শেখ ফজলল করিম স্মৃতিপাঠাগারে ইউপি কার্যালয়!



নিয়াজ আহমেদ সিপন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কবি শেখ ফজলুল করিম/ছবি: সংগৃহীত

কবি শেখ ফজলুল করিম/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক

কে বলে তা বহুদূর,

মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক

মানুষেতে সুরাসুর।’

কবি শেখ ফজলল করিমের এ কবিতাটি ছোট বেলায় পড়েননি এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু অযত্ন আর অবহেলায় হারাতে বসেছে কবির স্মৃতি বইপত্র থেকে শুরু করে পাঠাগারটিও। এলাকাবাসী ও সাহিত্যপ্রিয় মানুষদের বহুদিনের প্রত্যাশিত কবির স্মৃতি পাঠাগারটি এখন ব্যবহৃত হচ্ছে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জের কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয় হিসেবে।

শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) কবি শেখ ফজলল করিমের ৮২তম মৃত্যুবার্ষিকী। নীরবেই কেটে যাচ্ছে সাহিত্যবিশারদ উত্তরবঙ্গের এই কবির মৃত্যুবার্ষিকী। কবির স্থানীয় ভক্তরা জানিয়েছেন, প্রতিবছর কবির মৃত্যুবার্ষিকীতে হয় না মিলাদ মাহফিল, এমনকি কোন আয়োজন। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনায় কবি শেখ ফজলল করিমের স্মৃতি বিজড়িত গ্রামের বাড়িতে পারিবারিকভাবে ছোট পরিসরে দোয়া আর মিলাদ মাহফিলের মাঝে সীমাবদ্ধ কবির মৃত্যুবার্ষিকী।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/28/1538133060698.jpg

জানা গেছে, ২০০৫ সালে কবির স্মৃতি রক্ষার্থে কবির বাড়ির অদূরে কাকিনা বাজারে নির্মিত পাঠাগারটিতে নেই কোন কেয়ারটেকার, নেই পাঠক, রয়েছে বইয়ের সংকট। বর্তমানে পাঠাগারটি কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ যেন সম্মানের নামে অপমান। কবির নামে এটা প্রহসন বলেও মন্তব্য করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কবি ভক্তরা।

কবির পারিবারিক সদস্যরা জানান, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের আমলা, মন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ রাজনৈতিক নেতা, কবি, লেখক অনেকেই কবির বাড়ি পরিদর্শনে এসে বিভিন্ন রকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছেন। যা কখনই বাস্তবায়ন হয়নি। শুধুমাত্র কবির বাড়ি যাওয়ার রাস্তাটি পাকা হওয়া এবং কবির নামে কাকিনা বাজারে একটি দ্বিতল ভবনের পাঠাগার নির্মিত হলেও কবির বাড়ি ও ব্যবহারিক সংগ্রহশালা এখন ধ্বংসের পথে।

সরকারিভাবে কখনই পালিত হয় না কবির জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকী। পারিবারিকভাবে সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব স্মরণ করা হয় কবিকে। কবির স্মৃতিগুলো রক্ষার্থে বাড়িটি মেরামত করে তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষণ, পাঠাগারটিতে একজন লাইব্রেরিয়ানসহ পর্যাপ্ত বইয়ের ব্যবস্থা করা এবং কবির জীবনী ও তাঁর বিভিন্ন বই সংরক্ষণ করে জেলা শহরে কবির নামে একটি পাঠাগার স্থাপন করার দাবি জানান বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/28/1538132309511.jpg

২০০৫ সালে নির্মিত পাঠাগারটি দেখভালের জন্য ২০০৯ সালে উপজেলা প্রশাসন থেকে স্থানীয় আজিমুদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে ১ হাজার টাকা সম্মানীতে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে নতুন ইউপি কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কারণে কাকিনা ইউপি কার্যালয় হিসেবে অস্থায়ীভাবে কবির পাঠাগারটি ব্যবহৃত হচ্ছে। কাকিনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘পাঠাগারটি বন্ধ থাকায় উপজেলা প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানিয়ে অস্থায়ী এখানে চলছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম।

কাকিনা উত্তর বাংলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী সোহান,পদক,পল্লব, জেসমিন আরা জুতি। তারা জানান, কবির স্মৃতি পাঠাগারটিতে ইউপি কার্যালয় বসিয়ে সম্মানের নামে কবিকে অপমান করা হচ্ছে। ইউপি কার্যালয় হোক তাতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বর্তমানে সেটি তালাবদ্ধ করে রেখেছে ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি যখন আসেন বই পড়ার সুযোগ থাকে না । ওনার দলীয় নেতকর্মীদের নিয়ে তিনি ব্যাস্ত থাকেন।

১৮৮২ সালের ১৪ এপ্রিল লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন শেখ ফজলুল করিম। মাত্র ১৩ বছর বয়সে পার্শ্ববর্তী বিনবিনা গ্রামের গনি মোহাম্মদ সর্দারের মেয়ে বসিরন নেছা খাতুনের সাথে বিয়ে হয় কবির।

কাকিনার মত অজপাঁড়া গায়ে নিজ বাড়িতে শাহাবিয়া প্রিন্টিং ওয়ার্কস নামের ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। জীবদ্দশায় সাহিত্য কর্মের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন কবি। তিনি মোট ৫৫টি গ্রন্থ লিখে ছিলেন। সংরক্ষণের অভাবে যার অনেক গুলোর এখন আর হদিস মিলে না।

সাহিত্য চর্চার সুবিধার্থে সবার জন্য উম্মুক্ত কবি বাড়িতে ১৯৯৬ সালে করিমস্ আহামদিয়া লাইব্রেরী নামের একটি পাঠাগার স্থাপন করেছিলেন। যার কোন চিহ্নই আজ আর অবশিষ্ট নেই।

বাংলা ১৩২৩ (১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দ) সনে ভারতের নদীয়া সাহিত্য পরিষদ তাকে সাহিত্য বিশারদ উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯৩৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কবি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগের পর অরক্ষিত হয়ে পড়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Sep/28/1538132442925.jpg

উত্তর বাংলা কলেজের প্রভাষক সুভাস চন্দ্র বলেন, ‘সঠিক পরিচালনার অভাবে কবির পাঠাগারটির আজ এমন অবস্থা। পাঠারগারটি পরিচালনা করার জন্য সঠিক লোক থাকলে বা সব সময় খোলা থাকলে শিক্ষার্থীরা কিছু জানবে কিছু শিখবে।’

কবির বাড়ির ভিতরে একটি কক্ষে কবির ব্যবহৃত টুপি, দোয়াত-কলম, ছোট্ট কোরআন শরিফ, ম্যাগনিফাইং গ্লাস ও কিছু বোতাম সংরক্ষণ করে রেখেছেন কবির প্রপুত্র (নাতি) ওয়াহিদুন্নবী। তিনিও বয়সের ভারে নাজুক হয়ে পড়েছেন। তিনি বলেন, 'কবির স্মৃতি ধরে রাখতে যত্ন করছি কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় সংস্কার করতে পারছি না। দীর্ঘদিন এমনি পড়ে থাকায় কবির ব্যবহৃত জিনিসগুলো নষ্ট হতে চলেছে।’

ওয়াহিদুন্নবী আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘সরকার যায় আর আসে কিন্তু কবির দিকে কেউ থাকায় না। আমার কানে আসে অনেক বরাদ্দ আসে কবির নামে কিন্তু এসব কোথায় যায় তার কোন খবর নেই।’

‘পাঠাগারটিতে প্রচুর পরিমানের বই রাখা উচিৎ কিন্তু সেখানে এখন ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন থাকে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান যোগদান করার সময় আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন, কবির সব বিষয় তিনি দেখবেন কিন্তু কোথায়! তারও কোন খবর নেই।’ 

জেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে তার নামে একটি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থাকলেও শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সেখানেও পালিত হচ্ছে না মৃত্যুবার্ষিকী। ফলে এ প্রজন্মের অনেকেই জানেন না কবি শেখ ফজলল করিম সম্পর্কে।

লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের পাশে কাকিনায় কবির স্মৃতির উদ্দেশ্যে ছোট্ট একটি স্মৃতিফলক রয়েছে যা কবির বাড়ির দিক নির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া আর কোন উল্লেযোগ্য প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি।

বিভিন্ন সময়ে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন হলে কবি শেখ ফজলল করিমের স্মৃতি চিহ্নগুলো সংরক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি কবির বাড়িটি দেশের উল্লেখযোগ্য স্থানে পরিণত হবে।

   

দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করুন: বৌদ্ধ নেতাদের রাষ্ট্রপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার জন্য বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

তিনি বলেন, মানুষকে আলোর পথ দেখাবেন। দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করুন। শুধু নিজে বা পরিবারকে নিয়ে ভাল থাকার চিন্তা না করে সকলকে নিয়ে ভালো থাকার চিন্তা করবেন।

বুধবার (২২ মে) বিকেলে বঙ্গভবনে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে রাষ্ট্রপ্রধান এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছে হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বিশ্বের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদেরকে মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, মহামতি বুদ্ধ স্থান-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর সকল জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেছেন। বৌদ্ধ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়তে আপনারা বুদ্ধের সুমহান শিক্ষা ও আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিবেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, সব ধর্মই মানুষের কল্যাণের কথা বলে। মানুষকে শান্তি ও সৌহার্দের শিক্ষা দেয়। প্রতিটি ধর্ম থেকে যা উৎকৃষ্ট তা গ্রহণ করতে হবে এবং নিকৃষ্ট পরিত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষের কল্যাণের জনাই ধর্ম, অকল্যাণের জন্য নয়। মনে রাখতে হবে ধর্ম উপলব্ধির বিষয়, তর্কের নয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ বিশ্বের বহুস্থানে মানবাধিকার ভূলুষ্ঠিত হচ্ছে এবং লোভ-লালসা, ঈর্ষা, প্রতিহিংসার ন্যায় কু-প্রবৃত্তি সমাজের শোষণ-বঞ্চনা বাড়াচ্ছে। দেশে দেশে যুদ্ধবিগ্রহ ও বিশ্ব অর্থনীতিকে ভারসাম্যহীন করে তুলেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থ-সামাজিক খাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

কঠিন এ সময়ে, রাষ্ট্রপতি সকলকে একে অপরের পাশে দাঁড়াবার ও আহ্বান জানান।

বঙ্গভবনে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপনে রাষ্ট্রপতি ও তার স্ত্রী ডা. রেবেকা সুলতানা বৌদ্ধ নেতাদের শুভেচ্ছা জানান। বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারাও বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতিকে ফুলের তোড়া উপহার দেন।

;

শেরেবাংলা নগর থানায় হবে আনার হত্যার মামলা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শেরেবাংলা নগর থানায় হবে আনার হত্যার মামলা

শেরেবাংলা নগর থানায় হবে আনার হত্যার মামলা

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের খুনের ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করবেন মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

বুধবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

হারুন বলেন, নিহত সংসদ সদস্যের মেয়ে আমাদের কাছে এসেছেন। তার বাবা বাসা থেকে বের হয়ে গেলেন। এরপর আর পাওয়া যায়নি। সেখানে কি ঘটেছে এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করার জন্য এসেছেন। মামলা কিভাবে কোথায় করবেন তা আমরা বলেছি। তার বাবা সংসদ ভবন এলাকায় থাকতেন। সেখান থেকে তিনি ভারতে গেছেন। আমরা তাকে বলেছি শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করতে। মামলা করতে আমাদের কর্মকর্তারা তাকে সহযোগিতা করছে। মামলাটি আজকের মধ্যেই হবে।

তিনি বলেন, একজন সংসদ সদস্যের হত্যাকাণ্ড কখনো মেনে নেয়া যায় না। আমরা কলকাতা পুলিশের সঙ্গে মিলে হত্যাকারীদের ধরতে কাজ করছি। এরইমধ্যে আমাদের হাতে কয়েকজন আছে। তাদের থেকেও আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছি। সে বিষয়ে নিয়ে আমরা কাজ করছি।

এর আগে, ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আনোয়ারুল আজিমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস বলেন, আমার বাবা নেই, আজ আমরা এতিম হয়ে গেছি। আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই। এভাবেই কান্না জড়িত কণ্ঠে বাবা আনোয়ারুল আজিমের হত্যাকারীদের বিচার চাইলেন মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস।

উল্লেখ্য, গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় গিয়ে উত্তরের বরানগরে বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন আনার। ১৩ মে তিনি কারও সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু আর ফেরেননি।

;

এমপি আনারের লাশ মেলেনি, রহস্য ‘নীল গাড়ি’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার খুন হয়েছেন বলা হলেও এখনো তার মরদেহ উদ্ধার করা যায়নি।

কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, আনোয়ারুলের সঙ্গে কয়েকজন একটি ফ্ল্যাটে ঢুকছেন। পরে তারা সেই ফ্ল্যাট থেকে চলে গেলেও আনোয়ারুল যাননি। কিন্তু না বেরোনোর ঘটনা থেকে পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ, তাকে খুন করা হতে পারে। তবে, রহস্য তৈরি হয়েছে নীল গাড়ি নিয়ে। যে গাড়ি করে বের হয়েছিলেন এমপির সঙ্গীরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, কলকাতা পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে। কারণ আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে তারা রক্তের দাগ পেয়েছেন। পুলিশের সন্দেহ, সেটা আনোয়ারুলের হতে পারে। তবে পরীক্ষার পরই তারা এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারবেন। 

দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের তরফ থেকেও এমপি আনোয়ারুল আজিমের বিষয়ে কোনো কথা বলেনি। কমিশনের সূত্র জানিয়েছেন, তারা গণমাধ্যম থেকে বিষয়টি জেনেছেন। সরকারের তরফ থেকে তাদের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি।

কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জিভা গার্ডেন

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে । এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে ধানমণ্ডিতে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনজনকে বাংলাদেশ পুলিশ আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তদন্ত চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা যারা এ খুনের সাথে জড়িত সবার বিষয়ে জানতে পারবো। ভারতের পুলিশও সহযোগিতা করছে। আমাদের পুলিশ অত্যন্ত দক্ষ। তদন্ত শেষ হলে এ খুনের মোটিভ কী, সবকিছু বিস্তারিত দিতে পারবো আমরা।

গত ১২ মে আনোয়ারুল আজিম চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান। ১৮ মে কলকাতায় তার পরিচিত গোপাল বিশ্বাস পুলিশে একটি ডায়েরি করেন। সেখানে বলা হয়, আনোয়ারুল ১৩ মে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর আর ফেরেননি। তিনি ফোন করে জানিয়েছিলেন, বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছেন। ১৫ মে তিনি মেসেজ করে জানান, দিল্লিতে আছেন। ১৭ তারিখ থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

বুধবার গোপাল বিশ্বাসকে উদ্ধৃত করে কিছু গণমাধ্যম জানায় যে, পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে, কলকাতার একটি ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ আনোয়ারুল আজিমের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।

;

নোয়াখালীতে অস্ত্রসহ ৪ ডাকাত গ্রেফতার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,নোয়াখালী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি দেশীয় এলজি, ২টি ছোরা, ১টি গ্রিল কাটার, ১টি হাতুড়ি ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ১টি সিএনজি উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে উপজেলার একাধিকস্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের কালামিয়া ছৈয়াল বাড়ির মো. সুমন (৩৮), একই ইউনিয়নের পূর্ব মাইজচরা গ্রামের মো. সৈয়দ আলম (২৯), লক্ষীপুরের চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের নোমানাবাদ কলোনীর মো. বেলাল হোসেন (৪০) ও চট্রগ্রামের কর্ণফুলী থানার চরলক্ষ্যা গ্রামের মোহাম্মদ নুর গোষ্ঠী নতুন বাড়ির সাইফুল ইসলাম (৩০)।

পুলিশ জানায়, গত ১৬ মে ভোর রাতের দিকে বেগমগঞ্জের লাকুড়িয়া কান্দি গ্রামের সিরাজ মিয়ার বাড়ির রুহুল আমিন মিয়ার টিনশেড বিল্ডিং ঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন ডাকাত ঘরের লোকজনদের মারধরসহ অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ঘরে থাকা ১৮ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ টাকার মালামাল লুণ্ঠন করে নিয়ে যায়। এ দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারের ভিত্তিতে বেগমগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ অভিযানে নামে।

জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে পুলিশ উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রামের ফেনী-লক্ষ্মীপুর জাতীয় মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে সরুগো পুল নামক স্থানে রাস্তার উপর চেকপোস্ট স্থাপন করে। ওই সময় চৌমুহনীর দিকে ২টি সিএনজি দ্রুত গতিতে আসতে দেখলে পুলিশ সিএনজি দুটি থামার জন্য সংকেত দেয়। থামানোর সংকেত দেওয়ার পরেও সিএনজিটি ঘটনাস্থল থেকে চৌমুহনীর দিকে চলে যায়। পিছনের সিএনজির ড্রাইভারও সংকেত না মেনে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ সিএনজির পিছনে ধাওয়া করে। এ সময় সিএনজিতে থাকা ৪ জন আসামি কৌশলে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক পুলিশ ধাওয়া করে সিএনজিতে ড্রাইভার হিসেবে থাকা ১নং আসামি সুমনকে সিএনজিসহ আটক করে। পরে গ্রেফতার আসামির তথ্যমতে চৌমুহনী রেল স্টেশন ও চৌমুহনী ফলপট্রি থেকে অপর আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত ডাকাতেরা ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করে। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপরাপর আসামি গ্রেফতারসহ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান পরিচালনা অব্যাহত আছে। গ্রেফতারকৃত আসামিরা পেশাদার ডাকাত। তারা বিভিন্ন সময় নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন থানাসহ এর আশপাশের জেলা ও থানা সমূহে ডাকাতি করে বেড়ায়।

;