সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন বুঝেশুনে!
কর্মজীবী মানুষদের দিনের সিংহভাগ সময় কাটে নিজ কর্মক্ষেত্রেই।
নিজ পরিবার ও বন্ধুদের সাথেও এতোটা সময় কাটানো হয় না, যতটা সময় সহকর্মীদের সাথে কাটানো হয়। স্বাভাবিকভাবেই একসাথে দীর্ঘ সময় কাটানোর ফলে পরস্পরের মাঝে বেশ হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে খুব সহজেই।
যার ফলে নিজের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে ছোট-বড়, গুরুত্বপূর্ণ কিংবা অগুরুত্বপূর্ণ এমনকি দর্শন ও মতবাদের মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়, মতবিনিময় করা হয়। সম্পর্ক যতই বন্ধুত্বপূর্ণ হোক না কেন, সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলার সময় একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে কখনোই যাওয়া উচিত নয়।
সেই নির্দিষ্ট গণ্ডি কিংবা সীমারেখা সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকলে, আজকের ফিচারটি আপনার জন্যেই।
আপনার পূর্ববর্তী চাকরির কথা
হয়তো আপনার আগের কর্মক্ষেত্র নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। সেটা নিয়ে বর্তমান কর্মক্ষেত্রে ও সহকর্মীদের সাথে আলোচনা করলে তার প্রভাব দেখা দিবে নিজের উপরেই। যা অবশ্যই নেতিবাচক হবে। এমন কথাবার্তাকে আপনার সহকর্মীরা বালখিল্যপূর্ণ আচরণ হিসেবে ধরে নিবে। এর ফলে আপনার উপরে তাদের বিরূপ মনোভাব তৈরি হবে। যা কোন না কোনভাবে আপনার চাকরিজীবনে সমস্যা তৈরি করবে।
নিজের স্বাস্থ্যগত বিষয়
খুব সাধারণ একটি বিষয় হলো, নিজের স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে কথা বলা। আপাতদৃষ্টিতে একেবারেই নিরীহ এই বিষয় নিয়ে সহকর্মীদের সাথে কথা বলায় কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। তবে নিজের নানান রকম শারীরিক অসুস্থতা, ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট কিংবা ওষুধ খাবার সময়সূচী নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে বারংবার কথা বলা তাদের মাঝে বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে। এই বিষয় নিয়ে কথা বলা কিংবা আলোচনা করা থেকে যথাসম্ভব নিজেকে বিরত রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ।
ব্যক্তিগত জীবনের খুঁটিনাটি
নিজের জন্মদিন নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি বিবাহবার্ষিকী কিংবা কোন বিশেষ দিবসে পরিবারের সাথে কীভাবে সময় কাটিয়েছেন বা কাটাবেন সেটা নিয়ে খুব আনন্দ নিয়ে গল্প করলেন কাছের কোন সহকর্মীর সাথে। নির্দোষ একটি অভ্যাস। কিন্তু আপনার অজান্তেই উক্ত সহকর্মী অন্যান্য সহকর্মীদের কাছে আপনার এই ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে বাড়িয়ে গল্প করলেন। যা কোন না কোনভাবে আপনি জানতেও পারলেন। তখন নিশ্চয় অপ্রস্তুত বোধ করবেন। এই বিষয়টা মাথায় রাখা আবশ্যক। নিজের ব্যক্তিগত বিষয় যেন কোনভাবেই মানুষের বিনোদনের খোরাক না হয়।
সহকর্মী কিংবা বসের বিষয়ে অভিযোগ
কর্মক্ষেত্রে অনেক মানুষ একসাথে কাজ করার সুবাদে নানান ধরণের মানুষের সঙ্গে দেখা হয়। প্রত্যেকেই আচরণ ও স্বভাবে ভিন্ন। যে কারণে সকল সহকর্মী নিজের পছন্দমতো হবেন এমনটা আশা করা একেবারেই অনুচিত। কোন সহকর্মী কিংবা নিজের বসের কোন কাজ যদি পছন্দ না হয়, তবে সেটা নিয়ে কর্মক্ষেত্রের কোন সহকর্মীর সাথে আলোচনা না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ একটি সাধারণ কথাও অনেক পরিবর্তিত হয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যা কিনা আপনার ক্যারিয়ারের জন্যেই হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
কর্মক্ষেত্র নিয়ে সমালোচনা
খুব কম মানুষই আছেন, নিজ কর্মক্ষেত্র নিয়ে যাদের কোন অভিযোগ নেই। কর্মক্ষেত্রের নানান অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগ থাকবেই। তার সাথে নিজেকে একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত মানিয়ে নিয়েই কাজ করা চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এই সকল বিষয় নিয়ে আপনি যদি কর্মক্ষেত্রে অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলেন, তার নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিবে নিজের উপরেই। সহকর্মীরা আপনাকে অবিবেচক মনে করবেন।