকি? এখন আমাদের রফতানি আয় বাড়ছে, রেমিট্যান্সও বাড়ছে এই মুহূর্তের। এইগুলা বাড়লে রিজার্ভও বাড়বে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ আবদুস সবুর, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

;

সব মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে: প্রধান বিচারপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রের সব মানুষের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার রয়েছে ন্যায়বিচার পাওয়ার। আদালতে বিচার প্রার্থীরা ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্যই আসে।

শনিবার (১৮ মে) সকালে কক্সবাজার জেলা জজ আদালতে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগার ‘ন্যায়কুঞ্জ’ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আদালতের কর্তব্য হচ্ছে বিচার প্রার্থী সব নাগরিকের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। পাশাপাশি বিচার প্রার্থীদের সব সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা।

এছাড়া প্রধান বিচারপতি কক্সবাজারে মাদক মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

এ সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমসহ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট ডিভিশনের বিচারকরা এবং কক্সবাজারের জজ আদালতের বিচারকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান কক্সবাজার চীফ জুডিশিয়াল কোর্ট এলাকা পরিদর্শন করেন।

;

কাপ্তাই হ্রদ শুকিয়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে ৩ লাখ মানুষ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ হ্রদ হিসেবে পরিচিত রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে ৬ উপজেলার সঙ্গে জেলা শহরের যাত্রীবাহী লঞ্চ যোগাযোগ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

এতে করে এ উপজেলাগুলোর প্রায় তিন লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ব্যাঘাত ঘটছে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কৃষিজ পণ্য পরিবহন। এছাড়া ৪২টি লঞ্চের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫ শতাধিক শ্রমিকের জীবিকায় ধস নেমেছে।

প্রতিবছরই শুষ্ক মৌসুম এলেই হ্রদের এসব চর খননের কথা বলা হলেও আদতে বিষয়টি এখনো পড়ে রয়েছে মন্ত্রণালয়ের ফাইলে।

অনাবৃষ্টি, খরা, তলদেশ ভরাটসহ পানির স্তর অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পেয়ে কাপ্তাই হ্রদ এখন প্রায় জীর্ণশীর্ণ জলাশয়ে রূপ নিয়েছে। নৌযান চলাচলের পথে ডুবোচর জেগে ওঠায় অসংখ্য ইউনিয়নে সব ধরনের নৌযান চলাচল ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে।

চর জেগে ওঠায় লংগদু, উপজেলা সদর বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর, বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়িতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে নৌপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

রাঙামাটি থেকে উপজেলাগুলোতে চলাচল করা লঞ্চগুলোর শ্রমিকেরা বর্তমানে বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন জানিয়ে রাঙামাটি নৌযান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ দে জানান, হ্রদে পানি শুকিয়ে বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা চরের কারণে অন্তত ৪২টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে করে প্রায় ৫শ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন।

এদিকে, রাঙামাটিতে আসা-যাওয়া করা যাত্রীরা জানান, হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় উপজেলাগুলোর সঙ্গে লঞ্চ যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে। এতে ১শ ৫০ টাকার ভাড়া ৭শ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। স্পিডবোটে করে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। এতে করে সাধারণ কৃষক ও খেটে-খাওয়া মানুষজনের অবর্ণনীয় কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।

কাপ্তাই হ্রদ শুকিয়ে যাওয়ায় রাঙামাটির সঙ্গে ৬ উপজেলায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ, ছবি- বার্তা২৪.কম 

এছাড়া এলাকার মানুষ যেমন করে খাদ্য-সামগ্রী নিতে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন, তেমনিভাবে সেসব উপজেলা থেকে আনারস, কাঁঠাল, আমের মতো মৌসুমী ফল বাজারে আনতে নানা দুর্ভোগে পড়তে হতে হচ্ছে চাষীদের। কোনো কোনো ক্ষেত্রে খরচ তুলতে না পাড়ায় মৌসুমী ফল বাজারেই আনেন না চাষীরা। ওই সব উপজেলার মানুষজন দ্রুত খনন করে কাপ্তাই হ্রদের গভীরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

এই সংকট সমাধানে কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিংয়ের দাবি জানিয়ে নৌযান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যাত্রী পরিবহন) রাঙামাটি জোনের সভাপতি মঈনউদ্দীন সেলিম বলেন, প্রতি বছরই শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে গিয়ে এই দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। তিন মাসেরও বেশি সময় হ্রদে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। এর ফলে, একদিকে যেমন মালিক-শ্রমিকদের ক্ষতি হয়, অন্যদিকে যাত্রীরাও কষ্ট পান। সে কারণে আমরা অনেকদিন ধরেই কাপ্তাই হ্রদ খননের দাবি জানিয়ে আসছি।

হ্রদের নির্দিষ্ট কিছু অংশ ড্রেজিং করলে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক হবে। তখন নৌ চলাচলও স্বাভাবিক হবে। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির কারণে আমাদের দাবিটা কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে।

কাপ্তাই হ্রদে ড্রেজিংয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি পাঠানোর কথা জানিয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, কাপ্তাই হ্রদ খননের জন্য ৯শ ৭৭ কোটি টাকার একটি ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে আছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই কাপ্তাই হ্রদে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।

;