আজ মন ভালো নেই!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সামুদ্রিক ঝড় 'তিতলি'র প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তৃত  অঞ্চল বৃষ্টিতে আচ্ছন্ন। মূল আঘাত দক্ষিণ-পশ্চিমের অন্ধ্র-উড়িষ্যার উপর দিয়ে বয়ে গেলেও দক্ষিণ-পূর্বের বাংলাদেশ-পশ্চিম বঙ্গও বর্ষণ কবলিত। চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের সমুদ্রতট ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কাঁচা ঘরবাড়ি ধ্বস্ত হয়েছে। কলকাতাও হয়েছে বর্ষণসিক্ত।

যে 'তিতলি' ঝড়ের প্রভাবে কালরাত থেকে বৃষ্টি উপদ্রুত হয়েছে মানুষ, সে 'তিতলি' নামটি পাওয়া যায় উর্দু ও হিন্দি ভাষায়, যার অর্থ প্রজাপতি। ঝড় না হলেও বৃষ্টি হচ্ছে প্রজাপতি নৃত্যছন্দে। আর তখনই দুর্যোগের পাশাপাশি প্রেমকাতরতা আর মন খারাপের মেঘ জমে মানুষের একান্ত মনের আকাশে।

বিজ্ঞানিরা বৃষ্টির সঙ্গে প্রেমার্ত হৃদয়ের সম্পর্ক পেয়েছেন। আর পেয়েছেন মন খারাপের কার্যকারণ। আজকাল অবশ্য কেবল বৃষ্টির দিনগুলোতেই নয়, প্রায়-সব সময়ই মানুষের 'মন ভালো নেই' সমস্যা চলছে। আর্থ-সামাজিক নানা সমস্যায় শরীরের মতো মনও আকছার বিষণ্ন হচ্ছে নানা বয়সী মানুষের।

মন ভালো না থাকাটা একদা ছিল আকস্মিক। প্রেমে ব্যর্থ বা জীবনের অসফলতার জন্য ‘মন ভালো নেই’ বলে কেউ কেউ কিছুদিন চুপচাপ থাকতেন। আজকাল ‘মন ভালো নেই’ একটি সংস্ক্রামক ব্যধি হয়ে গেছে। বিশেষত শিশু, কিশোর, তরুণ-তরুণীদের মধ্যে ‘ভাল্লাগে না’ প্রবণতা ভয়ঙ্করভাবে বেড়েছে। খারাপ মন নিয়ে নিজের ও পারিপার্শ্বিক জীবন বিষিয়ে তুলছে তারা। কখনো মাদক বা আত্মঘাতী প্রবণতায় জড়াচ্ছে। কেউ কেউ মারমুখী ও ভায়োলেন্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিষণ্নতায় আচ্ছন্ন হয়ে হতাশ জীবনের পথে চলে যাওয়া প্রজন্মের খোঁজ অনেক সময় বাবা-মা রাখতে পারেন না নানা ব্যস্থতায়। চরম একাকীত্ব ও হতাশায় নিজের সন্তানের মনের অতলে যে গভীর কালো জগত তৈরি হয়েছে, সে খেয়ালও অনেক অভিভাবক রাখেন না। সন্তানটি (ছেলে বা মেয়ে) নীল জগতের উদভ্রান্ত সীমানায় হারিয়ে যেতে থাকলেই টনক নড়ে পিতা-মাতার। ততক্ষণে হয়ত অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে!

বিষয়টি একদিকে যেমন সামাজিক, পারিবারিক সমস্যা। অন্য দিক থেকে স্বাস্থ্যগত সমস্যাও বটে। কারণ, স্বাস্থ্য বলতে বোঝানো হয়, শরীরিক ও মানসিক সুস্থতা, উভয়টিকেই। জন্ম ও মৃত্যুর মাঝে মানুষকে তার চারপাশের সামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয়। এই উভয় প্রকার পরিবেশ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। দুঃখের বিষয় হলো, আমাদের চারপাশে সুপ্রভাবের চেয়ে কুপ্রভাবই বেশি, যার নেতিবাচক ফলাফল কিশোর-তরুণদের জীবনে সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যায়।

শুধু প্লট-ভর্তি সুস্বাদু ও উচ্চমানের খাদ্য খাওয়া নয়, স্বাস্থ্য সচেতনতা হলো কিছু অভ্যাসের ও আচরণের বিষয় ও বিধি, যার দ্বারা আমরা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারি। সুস্বাস্থ্যের জন্য শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই সুস্থ্যতা অপরিহায। অনেকেই জীবনযাপন প্রণালীতে শারীরিক ও মানসিক জীবনের ভারসাম্য এবং উভয় ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্ব দিতে পারেন না। আর তখনই তৈরি হয় নানা সমস্যা ও সঙ্কট।

প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে, মাত্র দুদিন আগে ১০ অক্টোবর ছিল পৃথিবীর সকলের মানসিক স্বাস্থ্যশিক্ষা ও সচেতনতার দিন । এটি ১৯৯২ সালে প্রথমবার পালন করা হয়েছিল । কিছু দেশে একে মানসিক রোগ সচেতনতা সপ্তাহের অংশ হিসাবে পালন করা হয়। সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয় সকলের জন্য সুস্থ্য মন ও সুস্থ্য শরীরের জন্য।

উনিশ শতকের আগে মন সম্পর্কীয় সকল অধ্যয়ন দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল, স্বাস্থ্য বা চিকিৎসার বিষয়ে পরিণত হয় নি। দার্শনিকগণ মানসিক আচার-আচরণ বা ক্রিয়া-কলাপ সম্পর্কে কেবল অনুমান করেছিলেন। মন সম্পর্কে গ্রীক দার্শনিক প্লেটো সর্বপ্রথম ব্যাখ্যা করেন। তিনি মনকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন সত্তা হিসাবে গণ্য করেন। তারপর মন আর শরীর দিয়ে বিজ্ঞান হাজার বছর ধরেই চর্চা ও গবেষণা করেই চলেছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চরম আধুনিক যুগে স্নায়ুবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞানের বিকাশের সাথে সাথে মনোবিজ্ঞানেরও নববিকাশ ঘটে ও আধুনিক বিজ্ঞানের এক অন্যতম শাখা হিসাবে মনোবিজ্ঞানের কার্যক্রর্ম আরম্ভ হয়।

স্নায়ুবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞানের মধ্যেই যে মনোবিজ্ঞানের প্রাথমিক ভিত্তি নিহিত হয়ে আছে, সেই কথা সর্বপ্রথম বলেন জার্মান শরীর বিজ্ঞানী জোহানেস পিটার মুলার। অবশ্য মনোবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অন্যতম গুরুত্ত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারটি করেছিলেন আরেকজন জার্মান বিজ্ঞানী হারমেন ভন হেল্মল্টজ্। ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী টমাস ইয়ঙের প্রস্তাবিত রং সংক্রান্ত নীতি নিয়ে গবেষণা করে তিনি ইয়ং-হেল্মল্টজ্ সূত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই সূত্র দ্বারা তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে, তিনটে বিভিন্ন রঙের (সবুজ, নীল ও লাল) অনুভূতির সৃষ্টি হয় মানুষের চোখের রেটিনার সাথে সংযুক্ত তিন ধরণের স্নায়ুর কর্ম-তৎপরতার ফলে।

এরপর পরবর্তী আধুনিক মনোবিজ্ঞান একের পর এক গবেষণায় আমাদের মন সম্পর্কীয় রহস্য উদঘাটন করে। এখনও রহস্যময় মন নিয়ে চিন্তা ও গবেষণার জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন মনোবিজ্ঞানীরা এবং মনের ভালো ও খারাপ অবস্থার দিক নিয়ে গবেষণা ও চিকিৎসা চালাচ্ছেন।

কিন্তু চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে পিতা-মাতা-পরিবেশ থেকে সন্তানদের প্রতি মনোযোগ ও লক্ষ্য রাখার কাজটিও গুরুত্বের সঙ্গে করতে হবে, এ কথাটি সব বিশেষজ্ঞই গুরুত্বের সাথে বার বার উল্লেখ করেছেন। আপনার ছেলে বা মেয়ে কোথায় যায়, কি করে, সেটা আগে-ভাগে জেনে সতর্ক হতে না পারলে বিপদই নেমে আসবে। খারাপ পরিবেশ না হটিয়ে উন্নত চিকিৎসা কোনও কাজেই আসবে না, এটাই হলে মূল কথা।

সাম্প্রতিক সময়ে এই বাংলাদেশেই এমন বহু মানসিক অস্থিরতা ও অপরাধের খবর প্রকাশিত হয়েছে, যা বেদনাদায়ক। এই বিপদ ও বেদনা রোধের পূর্ব-প্রস্তুতি স্বরূপ শারীরীক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে তীক্ষ্ণ নজর দেওয়া এবং খারাপ পরিবেশ ও পরিস্থিতি প্রতিরোধ করার দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগী হওয়ার দরকার আছে। নইলে সমস্যাটি সমূলে উৎপাটন অসম্ভব।

প্রসঙ্গত বলা যায়, মানুষের মন খারাপের অভিব্যক্তি কবিতাতেও ছাপ ফেলে। কবি মহাদেব সাহার পেশাগত পরিচয় ছিল সাংবাদিক। একদার অপ্রতিদ্বন্দ্বি দৈনিক ইত্তেফাক-এর তিনি ছিলেন সহকারী সম্পাদক। রোমান্টিক-প্রেমের কবিতায় সিদ্ধহস্ত এই কবি একবার রচনা করেছিলেন সুন্দর কিছু পংক্তি: ‘বিষাদ ছুঁয়েছে আজ/ মন ভালো নেই/ মন ভালো নেই/ ফাঁকা রাস্তা, শূন্য বারান্দা/সারাদিন ডাকি সাড়া নেই...।

বাংলা সাহিত্যের আরেক জনপ্রিয় কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়াও ছিলেন সাংবাদিক। তারও চমৎকার কিছু লাইন আছে: ‘মন ভালো নেই মন ভালো নেই মন ভালো নেই/কেউ তা বোঝে না সকলি গোপন মুখে ছায়া নেই/চোখ খোলা তবু চোখ বুজে আছি কেউ তা দেখেনি…।’

কবিতা ও সাহিত্যের এমন রোমান্টিক ভাবালুতা যদি বাস্তব জীবনে চলে আসে, আপনার বা আমার ঘরের ভেতরের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়, তখন কিন্তু চরম বিপদ! এই বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেতে তখন প্রাণান্তকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ জীবনে।

বৃষ্টি বা মেঘলা দিনের খানিক মন খারাপ যদি সর্বক্ষণ আক্রান্ত করে, আপনাকে বা আপনার পরিবারের কোনও সদস্যকে, তখন সজাগ ও সতর্ক হোন। মানসিক স্বাস্থ্য দিবস তথা ১০ অক্টোবরই শুধু নয়, শরীর ও মনকে ভালো রাখতে খাদ্য, পুষ্টি, পরিবেশ, ব্যায়াম, বিশ্রাম দিয়ে এবং প্রকৃতি ও সুন্দরের দিকে ধাবিত হয়ে বছরের প্রতিটি দিনকেই ভরিয়ে তুলতে হবে ভালো লাগার অনিন্দ্য উপকূলে। জরা, ব্যাধি, কষ্টের সমীকরণের মধ্যেও সুন্দর আর আশাবাদী করতে হবে আমাদের যাপিত জীবনের এইসব দিনরাত্রিগুলোকে।

   

মাইগ্রেনের সাধারণ উপসর্গ



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাইগ্রেনের ব্যথা

মাইগ্রেনের ব্যথা

  • Font increase
  • Font Decrease

মাইগ্রেনের ব্যথা আমাদের মধ্যে সাধারণ সমস্যাগুলোর একটি। মূলত মাইগ্রেনের সমস্যার কারণে তীব্র মাথা ব্যথা হয়। মাথায় নির্দিষ্ট স্থানে তীব্র কম্পন অনুভূত হয় এবং টন টন করে। এছাড়া চোখে আলো পড়লে বা তীব্র বাতাসে সংবেদনশীলতার কারণে অস্বস্তি, মাথাব্যথার তীব্রতা বেড়ে ওঠা বা বমি বমি ভাব হওয়াও মাইগ্রেনের উপসর্গ। এই যন্ত্রণা কয়েক ঘণ্টা থেকে একাধিক দিন অবধিও স্থায়ী হতে পারে।

খুব সূক্ষ্ম মাত্রায় ঔষধ সেবনের মাধ্যমে যন্ত্রণা কমানো যেতে পারে। সঠিক চিকিৎসা এবং ভালো ওষুধের মাধ্যমে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে এটি নিরাময় করার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না।

মাইগ্রেনের সমস্যা যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে। একেকজনের ক্ষেত্রে সমস্যা একেকরকম হয়। তবে সকলের ক্ষেত্রেই কয়েকটি সাধারণ ধাপে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে দেখা যায়। এগুলো হলো- প্রোড্রোম, অওরা, অ্যাটাক, পোস্টড্রোম।

প্রোড্রোম: মূলত মাথাব্যথার তীব্রতা বাড়ার আগের ২৪ ঘণ্টার মুহূর্ত এটি। এই ধাপের উপসর্গ হতে পারে মেজাজ পরিবর্তন, কোষ্ঠ্কাঠিন্য, খাবার খাওয়ার ইচ্ছা, ঘন ঘন প্রসাব, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বেশি হাই ওঠা সহ আরও অনেক কিছুই হতে পারে।  

অওরা: এই পর্যায়ে মাথা ব্যাথা হওয়ার আগ মুহূর্তে বা মাথাব্যথার সময়ে নানারকম অসুবিধা দেখা দিতে পারে। কয়েক মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ে মুখ, বাকযন্ত্র, মাথার সংবেদনশীল অংশে উপসর্গ দেখা দিতে পারে।     

অ্যাটাক বা আক্রমণ: এই পর্যায়ে মাথা ব্যথা তীব্রতার পর্যায়ে চলে যায়। একটানা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা অবধিও ব্যথা স্থায়ী হতে পারে। চিকিৎসা করা না হলে এই সময়কাল আরও দীর্ঘ হতে পারে।

পোস্টড্রোম: এই পর্যায়ে মাথা সমস্যা ১ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। উপসর্গগুলো অনেকটা অ্যালকোহল সেবনের পরে হ্যাংওভারের উপসর্গের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।  এজন্য এক মাইগ্রেন হ্যাংওভারও বলা হয়।

তথ্যসূত্র: নিউজ১৮

;

ভাইরাল হেপাটাইটিস নিয়ে ভুল যত ধারণা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

  • Font increase
  • Font Decrease

যকৃত মানব শরীরের খুব একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নালীদের প্রবাহিত হওয়া রক্ত পরিশুদ্ধকরণ করা এর প্রধান কাজ। রক্ত থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে যকৃত। এছাড়াও ভিটামিন সঞ্চয় এবং হরমোনও তৈরি করে। তবে হেপাটাইটিস এমন এক ভাইরাস যা সরাসরি কলিজা, তথা যকৃতেই আক্রমণ করে। এতে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হয়। মূলত হেপাটাইটিস ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’ এবং ‘ই’ ভাইরাল হেপাটাইটিসের জন্য দায়ী। হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ খাদ্য ও পানি দূষণের ফলে হয়। অন্যদিকে হেপাটাইটিস বি এবং সি রক্তেএবং রক্তরসের মাধ্যমে ছড়ায়। হেপাটাইটিস ডি হওয়ার সম্ভাবনা তাদের থাকে যারা ইতোমধ্যেই হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত রয়েছেন।   

ভাইরাল হেপাটাইটি থেকে সাবধানে থাকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে নানারকম কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। এক প্রতিবেদনে ভারতীয় হেপাটোলজি বিশেষজ্ঞ অমিত মান্ডোট বলেছেন, `হেপাটাইটসের ক্ষেত্রে ভাইরাসের আক্রমণ যতটা শঙ্কাজনক, একইরকমভাবে এ্ সম্পর্কিত যে ভ্রান্ত ধারণাগুলো রয়েছে সেগুলোও নানারকম সমস্যা বৃদ্ধি করে। এতে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বাঁধা পড়ে। অনেকে মনে করেন হেপাটাইটিসের সংক্রমণ এইডসের সংক্রমণের মতো। ভয়াবহ ড্রাগ নেওয়ার মাধ্যমে এবং অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কে মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এসব একেবারেই ভুল ধারণা।‘

ভাইরাল হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগী

তিনি ভ্রান্ত ধারনা দূর করার ব্যাপারে বলেন, ‘রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এমনটি শিশু জন্মদানের সময় হওয়াও অযাচিত নয়। রক্তদান বা ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেও হেপাটাইটিস ছড়াতে পারে। তাই এই রোগ সম্পর্কিত গোড়ামি ভেঙে রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য সাহায্য করতে হবে। এইজন্য সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এই সংক্রান্ত আরও একটি ভুল ধারণা হলো, ব্যক্তি পছন্দ এবং জীবনধারার সিদ্ধান্তের কারণেও হেপাটাইটিসে কেউ আক্রান্ত হয়। রোগীর প্রতি সকলের এই বিরুপ দৃষ্টিভঙ্গি পরিস্থিতি আরও বিগড়ে দিতে পারে। একঘেয়ে গোড়ামি সমাজের অগ্রগতির পথেও বাঁধা।      

একত্রিত হয়ে এসব ভুল ধারণা দূর করার আহ্বান করেছেন ডাক্তার অমিত। তিনি বলেন, রোগ নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা, প্রাথমিক পর্যায়ে  শিক্ষাপ্রচার এবং আপপ্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা অত্যাবশ্যকীয়। তবেই সকল সাহায্য প্রত্যাশীদের সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।  

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

;

ভিটামিনের ‘ডি‘ এর অভাব পূরণ করবে মাশরুম



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাশরুম

মাশরুম

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা সময় ছিল যখন আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ ভিটামিনের অভাবের কথা ভাবতো না। কারণ তাজা এবং পুষ্টিকর শাক, সবজি এবং ফল প্রায় ঘরে ঘরে পাওয়া যেত। বা বাজারেও ছিল তা বেশ সহজলভ্য। শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ সব অভাবই পূরণ করে এসব খাবার। এখন মানুষের জীবনে বেড়েছে ব্যস্ততা। অল্প পরিশ্রমে এখন যতটা সম্ভব বেশি পু্ষ্টি গ্রহণ করা এখন বেশ কঠিন হয়ে উঠছে।

বিভিন্ন প্রকার মাশরুম

ভিটামিন ডি-এর অভাব একটি অন্যতম গুরুতর সমস্যা। এর অভাবে অস্টিওম্যালেশিয়া, রিকেটস, কোমড় বা হাঁটুতে ব্যথা, হাড় ক্ষয়সহ নানারকম গুরুতর সমস্যা হয়।  বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ডি এর অভাব দেখা যেতে পারে। এতে শিশুদের হাড়ের বিকাশ পরিপূর্ণ হয় না। ক্যালসিয়ামের অভাবে তোদর হাড়ে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, পা ধনুকে মতো বেঁকেও যায়। একে রিকেটস রোগ বলে। ভিটামিন ডি এর অতিরিক্ত অভাব হলে শিশু চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।

ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুর রিকেটস রোগ

এই সমস্যার সমাধান হতে পারে মাশরুম। কারণ সাধারণত ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার বেশ খরচ সাপেক্ষ। মাছের লে, চর্বিযুক্ত মাছ, মাখন, ঘি, দুধ-এই জাতীয় খাবারে উচ্চপরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। উদ্ভিজ খাবারে যে পরিমাণ ভিটামিন ডি থাকে তা অভাব পূরণে পর্যাপ্ত নয়। তবে এই ক্ষেত্রে মাশরুম কিছুটা ব্যতিক্রম।  এই খাবার যেমন পুষ্টিকর, তেমন সুস্বাদু। এক ইন্সটাগ্রাম রিলে পুষ্টিবিদ লিন্ডি কোহেন বলেন, ‘ভিটামিন ডি‘য়ের চমৎকার উৎস হলো মাশরুম। মাশরুম খাওয়ার যেমন নানা রকম পুষ্টিকর সুবিধা রয়েছে, তেমনই এটি বেশ সাশ্রয়ী। অন্যান্য দামী খাদ্যের বিকল্প হিসেবে মাশরুম খাওয়া একটি ভালো পদক্ষেপ হতে পারে। তবে উত্তম এই খাদ্য উপাদানকে আরও বেশি লাভজনক করা যেতে পারে। খুব ছোট একটি পদক্ষেপের মাধ্যমেই মাশরুমের পুষ্টিগুণ বাড়ানো যায়।’

রান্না করা মাশরুম

তিনি পরামর্শ দেন, বাইরে থেকে কিনে এনে মাশরুমকে রান্না করার আগে রোদে রাখতে। সকালের পরপর ১ থেকে ২ ঘণ্টার জন্য উন্মুক্ স্থানে মাশরুমকে রোদ পোহাতে রাখা যেতে পারে। লম্বা ক্ষেত্রফল বিশিষ্ট বা চওড়া পাত্রে মাশরুমগুলোকে ছড়িয়ে দিয়ে রোদে রাখা যেতে পারে। এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মাশরুমের বেশিরভাগ অংশ রোদের সংস্পর্শে আসতে পারে।  বিষুবরেখা থেকে দূরের অঞ্চলে এবং শীতকালে চাষ করা মাশরুমে ভিটামিন ডি এর কিছু ঘাটতি দেখা যায়। কারণ মাশরুমের ধরন, সূর্যের আলোর তীব্রতা ও সংস্পর্শ, চাষের সময়- বিভিন্ন বিষয়ের উপর মাশরুমের পুষ্টির সহজলভ্যতা নির্ভর করে।  

রোদের আলোয় ভিটামিন ডি

আমাদের দেশে যেসব মাশরুম খাওয়া হয় তা সম্পূর্ণরূপে ভিটামিন ডি সরবরাহ করতে পারে কিনা- তা নিয়ে সন্দিহান পুষ্টিবিদরা। ভারতীয় চিকিৎসক শুভ রমেশ এই নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। মাশরুমে এরগোস্টেরল নামের একটি যৌগ রয়েছে। সূর্যরশ্মি যখন মাশরুমে পড়ে তখন অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে এটি ভিটামিন ডি-২ তে রূপান্তরিত হয়। সকালেরেোদ শরীরে পড়লে যেমন শরীরে ভিটামিন ডি-৩ সংশ্লেষণ হয়, অনেকটা অনুরূপ পদ্ধতিতেই এই প্রক্রিয়া হয়। তবে ভিটামিন ডি২ এবং ডি৩ এর কার্যকারিতা এবং ধরন ভিন্ন হয়। ডি৩ সাধারণত ডি২ এ তুলনায় রক্তে ভিটামিন ডি বাড়াতে ও ধরে রাখতে বেশি কার্যকর।      

 তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

;

পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি



লাইফস্টাইল ডেস্ক বার্তা২৪.কম
পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি

পিরিয়ডে হেভি ফ্লো-এর দিনগুলো হোক হ্যাসেল-ফ্রি

  • Font increase
  • Font Decrease

পিরিয়ড মানেই মুড সুইং, ক্র্যাম্প, পেইন। তবু এটুকুই যথেষ্ট না। পিরিয়ডের সবচেয়ে কমন ফেনোমেনা হলো রক্তক্ষরণ, যা বয়স ও ব্যক্তিভেদে বিভিন্নরকম হয়। কারও কারও শুরুতে হেভি ফ্লো হয়ে পরে কমে যায়, আবার কারও পুরো সময়জুড়েই হালকা অথবা ভারী ব্লিডিং হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, পিরিয়ডের সময় স্বাভাবিক রক্তক্ষরণের পরিমাণ ৩০-৫০ মিলিলিটার, কিন্তু যখন রক্তক্ষরণের মাত্রা এর চেয়ে বেশি হয়ে যায়, মেডিকেলের ভাষায় তাকে বলে হেভি মেন্সট্রুয়াল ব্লিডিং বা এইচএমবি। ধারণা করা হয়, শতকরা ২৫ ভাগ নারীর হেভি ফ্লো হয়। 

যেহেতু হেভি ফ্লো হলে প্রতি ২-৩ ঘন্টায় ন্যাপকিন পাল্টানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, এবং স্বচ্ছন্দে প্রতিদিনের কাজ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এমনকি ভালোভাবে মেন্সট্রুয়াল হাইজিন মেইন্টেইন করাও কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে অনেকেই ডিপ্রেসড হয়ে যায়। 

এছাড়া হেভি ফ্লো হলে প্রয়োজনে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা ঠিক হবে কি হবে না, এ নিয়ে ক্লিয়ার কনসেপ্ট না থাকায় হেভি ফ্লো-এর সময়টা অনেকের জন্যই খুবই পীড়াদায়ক মনে হয়। বিশেষভাবে কর্মজীবী নারীরা এই বিষয়টা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন থাকে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন পরে থাকার সাথে গাইনোকোলজিকাল সমস্যার কোনো সম্পর্ক নেই। শুধু ন্যাপকিন কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন সর্বোচ্চ শোষণক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারে।


কারও ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন যদি ভালো শোষণক্ষমতা সম্পন্ন হয়, তবে হেভি ফ্লো-এর সময়ও কোনোরকম জটিলতা ছাড়াই ১০-১২ ঘন্টা পরে থাকা সম্ভব। তাই শুধুমাত্র গৎবাঁধা ধারণার উপর নির্ভর না করে, হেভি ফ্লো-এর কঠিন এই সময়টা স্বস্তি ও সুরক্ষার সাথে কাটাতে এমন স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা উচিত, যা সর্বাধিক সময় ধরে সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি ইনফেকশন এড়াতে পরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করতে হবে, প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

;