পুষ্টির চাহিদা পূরণে অপার সম্ভাবনাময় সুপারফুড ‘স্পিরুলিনা’



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবর্তিত হচ্ছে জলবায়ু,বাড়ছে জনসংখ্যা ফলে দেশ থেকে ক্রমেই কমে যাচ্ছে আবাদি জমির পরিমাণ। আবাদি জমি কমে যাওয়ায় দেশ থেকে প্রত্যহ হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন।ভবিষ্যতে অধিক জনসংখ্যার খাবারের চাহিদা মেটানোর কথা চিন্তা করে বিজ্ঞানীরা খুঁজছে নতুন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবারের।ভবিষ্যতের খাবার হতে হবে সুস্বাদু, সহজলভ্য ও পুষ্টিকর।এসব বিষয় বিবেচনায় গবেষকদের মনোযোগ 'স্পিরুলিনা' নামক একপ্রকার সামুদ্রিক শৈবালের দিকে।

এটি পুষ্টির দিক থেকে বিশ্বের সবথেকে দামি ও দুর্লভ খাদ্যপণ্যের একটি।স্পিরুলিনাতে উচ্চ প্রোটিন সহ প্রায় সকল পুষ্টির রয়েছে সুষম বণ্টন। এটি মিরাকল ফুড বা সুপার ফুড নামেও পরিচিত পুষ্টি বিজ্ঞানীদের কাছে। অধিক পরিমাণে পুষ্টিগুন থাকায় অনেকের কাছে আবার এটি গ্রিন ডায়মন্ড নামেও পরিচিত । দেশের মানুষের পুষ্টিচাহিদা মেটাতে স্পিরুলিনাতে অপার সম্ভবনা দেখছেন গবেষকরা।

স্পিরুলিনা নীলাভ সবুজ বর্ণের এককোষীয় সামুদ্রিক একধরনের শৈবাল। যার বৈজ্ঞানিক নাম Arthrospia maxiama। উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণের কারণেই এটি সুপার ফুড বা গ্রিন ডায়মন্ড নামে পরিচিত। পৃথিবী জুড়ে এই খাদ্যের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।অপার সম্ভাবনাময় এই শৈবালটি ১৯৯৪-৯৫ সালের দিকে বাংলাদেশে চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়।পরবর্তীতে কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের তত্ত্বাবধানে স্পিরুলিনা চাষ শুরু হয়।তবে স্পিরুলিনা চাষ তখন টেকসই হয়নি।

barta24

পরবর্তীতে এই সামুদ্রিক শৈবাল স্পিরুলিনা চাষের ক্ষেত্রে বিশাল সম্ভাবনাময় পদ্ধতি উদ্ধাবনে সফল হন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের(শেকৃবি) একদল গবেষক। নতুন এই পদ্ধতিতে বাড়ির ছাদ বাগানে বা বারান্দায় খুব সহজেই উৎপাদন করা যাবে শতভাগ বিশুদ্ধ স্পিরুলিনা। ২০১৮ সালের শুরুর দিক থেকে পরিচালিত গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেকৃবি উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড.এ এফ এম জামাল উদ্দিন। এই পদ্ধতিতে মুখবন্ধ স্বচ্ছ বালতিতে স্পিরুলিনার চাষ করা হয়।ইতোমধ্যে এই পদ্ধতি বাংলাদেশে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

গবেষকদের মতে , ১০০ গ্রাম স্পিরুলিনায় ৩৭৪ কিলোক্যালরি শক্তি রয়েছে। ১০০ গ্রাম স্পিরুলিনার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই প্রোটিন। এ ছাড়া এতে উচ্চমাত্রায় লৌহ, পটাশিয়াম, জিংক ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, ১০০ গ্রাম স্পিরুলিনায় ৫৮২ গ্রাম কলিজার সমপরিমাণ লৌহ, তিনটি কলার সমপরিমাণ পটাশিয়াম, ৩৭৭ গ্রাম শাকের সমপরিমাণ জিংক ও ১১০ মিলিলিটার দুধের সমপরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে। ফলে বিভিন্ন দেশের পুষ্টিহীনতা দূর করতে জাতিসংঘ বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক প্রতিবেদনেও (২০০৮) স্পিরুলিনা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

barta24

অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বার্তা২৪ কে জানান,‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্ষুদ্র ব্যাবসাহীদের নিয়ে কাজ চলছে এবং তারা ক্রমেই আগ্রহী হয়ে উঠছে স্পিরুলিনা চাষে।তাছাড়া বাজারে স্পিরুলিনা সমৃদ্ধ যে ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল পাওয়া যায় সেগুলোতে স্পিরুলিনার পরিমাণ খুবই কম থাকে।ফলে পুষ্টি উপাদান ও কম পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের এই মুখবন্ধ পদ্ধতিতে উৎপাদিত স্পিরুলিনা থেকে অধিক পরিমাণ পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।তাই ক্রমেই মানুষের কাছে চাহিদা বাড়ছে পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ এই সামুদ্রিক শৈবালের।’

অধ্যাপক জামাল উদ্দিন স্পিরুলিনা চাষের সনাতন পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন,সনাতন পদ্ধতিতে কংক্রিটের পুকুরে স্পিরুলিনা চাষ করা হয়। তবে কংক্রিটের পুকুরে স্পিরুলিনা চাষ করা হলে পানিতে বাতাসের মাধ্যমে লতাপাতা, ধুলোবালি এমনকি কেঁচো ব্যাঙ ও মরা ইদুর পর্যন্ত মিশে যেতে পারে। আমরা যেহেতু স্পিরুলিনা সরাসরি খাই,তাই এই অবিশুদ্ধ স্পিরুলিনা খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

barta24

তিনি স্পিরুলিনা চাষের আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, আধুনিক পদ্ধতিতে মুখবন্ধ বালতিতে হাতের স্পর্শ ছাড়াই স্পিরুলিনা চাষ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে শুরুর দিকে খোলা কংক্রিটের পুকুরে স্পিরুলিনার চাষ শুরু হলেও বর্তমানে মুখবন্ধ বালতি পদ্ধতিই জনপ্রিয় হচ্ছে। স্পিরুলিনা খাওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে এই গবেষক বলেন সম্পূরক খাদ্য হিসেবে বিভিন্ন তরকারির সঙ্গে ব্যাবহার করা করা যায় এই শৈবাল।এক্ষেত্রে কয়েক গ্রাম স্পিরুলিনা ব্যাবহারই যথেষ্ট। আর এই শৈবালটিতে কোনো গন্ধ নেই বলে এটি চা,কফি,নুডলস,আইসক্রিমের সঙ্গে খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়।

শেকৃবির কৃষি অনুষদ ভবনের ছাদে ঢুকে একটু এগোলেই এখনো চোখে পড়বে বহুসংখ্যাক সাদা ড্রাম। পাইপের মাধ্যমে এগুলোর একটির সাথে অন্যটি সংযুক্ত। ড্রামের ভেতরের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে নানা উপাদান মিশ্রিত পানির দ্রবণ। যেখানে সমুদ্রের পানির মত ড্রামের ভেতরের পানি চলমান রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে ব্লোয়ার মেশিন। আর এর মধ্যেই উৎপাদিত হচ্ছে স্পিরুলনা। গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড.আ ফ ম জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা চার ফুট উচ্চতা ও তিন ফুট ব্যাসসম্পন্ন ৯৬টি ফুডগ্রেডেড ড্রাম ব্যবহার করেছি। প্রতিটি ড্রামে ২৫০ লিটার পানিতে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, ইউরিয়া, মিউরেট অব পটাশ (এমওপি), ম্যাগনেসিয়াম সালফেট নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশিয়ে দ্রবণ প্রস্তুত করেছি। এই দ্রবণ থেকে স্পিরুলিনা প্রয়োজনীয় সব খাদ্য নিতে পারবে। একবার তৈরীকৃত দ্রবণের মাধ্যমে প্রায় ৬ মাস পর্যন্ত স্পিরুলিনা উৎপাদন করা সম্ভব। তবে ৬ মাস পর পুনরায়।

অসংখ্য পুষ্টি উপাদানে ভরপুর স্পিরুলিনার উপকারিতা সম্পর্কে এই গবেষক বলেন,ডায়েবিটিস, বার্ধক্যজনিত রোগ,রক্তশূন্যতা প্রতিবন্ধীও গর্ভবতী মায়েদের জন্য স্পিরুলিনা খুবই কার্যকরি।এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম। এছাড়াও স্পিরুলিনা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে,মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ায়, হজম ক্ষমতা বাড়ায় ও রক্তের শর্করা কমাতে সাহায্য করে।

   

গরমে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করে নিজের যে ক্ষতি করছেন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অনেকেই বাইরে থেকে ঘরে ঢুকেই ফ্রিজের দরজা খুলে হাতে তুলে নেন ঠান্ডা পানির বোতল। তারপর ঢকঢক করে গলাধঃকরণ করেন। তারপর তার মনে হয়, আহ শান্তি। তবে এই শান্তির সঙ্গে সঙ্গে আপনি কিন্তু কিছু ঝুঁকিকেও আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।

পুষ্টিবিদের মতে, হিমশীতল পানি শরীরের বহু ক্ষতি করতে পারে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিপানের অভ্যাস হজমে বিঘ্ন ঘটায়। এর থেকে পেট ব্যথা হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে গলার রক্তনালিকাও। পরবর্তীতে যার থেকে দেখা দিতে পারে জটিল সংক্রমণ।

টনসিল–ঠান্ডা–কাশি–জ্বর

গরমের মধ্যে বাইরে থেকে ফিরেই সরাসরি ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি খেলে গলা খুসখুস থেকে শুরু করে ঠান্ডা লাগা পর্যন্ত অনেক আশঙ্কাই আছে। শরীরের তাপমাত্রা সাধারণভাবে ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করার কারণে দেহের কিছু অংশের তাপমাত্রা হুট করে কমে যায়। বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে শরীর।

ফলে নিয়মিত এ রকম ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে মিউকাস বা শ্লেষ্মা বেড়ে টনসিলের সমস্যা, মাইগ্রেনের সমস্যা, দাঁতে ব্যথা, খাদ্যনালির সমস্যা, সর্দি, কাশি বা জ্বরের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তৈরি হওয়া মিউকাস বা শ্লেষ্মা শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা তৈরি করে। তখন নানা প্রদাহযুক্ত সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমাদের গলায় শ্বাসনালির ওপরের অংশে কিছু ‘সুবিধাবাদী জীবাণু’ বাস করে। সুবিধাজনক অবস্থা পেলেই এরা আক্রমণ করে। যখন চারপাশে গরম, তখন হঠাৎ করে ঠান্ডা পানি গলায় গেলে গলার তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। ঠান্ডা পানিতে এই জীবাণুগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে।

হৃৎস্পন্দন ‘ড্রপ’ করতে পারে

ঠান্ডা পানি সাময়িক সময়ের জন্য স্বাভাবিক হৃৎস্পন্দনে বাধা দেয়। দশম ক্র্যানিয়াল নার্ভ বা ভেগাস নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার একটা আশঙ্কা থেকেই যায়। ফলে হৃৎস্পন্দনের পতন ঘটে হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে। যাঁদের সাইনাস বা মাইগ্রেনের সমস্যা আছে, তাদের ঠান্ডা পানি খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

হজমে বাধা

হজমের সময় যে পুষ্টি শোষিত হয়, সেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাধা দেয় ঠান্ডা পানি। শরীর তখন হজমপ্রক্রিয়ার চেয়ে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। শরীরে বেশি পানিশূন্যতা দেখা যায়।

চর্বিজাতীয় পদার্থ জমে যাওয়া

শরীরের চর্বিজাতীয় পদার্থ ঠান্ডা পানির সংস্পর্শে এসে জমে যায়। ফলে সেগুলো শোষণ করা বা পুড়িয়ে ফেলা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এমনিতেই চর্বিজাতীয় পদার্থ হজম করতে শরীরে সবচেয়ে বেশি তাপ উৎপন্ন হয়। তাই কিছু ক্ষেত্রে ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে শরীর তো ঠান্ডা হবেই না, আরও গরম হবে। আর ওজন কমানো আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

দাঁতের শিরশিরানি

ঠান্ডা পানি দাঁতের এনামেল অংশটাকে দুর্বল করে তোলে। তখন দাঁতে যেকোনো সংক্রমণের সুযোগ তৈরি হয়। আর ঠান্ডা পানি খাওয়ার ফলে দাঁতে শিরশিরেভাব হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

 

তথ্যসূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া

;

অত্যধিক গরমে শুধু শরীর নয়, ফোনও খারাপ হয়ে যেতে পারে! সুরক্ষায় যা করবেন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রীষ্মের দাপট ক্রমশ বেড়েই চলেছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গরম। গ্রীষ্মকাল যাদের পছন্দের ঋতু নয়, এই গরমে তাদের অনেকেরই মনখারাপ হয়ে যাচ্ছে। অত্যধিক গরমে শুধু মন নয়, খারাপ হতে পারে ফোনও। তাই গরমে ফোনের যত্ন নিতেও ভুলবেন না। গরমে অল্প ব্যবহার করলেই ফোন গরম হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ ফোন গরম হয়ে গেলে, কিভাবে সামাল দেবেন জেনে নিন এর সমাধান- 

১) বাইরে বের হলে ফোন হাতে নয়, ব্যাগের মধ্যে রাখুন। সূর্যের আলোয় ফোন অত্যধিক গরম হয়ে যায়। এখন রোদের যা তেজ, তা ফোন গরম হতে বেশিক্ষণ সময় নেবে না। এতে ফোনের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

২) ফোন ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। ফোনে একাধিক অ্যাপ একসঙ্গে খুলে রাখবেন না। এতে ফোনের ব্যাটারি বেশি খরচ হয়। ফোন ক্রমশ গরম হতে থাকে। তাই যখন যে অ্যাপ প্রয়োজন, সেটাই খুলে রাখুন। বাকিগুলো বন্ধ করে দিন।

৩) একটানা বেশিক্ষণ ফোন ব্যবহার করবেন না। দীর্ঘক্ষণ ফোন ঘাঁটলে গরম হয়ে যায়। ব্যাটারির উপরেও এর প্রভাব পড়ে। সে ক্ষেত্রে অল্প দিনেই ব্যাটারি খারাপ হয়ে যেতে পারে।

৪) ফোন গরম হয়ে গেলে ঠান্ডা করার একটি উপায় হল কুলিং ফ্যান। বাজারে বিভিন্ন ধরনের কুলিং ফ্যান পাওয়া যায়। শুধু ফোন ঠান্ডা করতেই নানা ধরনের কুলিং ফ্যান পাওয়া যায়। সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন।

তথ্যসূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা

;

তাপ ক্লান্তি ও হিটস্ট্রোক এক নয়, জেনে নিন-লক্ষণ এবং করণীয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
তাপ ক্লান্তি ও হিটস্ট্রোক এক নয়, জেনে নিন-লক্ষণ এবং করণীয়

তাপ ক্লান্তি ও হিটস্ট্রোক এক নয়, জেনে নিন-লক্ষণ এবং করণীয়

  • Font increase
  • Font Decrease

শিশু থেকে বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ, মধ্যবয়সী-যুবক প্রচন্ড গরমের সকলের নাজেহাল অবস্থা। তার উপর নেই বৃষ্টির ছিটেফোঁটা সম্ভাবনাও। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও কয়েক ডিগ্রি তাপ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মাসেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হবে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷

সরকারপক্ষ থেকে রাজধানীতে নানারকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে৷ কৃত্রিম ভাবে পানি দিয়ে শহর ভিজিয়ে ক্ষণিকের জন্য হলেও প্রশান্তি দেওয়া বা ছাউনি তৈরি করা৷ এছাড়া গাছ লাগানো এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ চলছে জোরদমে৷ তবুও গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া লোকের সংখ্যা কমছে না। সাধারণ কিছু গরম জনিত সমস্যা ছাড়াও হিটস্ট্রোকে মারা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ৷

গরমে সাধারণত দুইটা সমস্যার বেশি আধিপত্য দেখা যাচ্ছে৷ হিট এক্সহসশন বা তাপক্লান্তি এবং হিটস্ট্রোক৷ হিটস্ট্রোক খুবই গুরুতর একটি সমস্যা, যা মৃত্যু ঘটাতেও সক্ষম৷ হিট এক্সহসশনকে বলা যায় হিটস্ট্রোকের আগের অবস্থা। তবে অনেকেই এই সমস্যা দু'টোকে একই মনে করেন৷ তবে এদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে৷  জেনে নেওয়া যাক সেসব পার্থক্য-

হিট এক্সহসশন বা ক্লান্তি: সাধারণত শরীর দুর্বল হয়ে পড়ার কারণেই হয়। গরমের মধ্যে বাইরে গেলে প্রচুর পরিমাণে ঘাম হতে থাকে৷ 

তাপমাত্রা এখন দিন দিন আরও বাড়ার কারণে ঘামও তুলনামূলক বেশি হয়৷ এই কারণে শরীর থেকে পানি আর লবণ বের হয়ে যায়৷ ফলে শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। একেই হিট এক্সহসশন বলে৷

হিট এক্সহসশনের উপসর্গ হলো হিট ক্র‍্যাম্পস বা পেশিতে ব্যথা হওয়া।

পানিশূন্যতাও এর একটি সাধারণ সমস্যা। সাধারণত ১০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৩৮.৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলেই হিটএক্সহসশনের সমস্যা দেখা যায়৷

এছাড়া অনেকের বমি হয়৷ বা বমি বমি ভাব হয়৷ হিট এক্সহসশনের সময় হৃদকার্য দুর্বল হয়ে যায়। তবে হার্টবিট দ্রুত হতে থাকে৷

তাপক্লান্তি হলে করণীয়: তাপক্লান্তিতে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাকে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে৷ অথবা ঠান্ডা পানিতে কাপড় ভিজিয়ে গা মুছিয়ে দিতে হবে৷ যেন শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যায়৷

দ্রুত হালকা ঠান্ডা পানি খাওয়াতে হবে৷। বা জলদি শক্তি আনার জন্য এনার্জি ড্রিংক (খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহৃত) খাওয়াতে হবে।

রোগীকে ঠান্ডা স্থানে স্থানান্তরিত করতে হবে। তাকে রিলাক্স করতে টান করে শুয়িয়ে রাখতে হবে৷

বমির সমস্যা গুরুতর প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। বমিরোধী ঔষধ সেবন করাতে হবে।

হিটস্ট্রোক: যখন অতিরিক্ত তাপমাত্রা থাকে তখন শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে৷ সংকুচিত হওয়ার কারণে লোমকূপ ঘাম বের হতে পারেনা৷ এতে তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখতে ব্যর্থ হয়৷

সে কারণে তাপ শরীরের ভেতরেই থেকে যায় আর শরীর শীতল হতে না পেরে স্ট্রোক হয়৷

সাধারণত শরীরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস অবধি বেড়ে যায়৷ হৃদপিণ্ড খুব দ্রুত এবং শক্তিশালীভাবে কম্পিত হতে থাকে৷

হিটস্ট্রোক হলে মানুষ সাধারণত অজ্ঞান হয়ে যায়৷ অথবা সজ্ঞান হারিয়ে অদ্ভুত আচরণ করতে থাকে। তাদের চোখ, ত্বক পরিবর্তন হয়ে যায়।

ত্বকে লালচে এবং শুষ্ক হয়ে যায়৷ অনেকের ক্ষেত্রে খিচুনি উঠতে দেখা যায়। শ্বাস প্রশ্বাস অস্বাভাবিক হয়ে যায়। রোগীর প্রশ্বাস গ্রহণে অসুবিধা হতে দেখা যায়৷

হিটস্ট্রোক হলে করণীয়: রোগীকে দ্রুত ঠান্ডা এবং ছায়াযুক্ত স্থানে নিয়ে যেতে হবে৷

রোগীর গায়ের অতিরিক্ত কাপড় এবং জুতা খুলে দিতে হবে৷ যেন বাতাসের সংস্পর্শে আসতে পারে।

শরীর এবং মাথায় স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ঢালতে হবে। রোগীর জ্ঞান থাকলে তাকে খাওয়াতেও হবে। কোনোভাবেই ঠান্ডা পানি খাওয়াবেন না। এতে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপ আরও বেগতিক হবে৷

শরীরে ঠান্ডা বাতাস দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে৷ অতি দ্রুত জরুরি চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে৷ জরুরি প্রয়োজন ৯৯৯ নম্বরে কল করতে হবে।

;

কাঠফাটা রোদে ত্বক পুড়ে যাচ্ছে? ঠান্ডা দুধ লাগিয়ে পাবেন সমাধান



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র গরমে ওষ্ঠাগত জনজীবন। প্রচণ্ড রোদে ত্বক পুড়ে গেলে ত্বকের লাবণ্য কমে যায়। এর প্রধান কারণ হলো সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি। এদিকে রোদে পোড়া দাগ বা সানবার্ন নিয়ে অনেকের চিন্তার শেষ নেই। সানবার্ন নিয়ে সতর্ক থাকা দরকার। এখান থেকে স্কিন ক্যানসারের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় সানবার্নের জেরে চামড়া উঠতে শুরু করে। ত্বকের ওই অংশ লাল হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে সানবার্নের সমস্যায় ভুগলে এখান থেকে বার্ধক্যের লক্ষণও জোরালও হয়। সানবার্ন থেকে মুক্তি পেতে গেলে সানস্ক্রিন ছাড়া রোদে বেরোনো যাবে না। আর যদি সানবার্নের মুখোমুখি হন, সেক্ষেত্রে ঠান্ডা দুধকে কাজে লাগান।

ঠান্ডা দুধ সানবার্নের সমস্যা দূর করে

১) প্রখর রোদ সানবার্নের জন্য দায়ী। ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি ত্বকের উপর প্রদাহ তৈরি করে। সানবার্নের উপর ঠান্ডা দুধ লাগালে নিমেষের মধ্যে কমে যায় ত্বকের জ্বালাভাব ও লালচে ভাব।

২) দুধের মধ্যে প্রোটিন ও লিপিড রয়েছে, যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। সানবার্নের উপর ঠান্ডা দুধ লাগালে ত্বকের শুষ্কভাব দূর হবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

৩) দুধের মধ্যে ল্যাকটিক অ্যাসিড রয়েছে, যা মাইল্ড এক্সফোলিয়েটর। এটি ত্বক থেকে মৃত কোষ পরিষ্কার করে এবং ক্ষত দ্রুত নিরাময় করে। সানবার্ন দূর করে ঠান্ডা দুধই সেরা।

সানবার্নের উপর যেভাবে ঠান্ডা দুধ প্রয়োগ করবেন -

১) ফ্রিজারে দুধ রেখে বরফ বানিয়ে নিন। রোদে বেরিয়ে ত্বক পুড়ে গেলে, বাড়ি ফিরেই সানবার্নের উপর ওই দুধের বরফ ঘষে নিন।

২) এছাড়া ফ্রিজে থাকা ঠান্ডা দুধে তুলার বল ডুবিয়ে নিন। এবার ওই তুলার বল সানবার্নের উপর কয়েক মিনিট রেখে দিন। আলতো হাতে বুলিয়েও নিতে পারেন।

৩) ঠান্ডা দুধ না থাকলে ঠান্ডা টক দইও মাখতে পারেন সানবার্নের উপর। দুধ ও দই দুটোই সানবার্নের চিকিৎসায় সেরা ফল। ত্বক থেকে ট্যান তুলতেও এই উপায় কাজে লাগাতে পারেন।

তথ্যসূত্র- টিভি৯ বাংলা

;