কাঁচা মরিচে ‘ঝাল’ নেই
‘এক কেজি মরিচ তুলতি শ্রমিক নেয় ৬ টাকা। ক্ষেত থিকি আড়ত পর্যন্ত আনতে গাড়ি ভাড়া কেজিতে ৩ টাকা। আর সেই কাঁচা মরিচ কেজিতে বিক্রি করছি ৮ টাকায়। এই মরিচে ‘ঝাল’ নাইরে ভাই! একুন আমরা কিরাম করে মরিচ তুলবোনে। চাষির কোনো দিকেই শান্তি নেই। ধান কেউ নিতি চাচ্ছে না। মরিচ বেচেও টাকা উঠল না।’
এক বুক হতাশা নিয়ে এভাবেই মরিচের দর পতনের বর্ণনা দিলেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কড়ুইগাছি গ্রামের মরিচ চাষি বকুল হোসেন।
মেহেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় মরিচ আড়ৎ হচ্ছে গাংনী বাজারে। বুধবার (৭ নভেম্বর) এ বাজারে প্রতি কেজি সাদা মরিচ ৭-৮ টাকা কেজি ও কালো মরিচ ১০-১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
গাংনী কাঁচাবাজারের আড়তদার সাহাদুল ইসলাম জানান, এ বছর মেহেরপুর জেলায় ব্যাপক মরিচের আবাদ হয়েছে। এছাড়া দেশের অনেক নিচু জেলাও এবার মরিচ হয়েছে। তাই মরিচের দর পড়ে গেছে। গত বছর এই সময়ে পাইকারি দরে প্রতি কেজি মরিচ ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কয়েকজন চাষি জানান, বর্তমান সময়ে ধানের ব্যাপক দর পতনের লোকসান পুষিয়ে নিতে মরিচই ছিল চাষিদের একমাত্র ভরসা। কিন্তু এমন দর হলে মরিচ গাছ কেটে দিয়ে অন্য ফসলে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। কেননা আর কয়েকদিন পরেই বগুড়াসহ উত্তরবঙ্গের মরিচ বাজারে চলে আসবে। আর তখন মেহেরপুরের মরিচ বাইরের জেলায় বিক্রি হবে না।
আড়তদার মহিবুল ইসলাম জানান, আশ্বিন মাসে দুই দিন বৃষ্টিপাতের পর মরিচের দর ৫০-৬০ টাকা হয়। এছাড়া চলতি মৌসুমে আর তেমন দর বাড়েনি। গত সপ্তাহে ১৭-৩৫ টাকা কেজিতে মরিচ বিক্রি হয়েছে। চলতি সপ্তাহ থেকে মরিচের দর পড়তে শুরু করেছে। তবে এখনো রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা মরিচ কিনছেন।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে জেলার তিনটি উপজেলায় ৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদ করা হয়েছে।