ফুলের কথা প্রথমেই সবার মাথায় আসবে গোলাপের নাম। সবচেয়ে সুন্দর ও সুঘ্রাণযুক্ত এই ফুলটি শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, তার গুণের জন্যেও অনন্য। বন্ধুত্ব, ভালোবাসা ও শান্তির প্রতিক বহনকারী গোলাপের শুকনো পাপড়ির দারুণ দশটি ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন।
১. শুকনো গোলাপের পাপড়ির সঙ্গে মুলতানি মাটি মিশিয়ে চমৎকার ফেস প্যাক তৈরি করা যায়।
বিজ্ঞাপন
২. শুকনো গোলাপের পাপড়ি থেকে তৈরি করা গোলাপজল ত্বকের যত্নে ও ত্বক পরিষ্কার করতে দারুণ কার্যকর।
৩. শুকনো ও গুঁড়া করা গোলাপের পাপড়ি পানিতে মিশিয়ে ক্ষতস্থানে ব্যবহার করলে ক্ষতস্থান দ্রুত ভালো হয়।
বিজ্ঞাপন
৪. শুকনো গোলাপের পাপড়ি গুঁড়া দুধের সঙ্গে স্বল্প পরিমাণ মিশিয়ে পান করলে অ্যাসিডিটি ও স্টমাক আলসারের সমস্যা কমে যায়।
৬. ডায়রিয়ায় পাশাপাশি কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে উপকারী ভূমিকা রাখে শুকনো গোলাপের পাপড়ির গুঁড়া।
৭. হারবাল চা তৈরিতে শুকনো গোলাপের পাপড়ির ব্যবহার নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন মশলার সঙ্গে শুকনো এক-দুইটি পাপড়ি বা পাপড়ি গুঁড়া ব্যবহারে অ্যাসিডিটির সমস্যাসহ দাঁতের ক্যাভিটি বা ক্ষয়রোধ রোধ করা সম্ভব।
৮. গলা ব্যথা অথবা অতিরিক্ত কাশি ও কাশির ফলে গলার ভেতরে ছিলে যাওয়ার মত জ্বলুনিভাব কমাতে চাইতে শুকনো গোলাপের পাপড়ি পানিতে জ্বাল দিয়ে ছেঁকে সেই পানিতে গার্গল করতে হবে।
৯. গোলাপের কুড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি পাওয়া যায়। তাই গোলাপের কুড়ির শুকনো পাপড়ির চা ঠান্ডাজনিত সমস্যা ও কাশির প্রাদুর্ভাব কমাতে কার্যকর।
১০. পুরো বিশ্ব জুড়েই রোজ অয়েল অন্যতম সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি পণ্য। এই তেল ঘরেই তৈরি করে নেওয়া সম্ভব। শুকনো গোলাপের পাপড়ি এবং নারিকেল তেল জ্বাল দিতে হবে মাঝারি আঁচে। তেলের রঙ পরিবর্তন হয়ে আসলে পানিয়ে ছেঁকে নিতে হবে ভালোভাবে এবং সংরক্ষণ করতে হবে।
শুকনো গোলাপের পাপড়ি কীভাবে সংরক্ষণ করতে হবে?
ফুল থেকে পাপড়ি ছিঁড়ে টিস্যুর সাহায্যে চেপে চেপে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকানো হয়ে গেলে রোদের আলোয় ২-৩ ঘণ্টা রেখে এরপর পুনরায় টিস্যুর সাহায্যে মুছে এয়ার টাইট বক্সে ছড়িয়ে রেখে দিতে হবে। ৪-৫ দিনের মধ্যে পাপড়িগুলো শুকিয়ে আসবে। এরপর প্রয়োজন মতো শুকনো গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার করা যাবে।
সুস্থ দাঁতের সুন্দর হাসি সকলেই পছন্দ করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম কাজই হলো ব্রাশ এবং পেস্ট নিয়ে দাঁত মাজা। দাঁত মুখগহ্বরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। খাবার চিবিয়ে খাওয়া ছাড়াও, বাহ্যিক সৌন্দর্য্যের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকে দাঁত। তাই, প্রতিদিন ব্রাশ করা ছাড়াও দাঁতের যত্নে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কারণ দাঁতে আটকে থাকা খাবার ভালোভাবে পরিষ্কার না হলে, যেমন দাঁতের বিভিন্ন রোগ এবং সমস্যা হতে পারে; তেমন দুর্গন্ধযুক্ত নিঃশ্বাসের কারণে জনসম্মুখে অস্বতিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে।
দাঁতের যত্ন মূলত রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে থেকেই শুরু করা উচিত। সারাদিনে খাওয়া খাবার দাঁতের কোণায় আটকে থাকতে পারে। এতে রাতে সেসব খাবার বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দাঁতের ক্ষতি করতে পারে। তাই মুখের স্বাস্থ্য এবং শ্বাস দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে প্রতিদিন রাতে দাঁতের যত্ন নিতে হবে। ভারতীয় দন্ত চিকিৎসক রবনীত কর দাঁতের যত্নের কিছু টিপস জানিয়েছেন-
১. সকালে ঘুম থেকে উঠেই সবার আগে পানি দিয়ে মুখের ভেতরে পরিষ্কার করতে হবে। কুলকুচি করে রাতের বাসি ভাব দূর করতে হবে।
২. ভালো করে দাঁত ব্রাশ করার বিকল্প কিছু হতে পারে না। ব্যবহারের জন্য নরম ব্রাশ সবচেয়ে ভালো। ব্রাশ যত বেশি নরম বা সফট হবে তত বেশি ভালো। ব্রাশের ব্রিস্টল শক্ত হলে মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। চেষ্টা করবেন ফ্লোরাইড টুথপেস্ট বা টুথ পাউডার ব্যবহার করার।
৩. ব্রাশ করার পদ্ধতির উপরও মুখের সুস্বাস্থ্য অনেকাংশ নির্ভর করে। মাড়ির একপাশ থেকে ব্রাশ করা শুরু করে ধীরে ধীরে অন্যপাশে এগোতে হবে। ব্রাশের মাঝের অংশটিকে কেন্দ্র করে ভালোভাবে একসঙ্গে ২ থেকে ৩ টি দাঁত ঘষতে থাকতে হবে। প্রতিটি পাটির দাঁতের উপরে,সামনে, পেছনেসহ চারপাশ সময় নিয়ে এভাবে ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। মাড়ির থেকে আনুমানিক ৪৫ ডিগ্রি কোণে বাকিয়ে ব্রাশ করার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিবেলা ব্রাশ করার সময় অন্তত ২ মিনিট করে সময় নিন।
৪. অনেক সময় ব্রাশ দাঁতের সব কোণায় পৌঁছে পরিষ্কার করতে পারে না। বিশেষ করে দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থান পরিষ্কার করার জন্য ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করা হয়। এর বিকল্প হিসেবে ইন্টারডেন্টাল ব্রাশও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫. অনেকের একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে যে, ওরাল স্বাস্থ্য ভালো রাখতে শুধু দাঁত পরিষ্কার করাই যথেষ্ট। জিভ, মাড়ি এসব পরিষ্কার না করলেও চলে। জিভে অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া বা খাবারের টুকরা থেকে যেতে পারে। ব্রাশ দিয়ে জিভের উপর আলতো করে কিছু সময় ঘষুন, যেন এসব ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়। চাইলে আলাদা করে জিভের জন্য টাং স্ক্রেপারও ব্যবহার করতে পারেন।
৬. ব্রাশ করার কারণে মূলত দাঁতে আটকে থাকা খাবারের টুকরাগুলো পরিষ্কার হয়। তবে এর মাধ্যমে খাবারের কারণে মুখে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার প্রভাব পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব হয়না। তাই ব্রাশ করার পর মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। এতে জিনজিভাইটির মতো ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবজনিত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমানো যায়।
৭. কথায় বলে, ‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বোঝে না।’ দাঁতে সামান্যতম পরিবর্তন দেখা দিলেও কখনো অবহেলা করা উচিত নয়। মাড়ি বা দাঁতে কোনো অসুবিধা অনুভব করলে অবশ্যই মুখগহ্বরের পরিক্ষা করানো উচিত।
৮. পানিশূন্যতার কারণে শরীরের সঙ্গে মুখের মধ্যেও নানারকম রোগের সৃষ্টি হতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি পান করার সুঅভ্যাস গড়ে তোলা বাঞ্ছনীয়।
৯. দাঁতের জন্য যাবতীয় করণীয় কেবল ঘুম থেকে উঠেই করার নিয়ম নয়। বরং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগেও দাঁতের সুরক্ষা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সকালে যেমন ব্রাশ করে ফ্লস এবং মাউথওয়াশ ব্যবহার করে পরিষ্কার করা উচিত, একইভাবে রাতেও পরিষ্কার করে ঘুমাতে যাওয়া প্রয়োজন। এর ফলে দাঁতসম্পর্কিত রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
১০. এছাড়া কিছু ছোটখাটো টিপস মেনে চলার চেষ্টা করা উচিত। যেমন: যতটা সম্ভব মিষ্টিজাতীয় বা চিনি আছে এমন খাবার কম খেতে হবে, প্রতিবেলায় খাবার খাওয়ার পর কুলকুচি করতে হবে, আঠালো বা দাঁতে লেগে থাকতে পারে এমন খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়াও চিকিৎসকের কাছে গিয়ে দাঁতের চ্যেকআপ করাতে হবে।
মনে রাখবেন মুখ হলো আপনার অভ্যন্তরীণ শরীরের একমাত্র প্রবেশপথ। মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে খাবার গ্রহণের মাধ্যমে সরাসরি শরীরের ভেতরেও প্রভাব ফেলতে পারে। সর্বোপরি, হাসতে ভুলবেন না। হাসির মাধ্যমে নিজের আনন্দ প্রকাশ করুন। সুস্থ হাসিতে সুন্দর মন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে ভগবান বিষ্ণুর পূর্ণাঙ্গ অবতার এবং মহাপুরুষ বাসুদেব শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি জন্মাষ্টমী নামে প্রচলিত। আজ সোমবার (২৬ আগস্ট), বাংলা ১৪৩১ তম বছরে উদযাপিত হচ্ছে শ্রীকৃষ্ণের ৫২৫০ তম জন্মাষ্টমী তিথি। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে রোহিণী নক্ষত্রযোগে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হওয়ায় এইদিনটি জন্মাষ্টমী নামে প্রসিদ্ধ। পবিত্র এই বিশেষ উৎসবকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে। শিল্পীদেরও চেষ্টা থাকে প্রতিবছর কাজে কিছু নতুনত্ব নিয়ে আসার।
ভারতীয় বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘তোরানি’। জন্মাষ্টমীর এই বিশেষ উৎসবকে কেন্দ্র করে করে তারা তাদের নতুন কালেকশন নিয়ে এসেছে। এই কালেকশনের শিরোনাম রাখা হয়েছে ‘লীলা: দ্য ডিভাইন ইল্যুশন অব লাভ’। শ্রীমতি রাধারানীর সঙ্গে কৃষ্ণের সম্পৃক্ততাকে স্মরণ করে এই নাম রাখা হয়েছে।
নতুন কালেকশনের ছবি তারা বিভিন্ন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্টে প্রকাশ করেছেন। সেখানে ভক্তরা ইতিবাচক সাড়া ফেলেছেন। অনন্য ডিজাইনের নতুন সব লেহেঙ্গা ও পোশাক রয়েছে এবারের ক্যাম্পেইনে। বিভিন্ন এই কালেকশনের ফটোশ্যুটের মডেল ছাড়াও, বিশেষ এক অংশ ছিলেন দক্ষিণ ভারতের গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া।
এই কালেকশনের পোশাকগুলো শ্রীকৃষ্ণের সময়কালের ফ্যাশনের দিকে লক্ষ্য রেখে তৈরি করা। লেহেঙ্গায় জটিল জারদোসি এমব্রয়ডারি, স্ক্যালপড বর্ডার, সিকুইন অলঙ্করণ ব্যবহার করা হয়েছে। বেশিরভাগ পোশাকেই রয়েছে সোনালী লেস এবং চকমকে স্টোনের কাজ। বিশেষভাবে খেয়াল রাখা হয়েছে রঙ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও। বেগুনী, হলুদ, খয়েরী, নীল, লাল, অফ-হোয়াইট, ওশিয়ান ব্লু, বেবি পিংক ইত্যাদি রঙের সামঞ্জস্যে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন লেহেঙ্গা।
রাধারানী এবং গোপিনীদের সাজানো হয়েছে বিভিন্ন রঙের কম্বিনেশনের পোশাকে। সাজের বিশেষত্ব্যের অংশ ছিল হাতের মেহেদী, ফুলের গাজরা, কপালের কল্কা আলপনা, নূপুর-চড়ি, টায়রা, কোমড়বন্ধনী সহ নানারকম বাহারী গহনা। শ্যুটের একটি বিশেষ অংশ ছিল জলপদ্ম।
শ্রীকৃষ্ণরূপী মডেলের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে হলুদ, কমলা, গোলাপী, বেগুনী ইত্যাদি রঙের পোশাক এবং অবশ্যই ময়ূরের পালক ও বাঁশের বাঁশি।
এই কালেকশনের বেশ কয়েকটি পোশাকে সামনে আসেন তামান্না। ফটোশেসনের দুই ধরনের থিম দেখা গেছে। মূলত অধিকাংশ ছবিতে ভক্তিভাব প্রকাশিত হয়েছে। তবে একটিতে রাধারানীর কৃষ্ণপ্রেম শোভা পেয়েছি। মূলত সেই ছবিগুলোই ভক্তদের নজর বেশি কেড়েছে।
শ্রীকৃষ্ণের প্রতি অনুভূতির গভীরতা প্রকাশে রাধাবেশী তামান্নার সারা শরীর কৃষ্ণবর্ণ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। কৃষ্ণপ্রেমের এই থিমের জন্য তামান্নাকে সাজানো লাল এবং কমলার কম্বিনেশনের একটি লেহেঙ্গার মাধ্যমে। সাথে পরেছেন পান্না খচিত জরোয়া গহনা।
কৃষ্ণলীলার থিমের এই পোশাক কালেকশন সকলে পছন্দ করেছে। আবার তামান্না ভাটিয়ার অনন্য এই রূপের প্রশংসাও হচ্ছে। কৃষ্ণপ্রেমে বিভোর রাধার সাজে তামান্নাকে চমৎকার মানিয়েছে, এমন বক্তব্য নেটিজেনের।
আমাদের আশেপাশে থাকা মানুষগুলো প্রতিনিয়ত নানাভাবে আমাদের প্রভাবিত করে। বিশেষ করে, যেকোনো কারো মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে নাকি অবনতি, তার অনেকাংশ নির্ভর করে তার পার্শ্ববর্তী মানুষের ব্যবহার এবং কর্মকাণ্ডে। তাই সবসময়ই সঙ্গ নির্ধারণের আগে বিবেচনা করা উচিত, সেই মানুষগুলোর সঙ্গে মানসিকতা মিলছে কিনা।
আমরা যেসব মানুষদের বিশ্বাস করি বা আমাদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষগুলো আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে। সেজন্যই যখন জীবনসঙ্গী বাছাই করবেন অবশ্যই বিবেচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে আপনার মনের সাথে মানসিক অবস্থাও আমলে নিতে হবে।
বর্তমানে বেশ প্রচলিত সংজ্ঞা হলো, রেডফ্ল্যাগ আর গ্রিনফ্ল্যাগ। সাধারণত যারা ব্যক্তিগতভাবে মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলা মানুষকে রেডফ্ল্যাগ বলা হয়। আর ঠিক এর বিপরীত যারা, তারাই গ্রিনফ্ল্যাগ। যদিও এটা একেবারেই আপেক্ষিক ব্যাপার; তবুও ব্যক্তিগত পছন্দ সাপেক্ষে নিজেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কে আপনার ক্ষেত্রে রেডফ্ল্যাগ আর কোন ব্যক্তি গ্রিনফ্ল্যাগ। কখনোই আবেগের বশীভূত হয়ে রেডফ্ল্যাগের মানুষদের বাছাই করা উচিত নয়। তবে, কীভাবে বুঝবেন এই দুইরকম ব্যক্তিদের পার্থক্য? একজন সঠিক সঙ্গীর যেসব বৈশিষ্ট্য থাকবে, তা সম্পর্কে বিশদ জানানো হলো-
কথার প্রতি মনোযোগ: আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ইতিবাচক ব্যক্তিরা সর্বদা আপনার অনুভূতি এবং মনের কথাকে গুরুত্ব দেয়। আপনার আবেগকে অসঙ্গতিপূর্ণ বা অতিরিক্ত অযাচিত উপদেশ দেওয়ার চেয়ে, আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনাকে বেশি গুরুত্ব দেবে। তাদের কথার মাধ্যমে আপনাকে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ অনুভব করানোর চেষ্টা করবে এবং আপনার যেন কোনো অসুবিধা বা কষ্ট না হয় সেইদিকে খেয়াল রাখবে।
সমালোচনা করা: সকলের জীবনের যাত্রাতেই ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা থাকে। মানুষের অনেক অভিজ্ঞতা তাদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে। মাঝে মাঝে আমরা জীবনে এমন ধাক্কা খাই, যা একদম অন্য এক মানুষ বানিয়ে ফেলে আমাদের। তবে সঠিক ব্যক্তি কখনোই আপনাকে আপনার জীবনের ঘটনার ভিত্তিতে বিচার করবে না। আপনার প্রকৃত সত্ত্বাকে তারা অনুধাবন করার চেষ্টা করবে। আপনাকে নিয়ে সমালোচনা না করে, আপনার মধ্যে ভালো পরিবর্তনগুলো আনতে অনুপ্রাণিত করবে। তাদের আশেপাশে আপনি নিরাপদ এবং নিজের মতো করে চলার স্বস্তিবোধ করতে পারবেন।
নিজস্বতার প্রতি সম্মান: জীবনে একসাথে পথ চলতে হলে নানারকম চড়াই-উতরাই একত্রে পার করতে হয়। বিশেষ করে জীবনসঙ্গী যারা, তাদের মধ্যে সাধারণত গোপনীয় তেমন কিছু থাকে না। তবুও প্রতিটি ব্যক্তিরই একান্ত নিজস্বতা থাকে। আপনি যখন একান্তে শুধু নিজের জন্য কিছু করতে চাইবেন, কিছুটা সময় একদম একা কাটাতে চাইবেন অথবা যে জিনিসগুলো একান্ত নিজের করে রাখতে চাইবেন, তাতে গ্রিনফ্ল্যাগ ব্যক্তি কখনোই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবে না। তাছাড়া আপনার মন খারাপ হয় বা আপনি কষ্ট পান এমন বিষয়বস্তু সবসময় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে।
অনুপ্রেরণা দেওয়া: যারা আপনার সত্যিই ভালো চায়, তারা সবসময় আপনার ছোট-বড় সব ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেবে। কোনো সফলতাকেই তারা ছোট করবেনা। বরং আপনাকে ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে এবং যে কাজগুলো প্রকৃত অর্থে আপনাকে আনন্দ দেয় সেই কাজগুলো করতেই অনুপ্রেরণা দেওয়ার চেষ্টা করবে।
ঝগড়ার সময়ও হিতাহিত জ্ঞান রাখা: যেকোনো সম্পর্কেই কোনো বিষয় নিয়ে দ্বিমত হতেই পারে। সাধারণত রাগের মাথায় বেশিরভাগ মানুষ নিজের ভুল অনুধাবন করতে পারে না। তাই কেবল অপরপক্ষের মানুষকে দোষারোপ করতে থাকে। গ্রিনফ্ল্যাগ ব্যক্তিরা কখনো রাগের মাথায় আপনার মনে ইচ্ছে করে কষ্ট দিয়ে কথা বলবে না। তাদের মূল লক্ষ্য থাকে সমস্যাটা বড় ঝগড়া তৈরি করার আগেই দ্রুত সমাধান করা।
ওজন কমানোর চিন্তা মাথায় এলে প্রথমেই মাথায় চিন্তা আসে খাবার খাওয়া কমানোর। যদিও ওজন কমানো খুব সহজ কাজ নয়, এবং ব্যায়ামসহ কিছু সামগ্রিক কাজের সমন্বয়েই ওজন কমানো সম্ভব। তবুও এখনো অনেকের ধারণা, একমাত্র বেশি খাবার খাওয়ার কারণেই ওজন বাড়ে আর খাবার খাওয়া কমালেই ওজন কমানো সম্ভব।
তবে হতে পারে, খাওয়া কমিয়ে দিলে হয়তো ওজন বাড়ার ক্ষেত্রে তা উপকারী প্রভাব ফেলার পরিবর্তে বরং ক্ষতি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নানা বুঝে খাওয়া বন্ধ করে দিলে মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের চাপ বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাবও দেখা দিতে পারে।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকার একটি বিশেষ ভূমিকা থাকে। ওজন কমাতে চাইলে খাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এই কথা যেমন সত্য, তেমন তা কি ওজন কমানোতে সাহায্য করছে কিনা তাও বিবেচনায় রাখতে হবে এই কথাও সত্য।
ভারতীয় চিকিৎসক ঋতুজা উগালমুগল বলেন,‘ যখন আমরা খাবার খাওয়া কমিয়ে দেই তখন শরীরে স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুধা অনুভূত হয়। হঠাৎ করে শরীরে খাবার প্রবেশের পরিমাণ কমে গেলে বেঁচে থাকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়াস্বরূপ শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে। যেমন, সংরক্ষিত হিসেবে থাকা শক্তি ক্ষয় হতে শুরু করে এবং চর্বি বিপাক ধীর গতিতে চলতে থাকে। এরফলে উল্টো আরও শরীরে চর্বি জমে ওজন বৃদ্ধি হওয়ার ঘটনাও দেখা যায়। এরকম হলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া বিপরীত ক্রিয়া করে ওজন কমানো আরও কঠিন হয়ে পরে।’
ডা. ঋতুজা খাবার খাওয়া কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে কিভাবে আরও ওজন বাড়তে পারে, সেই ব্যাপারে বিস্তর আলোচনা করেছেন-
পেশী ক্ষয়: খাবার খাওয়া কম হলে শরীরে ক্যালরি ইনটেইক কমে। এই ক্যালরি ইনটেইকের মাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে পেশী ক্ষয়ও হতে পারে। কারণ এরকম পরিস্থিতিতে চর্বির টিস্যু ক্ষয় না হয়ে পেশির টিস্যু আগে ক্ষয় হতে শুরু করে। এরফলে বিপাকেও বিরূপ প্রভাব পড়ে। হজমের কমতি হওয়া মানে আপনার শরীরের ক্যালরি ক্ষয় কম হচ্ছে। এরকম হলে ওজন কমার বদলে আরও বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব: কড়াকড়িভাবে ডায়েট শুরু করলে প্রায়শই সারাদিনের গ্রহণকৃত খাদ্য অনেকটা সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। এর একটি বড় সমস্যা হরমোনের অসামঞ্জস্যতা।
হরমোন: ঘেরলিন এবং লেপটিন এই দুটি হরমোন ক্ষুধার সাথে সম্পৃক্ত। মূলত ক্ষুধা ও তৃপ্তি নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন নামে এগুলো পরিচিত। ডায়েটে কম খাওয়ার কারণে পুষ্টির ঘাটতি হলে এসব হরমোনের ভারসাম্যহীনতাও দেখা যেতে পারে। এই হরমোনগুলোর ভারসাম্যহীনতা ক্ষুধার অনুভূতি বাড়াতে পারে এবং অতিরিক্ত খাওয়া বা তৃষ্ণার কারণ হতে পারে। এর ফলে ওজন বরং আরও বৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
কর্টিসল উৎপাদন: অল্প সময়ে ওজন বাড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রায়ই কঠোর ডায়েটিং করার কারণে অনেক সময় মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। এই চাপের ফলে শরীরে কর্টিসলের উৎপাদন বেড়ে যায়। এই হরমোন একরকম ভিসারাল ফ্যাট, যা ওজন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দায়ী; বিশেষ করে পেটের আশেপাশের অংশে।